ঢাকা ০৫:৪৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ জুলাই ২০২৪, ৮ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
কোটা সংস্কার আন্দোলন: সান্তাহারে ৩ ঘন্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ সিরাজদিখানে তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে হেনস্থার শিকার সাংবাদিক রাবি ছাত্রলীগ সভাপতির কক্ষে মিলল পিস্তল, সম্পাদকের কক্ষে ফেন্সিডিল আবু সাঈদের ধারণা ছিলো পুলিশ আমাকে গুলি করবে না মীরপুর গার্লস আইডিয়াল স্কুল থেকে কোটি কোটি টাকা লুটপাট ভাঙ্গায় চেয়ারম্যান গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত  যমুনার পানিতে কালিহাতীতে ৩০ হাজার পানিবন্দি মানুষ, নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত পদ্মায় অবৈধ বালি উত্তোলনে নদীগর্ভে বিলিন ১০টি বাড়িঘর, হুমকিতে শহর রক্ষা বাঁধ স্পীকারের সাথে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূতের বিদায়ী সাক্ষাৎ সিরাজদিখানে পুলিশের হামলার আহত সাংবাদিক সালমানকে দেখতে গেলেন ওসি

নিউমার্কেটে সংঘর্ষ: ২ হত্যার মামলায় গ্রেপ্তার নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা কলেজের ছাত্র ও নিউমার্কেট এলাকার ব্যবসায়ী-কর্মচারীদের মধ্যে সংঘর্ষে দুই হত্যায় আলাদা মামলা হলেও শনিবার রাত পর্যন্ত কোনো গ্রেপ্তার নেই।

মঙ্গলবার রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় দিনভর সংঘর্ষে আহত নাহিদ হাসান (১৮) ও মোরসালিন (২৬) পরে মারা যান।

এদের মধ্যে নাহিদ হাসানকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করা হয়। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি মারা যান। এ হামলার একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে ফেসবুকে। যার সূত্র ধরে পুলিশ তদন্ত করছে বলে জানা গেছে।

তবে পুলিশ জানিয়েছে, সংঘর্ষে নিহত মোরসালিনের বিষয়ে এখনো অন্ধকারে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। শনিবার পর্যন্ত তাকে হত্যার কোনো ক্লু পায়নি তারা।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের নিউমার্কেট জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) শরীফ মোহাম্মদ ফারুকুজ্জামান দেশ রূপান্তরকে বলেন, নাহিদ হত্যায় জড়িত আসামিদের গ্রেপ্তারে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। অভিযান অব্যাহত আছে। আমাদের পাশাপাশি ডিবিও (পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ) ছায়া তদন্ত করছে। দুটি হত্যা মামলায় এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।

তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সংঘর্ষের দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার গুরুতর আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যাওয়া কুরিয়ার সার্ভিস কর্মী নাহিদ মিয়া সাধারণ পথচারী নন। নাহিদও সংঘর্ষে অংশ নেন।

তদন্ত সংশ্লিষ্ট ডিবির এক কর্মকর্তা বলেন, নাহিদ বাটা সিগন্যাল এলাকার যে প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন তার মালিক নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী। তা ছাড়া নাহিদের কর্মক্ষেত্রও ছিল নিউমার্কেট এলাকা। ঘটনার দিন মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে নাহিদ ব্যবসায়ী কর্মচারীদের পক্ষ নিয়ে পিকেটিংয়ে অংশ নেন। তিনি সামনের সারিতেই ছিলেন। দুপুরে ক্যাম্পাসের ভেতর ১০তলা ভবনের ছাদ থেকে ছাত্রদের ছোড়া ইট পরে নাহিদের মাথায়। সঙ্গে সঙ্গে তিনি মাটিতে ঢলে পড়েন। এ সময় কয়েকজন তাকে চড়-থাপ্পড় দেন। পরে হেলমেট পরা একজন তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করেন। সে চলে যাওয়ার পর হেলমেট পরা আরেকজন নাহিদকে আঘাত করে।

অপরদিকে একই দিনে সংঘর্ষে আহত মোরসালিন বৃহস্পতিবার ভোর ৪টা ৩৬ মিনিটে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

তার সুরতহাল প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, মোরসালিনের মাথায় মাঝখানে গভীর কাটা জখম রয়েছে। এ ছাড়া কপালের ডান পাশে, নাকের বাম পাশে জখম রয়েছে।

সুরতহাল প্রতিবেদনে ঘটনার প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ উল্লেখ করে, গত ১৯ এপ্রিল দুপুরে নিউমার্কেট এলাকায় ব্যবসায়ী ও ঢাকা কলেজের ছাত্রদের মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে গুরুতর আহত হয় মোরসালিন। তখন কয়েকজন যুবক তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলের আইসিইউতে ভর্তি করে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার ভোররাতে তার মৃত্যু হয়।

উল্লেখ্য, মোরসালিন ঢাকা নিউমার্কেটের একটি তৈরি পোশাকের দোকানে কাজ করতেন।

গত সোমবার রাতে নিউমার্কেটে দোকান কর্মচারীদের সঙ্গে ঢাকা কলেজের ছাত্রদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরদিন সকাল থেকে আবার দু’পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ বাধে। দিনভর সংঘর্ষে গুরুতর আহত নাহিদ ও মোরসালিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

সংঘর্ষ ও হতাহতের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে দুটি এবং নিহত দুজনের স্বজনরা দুটি মামলা করেছেন। এর মধ্যে পুলিশের ওপর হামলা-মামলায় বিএনপির এক নেতাসহ ২৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তারা ছাড়া সবগুলো মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় আসামির সংখ্যা ১ হাজার ৫৫০।

পুলিশের করা মামলায় বিএনপি নেতা মকবুল হোসেনকে শুক্রবার রাতে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

কোটা সংস্কার আন্দোলন: সান্তাহারে ৩ ঘন্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ

নিউমার্কেটে সংঘর্ষ: ২ হত্যার মামলায় গ্রেপ্তার নেই

আপডেট টাইম : ০৭:২২:৪৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ এপ্রিল ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা কলেজের ছাত্র ও নিউমার্কেট এলাকার ব্যবসায়ী-কর্মচারীদের মধ্যে সংঘর্ষে দুই হত্যায় আলাদা মামলা হলেও শনিবার রাত পর্যন্ত কোনো গ্রেপ্তার নেই।

মঙ্গলবার রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় দিনভর সংঘর্ষে আহত নাহিদ হাসান (১৮) ও মোরসালিন (২৬) পরে মারা যান।

এদের মধ্যে নাহিদ হাসানকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করা হয়। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি মারা যান। এ হামলার একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে ফেসবুকে। যার সূত্র ধরে পুলিশ তদন্ত করছে বলে জানা গেছে।

তবে পুলিশ জানিয়েছে, সংঘর্ষে নিহত মোরসালিনের বিষয়ে এখনো অন্ধকারে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। শনিবার পর্যন্ত তাকে হত্যার কোনো ক্লু পায়নি তারা।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের নিউমার্কেট জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) শরীফ মোহাম্মদ ফারুকুজ্জামান দেশ রূপান্তরকে বলেন, নাহিদ হত্যায় জড়িত আসামিদের গ্রেপ্তারে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। অভিযান অব্যাহত আছে। আমাদের পাশাপাশি ডিবিও (পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ) ছায়া তদন্ত করছে। দুটি হত্যা মামলায় এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।

তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সংঘর্ষের দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার গুরুতর আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যাওয়া কুরিয়ার সার্ভিস কর্মী নাহিদ মিয়া সাধারণ পথচারী নন। নাহিদও সংঘর্ষে অংশ নেন।

তদন্ত সংশ্লিষ্ট ডিবির এক কর্মকর্তা বলেন, নাহিদ বাটা সিগন্যাল এলাকার যে প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন তার মালিক নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী। তা ছাড়া নাহিদের কর্মক্ষেত্রও ছিল নিউমার্কেট এলাকা। ঘটনার দিন মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে নাহিদ ব্যবসায়ী কর্মচারীদের পক্ষ নিয়ে পিকেটিংয়ে অংশ নেন। তিনি সামনের সারিতেই ছিলেন। দুপুরে ক্যাম্পাসের ভেতর ১০তলা ভবনের ছাদ থেকে ছাত্রদের ছোড়া ইট পরে নাহিদের মাথায়। সঙ্গে সঙ্গে তিনি মাটিতে ঢলে পড়েন। এ সময় কয়েকজন তাকে চড়-থাপ্পড় দেন। পরে হেলমেট পরা একজন তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করেন। সে চলে যাওয়ার পর হেলমেট পরা আরেকজন নাহিদকে আঘাত করে।

অপরদিকে একই দিনে সংঘর্ষে আহত মোরসালিন বৃহস্পতিবার ভোর ৪টা ৩৬ মিনিটে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

তার সুরতহাল প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, মোরসালিনের মাথায় মাঝখানে গভীর কাটা জখম রয়েছে। এ ছাড়া কপালের ডান পাশে, নাকের বাম পাশে জখম রয়েছে।

সুরতহাল প্রতিবেদনে ঘটনার প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ উল্লেখ করে, গত ১৯ এপ্রিল দুপুরে নিউমার্কেট এলাকায় ব্যবসায়ী ও ঢাকা কলেজের ছাত্রদের মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে গুরুতর আহত হয় মোরসালিন। তখন কয়েকজন যুবক তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলের আইসিইউতে ভর্তি করে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার ভোররাতে তার মৃত্যু হয়।

উল্লেখ্য, মোরসালিন ঢাকা নিউমার্কেটের একটি তৈরি পোশাকের দোকানে কাজ করতেন।

গত সোমবার রাতে নিউমার্কেটে দোকান কর্মচারীদের সঙ্গে ঢাকা কলেজের ছাত্রদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরদিন সকাল থেকে আবার দু’পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ বাধে। দিনভর সংঘর্ষে গুরুতর আহত নাহিদ ও মোরসালিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

সংঘর্ষ ও হতাহতের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে দুটি এবং নিহত দুজনের স্বজনরা দুটি মামলা করেছেন। এর মধ্যে পুলিশের ওপর হামলা-মামলায় বিএনপির এক নেতাসহ ২৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তারা ছাড়া সবগুলো মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় আসামির সংখ্যা ১ হাজার ৫৫০।

পুলিশের করা মামলায় বিএনপি নেতা মকবুল হোসেনকে শুক্রবার রাতে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।