মাহামুদুন নবী (স্টাফ রিপোর্টার):—
মাগুরা মহম্মদপুরে ইন্টারস্কুল ফুটবল খেলা নিয়ে বিনোদপুর এলাকায় দুই দলের সমর্থকদের মধ্যে দ্বন্দের জের ধরে প্রতিপক্ষকে কুপিয়ে জখম, দোকানপাটে ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে । এ সময় ৫ জন আহত হয় এছাড়া ২৫ টি দোকানপাটে হামলা ভাংচুর এবং কোটি টাকার ও বেশি মালামাল লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পুলিশ দু’পক্ষের ৭ জনকে আটক করে । মঙ্গলবার দুপুরে ও রাতে উপজেলার বিনোদপুরে এ ঘটনা ঘটে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার বিনোদনপুর বি.কে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে ঘুল্লিয়া আলীয়া মাদ্রাসা ফুটবল দল ও রাড়ীখালি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ফুটবল দলের মধ্যে ফুটবল খেলা অনুষ্ঠিত হয়। খেলা নির্ধারিত সময়ে গোলশূন্য ড্র হলে টাইব্রেকার চলাকালীন সময়ে দুইদল সমর্থকদের মাঝে ধাক্কাধাক্কি হয়। একপর্যায়ে উত্তেজিত দর্শকদের মধ্যে হাতাহাতিও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। পরে বিষয়টি পুলিশ এসে নিয়ন্ত্রণ করে এবং সন্ধ্যায় থানায় বসে সমাধান করা হবে বলে দুপক্ষকে তাৎক্ষনিক শান্ত করে। রাত আটটার দিকে থানায় দুপক্ষকে নিয়ে ওসি ও স্থানীয় চেয়ারম্যান বসে বিষয়টির সুন্দর সমাধান করে দেন। পরে রাড়ীখালির সমর্থকরা বাড়ি যাওয়ার সময় উপজেলার যশপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে পৌঁছালে ঘুল্লিয়ার সমর্থকরা জাহাঙ্গীর মেম্বার, রাজন ও বকুলের নেতৃত্বে তাদের দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে অর্তকিত হামলা চালিয়ে কুপিয়ে ও হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে রাজিব ও কালাসহ পাঁচজনকে আহত করে। এসময় দুটি মোটরসাইকেলও ভাংচুর করা হয়। বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজিত জনতা বিনোদন বাজারে ঘুল্লিয়া গ্রামের ব্যবসায়ীদের কমপক্ষে ২৫টি দোকানপাট ভাংচুর ও লুটপাট করে নিয়ে যায়। এর মধ্যে অনিমেশ কুমার রায় নামে এক ব্যবসায়ীর দুটি দোকান ভাংচুর করে কমপক্ষে ৫০ লক্ষ টাকার মালামাল লুটপাট করা হয় বলে তিনি অভিযোগ করে বলেন। এছাড়া অন্যান্যদের সাথে কথা বললে তারা জানায় ২৫ টি দোকানপাটে প্রায় ২ কোটি টাকার মালামাল লুটপাট হয়েছে।
পুলিশের উপস্থিতিতেই ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়েছে বলে ক্ষতিগ্রস্থ একাধিক ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে জানান। তারা বলেন তিন ঘন্টা ব্যাপি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালানো হয়েছে।
আহতদের মধ্যে রাজিবকে মাগুরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা গ্রহন করে। রাজিবের অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার ট্রমা হাসপাতালে পাঠানো হয়।
বিনোদনপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান শিকদার মিজানুর রহমান জানান, বিনোদপুর বাজারে ব্যাপক পুলিশ মোতায়েন থাকা অবস্থায় ব্যবসায়ীদের দোকানঘরে ১৯৭১ সালের মত তান্ডব চালিয়ে লুটপাট করা হয়েছে । এ লুটপাটের কারনে ব্যবসায়ীরা অনেক ক্ষতির মধ্যে পড়ে গেল।
মহম্মদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রামানন্দ পাল বলেন, ফুটবল খেলা নিয়ে সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে বিষয়টি জানতে পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছিলাম। ভাংচুর ও লুটপাটের বিষয়টি জানতে পেরে ক্ষতিগ্রস্থ দোকানঘর পরিদর্শন করেছি।
মহম্মদপুর থানার ওসি অসীত কুমার রায় বলেন, পুলিশের উপস্থিতিতে দোকান ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়েছে বিষয়টি সঠিক নয়। হামলার খবর পেয়ে দ্রত ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়। এখনও অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।