মহম্মদপুর প্রতিনিধি
বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না মাগুরা জেলার মহম্মদপুর উপজেলার জাতীয় পার্টির নতুন কমিটির। ১৯ মাদক ব্যবসায়ীকে নিয়ে জাতীয় পার্টি মহম্মদপুর থানা কমিটি ঘোষণার পর বিতর্ক আরও বেড়েছে। দলের ‘ত্যাগী ও নির্যাতিত’ নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে মাদক ব্যবসায়ী, বৃদ্ধ ও অপরিচিতদের দিয়ে কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল তীব্র আকার ধারণ করেছে। আর্থিক লেনদেন ও ব্যক্তিগত আনুগত্যের ভিত্তিতে পকেট কমিটি হয়েছে বলে অভিযোগ করে মহম্মদপুরের অনেক জ্যেষ্ঠ নেতাই এই কমিটি প্রত্যাখ্যান করেছেন। দলের দায়িত্বশীল নেতাদের মতামত না নিয়ে এই কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে বলে নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেছেন।
জানা যায়, মাগুরায় চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীকে সাধারণ সম্পাদক করা নিয়ে সচেতন মহলের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। শুক্রবার ১৯ আগষ্ট ২০২২ইং তারিখ সকালে মাগুরা মহম্মদপুর উপজেলায় উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের মাঠে জাতীয় পার্টির এক সম্মেলনের মাধ্যমে ১৯জন মাদক ব্যবসায়ীসহ ১০১ জনের নাম দিয়ে এ কমিটি ঘোষণা করা হয়। এসময় চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী মুরাদ আলীকে সাধারণ সম্পাদক করায় এলাকার সচেতন মহলের মধ্যে শুরু হয়েছে, নানাবিধ গুণজন, মুরাদের মত মাদক ব্যবসায়ী সাধারণ সম্পাদক হলে সমাজের নৈতিক অবক্ষয়ের কোন মাত্রায় পৌছেছে তা নিয়েও মানুষ প্রশ্ন তোলেন।
তথ্যনুসন্ধানে জানা যায়, মাগুরা জেলার মহম্মদপুর থানার বালিদিয়া ইউনিয়নের মৌলি গ্রামে মৃত ওহেদ আলীর ছোট ছেলে মুরাদ আলী অভাবের তাড়নায় মোটরসাইকেল চুরির পেশা হিসাবে বেছে নেন এবং বেশ কিছু জায়গা ধরাও পড়ে। থানায় মামলাও রয়েছে তার নামে। এলাকার লোকজন তাকে ভাল হওয়ার সুযোগ দেবার জন্য গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তার স্ত্রী শ্যামলী মুরাদকে বালিদিয়া ইউনিয়নের মহিলা সদস্য হিসাবে নির্বাচিত করেন। কিন্তু চোরের না শোনে ধর্মের কাহিনী। নির্বাচিত হওয়ার কিছু দিনে মধ্যেই ডিবি পুলিশের হাতে ইয়াবার বড় একটি চালানসহ নিজ বাড়িতে গ্রেফতার হন স্ত্রী শ্যামলী মুরাদ। উদ্ধার হয় পাসপোর্টের ব্যবহারিত নকল সিল ও মোটরসাইকেল চুরির নানান যন্ত্রপতি। সাবেক মহম্মদপুর উপজেলার পলাশ বাড়ী ইউনিয়নের রবিউল চেয়ারম্যানের চেষ্টায় জেল থেকে বেরিয়ে আর পিছনে দিকে ফিরে তাকাতে হয়নি তার। টেকনাফ থেকে বিভিন্নভাবে ইয়াবা চালান আনেন মুরাদ আলী, আর সেগুলো সারা দেশে পাইকারি বিক্রি করেন। এখানে কোন খুচরা বিক্রি করেন না। যশোর, নড়াইল কালিগঞ্জ, মাগুরা ফরিদপুরসহ বাংলাদেশের মাদকের বড় একটি নেটওয়ার্ক নিয়ন্ত্রণ করেন এই চোর এবং মাদক সম্রাজ্ঞী দম্পতি। তথ্য বলছে মুরাদ আলী কোনও চাকুরি বা ব্যবসা করেন না তবে বিলাসি জীবন জাপন ও লাখ লাখ টাকা খরচ করে আলিশান বাড়ি নির্মান করেছেন মৌলি থেকে এসে মহম্মদপুর থানাধীন গোপীনাথপুর বাজারের পাশে। মুরাদ আলী ট্যুরে যান বিমানে যশোর টু ঢাকা, ঢাকা টু কক্সবাজার। তিনি নামিদামী ব্যন্ডের গাড়ীতে চলাফেরা করেন। মুরাদ এখন বেশ কিছু টাকার মালিক হয়েছে এই মাদক ব্যবসার মাধ্যমে সমাজের যুবক সমাজকে নষ্ট করে, নেশা ও বিপথগামী করেছে, মুরাদের এ বিষয় গুলো নিশ্চিত করেছেন তার নিজ ইউনিয়ন বালিদিয়া ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান মফিজুর রহমান মিনাহ।
মহম্মদপুর থানা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক মাদক সম্রাট মুরাদ আলীকে আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে এই পদ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ নেতাকর্মীদের। তারা বলেন, মুরাদ আলী এর আগে কোনোদিন জাতীয় পার্টির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলো না, আর মুরাদের সুত্র ধরেই ১৯ জন মাদক ব্যবসায়ী দলের মধ্যে প্রবেশ করতে সক্ষম হয়েছে।
উক্ত সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সেলিনা হাসান আহবায়ক, জাতীয় পার্টি, জেলা শাখা মাগুরা, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খান রবিউল হক মিঠু, সদস্য সচিব, জাতীয় পার্টি, জেলা শখা মাগুরা। আরো বিস্তারিত আসিতেছে আগামী পর্বে…..।
শিরোনাম :
মাগুরায় থানা কমিটিতে ১৯ মাদক ব্যবসায়ী: মাদকের গডফাদার সাধারণ সম্পাদক
- খবর বাংলাদেশ ডেস্ক :
- আপডেট টাইম : ০৪:১১:৩০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ অগাস্ট ২০২২
- ১০০৬ বার পড়া হয়েছে
ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ