ঢাকা ০৫:৩২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৩ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
যারা চাঁদাবাজি করতে আসবে তাদের খাম্বার সাথে বেঁধে রাখবেন- মুফতী ফয়জুল করিম টাঙ্গাইলে মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির নতুন কমিটি গঠিত সিরাজদিখান প্রেসক্লাবের জরুরী সভা অনুষ্ঠিত  স্টার লাইন বাসের ধাক্কায় মাইক্রোবাস উল্টে নিহত ৪ গণধিকার পরিষদ জাতীয় সরকারকে সমর্থন করে- গাজীপুরে রাশেদ খান পঞ্চগড়ে আট দফা দাবিতে চা চাষীদের মানববন্ধন গাজীপুরে কাউন্সিলরের বাড়ীতে দুর্ধর্ষ ডাকতি মির্জাগঞ্জের বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ইউপি প্যানেল চেয়ারম্যান পুনর্গঠনের দাবি মেম্বারদের কালিহাতীতে প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির নব কমিটির সভাপতি মফিদুল, সম্পাদক শফিক ১০ জেলা রেজিস্ট্রার সহ পদোন্নতি পাওয়া ১০ সাব রেজিস্ট্রারকে জেলা রেজিস্ট্রার পদে বদলি

বরগুনার আমতলীতে এক স্কুল শিক্ষকের বিরুদ্ধে চাকুরি দেওয়ার প্রলোভনে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ!

ব্যুরো প্রধান
বরগুনার আমতলী উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের ৪৫নং হলদিয়া হাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মহসিন মোল্লার বিরুদ্ধে শিক্ষিত বেকার নারী- পুরুষদের চাকুরী দেয়ার কথা বলে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি উত্তর পশ্চিম চিলা বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ একাধিক বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক- শিক্ষিকা হিসেবে চাকুরি দেওয়ার নামে বিভিন্ন খরচ দেখিয়ে ওই টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। ভূক্তভোগীরা দূর্নীতি দমন কমিশন ও প্রশাসনের উচ্চ মহলের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছেন। ভূক্তভোগীদের সূত্রে জানা যায়, শিক্ষক মহসিন মোল্লা দীর্ঘদিন ধরে এলাকার যুবক যুবতীদের বেকারত্বের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বেশ কিছু বেকার, শিক্ষিত নারী ও পুরুষদেরকে টার্গেট করে বিভিন্ন বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসায় চাকরি দেওয়ার কথা বলে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এমনকি শিক্ষক মহসিন মোল্লা বিভিন্ন বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসার অনুমোদন করিয়ে দেওয়ার কথা বলে ওই সকল প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতাদের কাছ থেকেও লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। চাওড়া পাতাকাটা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রবীণ শিক্ষক অতুল চন্দ্র শীল বলেন, গত চার বছর আগে তার মেয়ে রিনাকে উত্তর পশ্চিম চিলা বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার কথা বলে শিক্ষক মহসিন মোল্লা তার কাছ থেকে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা নিয়ে একটি ভুয়া নিয়োগপত্র ধরিয়ে দিয়েছে। তিনি আরও বলেন, শিক্ষক মহসিন মোল্লা আমার ছাত্র। ওকে আমি খুব ভালো জানতাম। আমার মেয়ের বেকারত্বের সুযোগে অন্তত আমার সাথে এরকম কাজ করাটা মহসিনের ঠিক হয়নি। আমার অবাক লাগে মহসিন যেখানে আমার মেয়েকে চাকরি দেওয়ার কথা বলছে বাস্তবে ওখানে ওই নামে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই নেই। আমি এরকম জঘন্য ঘটনার সঠিক বিচার এবং আমার দেওয়া টাকা ফেরৎ চাই। আরেক ভূক্তভোগী মকবুল আকন জানায়, তার মেয়েকে চাকুরি দেওয়ার কথা বলে মহসিন মোল্লা ২০১৫ সালে ৫০ হাজার টাকা নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো চাকরি দিতে পারেনি। টাকা ফেরত চাইলে মহসিন মোল্লা উল্টো আরও ২ লক্ষ টাকা দাবি করেন। অন্যথায় আর একজনকে নিয়োগ দিয়ে মকবুল আকনের দেয়া ৫০ হাজার টাকা ফেরত দিবে বলে মহসিন মোল্লা তাকে জানিয়ে দেয়। ভুক্তভোগী সেরাজ হাওলাদার জানিয়েছেন, গত ৪ বছর পূর্বে আমার ছেলে জহিরুলের চাকরির জন্য শিক্ষক মহসিন মোল্লা আমার কাছ থেকে নগদ ১ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা নিয়েছে। অদ্য পর্যন্ত আমার ছেলের চাকুরির কোন খবর নেই। ভূক্তভোগী সোহরাব হাওলাদার বলেন, গত ৩ বছর পূর্বে তিনি জমি বন্ধক রেখে মাদ্রাসায় চাকুরির জন্য শিক্ষক মহসিন মোল্লাকে ৮৫ হাজার টাকা দিয়েছেন। কিন্তু টাকা ফেরৎ পাননি ও চাকুরিটাও অদ্যবদি হয়নি। এ বিষয়ে আরো এক ভূক্তভোগী অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মোতালেব মাস্টার জানিয়েছেন, গত ৩ থেকে ৪ বছর পূর্বে আমার মেয়েকে চাকুরি দেওয়ার কথা বলে শিক্ষক মহসিন মোল্লা আমার কাছ থেকে নগদ ২ লক্ষ টাকা নিয়েছে। এখন পর্যন্ত চাকুরির কোন খবর নাই, টাকা চাইলে বিভিন্ন রকমের তালবাহানা করে। শিক্ষক মহসিন মোল্লার অনিয়মের বিষয়ে আরেক ভূক্তভোগী মোঃ নূহু মোল্লা জানিয়েছেন, ২০১৩ সালে মহসিন মোল্লা আমাকে চাকরি দেওয়ার কথা বলে ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার মৌখিক চুক্তি করে নগদ ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা নিয়ে মধ্য পশ্চিম চিলা বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়। ওখানে এ নামে কোন প্রতিষ্ঠান না থাকায় আমরা ওই সময় সকল শিক্ষক মিলে ১ লক্ষ টাকা খরচ করে একটি টিনসেট স্কুল ঘর নির্মাণ করে ওই বিদ্যালয়ের আমি প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করতে থাকি। হঠাৎ একদিন মহসিন মোল্লা আমার কাছে আরও ২ লক্ষ টাকা দাবি করে। আমি মহসিন মোল্লা দাবিকৃত ওই টাকা দিতে অস্বীকার করলে অন্য এক লোকের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে তাকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিয়ে আমাকে ওই পদ থেকে সরিয়ে উত্তর পশ্চিম চিলা বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগের ভূয়া কাগজ ধরিয়ে দেয়। আমি মহসিন মোল্লার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিবো। মহসিন মোল্লা শতাধিক বেকার নারী পুরুষদের সাথে প্রতারণা করে তাদের জীবনটা নষ্ট করে দিয়েছে। অপরদিকে উপজেলার দক্ষিণ পূর্ব সেকান্দারখালী বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা আব্দুল হক মাস্টারের কাছ থেকেও প্রতারক মহসিন মোল্লা স্কুল অনুমোদনের কথা বলে ৫৫ হাজার টাকা নিয়ে তার নিজের স্বাক্ষরিত একটি ভূয়া অনুমোদনের কাগজ ধরিয়ে দিয়েছেন। এভাবেই অসংখ্য শিক্ষিত বেকার নারী পুরুষ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা ও দাতাদের কাছ থেকে ৮০ থেকে ৯০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে আমতলী পৌরশহরের ৩নং ওয়ার্ডের বটতলা এলাকায় নির্মাণ করেছেন কোটি টাকা মূল্যের বিশাল একটি বহুলতল আলিশান ভবন। খোজ নিয়ে জানা যায়, শিক্ষক মহসিন বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসায় চাকুরী দেয়ার কথা বলে শতাধিক শিক্ষিত নারী পুরুষের কাছ থেকে ২০ থেকে ২৫ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এমন সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম দিয়ে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তার মধ্যে অনেকগুলো প্রতিষ্ঠানের কোন অস্তিত্বই নেই। ভূক্তভোগিরা প্রধান শিক্ষক মহসিন মোল্লার অনিয়ম দুনীর্তির তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য দূনীর্তি দমন কমিশন ও প্রশাসনের উচ্চ মহলের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছেন। এ বিষয়ে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক মহসিন মোল্লার কাছে মুঠোফোনে সাংবাদিক পরিচয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে যতগুলো অভিযোগ আনা হয়েছে তা আদৌ সঠিক নয়। পারিবারিক ও সামাজিক কারনে আমাকে ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য ওই অভিযোগগুলো আনায়ন করা হয়েছে। আপনার শিক্ষকও তো আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে। মোটা অংকের টাকা নিয়ে তার মেয়েকে চাকুরী দেওয়ার কথা বলে চাকুরী দেননি এবং অদ্যবদি তার দেওয়া টাকা ফেরতও দেননি, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

যারা চাঁদাবাজি করতে আসবে তাদের খাম্বার সাথে বেঁধে রাখবেন- মুফতী ফয়জুল করিম

বরগুনার আমতলীতে এক স্কুল শিক্ষকের বিরুদ্ধে চাকুরি দেওয়ার প্রলোভনে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ!

আপডেট টাইম : ০২:১৩:৫১ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ মার্চ ২০২২

ব্যুরো প্রধান
বরগুনার আমতলী উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের ৪৫নং হলদিয়া হাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মহসিন মোল্লার বিরুদ্ধে শিক্ষিত বেকার নারী- পুরুষদের চাকুরী দেয়ার কথা বলে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি উত্তর পশ্চিম চিলা বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ একাধিক বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক- শিক্ষিকা হিসেবে চাকুরি দেওয়ার নামে বিভিন্ন খরচ দেখিয়ে ওই টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। ভূক্তভোগীরা দূর্নীতি দমন কমিশন ও প্রশাসনের উচ্চ মহলের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছেন। ভূক্তভোগীদের সূত্রে জানা যায়, শিক্ষক মহসিন মোল্লা দীর্ঘদিন ধরে এলাকার যুবক যুবতীদের বেকারত্বের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বেশ কিছু বেকার, শিক্ষিত নারী ও পুরুষদেরকে টার্গেট করে বিভিন্ন বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসায় চাকরি দেওয়ার কথা বলে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এমনকি শিক্ষক মহসিন মোল্লা বিভিন্ন বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসার অনুমোদন করিয়ে দেওয়ার কথা বলে ওই সকল প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতাদের কাছ থেকেও লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। চাওড়া পাতাকাটা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রবীণ শিক্ষক অতুল চন্দ্র শীল বলেন, গত চার বছর আগে তার মেয়ে রিনাকে উত্তর পশ্চিম চিলা বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার কথা বলে শিক্ষক মহসিন মোল্লা তার কাছ থেকে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা নিয়ে একটি ভুয়া নিয়োগপত্র ধরিয়ে দিয়েছে। তিনি আরও বলেন, শিক্ষক মহসিন মোল্লা আমার ছাত্র। ওকে আমি খুব ভালো জানতাম। আমার মেয়ের বেকারত্বের সুযোগে অন্তত আমার সাথে এরকম কাজ করাটা মহসিনের ঠিক হয়নি। আমার অবাক লাগে মহসিন যেখানে আমার মেয়েকে চাকরি দেওয়ার কথা বলছে বাস্তবে ওখানে ওই নামে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই নেই। আমি এরকম জঘন্য ঘটনার সঠিক বিচার এবং আমার দেওয়া টাকা ফেরৎ চাই। আরেক ভূক্তভোগী মকবুল আকন জানায়, তার মেয়েকে চাকুরি দেওয়ার কথা বলে মহসিন মোল্লা ২০১৫ সালে ৫০ হাজার টাকা নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো চাকরি দিতে পারেনি। টাকা ফেরত চাইলে মহসিন মোল্লা উল্টো আরও ২ লক্ষ টাকা দাবি করেন। অন্যথায় আর একজনকে নিয়োগ দিয়ে মকবুল আকনের দেয়া ৫০ হাজার টাকা ফেরত দিবে বলে মহসিন মোল্লা তাকে জানিয়ে দেয়। ভুক্তভোগী সেরাজ হাওলাদার জানিয়েছেন, গত ৪ বছর পূর্বে আমার ছেলে জহিরুলের চাকরির জন্য শিক্ষক মহসিন মোল্লা আমার কাছ থেকে নগদ ১ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা নিয়েছে। অদ্য পর্যন্ত আমার ছেলের চাকুরির কোন খবর নেই। ভূক্তভোগী সোহরাব হাওলাদার বলেন, গত ৩ বছর পূর্বে তিনি জমি বন্ধক রেখে মাদ্রাসায় চাকুরির জন্য শিক্ষক মহসিন মোল্লাকে ৮৫ হাজার টাকা দিয়েছেন। কিন্তু টাকা ফেরৎ পাননি ও চাকুরিটাও অদ্যবদি হয়নি। এ বিষয়ে আরো এক ভূক্তভোগী অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মোতালেব মাস্টার জানিয়েছেন, গত ৩ থেকে ৪ বছর পূর্বে আমার মেয়েকে চাকুরি দেওয়ার কথা বলে শিক্ষক মহসিন মোল্লা আমার কাছ থেকে নগদ ২ লক্ষ টাকা নিয়েছে। এখন পর্যন্ত চাকুরির কোন খবর নাই, টাকা চাইলে বিভিন্ন রকমের তালবাহানা করে। শিক্ষক মহসিন মোল্লার অনিয়মের বিষয়ে আরেক ভূক্তভোগী মোঃ নূহু মোল্লা জানিয়েছেন, ২০১৩ সালে মহসিন মোল্লা আমাকে চাকরি দেওয়ার কথা বলে ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার মৌখিক চুক্তি করে নগদ ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা নিয়ে মধ্য পশ্চিম চিলা বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়। ওখানে এ নামে কোন প্রতিষ্ঠান না থাকায় আমরা ওই সময় সকল শিক্ষক মিলে ১ লক্ষ টাকা খরচ করে একটি টিনসেট স্কুল ঘর নির্মাণ করে ওই বিদ্যালয়ের আমি প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করতে থাকি। হঠাৎ একদিন মহসিন মোল্লা আমার কাছে আরও ২ লক্ষ টাকা দাবি করে। আমি মহসিন মোল্লা দাবিকৃত ওই টাকা দিতে অস্বীকার করলে অন্য এক লোকের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে তাকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিয়ে আমাকে ওই পদ থেকে সরিয়ে উত্তর পশ্চিম চিলা বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগের ভূয়া কাগজ ধরিয়ে দেয়। আমি মহসিন মোল্লার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিবো। মহসিন মোল্লা শতাধিক বেকার নারী পুরুষদের সাথে প্রতারণা করে তাদের জীবনটা নষ্ট করে দিয়েছে। অপরদিকে উপজেলার দক্ষিণ পূর্ব সেকান্দারখালী বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা আব্দুল হক মাস্টারের কাছ থেকেও প্রতারক মহসিন মোল্লা স্কুল অনুমোদনের কথা বলে ৫৫ হাজার টাকা নিয়ে তার নিজের স্বাক্ষরিত একটি ভূয়া অনুমোদনের কাগজ ধরিয়ে দিয়েছেন। এভাবেই অসংখ্য শিক্ষিত বেকার নারী পুরুষ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা ও দাতাদের কাছ থেকে ৮০ থেকে ৯০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে আমতলী পৌরশহরের ৩নং ওয়ার্ডের বটতলা এলাকায় নির্মাণ করেছেন কোটি টাকা মূল্যের বিশাল একটি বহুলতল আলিশান ভবন। খোজ নিয়ে জানা যায়, শিক্ষক মহসিন বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসায় চাকুরী দেয়ার কথা বলে শতাধিক শিক্ষিত নারী পুরুষের কাছ থেকে ২০ থেকে ২৫ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এমন সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম দিয়ে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তার মধ্যে অনেকগুলো প্রতিষ্ঠানের কোন অস্তিত্বই নেই। ভূক্তভোগিরা প্রধান শিক্ষক মহসিন মোল্লার অনিয়ম দুনীর্তির তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য দূনীর্তি দমন কমিশন ও প্রশাসনের উচ্চ মহলের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছেন। এ বিষয়ে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক মহসিন মোল্লার কাছে মুঠোফোনে সাংবাদিক পরিচয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে যতগুলো অভিযোগ আনা হয়েছে তা আদৌ সঠিক নয়। পারিবারিক ও সামাজিক কারনে আমাকে ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য ওই অভিযোগগুলো আনায়ন করা হয়েছে। আপনার শিক্ষকও তো আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে। মোটা অংকের টাকা নিয়ে তার মেয়েকে চাকুরী দেওয়ার কথা বলে চাকুরী দেননি এবং অদ্যবদি তার দেওয়া টাকা ফেরতও দেননি, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।