মাহামুদুন নবী (স্টাফ রিপোর্টার) :
মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার বাবুখালী ইউনিয়নের ধুলজোড়া চুড়ারগাতি পিসি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী ৪টি পদের বিপরীতে ৪৯ লাখ টাকায় নিয়োগে জন্য ৪৯ লাখ টাকা ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। আগামী কাল শনিবার (২৭ আগস্ট) দুপুর ২টায় লিখিত পরিক্ষার সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। একাধিক আবেদনকারীর লিখিত অভিযোগ, নিয়োগ পাবেনা এমন একটি অংশকে প্রবেশপত্র দেওয়া হয়নি, যাতে তাঁরা পরীক্ষায় অংশ নিতে না পারেন।
চাকরী হবে এমন প্রার্থীদের একটি অংশকে মাত্র একদিন আগে গোপনে ২৫ আগস্ট বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় প্রবেশপত্র বিতরণ করা হয়েছে। আগে থেকেই মোটা অংকের ঘুষের বিনিময়ে আগে থেকেই চাকরি কারা পাবে তা নির্ধারণ করে রেখেছেন বলে তাদের অভিযোগ।
প্রবেশপত্র না পাওয়ায় ওই পরিক্ষায় অংশগ্রহণে ইচ্ছুক অন্তত ৬জন পরিক্ষার্থীর পরিক্ষায় অংশগ্রহণ অনিশ্চিত হয়ে গেছে।
অফিস সহায়ক পদের বিপরীতে প্রার্থী অসিত কুমার বিশ্বাস, স্বপন কুমার বিশ্বাস, সুজন কুমার বিশ্বাস, সোহাগ বিশ্বাস, পরিচ্ছন্ন কর্মী পদের প্রার্থী গনেশ বিশ্বাস ও আয়া পদের প্রার্থী ববিতা মন্ডল লিখিত অভিযোগে
জানান- সরকারের মাধ্যমিক বেসরকারি এমপিওভুক্ত মাধ্যমিক স্কুলে চাকুরি নিয়োগ বিধিমালা ২০২১ এর গেজেট মোতাবেক যে কোন ধরনের নিয়োগ পরিক্ষার কমপক্ষে ৩ কর্মদিবস হাতে রেখে প্রবেশপত্র বিতরণের নিয়ম থাকলেও স্কুল কর্তৃপক্ষ সে নিয়ম মানেননি।
শনিবার স্কুল বন্ধের মধ্যে পরিক্ষার সময় নির্ধারণ করে মাত্র একদিন আগে বৃহস্পতিবার পছন্দের প্রার্থীদের একটি অংশের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পরীক্ষার প্রবেশ পত্র দিয়ে আসা হয়।
আবেদনকারী অধিকাংশ প্রার্থীই বাড়িতে থাকেননা নদ না। প্রার্থীদেরর মধ্যে বেশ কয়েকজন জেলার বাইরে বিভিন্ন জায়গায় বে সরকারি চাকরিতে রয়েছেন।
বৃহস্পতিবার বিকালে প্রবেশ পত্র পাওয়ার খবর জানতে পারলেও পরদিন শুক্রবারের ছুটি থাকায় তারা নিজ নিজ প্রতিষ্ঠান থেকে ছুটি নিতে পারেননি। অন্যদিকে ১হাজার টাকার ব্যাংক ড্রাফট এর বিনিময়ে আবেদন করেও তারা নিয়োগ পরিক্ষায় অংশগ্রহণ করতে না পেরে জেলা প্রশাসক ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবরে লিখিত অভিযোগের মাধ্যমে অবৈধ এ নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধের আবেদন জানিয়েছেন।
পদ প্রত্যাশিরা সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, এ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি রসকান্ত বিশ্বাসও প্রধান শিক্ষক শ্রীকান্ত বিশ্বাস যৌথভাবে অফিস সহায়ক পদের বিপরীতে ১২ লাখ টাকার চুক্তিতে শংকর বিশ্বাস
নামে একজনকে নিয়োগ দিতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন।
এছাড়া ল্যাব এসিস্টেন্ট পদে সৌরভ রায় কে ১৫লাখ টাকা, আয়া পদে নিস্কৃতি বিশ্বাস কে ১০লাখ টাকা, পরিচ্ছন্ন কর্মী হিসেবে মনোজিত বিশ্বাসকে ১২লাখ টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দিতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে।
উল্লেখিত চার ব্যক্তিকে যে কোন উপায়ে নিয়োগ পাইয়ে দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। আমরা যেন নিয়োগ পরিক্ষায় অংশ নিতে না পারি সেজন্য তারা কৌশলে আমাদেরকেনিয়োগ পরিক্ষা থেকে দুরে রাখতে প্রবেশপত্র বিতরণ করেননি। এ ব্যাপারে প্রমাণ দেয়ার মত তাদের কথপোকথনের রেকর্ড তাদের কাছে আছে বলে দাবি করেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মাগুরা জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আলমগীর কবির সাংবাদিকদের জানান- এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ঠ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও ডিজির প্রতিনিধি সিদ্ধান্ত নেবেন। প্রবেশপত্র দেয়ার বিষয়টি আমাদের এখতিয়ারের মধ্যে নেই।
অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক শ্রীকান্ত বিশ্বাস প্রবেশপত্র বিতরণ না করা ও ছুটির মধ্যে প্রবেশপত্র বিতরণে অনিয়মের বিষয়ে জানান, আমরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে বৃহস্পতিবার চিঠি দিয়েছি।
হাতে ৩টি কর্মদিবস রেখে প্রবেশপত্র বিতরণ এর সরকারি নিয়ম বিষয়ে তিনি বলেন, অনেক সময় দিনের দিন প্রবেশপত্র দিয়েও নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্নকরা হয়। নিয়োগ প্রক্রিয়া স্বচ্ছতার সঙ্গেই হবে। কোনপ্রকার টাকাপয়সা লেনদেনের খবর সঠিক নয়।