ঢাকা ০২:১৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ অক্টোবর ২০২৪, ৬ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নওগাঁয় যৌতুক লোভী দুলাল এর অত্যাচারে অতিষ্ঠ গৃহবধু

নাদিম আহমেদ অনিক :
নওগাঁয় ডক্টরস ফার্মাসিটিকাল এর ম্যানেজার পদে কর্মরত মোঃ দুলাল হোসেন (৪৫) এর নামে যৌতুকের জন্য নানান অত্যাচারের অভিযোগ তুলেছেন তার গৃহবধূ রেশমা (৩৩)। ঘটনাটি ঘটেছে নওগাঁ জেলা সদরের উকিল পাড়া এলাকায়। এ বিষয়ে মোছাঃ রেশমা আক্তার (৩৩) গত ১৫/০৯/২৩ (শুক্রবার) তারিখে ‘সালিশী ও আইন সহায়তা কেন্দ্র (মানবাধিকার), নওগাঁতে নির্যাতনের মিমাংসার জন্য অভিযোগ করেন। এবং পরে ১৯/০৯/২৩ (মঙ্গলবার) ‘২০১৮ সালের যৌতুক নিরোধ আইনের ৩ ধারা মোতাবেক ‘মোকাম ১নং আমলী আদালত,নওগাঁ’ তে একটি মামলা দায়ের করেছেন। যার মামলা নং- সি,আর ১১৯৫/২০২৩ (নওগাঁ)। মামলার এজাহার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নওগাঁ সদর উপজেলার তিলকপুর ইউনিয়নের উলিপুর গ্রামের মোঃ ওসমান আলীর ছেলে মোঃ দুলাল হোসেন (৪৫) এর সাথে বগুড়ার আদমদিঘী উপজেলার ছাতিয়ানগ্রামের বাগবাড়ী’র বাসিন্দা মোঃ মোশারফ মন্ডল এর কন্যা মোছাঃ রেশমা আক্তার (৩৩) গত ১১/০৮/২০২৩ ইং তারিখে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হোন।
বিবাহ জীবনের কিছুদিনের মধ্যেই মোঃ দুলাল হোসেন প্রথমে ৩,০০,০০০/= (তিন লাখ) টাকা যৌতুকের জন্য দাবী করে নির্যাতন শুরু করলে গৃহবধূ রেশমা নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে তার স্বামী দুলাল হোসেন কে বাবার বাড়ি থেকে ৩লাখ টাকা এনে দেন। পরবর্তীকালে রেশমা আক্তারকে আরও ৫,০০,০০০/= (পাঁচ লাখ) টাকা যৌতুক দাবী করে ভয় ভীতি দেখিয়ে নানানভাবে মানষিক নির্যাতন চালাতে শুরু করেন দুলাল। যার পরিপেক্ষিতে গত ০২/০৯/২৩ (শনিবার) যৌতুকের পাঁচ লাখ টাকা বাবার বাড়ি থেকে নিয়ে আসতে বললে গৃহবধু রেশমা তা নিয়ে আসতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে অকথ্য ভাষায় গালি দিয়ে বাসা থেকে বের করে দেন। পরবর্তীতে ১১/০৯/২৩ (সোমবার) উক্ত বিষয় আপোষ মিমাংসার জন্য মোঃ দুলাল হোসেনকে শ্বশুর বাড়ি ডেকে পাঠানো হলে যৌতুক ছাড়া তার স্ত্রী কে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে অস্বীকৃতি জানিয়ে অকথ্য ভাষায় গালি দিয়ে শ্বশুর বাড়ি থেকে বেড়িয়ে যান।
পরদিন ১২/০৯/২৩ (মঙ্গলবার) সকালে রেশমা তার স্বামীর বাসায় গেলে তাকে মারপিট করে যৌতুকের জন্য চাপ দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেন মোঃ দুলাল হোসেন। ভুক্তভোগী রেশমা বলেন, নানান প্রলোভনে প্রথমে প্রেমের ফাঁদে ফেলে পরবর্তীতে আমাকে বিয়ে করেন তিনি। বিয়ের পর থেকেই বাবার বাসা থেকে যৌতুক নিতে চাপ দিতে শুরু করে। নানান কষ্ট সহ্য করে শুধুমাত্র সংসার করবো বলো এর আগে আমার স্বামীকে ৩ লাখ টাকা বাবার বাসা থেকে এনে দিয়েছি, কিন্তু তিনি লোভী মানুষ। আরও ৫ লাখ টাকা যৌতুকের জন্য আমাকে নানান ভাবে নির্যাতন করেছেন। গত ১২ তারিখে তিনি আমাকে সরিরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করে বাসা থেকে মারপিট করে বের করে দিয়েছে। অসুস্থ্য অবস্থায় গত ১২ তারিখ থেকে নওগাঁ সদর হাসপাতালে ১৬ তারিখ পর্যন্ত চিকিৎসাধীন ছিলাম। তাই আমি প্রথমে মানবাধিকার অফিসে অভিযোগ করি এবং পরে আদালতে মামলা করেছি।
রেশমা’র দুলাভাই বাবলু জানান, আমার শালিকাকে নানানভাবে এর আগেও নির্যাতন করা হয়েছে যৌতুকের জন্য। সংসারে কিছুটা ঝামেলা থাকে এমটা ভেবে আমরা ধৈর্য্য ধরে ছিলাম, কিন্তু আমার শালিকার স্বামীর আচরণে আমাদের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙ্গে গেছে। আমরা আইনের আশ্রয় নিয়েছি। আইন নিশ্চয় অপরাধীদের ছাড় দেয়না।
নওগাঁ সালিশী ও আইন সহায়তা কেন্দ্র (মানবাধিকার) এর প্রগাম অফিসার আব্দুল বাসেত মুকুল বলেন, রেশমা নামের এক গৃহবধু যৌতুকের জন্য নির্যাতনের শিকার হয়ে নওগাঁ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধী অবস্থায় ছিল যা আমরা সরেজমিনে গিয়ে দেখেছি। এ বিষয়ে আমরা ভুক্তভোগীর থেকে একটি অভিযোগ গ্রহণ করেছি। আমরা আইন অনুযায়ী মিমাংসার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করবো।

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

নওগাঁয় যৌতুক লোভী দুলাল এর অত্যাচারে অতিষ্ঠ গৃহবধু

আপডেট টাইম : ১২:৩১:৪৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩

নাদিম আহমেদ অনিক :
নওগাঁয় ডক্টরস ফার্মাসিটিকাল এর ম্যানেজার পদে কর্মরত মোঃ দুলাল হোসেন (৪৫) এর নামে যৌতুকের জন্য নানান অত্যাচারের অভিযোগ তুলেছেন তার গৃহবধূ রেশমা (৩৩)। ঘটনাটি ঘটেছে নওগাঁ জেলা সদরের উকিল পাড়া এলাকায়। এ বিষয়ে মোছাঃ রেশমা আক্তার (৩৩) গত ১৫/০৯/২৩ (শুক্রবার) তারিখে ‘সালিশী ও আইন সহায়তা কেন্দ্র (মানবাধিকার), নওগাঁতে নির্যাতনের মিমাংসার জন্য অভিযোগ করেন। এবং পরে ১৯/০৯/২৩ (মঙ্গলবার) ‘২০১৮ সালের যৌতুক নিরোধ আইনের ৩ ধারা মোতাবেক ‘মোকাম ১নং আমলী আদালত,নওগাঁ’ তে একটি মামলা দায়ের করেছেন। যার মামলা নং- সি,আর ১১৯৫/২০২৩ (নওগাঁ)। মামলার এজাহার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নওগাঁ সদর উপজেলার তিলকপুর ইউনিয়নের উলিপুর গ্রামের মোঃ ওসমান আলীর ছেলে মোঃ দুলাল হোসেন (৪৫) এর সাথে বগুড়ার আদমদিঘী উপজেলার ছাতিয়ানগ্রামের বাগবাড়ী’র বাসিন্দা মোঃ মোশারফ মন্ডল এর কন্যা মোছাঃ রেশমা আক্তার (৩৩) গত ১১/০৮/২০২৩ ইং তারিখে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হোন।
বিবাহ জীবনের কিছুদিনের মধ্যেই মোঃ দুলাল হোসেন প্রথমে ৩,০০,০০০/= (তিন লাখ) টাকা যৌতুকের জন্য দাবী করে নির্যাতন শুরু করলে গৃহবধূ রেশমা নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে তার স্বামী দুলাল হোসেন কে বাবার বাড়ি থেকে ৩লাখ টাকা এনে দেন। পরবর্তীকালে রেশমা আক্তারকে আরও ৫,০০,০০০/= (পাঁচ লাখ) টাকা যৌতুক দাবী করে ভয় ভীতি দেখিয়ে নানানভাবে মানষিক নির্যাতন চালাতে শুরু করেন দুলাল। যার পরিপেক্ষিতে গত ০২/০৯/২৩ (শনিবার) যৌতুকের পাঁচ লাখ টাকা বাবার বাড়ি থেকে নিয়ে আসতে বললে গৃহবধু রেশমা তা নিয়ে আসতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে অকথ্য ভাষায় গালি দিয়ে বাসা থেকে বের করে দেন। পরবর্তীতে ১১/০৯/২৩ (সোমবার) উক্ত বিষয় আপোষ মিমাংসার জন্য মোঃ দুলাল হোসেনকে শ্বশুর বাড়ি ডেকে পাঠানো হলে যৌতুক ছাড়া তার স্ত্রী কে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে অস্বীকৃতি জানিয়ে অকথ্য ভাষায় গালি দিয়ে শ্বশুর বাড়ি থেকে বেড়িয়ে যান।
পরদিন ১২/০৯/২৩ (মঙ্গলবার) সকালে রেশমা তার স্বামীর বাসায় গেলে তাকে মারপিট করে যৌতুকের জন্য চাপ দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেন মোঃ দুলাল হোসেন। ভুক্তভোগী রেশমা বলেন, নানান প্রলোভনে প্রথমে প্রেমের ফাঁদে ফেলে পরবর্তীতে আমাকে বিয়ে করেন তিনি। বিয়ের পর থেকেই বাবার বাসা থেকে যৌতুক নিতে চাপ দিতে শুরু করে। নানান কষ্ট সহ্য করে শুধুমাত্র সংসার করবো বলো এর আগে আমার স্বামীকে ৩ লাখ টাকা বাবার বাসা থেকে এনে দিয়েছি, কিন্তু তিনি লোভী মানুষ। আরও ৫ লাখ টাকা যৌতুকের জন্য আমাকে নানান ভাবে নির্যাতন করেছেন। গত ১২ তারিখে তিনি আমাকে সরিরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করে বাসা থেকে মারপিট করে বের করে দিয়েছে। অসুস্থ্য অবস্থায় গত ১২ তারিখ থেকে নওগাঁ সদর হাসপাতালে ১৬ তারিখ পর্যন্ত চিকিৎসাধীন ছিলাম। তাই আমি প্রথমে মানবাধিকার অফিসে অভিযোগ করি এবং পরে আদালতে মামলা করেছি।
রেশমা’র দুলাভাই বাবলু জানান, আমার শালিকাকে নানানভাবে এর আগেও নির্যাতন করা হয়েছে যৌতুকের জন্য। সংসারে কিছুটা ঝামেলা থাকে এমটা ভেবে আমরা ধৈর্য্য ধরে ছিলাম, কিন্তু আমার শালিকার স্বামীর আচরণে আমাদের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙ্গে গেছে। আমরা আইনের আশ্রয় নিয়েছি। আইন নিশ্চয় অপরাধীদের ছাড় দেয়না।
নওগাঁ সালিশী ও আইন সহায়তা কেন্দ্র (মানবাধিকার) এর প্রগাম অফিসার আব্দুল বাসেত মুকুল বলেন, রেশমা নামের এক গৃহবধু যৌতুকের জন্য নির্যাতনের শিকার হয়ে নওগাঁ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধী অবস্থায় ছিল যা আমরা সরেজমিনে গিয়ে দেখেছি। এ বিষয়ে আমরা ভুক্তভোগীর থেকে একটি অভিযোগ গ্রহণ করেছি। আমরা আইন অনুযায়ী মিমাংসার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করবো।