ঢাকা ০২:২৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ জুলাই ২০২৪, ৮ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
কোটা সংস্কার আন্দোলন: সান্তাহারে ৩ ঘন্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ সিরাজদিখানে তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে হেনস্থার শিকার সাংবাদিক রাবি ছাত্রলীগ সভাপতির কক্ষে মিলল পিস্তল, সম্পাদকের কক্ষে ফেন্সিডিল আবু সাঈদের ধারণা ছিলো পুলিশ আমাকে গুলি করবে না মীরপুর গার্লস আইডিয়াল স্কুল থেকে কোটি কোটি টাকা লুটপাট ভাঙ্গায় চেয়ারম্যান গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত  যমুনার পানিতে কালিহাতীতে ৩০ হাজার পানিবন্দি মানুষ, নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত পদ্মায় অবৈধ বালি উত্তোলনে নদীগর্ভে বিলিন ১০টি বাড়িঘর, হুমকিতে শহর রক্ষা বাঁধ স্পীকারের সাথে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূতের বিদায়ী সাক্ষাৎ সিরাজদিখানে পুলিশের হামলার আহত সাংবাদিক সালমানকে দেখতে গেলেন ওসি

মহম্মদপুরে বন্ধ হচ্ছেনা বালু খাদকদের বালু উত্তোলন

মাহামুদুন নবী
মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার মধুমতি নদী থেকে অবৈধভাবে খননযন্ত্রের সাহায্যে বালু তোলা হচ্ছে। কোন ভাবেই বন্ধ হচ্ছেনা এ অবৈধভাবে বালু উত্তোলন। এলাকাবাসীর অভিযোগ, এ কারণে উপজেলার বালিদিয়া ইউনিয়নের হরেকৃষ্ণপুর ও পলাশবাড়ীয়া ইউনিয়নের ঝামা এলাকায় ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। উপজেলার নদীতীরবর্তী বাবুখালী ইউনিয়নের চরসেলামতপুর থেকে পলাশবাড়িয়ার কালিশংকরপুর পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার এলাকার দশটি গ্রাম ভাঙনের হুমকিতে পড়েছে।
উপজেলার হরেকৃষ্ণপুর ও ঝামা এলাকায় আজ রোববার (৯ অক্টোবর) দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, নদী পাড়ের প্রায় ১ কিলোমিটার এলাকা ভাঙনের শিকার হয়েছে। অনেক বাড়িঘর ফশলি জমি ও ঝামা বাজারের সড়কটির অর্ধেক নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এ কারণে ঝুঁকি নিয়ে লোকজন ওই সড়কে চলাচল করছেন।
হরেকৃষ্ণপুর এলাকায় একটি কার্গো জাহাজ রয়েছে। সেটি থেকে পাইপের সাহায্যে এক ব্যবসায়ীর খোলা মাঠে বালু তোলা হচ্ছে। জাহাজের সঙ্গে একটি খননযন্ত্র (ড্রেজার) রয়েছে।
জাহাজের কর্মচারীরা যন্ত্রের সাহায্যে নদী থেকে বালু জাহাজে তোলেন। পরে জাহাজ থেকে বালু খোলা জায়গায় নেওয়া হয়। তারা নদীর বিভিন্ন অংশ থেকে বালু তুলে বিভিন্ন ব্যবসায়ী, বাড়ি, পুকুর-ডোবা-বিল ও ঠিকাদারদের সরবরাহ করে থাকেন। শুধু তাঁদের নয়, আরও সাত থেকে দশটি খননযন্ত্র মধুমতি নদী থেকে বালু উত্তোলন করছে। ড্রেজার ও জাহাজের তিনজন মালিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, তাদের জাহাজ আছে। এর সঙ্গে একটি খননযন্ত্র আছে। এর সাহায্যে নদী থেকে বালু উত্তোলন ও সরবরাহ করেন। এক প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন, মহম্মদপুরের ক্ষমতাসীন রাজনীতিবিদদের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। তারা তাঁকে বালু তুলতে বলেছেন। জানতে চাইলে, মহম্মদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রামানন্দ পাল বলেন, মধুমতি নদীতে বালু উত্তোলনের কোনো অনুমোদন নেই। যদি কেউ তুলে থাকেন, তা অবৈধ।
তিনি আরও বলেন, আমাদের লোক গেলে বালু উত্তোলন বন্ধ থাকে। চলে আসার পর আবার হয়। এরপরও বিষয়টি দেখা হবে। তিনি বালু উত্তোলন বন্ধে ব্যবস্থা নেবেন বলে আশ্বাস দেন।
তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, আজ রোববারও নদী থেকে বালু উত্তোলন করতে দেখা গেছে। আজ রোববার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, মধুমতি নদীর হরেকৃষ্ণপুর, ঝামা এলাকায় পাইপ লাগিয়ে নদীর তলদেশ থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। ওই বালু নদীর পাড়ে স্তুপ আকারে জমা করা হচ্ছে। এখান থেকে এক ট্রাক বালু ৫০০-৭০০ টাকায় বিক্রি হয়ে থাকে। প্রতিদিন এ স্থান থেকে ৩৫-৪০ ট্রলি বালু উত্তোলন করা হয়।
বালু উত্তোলনের ফলে হরেকৃষ্ণপুর গ্রামের অনেক কৃষকের আবাদি জমি ভেঙে নদে বিলীন হয়ে গেছে। এক বছরে কৃষক মনোয়ার হোসেনের প্রায় ৩৫ শতাংশ জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এখন ৫০ শতাংশ আবাদি জমি রয়েছে। এভাবে বালু উত্তোলন করা হলে একসময় আমাদের আবাদি জমি হয়তো আর থাকবে না।
হরেকৃষ্ণপুর গ্রামের সাবেক স্কুল শিক্ষক মনোয়ার হোসেন জানান, ভাঙনরোধে স্থায়ী কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় নদীতে এলাকা বিলীন হচ্ছে।
বিধবা শাহীদা বেগম (৭০) কাদতে কাদতে বলেন,। তার স্বামী নেই। বসত বাড়ির অর্ধেক নদীতে চলে গেছে। এখন তিনি কোথায় যাবেন জানেন না। অলিয়ার রহমান মোল্যা বলেন, বাড়ি এই নিয়ে তিনবার সরানো হলো। ভেঙে যাওয়ার আগে বনজ ফলদসহ ৩০টি গাছ পানির দামে বিক্রি করেছেন।
শিশু আবদুল্লাহ (১২) স্থানীয় স্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। সে জানায়, বাড়ি ঘর ভেঙে যাওয়ায় তার পড়া লেখা বন্ধ। বইখাতার খবর নেই। স্কুলেও যায়না সে।
তাদের দাবি মধুমতি নদীর যত্রতত্র থেকে অপরিকল্পিত বালু উত্তোলনের ফলেই এলাকায় ভাঙন তীব্র হয়েছে।
স্থানীয় লোকজনের তথ্যমতে, পাঁচদিন ধরে এ এলাকায় ভাঙন অব্যাহত আছে। গত দুই দিনে তা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। চলতি বর্ষা শেষে ঢুষরাইল ও হরেকৃষ্ণপুর গ্রামের শাহীদা বেগম,মনোয়ার হোসেন,ওলিয়ার মোল্যা,হালিমা বেগম,সুলতান মোল্যা,নূরুল ইসলাম,শাহাদত হোসেন,রমজান আলী ও মাহফুজার রহমান শেখসহ অন্তত ৪০টি পরিবারের বসতবাড়ি গ্রাস করেছে মধুমতী।
উত্তোলনকারীরা সাধারণত যেখানে-সেখানে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলন করেন। এ কারণে ভাঙন বৃদ্ধি পেয়ে থাকতে পারে। ২০১০ সালের বালুমহাল আইনে বলা আছে, বিপণনের উদ্দেশ্যে কোনো উন্মুক্ত স্থান, চা-বাগানের ছড়া বা নদীর তলদেশ থেকে বালু বা মাটি উত্তোলন করা যাবে না। এ ছাড়া সেতু, কালভার্ট, ড্যাম, ব্যারেজ, বাঁধ, সড়ক, মহাসড়ক, বন, রেললাইন ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা বা আবাসিক এলাকা থেকে বালু ও মাটি উত্তোলন নিষিদ্ধ। কিন্তু তা না মেনে এলাকার প্রভাবশালী বালু ব্যবসায়ী ও তাঁদের লোকজন অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছেন। হরেকৃষ্ণপুর দক্ষিন পাড়ার বাসিন্দা বসার মিয়া,ফরিদ মিয়া,এখতার মোল্যা ও সবুজ মোল্যাসহ কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার মধুমতি নদী তীরবর্তী মহম্মদপুর সদর, বাবুখালী ও পলাশবাড়ীয়া দশটি পয়েন্টে অবৈধভাবে তিন মাস ধরে বালু উত্তোলন করছেন। বালু উত্তোলন বন্ধ করতে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে প্রশাসনকে জানানো হলেও তিনি বিষয়টি আমলে নেননি বলে চারজন অভিযোগ করেন। বালু উত্তোলনের সাথে প্রভাবশালী লোকজন জড়িত থাকায় প্রতিবাদ করলে উল্টো মারধরের শিকার হন তারা।
স্থানীয়রা জানান, অবৈধ বালু উত্তোলন ব্যাবসা ঘিরে প্রতিবছর অর্ধশত কোটি টাকার বাণিজ্য হয়। এসব টাকার ভাগ পৌছে যায় প্রায় সবজায়গায়। বালু উত্তোলন ও ব্যবসার সাথে জড়িত সবাই চিহ্নিত ও পরিচিত হলেও ভয়ে তাদের নাম বলতে চাননা কেউ। অজ্ঞাত কারণে তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ চোখে পড়ে কম।

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

কোটা সংস্কার আন্দোলন: সান্তাহারে ৩ ঘন্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ

মহম্মদপুরে বন্ধ হচ্ছেনা বালু খাদকদের বালু উত্তোলন

আপডেট টাইম : ০১:৫৬:৫৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ অক্টোবর ২০২২

মাহামুদুন নবী
মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার মধুমতি নদী থেকে অবৈধভাবে খননযন্ত্রের সাহায্যে বালু তোলা হচ্ছে। কোন ভাবেই বন্ধ হচ্ছেনা এ অবৈধভাবে বালু উত্তোলন। এলাকাবাসীর অভিযোগ, এ কারণে উপজেলার বালিদিয়া ইউনিয়নের হরেকৃষ্ণপুর ও পলাশবাড়ীয়া ইউনিয়নের ঝামা এলাকায় ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। উপজেলার নদীতীরবর্তী বাবুখালী ইউনিয়নের চরসেলামতপুর থেকে পলাশবাড়িয়ার কালিশংকরপুর পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার এলাকার দশটি গ্রাম ভাঙনের হুমকিতে পড়েছে।
উপজেলার হরেকৃষ্ণপুর ও ঝামা এলাকায় আজ রোববার (৯ অক্টোবর) দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, নদী পাড়ের প্রায় ১ কিলোমিটার এলাকা ভাঙনের শিকার হয়েছে। অনেক বাড়িঘর ফশলি জমি ও ঝামা বাজারের সড়কটির অর্ধেক নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এ কারণে ঝুঁকি নিয়ে লোকজন ওই সড়কে চলাচল করছেন।
হরেকৃষ্ণপুর এলাকায় একটি কার্গো জাহাজ রয়েছে। সেটি থেকে পাইপের সাহায্যে এক ব্যবসায়ীর খোলা মাঠে বালু তোলা হচ্ছে। জাহাজের সঙ্গে একটি খননযন্ত্র (ড্রেজার) রয়েছে।
জাহাজের কর্মচারীরা যন্ত্রের সাহায্যে নদী থেকে বালু জাহাজে তোলেন। পরে জাহাজ থেকে বালু খোলা জায়গায় নেওয়া হয়। তারা নদীর বিভিন্ন অংশ থেকে বালু তুলে বিভিন্ন ব্যবসায়ী, বাড়ি, পুকুর-ডোবা-বিল ও ঠিকাদারদের সরবরাহ করে থাকেন। শুধু তাঁদের নয়, আরও সাত থেকে দশটি খননযন্ত্র মধুমতি নদী থেকে বালু উত্তোলন করছে। ড্রেজার ও জাহাজের তিনজন মালিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, তাদের জাহাজ আছে। এর সঙ্গে একটি খননযন্ত্র আছে। এর সাহায্যে নদী থেকে বালু উত্তোলন ও সরবরাহ করেন। এক প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন, মহম্মদপুরের ক্ষমতাসীন রাজনীতিবিদদের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। তারা তাঁকে বালু তুলতে বলেছেন। জানতে চাইলে, মহম্মদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রামানন্দ পাল বলেন, মধুমতি নদীতে বালু উত্তোলনের কোনো অনুমোদন নেই। যদি কেউ তুলে থাকেন, তা অবৈধ।
তিনি আরও বলেন, আমাদের লোক গেলে বালু উত্তোলন বন্ধ থাকে। চলে আসার পর আবার হয়। এরপরও বিষয়টি দেখা হবে। তিনি বালু উত্তোলন বন্ধে ব্যবস্থা নেবেন বলে আশ্বাস দেন।
তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, আজ রোববারও নদী থেকে বালু উত্তোলন করতে দেখা গেছে। আজ রোববার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, মধুমতি নদীর হরেকৃষ্ণপুর, ঝামা এলাকায় পাইপ লাগিয়ে নদীর তলদেশ থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। ওই বালু নদীর পাড়ে স্তুপ আকারে জমা করা হচ্ছে। এখান থেকে এক ট্রাক বালু ৫০০-৭০০ টাকায় বিক্রি হয়ে থাকে। প্রতিদিন এ স্থান থেকে ৩৫-৪০ ট্রলি বালু উত্তোলন করা হয়।
বালু উত্তোলনের ফলে হরেকৃষ্ণপুর গ্রামের অনেক কৃষকের আবাদি জমি ভেঙে নদে বিলীন হয়ে গেছে। এক বছরে কৃষক মনোয়ার হোসেনের প্রায় ৩৫ শতাংশ জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এখন ৫০ শতাংশ আবাদি জমি রয়েছে। এভাবে বালু উত্তোলন করা হলে একসময় আমাদের আবাদি জমি হয়তো আর থাকবে না।
হরেকৃষ্ণপুর গ্রামের সাবেক স্কুল শিক্ষক মনোয়ার হোসেন জানান, ভাঙনরোধে স্থায়ী কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় নদীতে এলাকা বিলীন হচ্ছে।
বিধবা শাহীদা বেগম (৭০) কাদতে কাদতে বলেন,। তার স্বামী নেই। বসত বাড়ির অর্ধেক নদীতে চলে গেছে। এখন তিনি কোথায় যাবেন জানেন না। অলিয়ার রহমান মোল্যা বলেন, বাড়ি এই নিয়ে তিনবার সরানো হলো। ভেঙে যাওয়ার আগে বনজ ফলদসহ ৩০টি গাছ পানির দামে বিক্রি করেছেন।
শিশু আবদুল্লাহ (১২) স্থানীয় স্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। সে জানায়, বাড়ি ঘর ভেঙে যাওয়ায় তার পড়া লেখা বন্ধ। বইখাতার খবর নেই। স্কুলেও যায়না সে।
তাদের দাবি মধুমতি নদীর যত্রতত্র থেকে অপরিকল্পিত বালু উত্তোলনের ফলেই এলাকায় ভাঙন তীব্র হয়েছে।
স্থানীয় লোকজনের তথ্যমতে, পাঁচদিন ধরে এ এলাকায় ভাঙন অব্যাহত আছে। গত দুই দিনে তা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। চলতি বর্ষা শেষে ঢুষরাইল ও হরেকৃষ্ণপুর গ্রামের শাহীদা বেগম,মনোয়ার হোসেন,ওলিয়ার মোল্যা,হালিমা বেগম,সুলতান মোল্যা,নূরুল ইসলাম,শাহাদত হোসেন,রমজান আলী ও মাহফুজার রহমান শেখসহ অন্তত ৪০টি পরিবারের বসতবাড়ি গ্রাস করেছে মধুমতী।
উত্তোলনকারীরা সাধারণত যেখানে-সেখানে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলন করেন। এ কারণে ভাঙন বৃদ্ধি পেয়ে থাকতে পারে। ২০১০ সালের বালুমহাল আইনে বলা আছে, বিপণনের উদ্দেশ্যে কোনো উন্মুক্ত স্থান, চা-বাগানের ছড়া বা নদীর তলদেশ থেকে বালু বা মাটি উত্তোলন করা যাবে না। এ ছাড়া সেতু, কালভার্ট, ড্যাম, ব্যারেজ, বাঁধ, সড়ক, মহাসড়ক, বন, রেললাইন ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা বা আবাসিক এলাকা থেকে বালু ও মাটি উত্তোলন নিষিদ্ধ। কিন্তু তা না মেনে এলাকার প্রভাবশালী বালু ব্যবসায়ী ও তাঁদের লোকজন অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছেন। হরেকৃষ্ণপুর দক্ষিন পাড়ার বাসিন্দা বসার মিয়া,ফরিদ মিয়া,এখতার মোল্যা ও সবুজ মোল্যাসহ কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার মধুমতি নদী তীরবর্তী মহম্মদপুর সদর, বাবুখালী ও পলাশবাড়ীয়া দশটি পয়েন্টে অবৈধভাবে তিন মাস ধরে বালু উত্তোলন করছেন। বালু উত্তোলন বন্ধ করতে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে প্রশাসনকে জানানো হলেও তিনি বিষয়টি আমলে নেননি বলে চারজন অভিযোগ করেন। বালু উত্তোলনের সাথে প্রভাবশালী লোকজন জড়িত থাকায় প্রতিবাদ করলে উল্টো মারধরের শিকার হন তারা।
স্থানীয়রা জানান, অবৈধ বালু উত্তোলন ব্যাবসা ঘিরে প্রতিবছর অর্ধশত কোটি টাকার বাণিজ্য হয়। এসব টাকার ভাগ পৌছে যায় প্রায় সবজায়গায়। বালু উত্তোলন ও ব্যবসার সাথে জড়িত সবাই চিহ্নিত ও পরিচিত হলেও ভয়ে তাদের নাম বলতে চাননা কেউ। অজ্ঞাত কারণে তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ চোখে পড়ে কম।