মঙ্গলবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৩, ১২:৩৬ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম :
সুষ্ঠু নির্বাচনের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছে ইসি শেখ হাসিনার জন্মদিন বিশেষ ভাবে পালন করলেন মনোনয়ন প্রত্যাশী—হাসিব আলম তালুকদার বিএনপি মাহুত ছাড়া পাগলা হাতিতে পরিনত হয়েছে—জাহাঙ্গীর কবির নানক সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর শ্রীপুর কুছাইছাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শতভাগ ভালো কাজ হচ্ছে জানালেন এলাকাবাসী ত্রিশালে চরিত্রহীন শিক্ষককে মাদ্রাসায় ফিরিয়ে আনতে ইমামকে লাঞ্চিত করলো কমিটি! আজ পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) কোনো স্যাংশনকে ভয় পাই না: প্রধানমন্ত্রী ভাষানটেকে কার্পেটিং রাস্তা নির্মাণ কাজের উদ্বোধন নিয়োগকালেও বয়স জালিয়াতি: বিআইডব্লিউটিএর হিসাব সহকারীর কোটি-কোটি টাকার সম্পদ! জাতির পিতার ছবি অবমাননাকারী পেলেন জাতীয় শুদ্ধাচার পুরস্কার!
পিতা সংসদ সদস্য কন্যা এপিএস কুমিল্লা-৫ আসনের এমপি’র বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ!

পিতা সংসদ সদস্য কন্যা এপিএস কুমিল্লা-৫ আসনের এমপি’র বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ!

স্টাফ রিপোর্টার
কুমিল্লা-৫ (বুড়িচং ব্রাহ্মনপাড়া) আসনের এমপি আবুল হাসেম খানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে। অভিযোগটি দায়ের করেছেন বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট এর আইনজীবি ব্যারিস্টার সৈয়দ আবু কায়সার। দুদকের অভিযোগ সেলে দায়েরকৃত এই অভিযোগটি গত ১১/০৯/২০২২ ইং তারিখে গৃহিত হয়েছে । এছাড়া পৃথক আরেকটি অভিযোগ প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে জমা দেওয়া হয়েছে।
লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে যে, অত্র এলাকার স্বনামধন্য এমপি ছিলেন-সাবেক আইনমন্ত্রী, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট বার এসোসিয়েশনের নির্বাচিত সভাপতি এডভোকেট আবদুল মতিন খসরু। কিন্তু করোনাকালে তার মৃত্যুতে এই আসনটি শুন্য হলে আওয়ামী লীগ নেতা পরিচয়ে তদবির করে মনোনয়ন পেয়ে বিনা ভোটে নির্বাচিত হন, আবুল হাসেম খান। পরবর্তীতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত হয়েই তিনি নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি শুরু করেন। নিন্মে তার অনিয়ম ও দুর্নীতির ফিরিস্তি তুলে ধরা হলোঃ
১) এমপি আবুল হাসেম খান শুরুতেই- সংসদ সদস্যদের বিধি ভংগ করে তার মেয়ে নাজিয়া হাসেম তানজিমকে এপিএস নিয়োগ করেন। এরপর মেয়েকে দিয়ে প্রত্যেকটি স্তরে চাঁদাবাজি শুরু করেন। বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বুড়িচং ব্রাহ্মনপাড়ায় বেশ কিছু আওয়ামী লীগ চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মনোনয়ন দানের জন্য ১০ লক্ষ টাকা হারে মাথাপিছু (দলীয় ফান্ড) খাতের নামে চাঁদা আদায় করে তবেই দলীয় মনোনয়ন দেন। ফলে ১৬টি ইউনিয়নের মধ্যে মাত্র ২টিতে আওয়ামী লীগ প্রার্থী জয়লাভ করে বাকী ১৪টি বিদ্রোহী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জয়লাভ করেন।
২) যে দু’টি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ প্রার্থী জয়লাভ করেন তাদের মধ্যে বুড়িচং সদর বাকশিমূল ইউনিয়ন ও ব্রাহ্মনপাড়া সদর ইউনিয়ন পরিষদ। এই দুই চেয়ারম্যানের নিকট থেকেও বিপুল অংকের টাকা চাঁদা নেন । বিগত এক দেড় বছরে তিনি (এমপি আবুল হাসেম খান) বুড়িচং- ব্রাহ্মনপাড়ায় দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করেছেন। তার স্ত্রী রুবি আক্তার ও মেয়ে নাজিয়া হাসেম তানজিম এর ব্যাংক একাউন্ট নীরিক্ষা করলেই সকল দুর্নীতির রহস্য পাওয়া যাবে।
৩) এমপি আবুল হাসেম খান যে সকল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের থেকে-ক্ষমতা অপব্যবহার করে ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করেছেন তারা হলেন: বুড়িচং থানার; বুড়িচং সদর, বাকশিমূল ইউঃ; ষোলনল ইউঃ ও পীর যাত্রাপুর ইউঃ ও বারেল্লা উত্তর। ব্রাহ্মনপাড়া থানা ব্রাহ্মনপাড়া সদর, মাধবপুর ইউঃ; সিদলাই ইউঃ; চান্দলা ইউঃ, মালপাড়া ইউঃ ও শশীদল ইউনিয়ন পরিষদ। দুদকের মাধ্যমে তদন্ত করলেই বিস্তারিত অনিয়ম ও ঘুষের টাকা গ্রহণের তথ্য বেরিয়ে আসবে।
৪) বুড়িচং- ব্রাহ্মনপাড়া উপজেলার যে কোন সরকারি উন্নয়নমূলক কাজে অর্থ বরাদ্দ হলেই ওই কাজের টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ করেন এমপি আবুল হাসেম খান। কুমিল্লা সদরের এমপি বাহার ১০% এবং আবুল হাসেম খানকে ৫% নির্ধারিত হারে ঘুষ প্রদান না করলে কোন কাজে পাওয়া যায় না। বিগত দিনে কোনদিন এ ধরনের দুর্নীতির সন্মুখীন হয়নি। যিনি উপজেলা নির্বাচনে ৩৫ হাজারের ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছিলেন। তিনি কি ভাবে এমপি নির্বাচিত হলেন- তা কারো বোধগম্য নয়।
যেমনঃ আওয়ামী লীগ, ছাত্র লীগ ও যুব লীগের সকল থানা কমিটি ও ইউনিয়ন কমিটি গঠনে ১০ লক্ষ করে টাকা না দিলে কোন কমিটি অনুমোদন দেননি। যার ফলে আওয়ামী লীগ এর প্রত্যেকটি অংঙ্গ সংগঠন যেমনঃ- যুব লীগ, সেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্র লীগসহ সকল কমিটি সর্ব পর্যায়ে ২/৩ গ্রুপ হয়ে কাজ কর্ম চলছে, যা বর্তমান সরকারের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক বিধায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থী হিসেবে পরিগনিত।
৬) প্রত্যেক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের নিকট থেকে টিআর,কাবিখা, কাবিটা বরাদ্দে ৫% স্থায়ীভাবে ঘুষ না দিলে তিনি কাউকে ডিও লেটার দেন না। । কাজেই এমপি আবুল হাসেম খান এর এহেন দুর্নীতিমূলক আচরণে এলাকার জনগন হতাশাগ্রস্থ। এছাড়া বুড়িচং- ব্রাহ্মনপাড়া এলাকার প্রতিটি স্কুল, কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও বিদ্যুৎসাহী সদস্য পদে নিয়োগেও ২০ লক্ষ টাকা করে ঘুষ নেয়ার জনশ্রুতি রয়েছে। এলাকার পুলিশ সদস্য নিয়োগেও ঘুষ নেয়ার অভিযোগ আছে।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের স্বচ্ছতা বজায় রাখার স্বার্থে এবং আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয়ের পথ মসৃন করতে দুর্নীতিবাজ এই এমপিকে স্বীয় পদ থেকে অপসারণ ও তার অনিয়ম -দুর্নীতিগুলো দুদকের মাধ্যমে অনুসন্ধান ও তদন্ত করে দেখার দাবী করেছেন ব্যারিস্টার সৈয়দ আবু কায়সার।
এ সব অভিযোগের বিষয়ে মুঠোফোনে জানতে চাইলে বীর মুক্তিযোদ্ধা এমপি আবুল হাসেম খান জানান, দুদকের অভিযোগ সম্পর্কে তিনি অবগত নন। তবে যে সব অভিযোগ উল্লেখ করা হয়েছে তার একটিও সত্য নয়। তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা এধরণের মনগড়া ভিত্তিহীন অভিযোগ করে তার সুনাম ক্ষুন্ন করছেন বলেও তিনি দাবী করেন। তিনি যে কোন তদন্তের সম্মুখিন হতে প্রস্তুত আছেন বলেও জানান।

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published.




© All rights reserved 2018-2022 khoborbangladesh.com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com