আদালত প্রতিবেদক :
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমানের সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. আছাদুজ্জামান এ আদেশ দেন।
দুদকের প্রসিকিউটর মোশাররফ হোসেন কাজল জানান, মামলাটি আজ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিল প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ছিল। আসামিরা গ্রেপ্তার এড়ানোর জন্য পলাতক রয়েছেন মর্মে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে পুলিশ। তাই আদালত আসামিদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দেন। আগামী ১৯ জানুয়ারির মধ্যে আদালত ক্যান্টনমেন্ট থানা-পুলিশকে সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেছেন।
এর আগে গত ১ নভেম্বর একই আদালত মামলার চার্জশিট আমলে নিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
চলতি বছরের ২৬ জুন হাইকোর্ট তারেক রহমান ও জোবায়দা রহমানকে ‘পলাতক’ ঘোষণা করে ৪ কোটি ৮২ লাখ টাকার দুর্নীতি মামলা দায়ের ও তার প্রক্রিয়ার বৈধতা নিয়ে করা পৃথক রিট আবেদন খারিজ করে দেন।
রিট খারিজ করে দেওয়া রায়ে হাইকোর্ট একইসঙ্গে ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় দায়ের করা এ মামলার স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে সংশ্লিষ্ট নিম্ন আদালতকে যত দ্রুত সম্ভব বিচার কার্যক্রম শেষ করার নির্দেশ দেন। এছাড়া ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটকে এ রায় পাওয়ার ১০ দিনের মধ্যে মামলার রেকর্ড ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে পাঠাতে বলা হয়।
ঘোষিত আয়ের বাইরে ৪ কোটি ৮১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৬১ টাকার মালিক হওয়া এবং সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর কাফরুল থানায় এ মামলা করে দুদক। মামলায় তারেক রহমান, জোবায়দা রহমান ও তারেক রহমানের শাশুড়ি ইকবাল মান্দ বানুকে আসামি করা হয়।
২০০৮ সালে তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। এরপরই মামলা বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন জোবায়দা। ওই বছরই এ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। এর বিরুদ্ধে আপিল করলে আপিল বিভাগ হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখেন।
পেশায় চিকিৎসক জোবাইদা তার স্বামী তারেক রহমানের সঙ্গে ১৩ বছর ধরে যুক্তরাজ্যে রয়েছেন। জোবাইদার বিরুদ্ধে দুদক মামলাটি করেছিল সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে। তবে উচ্চ আদালতের নির্দেশে ২০০৮ সালে এর কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যায়। এখন সেই বাধা কাটল।
নৌবাহিনীর সাবেক প্রধান মাহবুব আলী খানের মেয়ে জোবাইদা ১৯৯৫ সালে বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারে যোগ দিয়েছিলেন। তার দুই বছর আগে তারেকের সঙ্গে তার বিয়ে হয়।
খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক ২০০৮ সালে কারামুক্তির পর স্ত্রী-মেয়েকে নিয়ে যুক্তরাজ্যে যান। ছুটি নিয়ে যাওয়ার পর আর কর্মস্থলে না ফেরায় ২০১৪ সালে জোবাইদাকে বরখাস্ত করে সরকার।