মো; বাবুল হোসেন পঞ্চগড় :
সদর উপজেলার ১নং সদর ইউনিয়নে চুরির অপরাধে যুবককে ইউনিয়ন পরিষদে আটকে রাখার পর রহস্যজনক আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে বৃহস্পতিবার (২৫- আগস্ট) সকালে এই স্পর্শ কাতর ঘটনাটি ঘটে। মৃত যুবক মোঃ সুজন (২৫) ইউনিয়নের গোয়ালপাড়া গ্রামের মৃত কছিমদ্দিন কালু এ ছেলে । প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী স্থানীয় মসজিদের ব্যাটারি চুরির অভিযোগে মোঃ সুজন ইসলাম (২৫) ও মোঃ জাহেদুল হক (৩৭)’ কে ইউনিয়ন পরিষদের দ্বিতীয় তলায় আটকে রাখা হয়। সকালবেলা মোঃ সুজন ২৫ এর ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পেয়ে সদর থানা পুলিশের কাছে জানালে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতনদের জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেন । ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ ইমরান হোসেন বলেন, সুজনের বাড়ি আমার বাড়ির পাশে । তার পরিবারে স্ত্রী, দুই সন্তান একজন ছেলে একজন মেয়ে এবং তার মা আছে । সে নেশায় আসক্ত । সে নিয়মিতভাবে চুরির সাথে সম্পৃক্ত । কিছুদিন আগে তার একটা চুরির ঘটনা সবাই জানাজানি হলে সে কয়েকদিন যাবত বাসায় আসেনি। এমতাবস্থায় গতকালকে তাকে জগদল বাজারে দেখতে পেয়ে বাসায় আসতে বলি। সাথে একটা ছেলেকে দিয়ে তাকে বাসায় পাঠিয়ে দেই । পরে রাত্রে যখন আমি বাসায় ফিরি এসে দেখি বাসায় অনেক লোক সমাগম সৃষ্টি হয়েছে । পরবর্তীতে জনসম্মুখে এ স্থানীয় মসজিদের ব্যাটারি চুরির বিষয়টি স্বীকার করেন এবং তার সাথে জাহিদুল ইসলাম নামে এক যুবক জড়িত ছিল বলে জানান। পরে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও গ্রাম পুলিশের সহযোগিতায় তাকেও সেখানে উপস্থিত করা হয় । পরদিন সকালে সুজন মসজিদের ব্যাটারি ফিরিয়ে দেওয়ার কথা বললে সুজন ও তার সাথে থাকা জাহেদুল ইসলামকে ইউনিয়ন পরিষদ রুমে আটকে রাখার অনুরোধ জানান সস্থানীয়রা। সকলের অনুরোধে ইউনিয়ন পরিষদের দ্বিতীয় তলায় সুজন ও জাহিদুল কে পৃথক দুটি রুমে আটকে রাখা হয় । সেখানে তাদের দেখাশোনার জন্য দুইজন গ্রাম পুলিশকে দায়িত্বব দেওয়া হয় । সকাল আনুমানিক ৬.২০ মিনিটে গ্রাম পুলিশ বাজারে নাস্তা আনতে গেলে এ সময় গলায় গামছা পেচিয়ে সুজন আত্মহত্যা করে । পরে খবর পেয়ে দ্রুত ইউনিয়ন পরিষদে উপস্থিত হই ও সদর থানা পুলিশের কাছে বিষয়টি অবহিত করি । পুলিশ এসে ঝুলন্ত অবস্থায় থেকে লাশ নামিয়ে ময়নাতনদের জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেন । দায়িত্বরত গ্রাম পুলিশ দুজনের একজন বলেন , সকাল সাড়ে সাতটার সময় আমি বাসায় নাস্তা করার জন্য যাই এবং অপরজন বাজারে নাস্তা আনতে যায় সে ফিরে এসে দেখে সুজন গলায় গামছা পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে । তাৎক্ষণিক বিষয়টি চেয়ারম্যান সাহেব’কে অবহিত করি । রাত্রে যখন সুজন কে ইউনিয়ন পরিষদ রুমে আটকে রাখা হয় তখন সে প্যান্ট ও গেঞ্জি পড়া ছিল । তার সাথে গামছা আমি দেখিনি । দুজন ব্যক্তিকে ইউনিয়ন পরিষদ রুমে আটকে রেখে দুজন গ্রাম পুলিশ একসাথে বাইরে যাওয়াটাকে রহস্যজনক মনে করছেন অনেকেই । এমনকি তারা চুরি করে থাকলে তাদেরকে পুলিশের সোপর্দ না করে ইউনিয়ন পরিষদ রুমে সারারাত আটকে রাখা,যখন নিয়ে আসা হয় তখন গ্রাম পুলিশ তার কাছে গামছা দেখেনি পুরো বিষয়টি খুবই রহস্যজনক দাবি করছেন স্থানীয়রা । এতে এলাকায় বেশ চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে সদর থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ মোঃ আব্দুল লতিফ মিঞা জানান, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের পর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে । মৃতের পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ কোন লিখিত অভিযোগ করেন নি । অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে । কেউ অভিযোগ করলে বা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে ।