ঢাকা ০৪:০২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
গাজীপুরে ঝুকিপূর্ণ রেলক্রসিংয়ে ফুটওভার ব্রীজের দাবীতে মানববন্ধন গাজীপুরে ২১০ পিস ইয়াবা ও সাড়ে ১১ লাখ টাকাসহ মাদক কারবারি গ্রেপ্তার প্রকল্পের টাকা হরিলুটের অভিযোগ ইউএনও এবং পিআইও’র বিরুদ্ধে ফরিদপুরে দুই সাংবাদিকের ওপর হামলা, জিম্মি দশা থেকে উদ্ধার আদমদীঘিতে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রধান শিক্ষক নিহত খালেদা জিয়া যে কোনো সময়ে চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্য যেতে পারেন: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মহম্মদপুরে অসহায় রুগীর পাশে দাঁড়ালেন নয়ন সিরাজদিখানে লীজকৃত ফসলী জমির মাটি কাটার অভিযোগ, সংবাদিককে দেখে নেয়ার হুমকি অন্তবর্তী সরকারকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় যেতে সব ধরণের সহযোগিতা করবে যুক্তরাজ্য শিয়াল-কুকুরের দখলে ডিবি হারুনের শতকোটির রিসোর্ট!

বিএনপি’র চার শতাধিক নেতাকর্মী গ্রেপ্তার

স্টাফ রিপোর্টার :

বিএনপি’র মহাসমাবেশকে ঘিরে ঢাকায় ধরপাকড়ের শিকার হচ্ছেন দলটির নেতাকর্মীরা। হোটেল, বাসাবাড়ি থেকে শুরু করে সর্বত্রই অভিযান চালাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। গভীর রাতের এসব অভিযানে বিএনপি ছাড়া দলটির অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদেরও আটক-গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। গতকাল দুপুরের আগের ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা মহানগর পুলিশের দেয়া তথ্যমতেই ৪১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ডিএমপি’র বিভিন্ন থানা পুলিশ ও ডিবি’র অভিযানে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে ডিএমপি’র দাবি ৪১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হলেও এরমধ্যে বিএনপি’র নেতাকর্মী রয়েছেন ৩৬৬ জন। সূত্র জানিয়েছে গতকাল বিএনপি’র ৩৩২ জন নেতাকর্মীকে আদালতে হাজির করা হয়েছে। এর আগে মঙ্গলবার বিএনপি’র ৭৫ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এদিকে বিএনপি দাবি করছে, সমাবেশকে ঠেকানোর জন্য পুলিশ পরিকল্পিতভাবে ধরপাকড় শুরু করেছে। পুলিশের দেয়া তথ্যের চেয়ে অনেক বেশিসংখ্যক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করে বলেছেন, একদিনে ঢাকায় ৫০০ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আমি গ্রেপ্তারকৃত সকল নেতৃবৃন্দের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে এটি তাদের নিয়মিত কাজ। যাদের নামে আগের মামলা ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আছে কেবলমাত্র তাদেরকেই গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এ ছাড়া শনিবার আশুরা ও দুই বড় দলের সমাবেশকে ঘিরে যাতে কেউ কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটাতে না পারে সেজন্য চেকপোস্ট দিয়ে সন্দেহভাজনদের আটক করা হচ্ছে। গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের কেন গ্রেপ্তার করা হচ্ছে? জবাবে তিনি বলেন, ২০১৫ সালে তাজিয়া মিছিলে বোমা হামলা হয়েছিল। এখন মহরমের তাজিয়া মিছিল চলছে, আমরা ২০১৫ সালের সেই জঙ্গি হামলার কথা ভুলে যাইনি। দুইটা বড় রাজনৈতিক দলের সমাবেশে এখানে যে কেউ বাইরে থেকে এসে দুর্ঘটনা ঘটাতে পারে। তাই সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে আমাদের চেকপোস্ট। সন্দেহভাজন ব্যক্তি, নিয়মিত মামলার আসামি ও ওয়ারেন্টের আসামিকে গ্রেপ্তার করতে হয়। এটা আমাদের নিয়মিত কাজের পার্ট। সমাবেশ ঠেকানোর জন্য গ্রেপ্তার করা হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, আমাদের কোনো অফিসারের বিরুদ্ধে এই ধরনের অভিযোগ পাওয়া গেলে তদন্ত করে দেখবো। আমরা কোনো রাজনৈতিক দলের কারও বিরুদ্ধে অভিযান করিনি।
বিএনপি ও পুলিশের সূত্রগুলো বলছে, নয়াপল্টনে বিএনপি অফিসের কাছাকাছি মিডওয়ে হোটেলে অভিযান চালায় ডিবি মতিঝিল বিভাগ। দুইঘণ্টা ধরে চলা সেই অভিযানে অর্ধ শতাধিক নেতাকর্মীকে আটক করে পরে তাদেরকে মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়। এর বাইরে নয়াপল্টনের হোটেল ভিক্টোরিয়ায় অভিযান চালিয়েও আরও কিছু নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়। ডিবির দাবি, আটক ব্যক্তিরা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির জন্য ওই হোটেলে জড়ো হয়েছিল। গোপন তথ্য থাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রাজবাড়ীর পাংশা থেকে মহাসমাবেশে যোগ দিতে এসে মিরপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার হয়েছেন বিএনপির ১৯ জন নেতাকর্মী। কোতোয়ালি থানার পুলিশ মানিকগঞ্জের ঘিউর উপজেলা ছাত্রদলের ৫ নেতাকে আটক করেছে। ঢাকা সিটি করপোরেশনের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও বিএনপির ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাবেক সহ-সভাপতি মীর আশরাফ আলী আজম এবং তার ছেলে ব্যারিস্টার মীর মুনতাহা আলীকে লালবাগের বাসা থেকে বুধবার রাতে ডিবি পুলিশ গ্রেপ্তার করে। মীর আশরাফ আলী আজমের স্ত্রী অভিযোগ করে বলেন, গ্রেপ্তারের সময় পুলিশ পিটিয়ে তার স্বামীর পা ও কোমর ভেঙে ফেলেছে। তার ছেলে আইনজীবী পরিচয় দেয়ার পর তাকেও ধরে নিয়ে গেছে। তবে পুলিশ বলছে, অভিযানের খবর পেয়ে পালাতে গিয়ে বাসার তিনতলা থেকে লাফ দিয়ে তার পা ভেঙে যায়।

ডিএমপি’র বিভিন্ন থানা থেকে আদালতে যাদেরকে তোলা হয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছে- পল্লবী থানার ৩২ জন, কাফরুল থানার ৩৯ জন, দারুস সালাম থানার ৫৭ জন, যাত্রাবাড়ী থানার ৫ জন, ডেমরা থানার ৮ জন, সবুজবাগ থানার ১ জন, রামপুরা থানার ২ জন, তুরাগ থানার ৯ জন, কদমতলী থানার ৩ জন, বনানী থানার ১২ জন, গুলশান থানার ১২ জন, কোতোয়ালি থানার ১৭ জন, লালবাগ থানার ৯ জন, ধানমণ্ডি থানার ৫ জন, উত্তরা পশ্চিম থানার ২ জন। তাদের প্রত্যেককেই পুরাতন নাশকতার মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে তোলা হয়।

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

গাজীপুরে ঝুকিপূর্ণ রেলক্রসিংয়ে ফুটওভার ব্রীজের দাবীতে মানববন্ধন

বিএনপি’র চার শতাধিক নেতাকর্মী গ্রেপ্তার

আপডেট টাইম : ০৬:৫০:৫৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ জুলাই ২০২৩

স্টাফ রিপোর্টার :

বিএনপি’র মহাসমাবেশকে ঘিরে ঢাকায় ধরপাকড়ের শিকার হচ্ছেন দলটির নেতাকর্মীরা। হোটেল, বাসাবাড়ি থেকে শুরু করে সর্বত্রই অভিযান চালাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। গভীর রাতের এসব অভিযানে বিএনপি ছাড়া দলটির অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদেরও আটক-গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। গতকাল দুপুরের আগের ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা মহানগর পুলিশের দেয়া তথ্যমতেই ৪১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ডিএমপি’র বিভিন্ন থানা পুলিশ ও ডিবি’র অভিযানে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে ডিএমপি’র দাবি ৪১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হলেও এরমধ্যে বিএনপি’র নেতাকর্মী রয়েছেন ৩৬৬ জন। সূত্র জানিয়েছে গতকাল বিএনপি’র ৩৩২ জন নেতাকর্মীকে আদালতে হাজির করা হয়েছে। এর আগে মঙ্গলবার বিএনপি’র ৭৫ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এদিকে বিএনপি দাবি করছে, সমাবেশকে ঠেকানোর জন্য পুলিশ পরিকল্পিতভাবে ধরপাকড় শুরু করেছে। পুলিশের দেয়া তথ্যের চেয়ে অনেক বেশিসংখ্যক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করে বলেছেন, একদিনে ঢাকায় ৫০০ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আমি গ্রেপ্তারকৃত সকল নেতৃবৃন্দের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে এটি তাদের নিয়মিত কাজ। যাদের নামে আগের মামলা ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আছে কেবলমাত্র তাদেরকেই গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এ ছাড়া শনিবার আশুরা ও দুই বড় দলের সমাবেশকে ঘিরে যাতে কেউ কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটাতে না পারে সেজন্য চেকপোস্ট দিয়ে সন্দেহভাজনদের আটক করা হচ্ছে। গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের কেন গ্রেপ্তার করা হচ্ছে? জবাবে তিনি বলেন, ২০১৫ সালে তাজিয়া মিছিলে বোমা হামলা হয়েছিল। এখন মহরমের তাজিয়া মিছিল চলছে, আমরা ২০১৫ সালের সেই জঙ্গি হামলার কথা ভুলে যাইনি। দুইটা বড় রাজনৈতিক দলের সমাবেশে এখানে যে কেউ বাইরে থেকে এসে দুর্ঘটনা ঘটাতে পারে। তাই সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে আমাদের চেকপোস্ট। সন্দেহভাজন ব্যক্তি, নিয়মিত মামলার আসামি ও ওয়ারেন্টের আসামিকে গ্রেপ্তার করতে হয়। এটা আমাদের নিয়মিত কাজের পার্ট। সমাবেশ ঠেকানোর জন্য গ্রেপ্তার করা হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, আমাদের কোনো অফিসারের বিরুদ্ধে এই ধরনের অভিযোগ পাওয়া গেলে তদন্ত করে দেখবো। আমরা কোনো রাজনৈতিক দলের কারও বিরুদ্ধে অভিযান করিনি।
বিএনপি ও পুলিশের সূত্রগুলো বলছে, নয়াপল্টনে বিএনপি অফিসের কাছাকাছি মিডওয়ে হোটেলে অভিযান চালায় ডিবি মতিঝিল বিভাগ। দুইঘণ্টা ধরে চলা সেই অভিযানে অর্ধ শতাধিক নেতাকর্মীকে আটক করে পরে তাদেরকে মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়। এর বাইরে নয়াপল্টনের হোটেল ভিক্টোরিয়ায় অভিযান চালিয়েও আরও কিছু নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়। ডিবির দাবি, আটক ব্যক্তিরা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির জন্য ওই হোটেলে জড়ো হয়েছিল। গোপন তথ্য থাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রাজবাড়ীর পাংশা থেকে মহাসমাবেশে যোগ দিতে এসে মিরপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার হয়েছেন বিএনপির ১৯ জন নেতাকর্মী। কোতোয়ালি থানার পুলিশ মানিকগঞ্জের ঘিউর উপজেলা ছাত্রদলের ৫ নেতাকে আটক করেছে। ঢাকা সিটি করপোরেশনের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও বিএনপির ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাবেক সহ-সভাপতি মীর আশরাফ আলী আজম এবং তার ছেলে ব্যারিস্টার মীর মুনতাহা আলীকে লালবাগের বাসা থেকে বুধবার রাতে ডিবি পুলিশ গ্রেপ্তার করে। মীর আশরাফ আলী আজমের স্ত্রী অভিযোগ করে বলেন, গ্রেপ্তারের সময় পুলিশ পিটিয়ে তার স্বামীর পা ও কোমর ভেঙে ফেলেছে। তার ছেলে আইনজীবী পরিচয় দেয়ার পর তাকেও ধরে নিয়ে গেছে। তবে পুলিশ বলছে, অভিযানের খবর পেয়ে পালাতে গিয়ে বাসার তিনতলা থেকে লাফ দিয়ে তার পা ভেঙে যায়।

ডিএমপি’র বিভিন্ন থানা থেকে আদালতে যাদেরকে তোলা হয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছে- পল্লবী থানার ৩২ জন, কাফরুল থানার ৩৯ জন, দারুস সালাম থানার ৫৭ জন, যাত্রাবাড়ী থানার ৫ জন, ডেমরা থানার ৮ জন, সবুজবাগ থানার ১ জন, রামপুরা থানার ২ জন, তুরাগ থানার ৯ জন, কদমতলী থানার ৩ জন, বনানী থানার ১২ জন, গুলশান থানার ১২ জন, কোতোয়ালি থানার ১৭ জন, লালবাগ থানার ৯ জন, ধানমণ্ডি থানার ৫ জন, উত্তরা পশ্চিম থানার ২ জন। তাদের প্রত্যেককেই পুরাতন নাশকতার মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে তোলা হয়।