ঢাকা ০৭:০২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কৃষিমন্ত্রীর পিএ মাকসুদের ঠিকাদারী বাণিজ্যে অতিষ্ট অধিদপ্তর!

বিশেষ প্রতিনিধি
কৃষিমন্ত্রীর পিএ মাকসুদের ঠিকাদারী বাণিজ্যে অতিষ্ট হয়ে পড়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধিনস্থ সবকটি অধিদপ্তর! কথায় কথায় ক্লিন ইমেজের মন্ত্রী ড.আব্দুর রাজ্জাকের নাম ভাঙিয়ে কর্মকর্তাদের ওপর প্রভাব সৃষ্টি করে ব্যক্তিগত ফায়দা হাসিলে অতি তৎপর এই পিএ। তার কারণে কৃষি মন্ত্রীও বিতর্কিত হতে চলেছেন বলে মন্তব্য করেছেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা ও কর্মচারি।
অনুসন্ধানে জানাগেছে, সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কৃষি মন্ত্রণালয়ের শতাধিক কর্মকর্তা নেদারল্যান্ডস সফর করেছেন। সেখানে কৃষি মন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে কর্মরত মাকসুদুল হাসান মাসুদ মাসে ১৬ হাজার টাকা বেতনে চাকরি করেও নিজ তথ্য গোপন করে ঠিকাদার হিসেবে নিজ মালিকানায় মেয়ের নামে মের্সাস নামিরা এন্টারপ্রাইজ, কালিপুর ধনবাড়ী, টাঙ্গাইল পরিচয়ে নেদারল্যান্ডস সফর করছেন যা তার নিয়োগর সাথে সাংঘর্ষিক। তিনি নামিরা এন্টারপ্রাইজ লাইসেন্স দিয়ে কুমিল্লার পিডি ও বিএডিসির ইসিএইচডিপি’র পিডি থেকে নিয়মিত ঠিকাদারী কাজ করে আসছেন। মন্ত্রীর পিএ হিসেবে সরকারের বেতনভুক্ত কর্মচারী হয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ে ব্যবসা করার এখতিয়ার কি তার আছে? এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন খোদ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
নিজের নামে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান করে নিজ মন্ত্রণালয়ে কাজ করে বা টেন্ডারবাজি করে কৃষি মন্ত্রীকেও বিতর্কিত করছেন এই মাকসুদ। এলাকার লোকজন কাছে পিএ মাকসুদ মন্ত্রীর ক্যাশিয়ার হিসেবে পরিচিত। এর আগেও বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় অন্য মিডিয়ায় তার সম্পর্কে লেখা-লেখি হলেও মন্ত্রী মহোদয়ের নামে একছত্র আধিপত্য বিস্তার করে চলছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মাকসুদের বাসা ইস্টার্ন সার্কিট হাউজ-৩০, সার্কিট হাউজ রোড ঢাকা, বাসা ভাড়া ৫০ হাজার টাকা। এক মাত্র কন্যা নামিরা পড়া লেখা করে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল: কিডস টিউটোরিয়াল। সেখানে ১০ লাখ টাকা দিয়ে ভর্তি করানো হয়েছে। তার বিলাসবহুল জীবন-যাপন, প্রায়ই বিদেশ ভ্রমণ, গাড়ী-বাড়ী, নিজস্ব ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মন্ত্রণালয়ের একক আধিপত্যের কারণে এলাকার সবাই তাকে প্রতি-মন্ত্রী একান্ত লোক হিসেবে জানেন।
মিরপুরের ১২ নম্বর শাড়িপাট্টির পাশে ৮তম তলা বিশিষ্ট দুইটি বাড়ি, টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে শ্বশুরের নামে তিন কোটি টাকার বাড়ি করেছেন মাকসুদ। নিজ গ্রাম মুশুদ্দি ও শ্বশুর বাড়ি ধনবাড়ীর কালিপুরে প্রায় ৫০ একর জমি ক্রয় করেছে।
উল্লেখ্য, মাসুদের বড় ভাই বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের আশরাফুল হক হল ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সহ-সভাপতি ছিলেন। আরেক ভাই ও বোন’কে প্রক্সি দিয়ে খাদ্য ও কৃষি মন্ত্রণালয়ে নিয়োগ দিয়েছেন, যা দুদকে তদন্তাধীন অবস্থায় রয়েছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, মাকসুদের বাসা রাজধানীর ইস্টার্ন সার্কিট হাউসে। ৩০, সার্কিট হাউস রোড। যে বাসায় তিনি থাকেন সেটির ভাড়া মাসে ৫০ হাজার টাকা। একমাত্র মেয়ে নামিরা পড়ালেখা করে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলÑ কিডস টিউটোরিয়ালে। সেখানে মেয়েকে ভর্তি করতে নাকি ডোনেশন দিয়েছেন ১০ লাখ টাকা। তার বিলাসবহুল জীবন-যাপন, প্রায়ই বিদেশ ভ্রমণ, গাড়ি-বাড়ি, নিজস্ব ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান, মন্ত্রণালয়ে একক আধিপত্যের কারণে তার আচানক উত্থানে এলাকার সবাই অবাক। রাজধানীর মিরপুরের বেনারশি পল্লীর পাশে আটতলা বিশিষ্ট দুটি বাড়ি নির্মাণ ছাড়াও টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে শ্বশুরের নামে তিন কোটি টাকা ব্যয়ে মাসুদ করেছেন আরেকটি বাড়ি। নিজ গ্রাম মুশুদ্দি ও শ্বশুরবাড়ি ধনবাড়ীর কালিপুরে কিনেছেন পায় ৫০ একর জমি।
এছাড়া, মাসুদ ধনবাড়ী ভূষা মাল সমবায় সমিতির সদস্য, এসি বিনিময় বাস মালিক সমিতির সদস্য, টাঙ্গাইল জেলা ট্রাক মালিক সমিতির সদস্য। নিজের প্রভাব খাটিয়ে মাসুদ তার সাত মামাতো ভাই-বোন ও দুইজন খালাতো ভাইকে চাকরি দিয়েছেন। সারাদেশ থেকে খাদ্য মন্ত্রণালয় ও কৃষি মন্ত্রণালয়ে শতাধিক লোকের চাকরির তদবির করে হাতিয়ে নিয়েছেন বিপুল অংকের টাকা। এমনকি অবৈধভাবে অর্জিত টাকা দিয়ে টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে মৈত্রী হাসপাতালের মালিকও বনে গেছেন মাকসুদুল হাসান মাসুদ। এ বিষয়ে মুঠোফোনে মাকসুদুর রহমান মাসুদের বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি সরাসরি দেখা করার প্রস্তাব দেন। (চলবে)………..।

ট্যাগস

কৃষিমন্ত্রীর পিএ মাকসুদের ঠিকাদারী বাণিজ্যে অতিষ্ট অধিদপ্তর!

আপডেট টাইম : ০৩:৫৫:৪২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২২

বিশেষ প্রতিনিধি
কৃষিমন্ত্রীর পিএ মাকসুদের ঠিকাদারী বাণিজ্যে অতিষ্ট হয়ে পড়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধিনস্থ সবকটি অধিদপ্তর! কথায় কথায় ক্লিন ইমেজের মন্ত্রী ড.আব্দুর রাজ্জাকের নাম ভাঙিয়ে কর্মকর্তাদের ওপর প্রভাব সৃষ্টি করে ব্যক্তিগত ফায়দা হাসিলে অতি তৎপর এই পিএ। তার কারণে কৃষি মন্ত্রীও বিতর্কিত হতে চলেছেন বলে মন্তব্য করেছেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা ও কর্মচারি।
অনুসন্ধানে জানাগেছে, সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কৃষি মন্ত্রণালয়ের শতাধিক কর্মকর্তা নেদারল্যান্ডস সফর করেছেন। সেখানে কৃষি মন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে কর্মরত মাকসুদুল হাসান মাসুদ মাসে ১৬ হাজার টাকা বেতনে চাকরি করেও নিজ তথ্য গোপন করে ঠিকাদার হিসেবে নিজ মালিকানায় মেয়ের নামে মের্সাস নামিরা এন্টারপ্রাইজ, কালিপুর ধনবাড়ী, টাঙ্গাইল পরিচয়ে নেদারল্যান্ডস সফর করছেন যা তার নিয়োগর সাথে সাংঘর্ষিক। তিনি নামিরা এন্টারপ্রাইজ লাইসেন্স দিয়ে কুমিল্লার পিডি ও বিএডিসির ইসিএইচডিপি’র পিডি থেকে নিয়মিত ঠিকাদারী কাজ করে আসছেন। মন্ত্রীর পিএ হিসেবে সরকারের বেতনভুক্ত কর্মচারী হয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ে ব্যবসা করার এখতিয়ার কি তার আছে? এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন খোদ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
নিজের নামে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান করে নিজ মন্ত্রণালয়ে কাজ করে বা টেন্ডারবাজি করে কৃষি মন্ত্রীকেও বিতর্কিত করছেন এই মাকসুদ। এলাকার লোকজন কাছে পিএ মাকসুদ মন্ত্রীর ক্যাশিয়ার হিসেবে পরিচিত। এর আগেও বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় অন্য মিডিয়ায় তার সম্পর্কে লেখা-লেখি হলেও মন্ত্রী মহোদয়ের নামে একছত্র আধিপত্য বিস্তার করে চলছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মাকসুদের বাসা ইস্টার্ন সার্কিট হাউজ-৩০, সার্কিট হাউজ রোড ঢাকা, বাসা ভাড়া ৫০ হাজার টাকা। এক মাত্র কন্যা নামিরা পড়া লেখা করে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল: কিডস টিউটোরিয়াল। সেখানে ১০ লাখ টাকা দিয়ে ভর্তি করানো হয়েছে। তার বিলাসবহুল জীবন-যাপন, প্রায়ই বিদেশ ভ্রমণ, গাড়ী-বাড়ী, নিজস্ব ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মন্ত্রণালয়ের একক আধিপত্যের কারণে এলাকার সবাই তাকে প্রতি-মন্ত্রী একান্ত লোক হিসেবে জানেন।
মিরপুরের ১২ নম্বর শাড়িপাট্টির পাশে ৮তম তলা বিশিষ্ট দুইটি বাড়ি, টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে শ্বশুরের নামে তিন কোটি টাকার বাড়ি করেছেন মাকসুদ। নিজ গ্রাম মুশুদ্দি ও শ্বশুর বাড়ি ধনবাড়ীর কালিপুরে প্রায় ৫০ একর জমি ক্রয় করেছে।
উল্লেখ্য, মাসুদের বড় ভাই বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের আশরাফুল হক হল ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সহ-সভাপতি ছিলেন। আরেক ভাই ও বোন’কে প্রক্সি দিয়ে খাদ্য ও কৃষি মন্ত্রণালয়ে নিয়োগ দিয়েছেন, যা দুদকে তদন্তাধীন অবস্থায় রয়েছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, মাকসুদের বাসা রাজধানীর ইস্টার্ন সার্কিট হাউসে। ৩০, সার্কিট হাউস রোড। যে বাসায় তিনি থাকেন সেটির ভাড়া মাসে ৫০ হাজার টাকা। একমাত্র মেয়ে নামিরা পড়ালেখা করে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলÑ কিডস টিউটোরিয়ালে। সেখানে মেয়েকে ভর্তি করতে নাকি ডোনেশন দিয়েছেন ১০ লাখ টাকা। তার বিলাসবহুল জীবন-যাপন, প্রায়ই বিদেশ ভ্রমণ, গাড়ি-বাড়ি, নিজস্ব ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান, মন্ত্রণালয়ে একক আধিপত্যের কারণে তার আচানক উত্থানে এলাকার সবাই অবাক। রাজধানীর মিরপুরের বেনারশি পল্লীর পাশে আটতলা বিশিষ্ট দুটি বাড়ি নির্মাণ ছাড়াও টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে শ্বশুরের নামে তিন কোটি টাকা ব্যয়ে মাসুদ করেছেন আরেকটি বাড়ি। নিজ গ্রাম মুশুদ্দি ও শ্বশুরবাড়ি ধনবাড়ীর কালিপুরে কিনেছেন পায় ৫০ একর জমি।
এছাড়া, মাসুদ ধনবাড়ী ভূষা মাল সমবায় সমিতির সদস্য, এসি বিনিময় বাস মালিক সমিতির সদস্য, টাঙ্গাইল জেলা ট্রাক মালিক সমিতির সদস্য। নিজের প্রভাব খাটিয়ে মাসুদ তার সাত মামাতো ভাই-বোন ও দুইজন খালাতো ভাইকে চাকরি দিয়েছেন। সারাদেশ থেকে খাদ্য মন্ত্রণালয় ও কৃষি মন্ত্রণালয়ে শতাধিক লোকের চাকরির তদবির করে হাতিয়ে নিয়েছেন বিপুল অংকের টাকা। এমনকি অবৈধভাবে অর্জিত টাকা দিয়ে টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে মৈত্রী হাসপাতালের মালিকও বনে গেছেন মাকসুদুল হাসান মাসুদ। এ বিষয়ে মুঠোফোনে মাকসুদুর রহমান মাসুদের বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি সরাসরি দেখা করার প্রস্তাব দেন। (চলবে)………..।