শনিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৮:৫১ পূর্বাহ্ন

ভাই-বোন-মামা-ভাগ্নে নিয়ে মাগুরা জেলা আওয়ামী লীগের পূর্নাঙ্গ কমিটি গঠন

ভাই-বোন-মামা-ভাগ্নে নিয়ে মাগুরা জেলা আওয়ামী লীগের পূর্নাঙ্গ কমিটি গঠন

ত্যাগী নেতা ও বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা বঞ্চিত: জামায়াত-বিএনপি ও জাতীয় পার্টি থেকে আগতরা গুরুত্বপূর্ণ পদে!

বিশেষ প্রতিনিধি
জেলা কাউন্সিলের প্রায় ১০ মাস পর মাগুরা জেলা আওয়ামী লীগের ৭৫ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করে অনুমোদনের জন্য কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। এই কমিটিতে একটি পরিবারের ৪ সদস্যকে গুরুত্বপূর্ণ পদ প্রদানসহ অর্থের বিনিময়ে জামায়াত,বিএনপি ও জাতীয় পার্টি থেকে আসা নেতাদের গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানো হয়েছে মর্মে অভিযোগ তুলেছেন অনেক নেতা। এ ছাড়া মাগুরা জেলার বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও ত্যাগী নেতাদের কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়নি মর্মে দাবী করা হয়েছে। তাদের অভিযোগমতে প্রস্তাবিত কমিটিতে সাবেক এমপি মরহুম আসাদুজ্জামানের কন্যা কামরুল লায়লা জলিকে উপদেষ্টা,পুত্র মো: সাইফুজ্জামান শিখরকে কার্য নির্বাহী কমিটির ৩ নং সদস্য ,অপর পুত্র এডভোকেট শফিকুজ্জামান বাচ্চুকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (১) শিখরের মামা নজরুল ইসলাম টগরকে সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক, বিয়াই পৌর মেয়র খুরশিদ হায়দার টুটুলকে যুগ্ম সাধারন সম্পাদক (২) বিয়াই এড.শাখারুল ইসলাম শাকিলকে যুগ্ম সাধারন সম্পাদক (৩) বিয়াই মোজাহারুল হক আখরোটকে কার্য নির্বাহী কমিটির সদস্য পদ প্রদান করা হয়েছে।
অন্যদিকে জামায়াত,বিএনপি ও জাতীয় পার্টি থেকে আসা নেতাদের গুরুত্বপূর্ণ পদ প্রদান করা হয়েছে। তারা হলেন: জাতীয় পার্টি থেকে আসা মো: মোস্তাফিজুর রহমান স্বপনকে সাঙগঠনিক সম্পাদক (১) জাতীয় পার্টির সাবেক নেতা অধ্যাপক কামরুজ্জামান চাঁন্দকে উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, জামায়াত পরিবার থেকে আসা জাহিদুর রেজা চন্দনকে ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক, জাতীয় পার্টির সদস্য ডা: রাহুল মিত্রকে স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক, রাজাকার পরিবারের সন্তান হুমায়ুন রশীদ মুহীতকে কার্য নির্বাহী কমিটির ১১ নং সদস্য, বিএনপি থেকে আসা অধ্যক্ষ সূর্য কান্ত বিশ^াসকে সহ সভাপতি, বিএনপি থেকে আসা জিল্লুর রহমানকে কার্য নির্বাহী কমিটির ২৮ নং সদস্য, দল থেকে বহিষ্কৃত ইউপি চেয়ারম্যান এনামুল হক রাজাকে কার্য নির্বাহী কমিটির ২০ নং সদস্য পদ প্রদান করা হয়েছে।
এ দিকে ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের বীর সেনানী শ্রীপুরের আকবর বাহিনীর অধিনায়ক মরহুম আকবর মিয়ার পুত্র সাবেক যুবলীগ নেতা বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান মো: কুতুবউল্লাহ মিয়া কুটি ও উপ অধিনায়ক মরহুম নবুয়াত মোল্লার পুত্র সংগ্রামকে জেলা কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়নি।
অন্যদিকে ৯০ এর স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের অগ্রসৈনিকখ্যাত সাবেক ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতাদের পদ বঞ্চিত করে তাদের ওপর চুড়ান্ত অবিচার করা হয়েছে।
যে সব সাবেক ছাত্রলীগ ও যুবলীগের ত্যাগী নেতাদের কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়নি তারা হলেন: মো: জাহাংগীর হোসেন, এনামুল হক হীরক, মীর শহীদুল ইসলাম (বাবু মীর) নূর জালাল, কামরুজ্জামান পিন্টু, আব্দুল আওয়াল মোল্লা, সাবেক মেয়র তপন কুমার রায়, সাবেক কাউন্সিলর শাখাওয়াত হোসেন, সাবেক পৌর যুবলীগের সেক্রেটারী বাহারুল ইসলাম, এডভোকেট এস্কেন্দার আযম বাবলু আরো অনেকে।
প্রস্তাবিত এই কমিটির বিষয়ে কথা বললে দলের সাধারন সম্পাদক বাবু পঙ্কজ কুমার কুন্ডু বলেন, আমরা কোন পদ পদবী বিক্রি করিনি। দলের সক্রিয়তা ও অবদানের কথা বিবেচনা করেই পদ বন্টন করা হয়েছে। কোন বিএনপি,জামায়াত বা রাজাকারের সন্তান এই কমিটিতে নেই। দলে অনেক ত্যাগী নেতা কর্মী আছেন কিন্তু সবাইকেতো আর পদ দেবার সুযোগ নেই। তাই কারো কারো পদ না পাবার ক্ষোভ থাকতেই পারে। অনেক বীর মুক্তিযোদ্ধা এই কমিটিতে আছেন বলেও তিনি দাবী করেন।
এ দিকে এ বিষয়ে সাবেক ছাত্র লীগ, যুব লীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান মো: জাহাংগীর হোসেন বলেন, এই কমিটিতে ত্যাগী ও আদর্শীক নেতাদের স্থান দেওয়া হয়নি। দায়িত্বশীল নেতারা চরম স্বেচ্চাচারিতার বর্হি:প্রকাশ ঘটিয়েছেন। অপর ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতা এবং মাগুরা পৌরসভার সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র মীর শহিদুল ইসলাম (বাবু মীর) বলেন, এক পরিবার কেন্দ্রীক এই জেলা কমিটি আমাদের যারপরনাই ব্যাথিত করেছে। কমিটিতে হাইব্রীডদের প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের যথায়থ মুল্যায়ণ করা হয়নি। ছাত্র লীগ,যুব লীগের ত্যাগী নেতাদের চরমভাবে উপেক্ষা করা হয়েছে। এই কমিটিতে যেমন রাজাকারের সন্তানদের স্থান দেওয়া হয়েছে,তেমন জামায়াত,বিএনপি ও জাতীয় পার্টির নেতাদের গুরুত্বপূর্ণ পদ প্রদান করা হয়েছে। একটি পরিবারের ৪/৫ জনকে কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়েছে। ভাই, বোন, বিয়াই ও মামা, ভাগ্নের এই কমিটি দিয়ে আগামীতে মাগুরা জেলায় আওয়ামী লীগের বিজয় নিশান উড়ানো কোন ভাবেই সম্ভব হবে না। তিনি এই কমিটি অনুমোদন না দেওয়ার জন্য দলের সভানেত্রী,দেশরত্ন,প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাধারন সম্পাদক জননেতা ওবায়দুল কাদেরকে বিনীত অনুরোধ জানান।

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published.




© All rights reserved 2018-2022 khoborbangladesh.com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com