বৃহস্পতিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৩:৪৯ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম :
নিয়োগকালেও বয়স জালিয়াতি: বিআইডব্লিউটিএর হিসাব সহকারীর কোটি-কোটি টাকার সম্পদ! জাতির পিতার ছবি অবমাননাকারী পেলেন জাতীয় শুদ্ধাচার পুরস্কার! কুষ্টিয়ায় র‌্যাবের অভিযানে মাদক মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেফতার কুষ্টিয়া প্রেস ক্লাব কেপিসি’র নবনির্বাচিত পরিষদের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ হাতজোড় করে ক্ষমা চেয়ে দেশ ছেড়েছেন শামীম ওসমান ডিএমপি কমিশনারকে অবসর দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি আ.লীগ কোনো ভিসানীতির পরোয়া করে না: ওবায়দুল কাদের আগামীতে গণমাধ্যমও ভিসানীতিতে যুক্ত হবে: পিটার হাস কুয়েতে বাংলাদেশিকে হত্যা, গ্রেপ্তার ৪ উপজেলা চেয়ারম্যান সরোয়ারের বাড়িতে স্ত্রী স্বীকৃতির দাবি নিয়ে কৃষি কর্মকর্তা মুক্তা
পিরোজপুরে খেজুরের রস সংগ্রহে পরির্চযার কাজে ব্যস্ত গাছীরা

পিরোজপুরে খেজুরের রস সংগ্রহে পরির্চযার কাজে ব্যস্ত গাছীরা

দীপঙ্কর মাতা মিন্টু, পিরোজপুর প্রতিনিধি :
ষড়ঋতুর দেশ আমাদের বাংলাদেশ। এক একটি ঋতুর রয়েছে এক একরকমের বৈশিষ্ট। তেমনি এক ঋতু হেমন্ত। শীতের আমেজ শুরু এই হেমন্তেই। শীতকালীন বিভিন্ন সবজি যেমন আমরা পেয়ে থাকি তেমনি শীতকালে খেজুর গাছের মিষ্টি রসও পাওয়া যায়। গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী সুস্বাদু খেজুর গাছের এ রস। শীতের সকালে মিষ্টি রোদে বসে মিষ্টি খেজুর রস, সেই সাথে মুড়ি মিশিয়ে খাওয়ার মজাই আলাদা। তবে আগের মত তেমন আর খেজুর গাছ না থাকায় গাছীরাও গাছ থেকে রস সংগ্রহ না করায় দিন দিন হারিয়ে যেতে বসেছে মজা দায়ক খেজুর রস খাওয়ার ধুম। তারপরও পিরোজপুরের নাজিরপুরে অনেক এলাকায় এখনো গাছীরা তার আগের পেশায় খেজুর রস সংগ্রহ করেন। যা আগের তুলনায় নামমাত্র বললেই চলে। এরই ধারাবাহিকতায় খেজুর গাছের রস সংগ্রহে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন রস সংগ্রহকারী অনেক গাছী। এখন রস সংগ্রহের জন্য প্রস্তুতি খেজুর গাছের পরির্চযা বা চাচ কাজেই ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। আবার কেউ কেউ ইতিমধ্যেই রস সংগ্রহ শুরুও করেছেন। একসময় এ পেশার উপর অনেক পরিবার নির্ভরশীল হলেও খেজুর গাছের সংখ্যা দিন দিন কমে যাওয়ায় বর্তমানে রস সংগ্রহকারী গাছীর সংখ্যা অনেক কমেছে। তারপরও যারা খেজুর রসের উপর নির্ভরশীল, মূলত তারাই এখন কেউ গাছের পরির্চযা আর কেউ রস সংহে ব্যস্ত সময় পার করছেন। খেজুর গাছের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে কমে যাওয়ায় খেজুর রসের ঐতিহ্যও দিন দিন হারিয়ে যেতে বসেছে। খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করতে হলে প্রথমে খেজুর গাছের উপরিভাগে মাথার অংশকে ভালো করে পরিস্কার করতে হয়। সেই সাদা অংশ থেকে বিশেষ কায়দায় ছোট-বড় কলসি বা হাঁড়ি হিসেবে পরিচিত মাটির পাত্রে রস সংগ্র করা হয়। তবে কালের ভেদে এখন অনেক গাছী সেই মাটির পাত্রের বিকল্প হিসেবে প্লাস্টিকের বাডাও ব্যবহার করছেন গাছীরা। ছোট ও মাঝারিসহ এমনকি বিশাল বড় বিভিন্ন রকমের খেজুর গাছে অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়েই গাছীদের কোমড়ে মোটা রশির দঁড়ি বেঁধেগাছে ঝুলে খেজুর গাছের পরির্চযা ও রস সংগ্রহ করতে হয়। প্রতিদিন বিকালে খেজুর গাছের সাদা অংশ পরিস্কার করে ছোট-বড় মাটির কলসি খেজুর গাছে বাঁধেন রসের জন্য। পরের দিন সকালে খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করেন তারা। রসের মান ভালো পাওয়ার জন্য প্রতি সপ্তাহে এক থেকে দুই দিন রস সংগ্রহ থেকে বিরতি দেন। ফলে রসের স্বাদ আরো বেশি মিষ্টি হয় বলেই গাছীরা জানিয়েছেন। রস সংগ্রহকারীরা কাঁচা রস এলাকার বিভিন্ন স্থানে ও হাট বাজারে খাওয়ার জন্য বিক্রয় করেন। আবার কেউ কেউ রস দিয়ে গুড় তৈরি করে বিক্রয় করেন। গ্রামের অনেক মানুষ শীতের সকালে সু-স্বাদু এই খেজুর রস ও খেজুর রসের তৈরি গুড় কেনার জন্য অপেক্ষায় থাকেন খেজুর রসের তৈরি বিভিন্ন রকমের পাটালিও লালী গুড়এর চাহিদাও অনেক। এ রস থেকেতৈরি গুড় দিয়ে মুখরোচক খাবার, পায়েসসহ হরেক রকমের লোভনীয় পিঠাও তৈরির ধুম পড়ে গ্রামের বাড়ি বাড়ি। বলতে গেলে বাঙালীর হাজার বছরের ঐতিহ্যের একটি অংশ এই রস। খেজুর রসের ঐতিহ্য ধরে রাখতে খেজুর গাছ রক্ষাসহ নতুনভাবে রোপনের উদ্যেগ নেয়া আমাদের সকলের উচিত।

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published.




© All rights reserved 2018-2022 khoborbangladesh.com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com