ঢাকা ০৯:০৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ জুলাই ২০২৪, ৮ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
কোটা সংস্কার আন্দোলন: সান্তাহারে ৩ ঘন্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ সিরাজদিখানে তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে হেনস্থার শিকার সাংবাদিক রাবি ছাত্রলীগ সভাপতির কক্ষে মিলল পিস্তল, সম্পাদকের কক্ষে ফেন্সিডিল আবু সাঈদের ধারণা ছিলো পুলিশ আমাকে গুলি করবে না মীরপুর গার্লস আইডিয়াল স্কুল থেকে কোটি কোটি টাকা লুটপাট ভাঙ্গায় চেয়ারম্যান গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত  যমুনার পানিতে কালিহাতীতে ৩০ হাজার পানিবন্দি মানুষ, নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত পদ্মায় অবৈধ বালি উত্তোলনে নদীগর্ভে বিলিন ১০টি বাড়িঘর, হুমকিতে শহর রক্ষা বাঁধ স্পীকারের সাথে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূতের বিদায়ী সাক্ষাৎ সিরাজদিখানে পুলিশের হামলার আহত সাংবাদিক সালমানকে দেখতে গেলেন ওসি

মাগুরায় অগ্রণী ব্যাংকের ভোল্ট থেকে ৫ লক্ষ টাকা উধাও!

মাগুরা প্রতিনিধি :
মাগুরায় এম আর রোডে অবস্থিত অগ্রণী ব্যাংকের প্রধান শাখা শহরের অন্যতম একটি ব্যস্ত ব্যাংক। যার প্রতিদিনের লেনদেন ৪ থেকে ৬ কোটি টাকা। কিন্তু হঠাৎ ব্যাংকটির ভোল্ট থেকে গত ১৩ মার্চ তারিখে ৪ লক্ষ ৭১ হাজার টাকা উধাও হয়ে গেছে। ব্যাংকের হিসেবে দেখা যায় গত ১২ই মার্চ তারিখে ক্লোজিং ব্যালান্স ছিল ৪ কোটি ৮৮ লক্ষ ৪৩ হাজার ১৮৯ টাকা ৩৩ পয়সা। কিন্তু ১৩ মার্চ সকালের ওপেনিং ক্যাশ পাওয়া যায় ৪ কোটি ২৩ লক্ষ ৭২ হাজার ১৮৯ টাকা ৩৩ পয়সা। অর্থাৎ ব্যাঙ্ক থেকে ৪ লক্ষ ৭১ হাজার টাকা চুরি/আত্মসাতের ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় ক্যাশ অফিসার মোঃ জিয়াউদ্দিনকে সাময়িক ভাবে বরখাস্ত করলেও, ঘটনার রেশ যেন কিছুতেই থামছে না। ক্যাশ অফিসার জিয়াউদ্দিনকে ঘটনা সম্মন্ধে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন ভোল্টের ৩ টি চাবি থাকে যার একটি আমার কাছে , একটি সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসারের কাছে ও অন্যটি শাখা ম্যানেজারের কাছে। ভোল্ট খুলতে হলে অবশ্যই ৩টি চাবিই লাগবে । কারো একার পক্ষে ভোল্ট খুলে টাকা সরানো সম্ভব না।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক অন্য আরেকজন ক্যাশ অফিসার জানান, ব্যাংকে টাকার হিসেবে ভুল হওয়া একটি সাধারণ ঘটনা, ভুল হলে আমরা অনুসন্ধান করি এবং কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করি, অনেক ক্ষেত্রেই সেটা কাজে দেয়। কিন্তু ১৩ তারিখের ঘটনায় কোনো ধরণের অনুসন্ধান ছাড়াই জিয়াউদ্দিনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে এবং ভয়ভীতি দেখিয়ে সাদা কাগজে সই করে নেওয়া হয়েছে ও অন্যায়ভাবে চাপ দিয়ে ৪ লক্ষ ৭১ হাজার টাকা দিতে বাধ্য করা হয়েছে। তাছাড়া ব্যাংকের হিসাব বিভাগটি সিসিটিভির আওতাভুক্ত। কোনো সন্দেহ হলে সেটার সাহায্য নেওয়া যেতে পারে।
অভিযুক্ত ক্যাশ অফিসার জিয়াউদ্দিন আক্ষেপ করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমি সুনামের সাথে অগ্রণী ব্যাংকের বিভিন্ন শাখায় আমি চাকুরী করেছি, আমার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ কেউ দিতে পারেনি, কিন্তু এইঘটনায় কোনো ধরণের তদন্ত ছাড়া আমাকে অন্যায়ভাবে দোষী সাব্যস্ত করা যা সত্যি খুব বেদনার। ক্যাশ শাখায় আমাদেরকে এমনিতেই চাপ ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করতে হয়। তার মধ্যে এমন ঘটনা কাজের উদ্যমকে দারুন ভাবে ব্যাহত করে।
এব্যাপারে ব্যাংকের সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার অসীম কুমার বিশ্বাস সরাসরি টাকা হারানোর ঘটনাটি অস্বীকার করেন, তিনি বলেন আমাদের ব্যাংকে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। পরে জানান একজন গ্রাহক চেক দিয়েছিলেন, সেই চেকটি আমরা হিসাব করতে ভুলে গেছিলাম। পরে অবশ্য হিসাব মিলিয়ে রেখেছি। তাহলে কেন ভয়ভীতি দেখিয়ে ক্যাশ অফিসার জিয়াউদ্দিনের সাক্ষর নেওয়া হলো এবং তার কাছ থেকে কেন জোর করে ৪ লক্ষ ৭১ হাজার টাকা আদায় করা হলো ? সে ব্যাপারে কোনো সদুত্তর দিতে পারেন নি তিনি।
এদিকে অনেক ঘোরাঘুরির পর ব্যাঙ্ক ম্যানেজার নাজমুস সাদাতকে ২১ মার্চ তারিখে তার অফিসে পাওয়া যায়। তিনিও দাবি করেন, ভোল্ট থেকে কোনো টাকা চুরি হয়নি। ওই দিন একটি চেক আমাদের হিসেবের বাইরে ছিল। তবে ওই নির্দিষ্ট চেক দেখতে চাইলে তিনি কথা এড়িয়ে যান। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, ক্যাশ অফিসার মোঃ জিয়াউদ্দিনকে ৪ লক্ষ ৭১ হাজার টাকার জন্য লিখিত ভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও, ব্যাঙ্ক ম্যানেজার ও সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার টাকার পরিমান ৩ লক্ষ ৭১ হাজার টাকা বলে দাবি করছেন।
ঘটনা যায় হোক না কেন, গ্রাহকদের দাবি এই ঘটনাটির বিভাগীয় তদন্ত করা উচিত। অন্যথায় প্রকৃত অন্যায়কারীরা পার পেয়ে যাবে এবং ব্যাংকটির প্রতি গ্রাহকদের আস্থার সংকট দেখা দেবে ও ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে।

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

কোটা সংস্কার আন্দোলন: সান্তাহারে ৩ ঘন্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ

মাগুরায় অগ্রণী ব্যাংকের ভোল্ট থেকে ৫ লক্ষ টাকা উধাও!

আপডেট টাইম : ০৪:১৬:৫৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ মার্চ ২০২৩

মাগুরা প্রতিনিধি :
মাগুরায় এম আর রোডে অবস্থিত অগ্রণী ব্যাংকের প্রধান শাখা শহরের অন্যতম একটি ব্যস্ত ব্যাংক। যার প্রতিদিনের লেনদেন ৪ থেকে ৬ কোটি টাকা। কিন্তু হঠাৎ ব্যাংকটির ভোল্ট থেকে গত ১৩ মার্চ তারিখে ৪ লক্ষ ৭১ হাজার টাকা উধাও হয়ে গেছে। ব্যাংকের হিসেবে দেখা যায় গত ১২ই মার্চ তারিখে ক্লোজিং ব্যালান্স ছিল ৪ কোটি ৮৮ লক্ষ ৪৩ হাজার ১৮৯ টাকা ৩৩ পয়সা। কিন্তু ১৩ মার্চ সকালের ওপেনিং ক্যাশ পাওয়া যায় ৪ কোটি ২৩ লক্ষ ৭২ হাজার ১৮৯ টাকা ৩৩ পয়সা। অর্থাৎ ব্যাঙ্ক থেকে ৪ লক্ষ ৭১ হাজার টাকা চুরি/আত্মসাতের ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় ক্যাশ অফিসার মোঃ জিয়াউদ্দিনকে সাময়িক ভাবে বরখাস্ত করলেও, ঘটনার রেশ যেন কিছুতেই থামছে না। ক্যাশ অফিসার জিয়াউদ্দিনকে ঘটনা সম্মন্ধে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন ভোল্টের ৩ টি চাবি থাকে যার একটি আমার কাছে , একটি সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসারের কাছে ও অন্যটি শাখা ম্যানেজারের কাছে। ভোল্ট খুলতে হলে অবশ্যই ৩টি চাবিই লাগবে । কারো একার পক্ষে ভোল্ট খুলে টাকা সরানো সম্ভব না।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক অন্য আরেকজন ক্যাশ অফিসার জানান, ব্যাংকে টাকার হিসেবে ভুল হওয়া একটি সাধারণ ঘটনা, ভুল হলে আমরা অনুসন্ধান করি এবং কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করি, অনেক ক্ষেত্রেই সেটা কাজে দেয়। কিন্তু ১৩ তারিখের ঘটনায় কোনো ধরণের অনুসন্ধান ছাড়াই জিয়াউদ্দিনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে এবং ভয়ভীতি দেখিয়ে সাদা কাগজে সই করে নেওয়া হয়েছে ও অন্যায়ভাবে চাপ দিয়ে ৪ লক্ষ ৭১ হাজার টাকা দিতে বাধ্য করা হয়েছে। তাছাড়া ব্যাংকের হিসাব বিভাগটি সিসিটিভির আওতাভুক্ত। কোনো সন্দেহ হলে সেটার সাহায্য নেওয়া যেতে পারে।
অভিযুক্ত ক্যাশ অফিসার জিয়াউদ্দিন আক্ষেপ করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমি সুনামের সাথে অগ্রণী ব্যাংকের বিভিন্ন শাখায় আমি চাকুরী করেছি, আমার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ কেউ দিতে পারেনি, কিন্তু এইঘটনায় কোনো ধরণের তদন্ত ছাড়া আমাকে অন্যায়ভাবে দোষী সাব্যস্ত করা যা সত্যি খুব বেদনার। ক্যাশ শাখায় আমাদেরকে এমনিতেই চাপ ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করতে হয়। তার মধ্যে এমন ঘটনা কাজের উদ্যমকে দারুন ভাবে ব্যাহত করে।
এব্যাপারে ব্যাংকের সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার অসীম কুমার বিশ্বাস সরাসরি টাকা হারানোর ঘটনাটি অস্বীকার করেন, তিনি বলেন আমাদের ব্যাংকে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। পরে জানান একজন গ্রাহক চেক দিয়েছিলেন, সেই চেকটি আমরা হিসাব করতে ভুলে গেছিলাম। পরে অবশ্য হিসাব মিলিয়ে রেখেছি। তাহলে কেন ভয়ভীতি দেখিয়ে ক্যাশ অফিসার জিয়াউদ্দিনের সাক্ষর নেওয়া হলো এবং তার কাছ থেকে কেন জোর করে ৪ লক্ষ ৭১ হাজার টাকা আদায় করা হলো ? সে ব্যাপারে কোনো সদুত্তর দিতে পারেন নি তিনি।
এদিকে অনেক ঘোরাঘুরির পর ব্যাঙ্ক ম্যানেজার নাজমুস সাদাতকে ২১ মার্চ তারিখে তার অফিসে পাওয়া যায়। তিনিও দাবি করেন, ভোল্ট থেকে কোনো টাকা চুরি হয়নি। ওই দিন একটি চেক আমাদের হিসেবের বাইরে ছিল। তবে ওই নির্দিষ্ট চেক দেখতে চাইলে তিনি কথা এড়িয়ে যান। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, ক্যাশ অফিসার মোঃ জিয়াউদ্দিনকে ৪ লক্ষ ৭১ হাজার টাকার জন্য লিখিত ভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও, ব্যাঙ্ক ম্যানেজার ও সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার টাকার পরিমান ৩ লক্ষ ৭১ হাজার টাকা বলে দাবি করছেন।
ঘটনা যায় হোক না কেন, গ্রাহকদের দাবি এই ঘটনাটির বিভাগীয় তদন্ত করা উচিত। অন্যথায় প্রকৃত অন্যায়কারীরা পার পেয়ে যাবে এবং ব্যাংকটির প্রতি গ্রাহকদের আস্থার সংকট দেখা দেবে ও ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে।