ঢাকা ০১:১৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মাগুরায় সেই প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির দূর্নীতি দেখার কেউ নেই! (পর্ব-৩)

মাগুরা প্রতিনিধি : মাগুরা সদর ১১নং বেরইল-পলিতা ইউনিয়নের বেরইল গ্রামের “আলহাজ্ব কাজী আব্দুল ওয়াহেদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের” প্রধান শিক্ষক বিএনপি নেতা সিরাজুল ইসলাম ও সভাপতি জামায়াত নেতা তাজেনুর বিরুদ্ধে অশালীন আচরণ, অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ শেষ নেই। এ ছাড়াও অনেকবার ওই প্রধান শিক্ষক ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি বিদ্যালয় তহবিলের টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির কয়েকজন সদস্য ২২ এপ্রিল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) মাধ্যমে শিক্ষামন্ত্রী, শিক্ষাসচিব, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, স্থানীয় সাংসদ ও জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
গত ২ জুন ২০১৮ অশালীন আচরণের শিকার হয়ে এক শিক্ষিকা বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, গত বছর ২৫ জুলাই তিনি ওই বিদ্যালয়ে শিক্ষিকা হিসেবে যোগদান করেন। নিয়োগের সময় তিনি সাড়ে ৫ লাখ টাকা দেন।
নিয়োগের পর থেকে বিদ্যালয়ের সভাপতি জামায়াত নেতা তাজেনুর রহমান তাঁর সঙ্গে অশালীন আচরণ শুরু করেন। ২৮ মে বিদ্যালয়ে ছুটির পর কাজের কথা বলে প্রধান শিক্ষক তাঁর নিজ কক্ষে ওই শিক্ষিকাকে ডেকে এনে প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি অশালীন আচরণ করেন। ওই দিনই প্রধান শিক্ষক জোর করে সাদা কাগজে তাঁর স্বাক্ষর রাখেন। ওই শিক্ষিকার বাবাও খবর বাংলাদেশের কাছে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির বিচার দাবি করেছেন।
অভিভাবক সদস্য বাদশা মিয়া জানান, স্কুল প্রতিষ্ঠাতার ভাই ৯ শতক জমি স্কুলের নামে দান করেন কিন্তু তাকে প্রধান শিক্ষক ভোটার করা হয় নাই। বর্তমান সভাপতি তাজেনুর রহমানকে ২০ হাজার টাকা ঘোষনা দিয়ে সদস্য করে দুই মেয়াদে সভাপতি করে গেছেন প্রধান শিক্ষক, তাছাড়া তিনি গত ২১ মার্চ ২০১৮ ইং তারিখে সাত লাখ ত্রিশ হাজার টাকা ঘুষের বিনিময়ে গোপনে শহিদুল ইসলাম নামে একজন নৈশ প্রহরী নিয়োগদেন। তথ্যনুসন্ধানে জানা যায় ওই নৈশ প্রহরীর বিলের জন্য কাগজ পত্র বোর্ডে পাঠিয়েছেন। সম্প্রতি জিহাদুল ইসলাম (সেকশন), চন্দনা রানী (সেকশন)ও রবিউল ইসলাম (বিজ্ঞান) বিভাগে শিক্ষক হিসেবে এই তিনজনকে ১৩ লক্ষ টাকা ঘুষের বিনিময়ে প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি নিয়োগদেন। কারিগরি বোর্ড থেকে ভোকেশনাল খোলার অনুমতি এনে দুই প্রার্থীর নিকট থেকে ৭ লাখ টাকা ঘুষ নেন প্রধান শিক্ষকের ও সভাপতি।
বিএনপি নেতা সিরাজুল ইসলাম প্রধান শিক্ষক হিসেবে “আলহাজ্ব কাজী আব্দুল ওয়াহেদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে” যোগদানের পর থেকেই নিয়োগ-বাণিজ্যে জড়িয়ে পড়েন। প্রধান শিক্ষক এর মধ্যেই ১০ জন শিক্ষক ও একজন কর্মচারী নিয়োগ দেন।
এমনকি নিয়োগপ্রাপ্ত দুই শিক্ষকের কাছ থেকে জোরপূর্বক পদত্যাগপত্র আদায় করেন। পরে তিনারা ওই পদে পুনরায় টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দেন। বিদ্যালয় তহবিলে নিয়োগ প্রাপ্ত শিক্ষকদের দেওয়া ডোনেশনের ৬৬ লাখ ১০ হাজার টাকা প্রধান শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম ও সভাপতি তাজেনুর রহমান আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
দাতা সদস্য জানান, প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি বিদ্যালয় তহবিলের প্রায় ১১ লাখ টাকা পরিচালনা কমিটির সদস্যদের অনুমতি ছাড়াই খরচ করেন। এ ঘটনার তদন্তের জন্য তাঁকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের একটি কমিটি করা হয়। কিন্তু তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার আগেই বিদ্যালয় সভাপতির যোগসাজেশে তাঁকে তদন্ত কমিটি থেকে অপসারণ করা হয়।
অভিভাবক সদস্য ভিকু মোল্যা, বাদশা মিয়া, সুমি পারভীন ও কামরুজ্জামান অভিযোগ করেন, প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির এ ধরনের কর্মকান্ডের কারণে দিন দিন বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের কারণে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীও কমে যাচ্ছে বলে তিনারা অভিযোগ করেন।
বিদ্যালয়েরর পরিচালনা কমিটির সভাপতি তাজেনুর রহমান জানান, একটি মহল বিদ্যালয়টিকে ধ্বংস করতে উঠেপড়ে লেগেছে।
প্রধান শিক্ষক বিএনপি নেতা সিরাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, আমার ভাইরার জামাই একজন এসপি আপনারা কেউ এখানে ঝামেলা করবেন না তা ছাড়া সভাপতির এক নিকটত্বম আত্বীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আছেন বলে হুমকী প্রদান করেন। আরো বিস্তারিত পরবর্তী সংখ্যায় দেখুন… তানজুর রহমান কম্পিউটার না জানলেও কম্পিউটার শিক্ষক।

ট্যাগস

মাগুরায় সেই প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির দূর্নীতি দেখার কেউ নেই! (পর্ব-৩)

আপডেট টাইম : ০৬:৩৭:২২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১২ এপ্রিল ২০১৯

মাগুরা প্রতিনিধি : মাগুরা সদর ১১নং বেরইল-পলিতা ইউনিয়নের বেরইল গ্রামের “আলহাজ্ব কাজী আব্দুল ওয়াহেদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের” প্রধান শিক্ষক বিএনপি নেতা সিরাজুল ইসলাম ও সভাপতি জামায়াত নেতা তাজেনুর বিরুদ্ধে অশালীন আচরণ, অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ শেষ নেই। এ ছাড়াও অনেকবার ওই প্রধান শিক্ষক ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি বিদ্যালয় তহবিলের টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির কয়েকজন সদস্য ২২ এপ্রিল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) মাধ্যমে শিক্ষামন্ত্রী, শিক্ষাসচিব, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, স্থানীয় সাংসদ ও জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
গত ২ জুন ২০১৮ অশালীন আচরণের শিকার হয়ে এক শিক্ষিকা বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, গত বছর ২৫ জুলাই তিনি ওই বিদ্যালয়ে শিক্ষিকা হিসেবে যোগদান করেন। নিয়োগের সময় তিনি সাড়ে ৫ লাখ টাকা দেন।
নিয়োগের পর থেকে বিদ্যালয়ের সভাপতি জামায়াত নেতা তাজেনুর রহমান তাঁর সঙ্গে অশালীন আচরণ শুরু করেন। ২৮ মে বিদ্যালয়ে ছুটির পর কাজের কথা বলে প্রধান শিক্ষক তাঁর নিজ কক্ষে ওই শিক্ষিকাকে ডেকে এনে প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি অশালীন আচরণ করেন। ওই দিনই প্রধান শিক্ষক জোর করে সাদা কাগজে তাঁর স্বাক্ষর রাখেন। ওই শিক্ষিকার বাবাও খবর বাংলাদেশের কাছে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির বিচার দাবি করেছেন।
অভিভাবক সদস্য বাদশা মিয়া জানান, স্কুল প্রতিষ্ঠাতার ভাই ৯ শতক জমি স্কুলের নামে দান করেন কিন্তু তাকে প্রধান শিক্ষক ভোটার করা হয় নাই। বর্তমান সভাপতি তাজেনুর রহমানকে ২০ হাজার টাকা ঘোষনা দিয়ে সদস্য করে দুই মেয়াদে সভাপতি করে গেছেন প্রধান শিক্ষক, তাছাড়া তিনি গত ২১ মার্চ ২০১৮ ইং তারিখে সাত লাখ ত্রিশ হাজার টাকা ঘুষের বিনিময়ে গোপনে শহিদুল ইসলাম নামে একজন নৈশ প্রহরী নিয়োগদেন। তথ্যনুসন্ধানে জানা যায় ওই নৈশ প্রহরীর বিলের জন্য কাগজ পত্র বোর্ডে পাঠিয়েছেন। সম্প্রতি জিহাদুল ইসলাম (সেকশন), চন্দনা রানী (সেকশন)ও রবিউল ইসলাম (বিজ্ঞান) বিভাগে শিক্ষক হিসেবে এই তিনজনকে ১৩ লক্ষ টাকা ঘুষের বিনিময়ে প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি নিয়োগদেন। কারিগরি বোর্ড থেকে ভোকেশনাল খোলার অনুমতি এনে দুই প্রার্থীর নিকট থেকে ৭ লাখ টাকা ঘুষ নেন প্রধান শিক্ষকের ও সভাপতি।
বিএনপি নেতা সিরাজুল ইসলাম প্রধান শিক্ষক হিসেবে “আলহাজ্ব কাজী আব্দুল ওয়াহেদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে” যোগদানের পর থেকেই নিয়োগ-বাণিজ্যে জড়িয়ে পড়েন। প্রধান শিক্ষক এর মধ্যেই ১০ জন শিক্ষক ও একজন কর্মচারী নিয়োগ দেন।
এমনকি নিয়োগপ্রাপ্ত দুই শিক্ষকের কাছ থেকে জোরপূর্বক পদত্যাগপত্র আদায় করেন। পরে তিনারা ওই পদে পুনরায় টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দেন। বিদ্যালয় তহবিলে নিয়োগ প্রাপ্ত শিক্ষকদের দেওয়া ডোনেশনের ৬৬ লাখ ১০ হাজার টাকা প্রধান শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম ও সভাপতি তাজেনুর রহমান আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
দাতা সদস্য জানান, প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি বিদ্যালয় তহবিলের প্রায় ১১ লাখ টাকা পরিচালনা কমিটির সদস্যদের অনুমতি ছাড়াই খরচ করেন। এ ঘটনার তদন্তের জন্য তাঁকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের একটি কমিটি করা হয়। কিন্তু তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার আগেই বিদ্যালয় সভাপতির যোগসাজেশে তাঁকে তদন্ত কমিটি থেকে অপসারণ করা হয়।
অভিভাবক সদস্য ভিকু মোল্যা, বাদশা মিয়া, সুমি পারভীন ও কামরুজ্জামান অভিযোগ করেন, প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির এ ধরনের কর্মকান্ডের কারণে দিন দিন বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের কারণে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীও কমে যাচ্ছে বলে তিনারা অভিযোগ করেন।
বিদ্যালয়েরর পরিচালনা কমিটির সভাপতি তাজেনুর রহমান জানান, একটি মহল বিদ্যালয়টিকে ধ্বংস করতে উঠেপড়ে লেগেছে।
প্রধান শিক্ষক বিএনপি নেতা সিরাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, আমার ভাইরার জামাই একজন এসপি আপনারা কেউ এখানে ঝামেলা করবেন না তা ছাড়া সভাপতির এক নিকটত্বম আত্বীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আছেন বলে হুমকী প্রদান করেন। আরো বিস্তারিত পরবর্তী সংখ্যায় দেখুন… তানজুর রহমান কম্পিউটার না জানলেও কম্পিউটার শিক্ষক।