ঢাকা ০৪:৩৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
দেশে ফিরবেন খালেদা জিয়া পুলিশের জন্য কেনা হচ্ছে ২০০ জিপ দাম ১৭২ কোটি টাকা সংস্কৃতি উপদেষ্টাকে বিতর্কিত প্রশ্ন করাই চাকরি হারালেন ৩ সাংবাদিক আওয়ামী লীগের দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে রাজধানীর শেরে বাংলা নগর থানা বিএনপির বিক্ষোভ ও সমাবেশ মাগুরার শালিখায় সরকারী জায়গায় দোকান তুলে ভাড়া দিয়েছেন যুবদল নেতা সোহেল মুন্সী! খালেদা জিয়াকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ফেরাতে কাজ করছে সরকার জনবান্ধব পুলিশ হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলতে হবে-স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ই-৮ ভিসায় দক্ষিণ কোরিয়ায় পৌঁছেছেন বাংলাদেশী ২৫ কর্মী পলিথিনমুক্ত বাজার কমিটিকে পুরস্কৃত করা হবে: পরিবেশ সচিব আদমদীঘির জনপ্রিয় পল্লী চিকিৎসক সুলতান আর নেই

ফাঁসিতে মৃত্যু: ছেলের লাশ দেখে অজ্ঞান শতবর্ষী বৃদ্ধা মা

ভাঙ্গা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি :

১৭টি বছর ধরে দেখেন না ছেলেকে, ফাঁসির আদেশও জানতেন না, ফাঁসির রায়ের খবরে আত্মীয়-স্বজন সংবাদকর্মী বাড়িতে এলেও জানতেন না কী কারণে মানুষের এতো সমাগম। আজ ভোরে বাড়িতে কী কারণে চেয়ার টেবিল আনা হচ্ছে তাও জানতেন না এই বৃদ্ধা মা।

অনেক আগেই শ্রবণশক্তি হারিয়ে ফেলেছেন শতবর্ষী মা সেতারা বেগম। এজন্য তার সামনে দিয়ে হাজারো কথা হলেও তিনি কিছুই শুনতেন পেতেন না। যার কাছে জিজ্ঞাসা করেন সেই এড়িয়ে যেতেন তাকে। শুধু হাত দিয়ে ইশারা দিয়ে বলা হত ‘কিছু না’।

আজ ভোর ছয়টায় অ্যাম্বুলেন্স হাজির হলো বাড়িতে। এরপর অ্যাম্বুলেন্স থেকে মহিউদ্দিনের লাশ নামিয়ে লাশ নিয়ে আসা হয় ঘরের সামনে। ছেলের মৃতদেহ দেখেই অজ্ঞান হয়ে পড়েন শতবর্ষী মা সেতারা বেগম। জ্ঞান ফেরার পর ছেলের মুখ দেখতে ছুটে যান খাটিয়ার কাছে। বুকের ধনকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কেঁদে ওঠেন। তখন স্বজনেরা কোলে করে সরিয়ে নেন।

এদিকে, মহিউদ্দিনের লাশ বাড়িতে পৌছানোর পর পারিবারিক মসজিদের সামনে কবর তৈরি করা শুরু করেন চাচাতো ভাই সিকু মিয়া।

মহিউদ্দিনের ছোটবেলার শিক্ষক সুধীর চন্দ্র মন্ডল বলেন, ‘আমরা মহিউদ্দিনকে সূর্য মিয়া বলে ডাকতাম। ক, খ থেকে শুরু করে ক্লাস ফাইভ পর্যন্ত আমি ওকে পড়ালেখা করিয়েছি। ওর মত মেধাবী ও ভদ্র ছেলে আমাদের এলাকায় নাই। ওর ফাঁসিতে আমরা ব্যাথিত ও দুঃখ প্রকাশ করছি।’

গ্রামের আরেক বৃদ্ধা মহিলা রেবা বেগম জানান, ‘সূর্য মিয়া খুব ভালো ছেলে ছিল। আমি ওকে নিজ হাতে কোরআন শরীফ শিক্ষা দিয়েছি। ওর মত ছেলে আর হবে না।;

এ ঘটনায় তুজারপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফকির আসলাম বলেন, ‘আমার জন্মের আগেই ড. মহিউদ্দিন ওরফে সূর্য মিয়া রাজশাহী চলে গেছেন। মুরুব্বিদের কাছ থেকে শুনেছি উনি অত্যন্ত মেধাবী ও ভালো মানুষ ছিলেন। তবে ওনার ভাই আমার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক এবং উনরা আওয়ামী পরিবারের লোক। আমাদের কাছে উনি একজন ভালো মানুষ হিসেবে পরিচিত ছিলেন।’

মহিউদ্দিনের ভাই আরজু মিয়া বলেন, ‘যা হওয়ার হয়ে গেছে, এখন আর বলার কিছু নাই তবে আমার ভাই ছিল নির্দোষ।’

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

দেশে ফিরবেন খালেদা জিয়া

ফাঁসিতে মৃত্যু: ছেলের লাশ দেখে অজ্ঞান শতবর্ষী বৃদ্ধা মা

আপডেট টাইম : ০৯:১১:৫৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ জুলাই ২০২৩

ভাঙ্গা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি :

১৭টি বছর ধরে দেখেন না ছেলেকে, ফাঁসির আদেশও জানতেন না, ফাঁসির রায়ের খবরে আত্মীয়-স্বজন সংবাদকর্মী বাড়িতে এলেও জানতেন না কী কারণে মানুষের এতো সমাগম। আজ ভোরে বাড়িতে কী কারণে চেয়ার টেবিল আনা হচ্ছে তাও জানতেন না এই বৃদ্ধা মা।

অনেক আগেই শ্রবণশক্তি হারিয়ে ফেলেছেন শতবর্ষী মা সেতারা বেগম। এজন্য তার সামনে দিয়ে হাজারো কথা হলেও তিনি কিছুই শুনতেন পেতেন না। যার কাছে জিজ্ঞাসা করেন সেই এড়িয়ে যেতেন তাকে। শুধু হাত দিয়ে ইশারা দিয়ে বলা হত ‘কিছু না’।

আজ ভোর ছয়টায় অ্যাম্বুলেন্স হাজির হলো বাড়িতে। এরপর অ্যাম্বুলেন্স থেকে মহিউদ্দিনের লাশ নামিয়ে লাশ নিয়ে আসা হয় ঘরের সামনে। ছেলের মৃতদেহ দেখেই অজ্ঞান হয়ে পড়েন শতবর্ষী মা সেতারা বেগম। জ্ঞান ফেরার পর ছেলের মুখ দেখতে ছুটে যান খাটিয়ার কাছে। বুকের ধনকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কেঁদে ওঠেন। তখন স্বজনেরা কোলে করে সরিয়ে নেন।

এদিকে, মহিউদ্দিনের লাশ বাড়িতে পৌছানোর পর পারিবারিক মসজিদের সামনে কবর তৈরি করা শুরু করেন চাচাতো ভাই সিকু মিয়া।

মহিউদ্দিনের ছোটবেলার শিক্ষক সুধীর চন্দ্র মন্ডল বলেন, ‘আমরা মহিউদ্দিনকে সূর্য মিয়া বলে ডাকতাম। ক, খ থেকে শুরু করে ক্লাস ফাইভ পর্যন্ত আমি ওকে পড়ালেখা করিয়েছি। ওর মত মেধাবী ও ভদ্র ছেলে আমাদের এলাকায় নাই। ওর ফাঁসিতে আমরা ব্যাথিত ও দুঃখ প্রকাশ করছি।’

গ্রামের আরেক বৃদ্ধা মহিলা রেবা বেগম জানান, ‘সূর্য মিয়া খুব ভালো ছেলে ছিল। আমি ওকে নিজ হাতে কোরআন শরীফ শিক্ষা দিয়েছি। ওর মত ছেলে আর হবে না।;

এ ঘটনায় তুজারপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফকির আসলাম বলেন, ‘আমার জন্মের আগেই ড. মহিউদ্দিন ওরফে সূর্য মিয়া রাজশাহী চলে গেছেন। মুরুব্বিদের কাছ থেকে শুনেছি উনি অত্যন্ত মেধাবী ও ভালো মানুষ ছিলেন। তবে ওনার ভাই আমার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক এবং উনরা আওয়ামী পরিবারের লোক। আমাদের কাছে উনি একজন ভালো মানুষ হিসেবে পরিচিত ছিলেন।’

মহিউদ্দিনের ভাই আরজু মিয়া বলেন, ‘যা হওয়ার হয়ে গেছে, এখন আর বলার কিছু নাই তবে আমার ভাই ছিল নির্দোষ।’