ঢাকা ০৬:২৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ জুলাই ২০২৪, ৮ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
কোটা সংস্কার আন্দোলন: সান্তাহারে ৩ ঘন্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ সিরাজদিখানে তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে হেনস্থার শিকার সাংবাদিক রাবি ছাত্রলীগ সভাপতির কক্ষে মিলল পিস্তল, সম্পাদকের কক্ষে ফেন্সিডিল আবু সাঈদের ধারণা ছিলো পুলিশ আমাকে গুলি করবে না মীরপুর গার্লস আইডিয়াল স্কুল থেকে কোটি কোটি টাকা লুটপাট ভাঙ্গায় চেয়ারম্যান গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত  যমুনার পানিতে কালিহাতীতে ৩০ হাজার পানিবন্দি মানুষ, নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত পদ্মায় অবৈধ বালি উত্তোলনে নদীগর্ভে বিলিন ১০টি বাড়িঘর, হুমকিতে শহর রক্ষা বাঁধ স্পীকারের সাথে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূতের বিদায়ী সাক্ষাৎ সিরাজদিখানে পুলিশের হামলার আহত সাংবাদিক সালমানকে দেখতে গেলেন ওসি

পল্লবীতে বিদেশে পাঠানোর প্রতারণা ফাঁদ বন্ধ হয়নি প্রসাশন নিরব!

সোলায়মান : 

কিছু মানব পাচার রাজধানীর পল্লবী সাড়ে এগারো অনিক প্লাজার তৃতীয় তলায় বিদেশ পাঠানোর নামে ভুয়া প্রতিষ্ঠান খুলে বসেছে । প্রতিষ্ঠানটির নাম “গ্রিন ভিসা”কনসালটেন্সি। প্রতারণাকারী প্রতিষ্ঠানের রাজিব ও তামিম এই দুইজন দীর্ঘদিন ধরে বিদেশে পাঠানোর নামে চালিয়ে যাচ্ছে প্রতারণা ব্যবসা। রাজিব ও তামিমের বাড়ী খুলনা। তাদের ফেসবুকের পেজে দেওয়া হয় লোভনীয় অফার, লোভনীও অফার দেখে দেশের বেকার যুবক-যুবতীরা ধরনা ধরছে ওই সকল প্রতারকদের অফিসে।

মধ্যেবিত্ত পরিবারের বেকার যুবকরা সহায়সম্বল বিক্রি ও ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে পরিবারকে একটু সচ্ছল রাখতে বিদেশ যাওয়ার আশায় লাখ লাখ টাকা তুলে দিচ্ছে “গ্রিন ভিসা”কনসালটেন্সির অফিসে। প্রতিবেদক অফিসে গেলে রাজিব ও তামিমের সাথে কথা বলে জানতে পারেন এখানে কোন গ্যারান্টি নেই যে সে বিদেশ যাবে। কারণ জানতে চাইলে রাজিব ও তামিম বলেন আমাদের প্রথমে ভিসা প্রসেস করতে ১২ হাজার টাকা দিতে হয় এর পর একটা কনর্ফাম চিঠি এলে ভিসার জন্য কাজ করতে আবার ২০ হাজার টাকা দিতে হবে সর্ব ৩২ হাজার টাকা দিতে হবে অফেরত যোগ্য তারপর ভিসা কনর্ফাম হলে কানাডা গিয়ে টাকা দিতে হবে। তথ্যনুসন্ধানে জানা যায় এগুলো তাদের কৌশল তাদের এখান থেকে এপর্যন্ত কেউ কোন দেশে যেতে পারেনি।

টাকা নেওয়ার আগে মোটা বেতন থাকা খাওয়ার সুযোগ সুবিধাসহ বিভিন্ন অফারের কথা বলে চক্রের প্রধান রাজিব। কিন্তু টাকা নেওয়ার পর দিন মাস বছর ঘুরলেও স্বপ্নের দেশ ইতালি, কানাডা ও ফ্রান্সে আর যাওয়া হয়না। তাদের ঋণের বোঝা দিনে দিনে বাড়তে থাকে এবং পরিবারের ভিতর নেমে আসে অশান্তি। এদিকে প্রতারণাকারী প্রতিষ্ঠানের মালিক ভুক্তভোগীদের টাকা ফেরত দিতে চাননা। দেখান বিভিন্ন ভয়ভীতি। টাকা ফেরত চাইলে বলে ফাইল পাঠিয়েছি আমাদের লয়ার ওই দেশে কাজ করছে সে দেশ থেকে আপনাকে ভিসা না দিলে আমরা কিছু করতে পারবোনা। সর্বশেষ এক ভুক্তভোগী মাহাবুব রহমান গ্রিন ভিসার প্রতারণার শিকার হন, প্রথমে ফাইল কমপ্লিট করতে নেন ১২ হাজার টাকা। পরে আরো চান ৬ লাখ টাকা। পরে মাহবুব জানতে চান তার ভিসার কি অবস্থা। তারা বলেন কিছু দিনের মধ্যেই ভিসার আপডেট আপনার ইমেইলের মাধ্যমে জানতে পারবেন। হঠাৎ মাহাবুব আলমের ইমেলে একটি কানাডা ভিসা কনফার্মেশন ইমেল আসে। মেইল দেখেই সন্দেহ বাড়ে মাহবুবের। পরে বিভিন্ন অভিজ্ঞ মানুষের কাছে জানতে পারে এই মেইল গ্রিন ভিসার বানানো।

এই ইমেল কানাডাদূতাবাসের ইমেল নয়। পরে টাকা ফেরত চাইলে গ্রিন ভিসা অফিসের লোকজন বিভিন্ন তাল বাহানা শুরু করে। এই বিষয়ে রাজিব বলেন, টাকা দিলে মার হবেই। বিদেশ যাওয়াটা ভাগ্য। আমরা চেষ্টা করতে পারি কিন্ত ওই দেশ ভিসা না দিলে আমাদের কিছু করার নেই। রাজিব আরো বলেন, পল্লবী থানার ওসির গাড়ী চালকের সাথে আমার সুসম্পর্ক রয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন প্রশাসনের লোকজন আমার ওখানে যাতায়াত করে। ভিসা না হলে টাকা ফেরত দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তাছাড়া আমার অনেক খরচ লাগে অফিস চালাতে। অফিস ভাড়া, এসি বিল, পানির বিল, কারেন্ট বিল, স্টাফ বিল, এই সব খরচ তো আমি আমার বাড়ী থেকে এনে চালাবোনা। সরজমিনে জানা যায়, পল্লবীর অনিক প্লাজার মালিক কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহসভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন বর্তমানে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি নেতা। তার তত্বাবধানে ওই প্লাজায় এমন বহু ভুয়া প্রতিষ্ঠান রয়েছে। মাসে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে তাদের সেল্টার দেয়।
এবিষয়ে অনিক প্লাজার মালিক বিএনপি নেতা মোয়াজ্জেম বলেন, আমি তো ঢাকার বাইরে আছি, টাকা পয়সা নিয়ে যদি প্রতারণা করে থাকে তাহলে আমাকে বইলেন যতদুর করা সম্ভব আমি চেষ্টা করবো সমাধান করার।
এবিষয়ে পল্লবী থানার ওসি মাহফুজ বলেন অভিযোগকারী পেলে ব্যবস্থা নিবো।

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

কোটা সংস্কার আন্দোলন: সান্তাহারে ৩ ঘন্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ

পল্লবীতে বিদেশে পাঠানোর প্রতারণা ফাঁদ বন্ধ হয়নি প্রসাশন নিরব!

আপডেট টাইম : ০৯:৪১:০৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৫ অগাস্ট ২০২৩

সোলায়মান : 

কিছু মানব পাচার রাজধানীর পল্লবী সাড়ে এগারো অনিক প্লাজার তৃতীয় তলায় বিদেশ পাঠানোর নামে ভুয়া প্রতিষ্ঠান খুলে বসেছে । প্রতিষ্ঠানটির নাম “গ্রিন ভিসা”কনসালটেন্সি। প্রতারণাকারী প্রতিষ্ঠানের রাজিব ও তামিম এই দুইজন দীর্ঘদিন ধরে বিদেশে পাঠানোর নামে চালিয়ে যাচ্ছে প্রতারণা ব্যবসা। রাজিব ও তামিমের বাড়ী খুলনা। তাদের ফেসবুকের পেজে দেওয়া হয় লোভনীয় অফার, লোভনীও অফার দেখে দেশের বেকার যুবক-যুবতীরা ধরনা ধরছে ওই সকল প্রতারকদের অফিসে।

মধ্যেবিত্ত পরিবারের বেকার যুবকরা সহায়সম্বল বিক্রি ও ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে পরিবারকে একটু সচ্ছল রাখতে বিদেশ যাওয়ার আশায় লাখ লাখ টাকা তুলে দিচ্ছে “গ্রিন ভিসা”কনসালটেন্সির অফিসে। প্রতিবেদক অফিসে গেলে রাজিব ও তামিমের সাথে কথা বলে জানতে পারেন এখানে কোন গ্যারান্টি নেই যে সে বিদেশ যাবে। কারণ জানতে চাইলে রাজিব ও তামিম বলেন আমাদের প্রথমে ভিসা প্রসেস করতে ১২ হাজার টাকা দিতে হয় এর পর একটা কনর্ফাম চিঠি এলে ভিসার জন্য কাজ করতে আবার ২০ হাজার টাকা দিতে হবে সর্ব ৩২ হাজার টাকা দিতে হবে অফেরত যোগ্য তারপর ভিসা কনর্ফাম হলে কানাডা গিয়ে টাকা দিতে হবে। তথ্যনুসন্ধানে জানা যায় এগুলো তাদের কৌশল তাদের এখান থেকে এপর্যন্ত কেউ কোন দেশে যেতে পারেনি।

টাকা নেওয়ার আগে মোটা বেতন থাকা খাওয়ার সুযোগ সুবিধাসহ বিভিন্ন অফারের কথা বলে চক্রের প্রধান রাজিব। কিন্তু টাকা নেওয়ার পর দিন মাস বছর ঘুরলেও স্বপ্নের দেশ ইতালি, কানাডা ও ফ্রান্সে আর যাওয়া হয়না। তাদের ঋণের বোঝা দিনে দিনে বাড়তে থাকে এবং পরিবারের ভিতর নেমে আসে অশান্তি। এদিকে প্রতারণাকারী প্রতিষ্ঠানের মালিক ভুক্তভোগীদের টাকা ফেরত দিতে চাননা। দেখান বিভিন্ন ভয়ভীতি। টাকা ফেরত চাইলে বলে ফাইল পাঠিয়েছি আমাদের লয়ার ওই দেশে কাজ করছে সে দেশ থেকে আপনাকে ভিসা না দিলে আমরা কিছু করতে পারবোনা। সর্বশেষ এক ভুক্তভোগী মাহাবুব রহমান গ্রিন ভিসার প্রতারণার শিকার হন, প্রথমে ফাইল কমপ্লিট করতে নেন ১২ হাজার টাকা। পরে আরো চান ৬ লাখ টাকা। পরে মাহবুব জানতে চান তার ভিসার কি অবস্থা। তারা বলেন কিছু দিনের মধ্যেই ভিসার আপডেট আপনার ইমেইলের মাধ্যমে জানতে পারবেন। হঠাৎ মাহাবুব আলমের ইমেলে একটি কানাডা ভিসা কনফার্মেশন ইমেল আসে। মেইল দেখেই সন্দেহ বাড়ে মাহবুবের। পরে বিভিন্ন অভিজ্ঞ মানুষের কাছে জানতে পারে এই মেইল গ্রিন ভিসার বানানো।

এই ইমেল কানাডাদূতাবাসের ইমেল নয়। পরে টাকা ফেরত চাইলে গ্রিন ভিসা অফিসের লোকজন বিভিন্ন তাল বাহানা শুরু করে। এই বিষয়ে রাজিব বলেন, টাকা দিলে মার হবেই। বিদেশ যাওয়াটা ভাগ্য। আমরা চেষ্টা করতে পারি কিন্ত ওই দেশ ভিসা না দিলে আমাদের কিছু করার নেই। রাজিব আরো বলেন, পল্লবী থানার ওসির গাড়ী চালকের সাথে আমার সুসম্পর্ক রয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন প্রশাসনের লোকজন আমার ওখানে যাতায়াত করে। ভিসা না হলে টাকা ফেরত দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তাছাড়া আমার অনেক খরচ লাগে অফিস চালাতে। অফিস ভাড়া, এসি বিল, পানির বিল, কারেন্ট বিল, স্টাফ বিল, এই সব খরচ তো আমি আমার বাড়ী থেকে এনে চালাবোনা। সরজমিনে জানা যায়, পল্লবীর অনিক প্লাজার মালিক কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহসভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন বর্তমানে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি নেতা। তার তত্বাবধানে ওই প্লাজায় এমন বহু ভুয়া প্রতিষ্ঠান রয়েছে। মাসে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে তাদের সেল্টার দেয়।
এবিষয়ে অনিক প্লাজার মালিক বিএনপি নেতা মোয়াজ্জেম বলেন, আমি তো ঢাকার বাইরে আছি, টাকা পয়সা নিয়ে যদি প্রতারণা করে থাকে তাহলে আমাকে বইলেন যতদুর করা সম্ভব আমি চেষ্টা করবো সমাধান করার।
এবিষয়ে পল্লবী থানার ওসি মাহফুজ বলেন অভিযোগকারী পেলে ব্যবস্থা নিবো।