ঢাকা ০৭:৩৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ জুলাই ২০২৪, ৮ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
কোটা সংস্কার আন্দোলন: সান্তাহারে ৩ ঘন্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ সিরাজদিখানে তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে হেনস্থার শিকার সাংবাদিক রাবি ছাত্রলীগ সভাপতির কক্ষে মিলল পিস্তল, সম্পাদকের কক্ষে ফেন্সিডিল আবু সাঈদের ধারণা ছিলো পুলিশ আমাকে গুলি করবে না মীরপুর গার্লস আইডিয়াল স্কুল থেকে কোটি কোটি টাকা লুটপাট ভাঙ্গায় চেয়ারম্যান গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত  যমুনার পানিতে কালিহাতীতে ৩০ হাজার পানিবন্দি মানুষ, নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত পদ্মায় অবৈধ বালি উত্তোলনে নদীগর্ভে বিলিন ১০টি বাড়িঘর, হুমকিতে শহর রক্ষা বাঁধ স্পীকারের সাথে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূতের বিদায়ী সাক্ষাৎ সিরাজদিখানে পুলিশের হামলার আহত সাংবাদিক সালমানকে দেখতে গেলেন ওসি

সাতক্ষীরায় সহস্রাধিক কোটি টাকার মেগা প্রকল্পের কাজ তদারকি করছেন কম্পিউটারে অদক্ষ প্রকৌশলী জাকির হোসেন!

শেখ রেজাউল ইসলাম বাবলু, সাতক্ষীরা :
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার দ্বীপ ইউনিয়ন গাবুরার মানুষ প্রাকৃতিক দূূর্যোগের প্রভাবে বেড়ীবাঁধ ভাঙনের আতঙ্কে থাকেন প্রায় সারা বছর। গাবুরার অসহায় ও নিরীহ মানুষের কথা চিন্তা করে সরকার ১ হাজার ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে গ্রহণ করেছে ‘সাতীরা জেলার পোল্ডার নং-১৫ পুনর্বাসন প্রকল্প।’ ওই প্রকল্পের স্থায়ী বাঁধ নির্মাণসহ নানা কার্যক্রম ইতিমধ্যে শুরু করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। ওই মেগা প্রকল্পের কাজ গত বছরের নভেম্বরে শুরু হয়েছে। তবে সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের ডিভিশন ১ এর উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী জাকির হোসেনের তদারকির অভাবে ওই প্রকল্পের তেমন কোন অগ্রগতি নেই।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চারিদিকে নদী দ্বারা বেষ্টিত গাবুরা ইউনিয়নের মানুষের বাঁধভাঙন থেকে রক্ষা করতে স্থায়ীবাঁধ নির্মাণ, খাল খনন, স্লুইচগেট নির্মাণসহ নানা কাজের জন্য ১ হাজার ২০ কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। প্রকল্পের কাজ ২০২১ সালের ১ অক্টোবর শুরুর কথা থাকলেও কম্পিউটারে অজ্ঞ, অদক্ষ, দূর্ণতিগ্রস্থ প্রকৌশলী জাকির হোসেনের গাফিলতি ও কর্মদক্ষতার অভাবে ওই কাজ শুরু হয়েছে ২০২২ সালের নভেম্বরে। তার কম্পিউটার জ্ঞান না থাকার কারণে প্রকল্পের স্টিমেট, অগ্রগতি সম্পর্কে সঠিক সময়ে সঠিক তথ্য দিতে না পারায় প্রকল্পের ধীরগতি হচ্ছে এবং প্রকল্পের কাজ ২০২৪ সালের ৩০ জুনের মধ্যে সম্পন্ন করার কথা থাকলেও ওই সময়ের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হবেনা বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
খোঁজ নিয়ে আরো জানা যায়, সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের ডিভিশন ১ এর উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী জাকির হোসেন শ্যামনগর পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান হওয়া স্বত্ত্বেও তিনি নিয়মিত অফিসে যাননা। শ্যামনগর অফিসের পিয়ন খোরশেদ আলম ও জেলা অফিসের কামরুজ্জামানকে দিয়ে সাব ঠিকাদারীসহ যাবতীয় কাজ করান তিনি। নিজে প্রকল্পের কাজের স্থানে না যেয়ে শ্যামনগরের সেকশন অফিসারদের পাঠিয়ে নিজের কাজ গুলো করিয়ে নেন জাকির হোসেন। এছাড়া তিনি বেশিরভাগ সময়ে ঢাকা অথবা খুলনায় সময় কাটান। তিনি নিজে টেন্ডার কমিটির সদস্য হয়েও কম্পিউটার না জানার কারণে টেন্ডারের কাজ করতে পারেননা। টেন্ডারসহ প্রকল্পের যাবতীয় কাজ তিনি বাইরের কম্পিউটারের দোকান বা অফিসের কম্পিউটার অপারেটর দিয়ে দায়সারাভাবে কোন রকম চালিয়ে যাচ্ছেন।
সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড সংশ্লিষ্ঠ সূত্রে জানা যায়, সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড ডিভিশন এর এর দূর্ণতিগ্রস্থ সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল খায়ের থাকাকালীন সময়ে প্রকৌশলী জাকির হোসেন জড়িয়ে পড়েন সীমাহীন দূর্ণীতি ও অনিয়মের সাথে। জাতীয় বিভিন্ন প্রোগ্রামে তাকে সরেজমিনে হাজির হওয়ার কথা থাকলেও তিনি প্রোগ্রামে যাননা। প্রাকৃতিক দূর্যোগসহ নানা বিষয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সাথে যোগাযোগ রেখে তাদের সাথে সমন্বয় করে কাজ করার কথা থাকলেও তিনি করেননা। শ্যামনগর এলাকার বেড়ীবাঁধ প্রকল্পের ডিপিএম করেন নিজে ঠিকাদার সেজে বা তার মনঃপুত সাব ঠিকাদার দিয়ে। ফলে ওই সব প্রকল্পের কোটি কোটি টাকা তিনি গায়েব করে ইতিমধ্যে খুলনা ও ঢাকা শহরে জমি ও একাধিক প্লট কিনেছেন। এছাড়া নামে ও বেনামে তিনি গড়ে তুলেছেন অঢেল সম্পদ। এর আগে তিনি বাগেরহাট থাকাকালীন সময়ে নানা দূর্ণীতে জড়িয়ে পড়ে। ফলে তার বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ আছে বলে প্রচার আছে। গাবুরার ওই মেগা প্রকল্পের ঠিকাদারের সাথে যোগসাজসে কোটি টাকা নিজের পকেটে ভারার উদ্দেশ্যে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে তিনি গাবুরার ওই প্রকল্পের তদারকির দায়িত্ব নিয়েছেন বলে অভিযোগ আছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একাধিক জনপ্রতিনিধি বলেন, ‘সরকারের এমন একটি মেগা প্রকল্পের সার্বক্ষণিক তদারকির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এমন একজনকে যার কম্পিউটার সম্পর্কে ন্যুনতম ধারণা নেই। এই প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি সম্পর্কে তাৎক্ষণিক ও মাসে মাসে উর্দ্ধতন কর্তপক্ষকে জানাতে হয়। তবে তিনি কম্পিউটার না জানার কারণে সঠিক সময়ে সঠিক তথ্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানাতে পারেননা। আমরা অনতিবিলম্বে এমন অদক্ষ প্রকৌশলী জাকির হোসেনকে এখান থেকে সরিয়ে ভাল কম্পিউটার জ্ঞান সম্পন্ন দক্ষ প্রকৌশলীকে তদারকির দায়িত্ব দেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের ডিভিশন ১ এর উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী জাকির হোসেন বলেন, ‘আমি কোন দূর্ণীতির সাথে জাড়িত না। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে আমি সকল কাজ স্বচ্ছতার সাথে সম্পন্ন করি এবং নিয়মিত শ্যমনগর অফিসে যায়।’
আপনার কম্পিউটার সম্পর্কে কোন ধারণা নেই বলে জেনেছি, বিষয়টি কি সঠিক? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কোন সঠিক জবাব না দিয়ে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে।’
সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ সালাউদ্দীন বলেন, গাবুরা ইউনিয়নে স্থায়ীবাঁধ নির্মাণসহ ৪৭ টি প্যাকেজ বাস্তবায়নে ১ হাজার ২০ কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করেছে সরকার। বর্তমানে ২০ টি প্যাকেজের কাজ চলমান আছে। এখন পর্যন্ত ৮ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। প্রত্যেক বছর নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা বরাদ্দ পেলে সঠিক সময়ে সকল কাজ সম্পন্ন করতে পারবো বলে আশা করছি।
প্রকৌশলী জাকির হোসেনের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি মাত্র তিনমাস সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড ডিভিশন ১ এর দায়িত্ব পালন করছি। আমার আসার আগে কি হয়েছে তা আমি বলতে পারবোনা। তবে বর্তমানে আমার অধিনে যারা আছেন সকলেই সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া কেউ কম্পিউটার না জানলেই যে তিনি সঠিকভাবে কাজ করতে পারবেননা, সেটি ঠিক না।
এমন একটি মেগা প্রজেক্টে কম্পিউটার না জানা একজনকে দায়িত্ব দেওয়া কি ঠিক হয়েছে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তিনি অনেক আগে চাকুরিতে যোগদান করেছেন বলে বোর্ড হয়তো তাকে দায়িত্ব দিয়েছেন। তাকে দায়িত্ব দেওয়া বা না দেওয়ার ব্যাপারে আমার কোন হাত নেই।’

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

কোটা সংস্কার আন্দোলন: সান্তাহারে ৩ ঘন্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ

সাতক্ষীরায় সহস্রাধিক কোটি টাকার মেগা প্রকল্পের কাজ তদারকি করছেন কম্পিউটারে অদক্ষ প্রকৌশলী জাকির হোসেন!

আপডেট টাইম : ০১:৫৪:৫৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ জুন ২০২৩

শেখ রেজাউল ইসলাম বাবলু, সাতক্ষীরা :
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার দ্বীপ ইউনিয়ন গাবুরার মানুষ প্রাকৃতিক দূূর্যোগের প্রভাবে বেড়ীবাঁধ ভাঙনের আতঙ্কে থাকেন প্রায় সারা বছর। গাবুরার অসহায় ও নিরীহ মানুষের কথা চিন্তা করে সরকার ১ হাজার ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে গ্রহণ করেছে ‘সাতীরা জেলার পোল্ডার নং-১৫ পুনর্বাসন প্রকল্প।’ ওই প্রকল্পের স্থায়ী বাঁধ নির্মাণসহ নানা কার্যক্রম ইতিমধ্যে শুরু করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। ওই মেগা প্রকল্পের কাজ গত বছরের নভেম্বরে শুরু হয়েছে। তবে সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের ডিভিশন ১ এর উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী জাকির হোসেনের তদারকির অভাবে ওই প্রকল্পের তেমন কোন অগ্রগতি নেই।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চারিদিকে নদী দ্বারা বেষ্টিত গাবুরা ইউনিয়নের মানুষের বাঁধভাঙন থেকে রক্ষা করতে স্থায়ীবাঁধ নির্মাণ, খাল খনন, স্লুইচগেট নির্মাণসহ নানা কাজের জন্য ১ হাজার ২০ কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। প্রকল্পের কাজ ২০২১ সালের ১ অক্টোবর শুরুর কথা থাকলেও কম্পিউটারে অজ্ঞ, অদক্ষ, দূর্ণতিগ্রস্থ প্রকৌশলী জাকির হোসেনের গাফিলতি ও কর্মদক্ষতার অভাবে ওই কাজ শুরু হয়েছে ২০২২ সালের নভেম্বরে। তার কম্পিউটার জ্ঞান না থাকার কারণে প্রকল্পের স্টিমেট, অগ্রগতি সম্পর্কে সঠিক সময়ে সঠিক তথ্য দিতে না পারায় প্রকল্পের ধীরগতি হচ্ছে এবং প্রকল্পের কাজ ২০২৪ সালের ৩০ জুনের মধ্যে সম্পন্ন করার কথা থাকলেও ওই সময়ের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হবেনা বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
খোঁজ নিয়ে আরো জানা যায়, সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের ডিভিশন ১ এর উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী জাকির হোসেন শ্যামনগর পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান হওয়া স্বত্ত্বেও তিনি নিয়মিত অফিসে যাননা। শ্যামনগর অফিসের পিয়ন খোরশেদ আলম ও জেলা অফিসের কামরুজ্জামানকে দিয়ে সাব ঠিকাদারীসহ যাবতীয় কাজ করান তিনি। নিজে প্রকল্পের কাজের স্থানে না যেয়ে শ্যামনগরের সেকশন অফিসারদের পাঠিয়ে নিজের কাজ গুলো করিয়ে নেন জাকির হোসেন। এছাড়া তিনি বেশিরভাগ সময়ে ঢাকা অথবা খুলনায় সময় কাটান। তিনি নিজে টেন্ডার কমিটির সদস্য হয়েও কম্পিউটার না জানার কারণে টেন্ডারের কাজ করতে পারেননা। টেন্ডারসহ প্রকল্পের যাবতীয় কাজ তিনি বাইরের কম্পিউটারের দোকান বা অফিসের কম্পিউটার অপারেটর দিয়ে দায়সারাভাবে কোন রকম চালিয়ে যাচ্ছেন।
সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড সংশ্লিষ্ঠ সূত্রে জানা যায়, সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড ডিভিশন এর এর দূর্ণতিগ্রস্থ সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল খায়ের থাকাকালীন সময়ে প্রকৌশলী জাকির হোসেন জড়িয়ে পড়েন সীমাহীন দূর্ণীতি ও অনিয়মের সাথে। জাতীয় বিভিন্ন প্রোগ্রামে তাকে সরেজমিনে হাজির হওয়ার কথা থাকলেও তিনি প্রোগ্রামে যাননা। প্রাকৃতিক দূর্যোগসহ নানা বিষয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সাথে যোগাযোগ রেখে তাদের সাথে সমন্বয় করে কাজ করার কথা থাকলেও তিনি করেননা। শ্যামনগর এলাকার বেড়ীবাঁধ প্রকল্পের ডিপিএম করেন নিজে ঠিকাদার সেজে বা তার মনঃপুত সাব ঠিকাদার দিয়ে। ফলে ওই সব প্রকল্পের কোটি কোটি টাকা তিনি গায়েব করে ইতিমধ্যে খুলনা ও ঢাকা শহরে জমি ও একাধিক প্লট কিনেছেন। এছাড়া নামে ও বেনামে তিনি গড়ে তুলেছেন অঢেল সম্পদ। এর আগে তিনি বাগেরহাট থাকাকালীন সময়ে নানা দূর্ণীতে জড়িয়ে পড়ে। ফলে তার বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ আছে বলে প্রচার আছে। গাবুরার ওই মেগা প্রকল্পের ঠিকাদারের সাথে যোগসাজসে কোটি টাকা নিজের পকেটে ভারার উদ্দেশ্যে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে তিনি গাবুরার ওই প্রকল্পের তদারকির দায়িত্ব নিয়েছেন বলে অভিযোগ আছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একাধিক জনপ্রতিনিধি বলেন, ‘সরকারের এমন একটি মেগা প্রকল্পের সার্বক্ষণিক তদারকির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এমন একজনকে যার কম্পিউটার সম্পর্কে ন্যুনতম ধারণা নেই। এই প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি সম্পর্কে তাৎক্ষণিক ও মাসে মাসে উর্দ্ধতন কর্তপক্ষকে জানাতে হয়। তবে তিনি কম্পিউটার না জানার কারণে সঠিক সময়ে সঠিক তথ্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানাতে পারেননা। আমরা অনতিবিলম্বে এমন অদক্ষ প্রকৌশলী জাকির হোসেনকে এখান থেকে সরিয়ে ভাল কম্পিউটার জ্ঞান সম্পন্ন দক্ষ প্রকৌশলীকে তদারকির দায়িত্ব দেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের ডিভিশন ১ এর উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী জাকির হোসেন বলেন, ‘আমি কোন দূর্ণীতির সাথে জাড়িত না। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে আমি সকল কাজ স্বচ্ছতার সাথে সম্পন্ন করি এবং নিয়মিত শ্যমনগর অফিসে যায়।’
আপনার কম্পিউটার সম্পর্কে কোন ধারণা নেই বলে জেনেছি, বিষয়টি কি সঠিক? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কোন সঠিক জবাব না দিয়ে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে।’
সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ সালাউদ্দীন বলেন, গাবুরা ইউনিয়নে স্থায়ীবাঁধ নির্মাণসহ ৪৭ টি প্যাকেজ বাস্তবায়নে ১ হাজার ২০ কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করেছে সরকার। বর্তমানে ২০ টি প্যাকেজের কাজ চলমান আছে। এখন পর্যন্ত ৮ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। প্রত্যেক বছর নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা বরাদ্দ পেলে সঠিক সময়ে সকল কাজ সম্পন্ন করতে পারবো বলে আশা করছি।
প্রকৌশলী জাকির হোসেনের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি মাত্র তিনমাস সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড ডিভিশন ১ এর দায়িত্ব পালন করছি। আমার আসার আগে কি হয়েছে তা আমি বলতে পারবোনা। তবে বর্তমানে আমার অধিনে যারা আছেন সকলেই সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া কেউ কম্পিউটার না জানলেই যে তিনি সঠিকভাবে কাজ করতে পারবেননা, সেটি ঠিক না।
এমন একটি মেগা প্রজেক্টে কম্পিউটার না জানা একজনকে দায়িত্ব দেওয়া কি ঠিক হয়েছে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তিনি অনেক আগে চাকুরিতে যোগদান করেছেন বলে বোর্ড হয়তো তাকে দায়িত্ব দিয়েছেন। তাকে দায়িত্ব দেওয়া বা না দেওয়ার ব্যাপারে আমার কোন হাত নেই।’