ঢাকা ০৮:৪৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মহম্মদপুরে হত্যা মামলা মিমাংসার চেষ্টা বিফল: চার্জ গঠনের আগেই আসামী মোশাররফ খুন হলেন

মাহামুদুন নবী :
মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার বালিদিয়া গ্রামে একটি হত্যা মামলার চার্জ গঠনের আগের রাতে মামলার আসামীর রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ১০টার দিকে তার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মাগুরা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ।
মহম্মদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) অসিত কুমার রায় জানান, আদালতে বালিদিয়া গ্রামের আবু সাইদ হত্যা মামলার চার্জ গঠনের তারিখ দেওয়া ছিল মঙ্গলবার। তার আগের রাতে খবর পাই ওই মামলার আসামী মোশাররফ হোসেন মৃধার লাশ তার বাড়ির সামনের রাস্তায় পড়ে আছে। খবর পেয়ে তার লাশ উদ্ধার করে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে ময়নাতদন্তের জন্য মাগুরা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ওই মামলায় বালিদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান মফিজ মিনহাসহ আরো ৩১জনকে আসামী করা হয়েছিল।
নিহত মোশাররফ হোসেন মৃধার ভাতিজা জিনারুল মৃধা জানান, গত রাতে (সোমবার দিবাগত রাত)  আমার এক চাচা তবিবার রহমান ডাক চিৎকার করে বলে, কে কোথায় আছিস মোশারফরে কে মারে ফেলছে। বের হ। তারপর আমরা বের হয়ে দেখি বাড়ির সামনে রাস্তার পাশে চাচার রক্তাক্ত লাশ পড়ে আছে। পরে পুলিশকে খবর দিলে তারা এসে ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যায়।
জিনারুল মৃধা আরো জানান, আমরা বালিদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ তাদের সাথে মিমাংসার জন্য চেষ্টা করেছি। হাজি কমিটির লোকদের মাধ্যমেও চেষ্টা করেছি। তারা বলছে খুনের বদলা খুন হবে। তারপর আমার চাচার লাশ পাওয়া গেল।
নিহত মোশাররফ হোসেন মৃধার স্ত্রী সবিতা বেগম জানান, তার স্বামী কৃষি কাজ করত। বর্গা জমি চাষ করত।  কারো সাথে খারাপ ব্যবহার করত না। আবু সাইদ হত্যার সময় সে ফরিদপুর ছিল। সে এর সাথে জড়িত না। তারপরও তাকে আসামী দেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার মামলার চার্জ গঠনের দিন দেওয়া। আসামীদের হাজির হতে বলেছিল। গত রাতে আমার স্বামীকে হত্যা করা হয়েছে।
স্থানীয় লোকজন জানান, বালিদিয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান বালিদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মফিজ মিনা এবং বালিদিয়া গ্রামের ইউনুস শিকদারের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন বিরোধ চলে আসছে। তারই জের ধরে গত  ২০২০ সালের ১৩ জানুয়ারি বড়রিয়া মেলা থেকে বাড়ি ফেরার পথে বালিদিয়ার ঝিনাইপুকুর এলাকায় প্রতিপক্ষের হামলায় মারাত্মকভাবে জখম হন ইউনুস শিকদার সমর্থক সাবেক পুলিশ সদস্য আবু সাইদ মোল্যা। পরে মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
এরপর বর্তমান বালিদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মফিজ মিনাসহ আরো ৩১জনকে আসামী করে নিহতের ভাই ওহিদ মোল্যা বাদি হয়ে মহম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। চার্জশিট দাখিল হলেও মামলাটির নিষ্পত্তির জন্য একের পর এক দিন পেছায়। পরে চার্জ গঠন ও দ্রæত নিষ্পত্তির জন্য উচ্চ আদালত নির্দেশ দেন।
আবু সাইদ হত্যা মামলার বাদি পক্ষের লোকজন জানান, মামলাটিকে প্রভাবিত করার জন্য মোশাররফ হোসেনকে হত্যা করা হতে পারে।
 এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি শান্ত আছে।
ট্যাগস

মহম্মদপুরে হত্যা মামলা মিমাংসার চেষ্টা বিফল: চার্জ গঠনের আগেই আসামী মোশাররফ খুন হলেন

আপডেট টাইম : ০৩:০৯:০০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ জানুয়ারী ২০২৩
মাহামুদুন নবী :
মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার বালিদিয়া গ্রামে একটি হত্যা মামলার চার্জ গঠনের আগের রাতে মামলার আসামীর রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ১০টার দিকে তার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মাগুরা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ।
মহম্মদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) অসিত কুমার রায় জানান, আদালতে বালিদিয়া গ্রামের আবু সাইদ হত্যা মামলার চার্জ গঠনের তারিখ দেওয়া ছিল মঙ্গলবার। তার আগের রাতে খবর পাই ওই মামলার আসামী মোশাররফ হোসেন মৃধার লাশ তার বাড়ির সামনের রাস্তায় পড়ে আছে। খবর পেয়ে তার লাশ উদ্ধার করে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে ময়নাতদন্তের জন্য মাগুরা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ওই মামলায় বালিদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান মফিজ মিনহাসহ আরো ৩১জনকে আসামী করা হয়েছিল।
নিহত মোশাররফ হোসেন মৃধার ভাতিজা জিনারুল মৃধা জানান, গত রাতে (সোমবার দিবাগত রাত)  আমার এক চাচা তবিবার রহমান ডাক চিৎকার করে বলে, কে কোথায় আছিস মোশারফরে কে মারে ফেলছে। বের হ। তারপর আমরা বের হয়ে দেখি বাড়ির সামনে রাস্তার পাশে চাচার রক্তাক্ত লাশ পড়ে আছে। পরে পুলিশকে খবর দিলে তারা এসে ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যায়।
জিনারুল মৃধা আরো জানান, আমরা বালিদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ তাদের সাথে মিমাংসার জন্য চেষ্টা করেছি। হাজি কমিটির লোকদের মাধ্যমেও চেষ্টা করেছি। তারা বলছে খুনের বদলা খুন হবে। তারপর আমার চাচার লাশ পাওয়া গেল।
নিহত মোশাররফ হোসেন মৃধার স্ত্রী সবিতা বেগম জানান, তার স্বামী কৃষি কাজ করত। বর্গা জমি চাষ করত।  কারো সাথে খারাপ ব্যবহার করত না। আবু সাইদ হত্যার সময় সে ফরিদপুর ছিল। সে এর সাথে জড়িত না। তারপরও তাকে আসামী দেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার মামলার চার্জ গঠনের দিন দেওয়া। আসামীদের হাজির হতে বলেছিল। গত রাতে আমার স্বামীকে হত্যা করা হয়েছে।
স্থানীয় লোকজন জানান, বালিদিয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান বালিদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মফিজ মিনা এবং বালিদিয়া গ্রামের ইউনুস শিকদারের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন বিরোধ চলে আসছে। তারই জের ধরে গত  ২০২০ সালের ১৩ জানুয়ারি বড়রিয়া মেলা থেকে বাড়ি ফেরার পথে বালিদিয়ার ঝিনাইপুকুর এলাকায় প্রতিপক্ষের হামলায় মারাত্মকভাবে জখম হন ইউনুস শিকদার সমর্থক সাবেক পুলিশ সদস্য আবু সাইদ মোল্যা। পরে মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
এরপর বর্তমান বালিদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মফিজ মিনাসহ আরো ৩১জনকে আসামী করে নিহতের ভাই ওহিদ মোল্যা বাদি হয়ে মহম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। চার্জশিট দাখিল হলেও মামলাটির নিষ্পত্তির জন্য একের পর এক দিন পেছায়। পরে চার্জ গঠন ও দ্রæত নিষ্পত্তির জন্য উচ্চ আদালত নির্দেশ দেন।
আবু সাইদ হত্যা মামলার বাদি পক্ষের লোকজন জানান, মামলাটিকে প্রভাবিত করার জন্য মোশাররফ হোসেনকে হত্যা করা হতে পারে।
 এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি শান্ত আছে।