ঢাকা ০৬:৪৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
গাজীপুরে ঝুকিপূর্ণ রেলক্রসিংয়ে ফুটওভার ব্রীজের দাবীতে মানববন্ধন গাজীপুরে ২১০ পিস ইয়াবা ও সাড়ে ১১ লাখ টাকাসহ মাদক কারবারি গ্রেপ্তার প্রকল্পের টাকা হরিলুটের অভিযোগ ইউএনও এবং পিআইও’র বিরুদ্ধে ফরিদপুরে দুই সাংবাদিকের ওপর হামলা, জিম্মি দশা থেকে উদ্ধার আদমদীঘিতে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রধান শিক্ষক নিহত খালেদা জিয়া যে কোনো সময়ে চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্য যেতে পারেন: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মহম্মদপুরে অসহায় রুগীর পাশে দাঁড়ালেন নয়ন সিরাজদিখানে লীজকৃত ফসলী জমির মাটি কাটার অভিযোগ, সংবাদিককে দেখে নেয়ার হুমকি অন্তবর্তী সরকারকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় যেতে সব ধরণের সহযোগিতা করবে যুক্তরাজ্য শিয়াল-কুকুরের দখলে ডিবি হারুনের শতকোটির রিসোর্ট!
আওয়ামী লীগের মনোনয়ন কেনার হিড়িক

আমলনামা দেখে চূড়ান্ত

৪ দিনে প্রায় ৩৫০০ দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রি হয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের। এ হিসাবে দেশের তিন শ’ আসনে দলটিতে এ পর্যন্ত গড়ে ১২ জনের মতো প্রার্থী হতে চাইছেন। আজও বিক্রি হবে দলীয় মনোনয়নপত্র। সূত্র জানিয়েছে, শেষ দিনে ফরম বিক্রি চার হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে। আসনপ্রতি অনেকে প্রার্থী হতে চাইলেও দলীয় অনুসন্ধান ও বিভিন্ন জরিপ রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে।

দলীয় সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগ একেক আসনে বিকল্পসহ তিন জনের নাম প্রাথমিকভাবে চূড়ান্ত করে রেখেছে। নানা ধরনের জরিপ করে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। প্রার্থীদের হাতে ‘নৌকা’ প্রতীক দেয়ার ক্ষেত্রে এসব জরিপের ফলাফলই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে মূল সহায়ক হবে। একাধিক বৈঠকে দলের সভাপতি শেখ হাসিনা বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। কারা নৌকা প্রতীক বরাদ্দ পাবেন তা স্পষ্ট করেছেন। অন্যদিকে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও দলীয় সভাপতির বার্তা পৌঁছে দিয়েছেন আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের কাছে।

২২শে অক্টোবর রাতে সংসদ সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের বৈঠকে শেখ হাসিনা বলেন, জরিপের ভিত্তিতে যোগ্যদের দলীয় মনোনয়ন দেয়া হবে।

বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত ও সার্ভে রিপোর্টের ভিত্তিতে মনোনয়ন দেয়া হবে। যাকে মনোনয়ন দেয়া হবে তার জন্য সবাইকে কাজ করতে হবে। শেখ হাসিনা বলেন, ভোট অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে। এ ভোটে সবাইকে জিতে আসতে হবে। কাউকে জিতিয়ে আনার দায়িত্ব আমি নিতে পারবো না। আমি কারও চেহারা দেখে মনোনয়ন দেবো না। দেখেশুনে জনপ্রিয় ব্যক্তিদের নমিনেশন দেবো। এখানে যারা আছেন সবাই মনোনয়ন নাও পেতে পারেন। যাকে নমিনেশন দেবো, তার জন্য কাজ করতে হবে। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কয়েকজন নেতা মানবজমিনকে বলেন, দেশি-বিদেশি কয়েকটি জরিপ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের বর্তমান সংসদ সদস্যদের কর্মকাণ্ড এবং নির্বাচনী এলাকায় ভূমিকা জরিপ করা হয়েছে। সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেও খোঁজখবর নেয়া হয়েছে। চূড়ান্ত পর্যায়ে সব রিপোর্ট সমন্বয় করে নৌকার মনোনয়ন দেয়া হবে। তারা জানান, বিদেশি একটি শক্তিশালী জরিপ প্রতিষ্ঠান এবং কয়েকটি দেশীয় গবেষণা ও জরিপ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সংসদ সদস্যদের কর্মকাণ্ড এবং নির্বাচনী এলাকায় তাদের ভূমিকা জরিপ করা হয়েছে। পাশাপাশি সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেও তাদের সম্পর্কে খোঁজখবর নেয়া হয়েছে।

দলের নেতারা জানান, এমপিদের মধ্যে অনেকেই ইতিমধ্যে বিতর্কিত হয়ে পড়েছেন। তারা নির্বাচনী এলাকায় জনবিচ্ছিন্ন এবং নেতাকর্মীদের দূরে ঠেলে নিজস্ব বলয় বা পারিবারিক বলয় গড়েছেন। কেউ কেউ দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়েছেন ও জনপ্রিয়তা হারিয়েছেন। অনেকে সংগঠনবিরোধী কর্মকাণ্ড করেছেন এবং বিভিন্ন নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। জরিপ অনুযায়ী এদের অনেকেই আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের টিকিট পাচ্ছেন না। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে দলীয় সভাপতি ইতিমধ্যে ৩০০ আসনের সকল সংসদ সদস্যের তথ্য নিয়েছেন। তথ্য-উপাত্ত নিয়ে তিনি নিজে বিশ্লেষণ তৈরি করে রেখেছেন। অতএব কর্মীবান্ধব, জনপ্রিয় এবং ভোটার পছন্দে এগিয়ে থাকা প্রার্থীদেরই মনোনয়ন দেবেন। আওয়ামী লীগের একজন সাংগঠনিক সম্পাদক মানবজমিনকে বলেন, জাতীয় নির্বাচনে মনোনয়নের ক্ষেত্রে কখনো কম আবার কখনো বেশি আসনে পরিবর্তন হয়েছে। পরিসংখ্যান ঘাঁটলে দেখা যাবে গড়পড়তা প্রতিবারই একশ’র মতো এমপি বাদ পড়েছেন। আর এবার জরিপ রিপোর্টে যাদের সম্পর্কে নেতিবাচক তথ্য আসবে তাদের বেশির ভাগই আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন পাবেন না।  দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য (এমপি) পদের জন্য চার দিন ধরে দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রি করছে আওয়ামী লীগ। নির্বাচনে লড়তে এই ক’দিনে ঢাকা বিভাগ থেকে সবচেয়ে বেশি দলীয় মনোনয়ন ফরম কিনেছেন মনোনয়নপ্রত্যাশীরা।

এদিকে, সিলেট বিভাগের ক্ষেত্রে এ চিত্রটা ঠিক উল্টো। বিক্রির শুরুর দিন থেকে গতকাল এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সিলেট বিভাগ থেকে সবচেয়ে কম ফরম কিনেছেন মনোনয়নপ্রত্যাশীরা। গতকাল বিকালে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের মনোনয়ন ফরম বিক্রির বিভিন্ন বুথ থেকে এ তথ্য জানা গেছে। গত ১৮ই নভেম্বর থেকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রি করছে আওয়ামী লীগ। বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আটটি বিভাগের জন্য ১০টি বুথ চালু করা হয়েছে। গতকাল সোমবার পর্যন্ত ৩০১৯টি মনোনয়ন ফরম বিক্রি করে আওয়ামী লীগ। এবার দলটির মনোনয়ন ফরমের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০ হাজার টাকা। এতে আয় হয়েছে ১৫ কোটি ৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা।

যেভাবে আওয়ামী লীগের জরিপ: আওয়ামী লীগের অন্তত ৮ জন বিভিন্ন পর্যায়ের নেতার সঙ্গে জরিপ নিয়ে কথা হয় । তারা বিভিন্নভাবে জরিপের ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তারা জানান, কয়েকটি ধাপে করা হয় প্রার্থী বাছাইয়ের জরিপ। একাধিক সূত্রের উপর নির্ভর করেই জরিপ চালানো হয়। প্রতি ছয় মাস পর পর চলেছে এই জরিপ। জরিপের অংশ হিসেবে স্থানীয় পর্যায় থেকে তিনটি গোয়েন্দা সংস্থার দেয়া প্রতিবেদনও বিশেষভাবে দেখা হয়। কয়েক নেতা জানান, আওয়ামী লীগের জরিপটা হয় একেবারেই তৃণমূল পর্যায় থেকে। প্রাইমারি স্কুলের টিচার, হাইস্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের দিয়ে জরিপ চালানো হয়। যারা সামাজিক কাজ করেন, তাদের দিয়ে জরিপ চালানো হয়। একেকবার একেকজনের মাধ্যমে। জরিপে কার জনপ্রিয়তা কতোটুকু, সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর কতোটা জনসম্পৃক্ত ছিলেন, অনেকে আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হয়েছে এসব বিষয়ে বিশেষ নজর দেয়া হয়। পাশাপাশি একেকটি সংসদীয় আসনে সংসদ সদস্য হওয়ার দৌড়ে থাকা একাধিক নেতার মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হচ্ছে কিনা, অভ্যন্তরীণ কোন্দলে কেউ জড়াচ্ছে কিনা এসব দিকও দেখা হয়েছে। কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন আগামী ৭ই  জানুয়ারির সংসদ নির্বাচন করতে চায়।

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

গাজীপুরে ঝুকিপূর্ণ রেলক্রসিংয়ে ফুটওভার ব্রীজের দাবীতে মানববন্ধন

আওয়ামী লীগের মনোনয়ন কেনার হিড়িক

আমলনামা দেখে চূড়ান্ত

আপডেট টাইম : ০৫:০৮:১৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ নভেম্বর ২০২৩

৪ দিনে প্রায় ৩৫০০ দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রি হয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের। এ হিসাবে দেশের তিন শ’ আসনে দলটিতে এ পর্যন্ত গড়ে ১২ জনের মতো প্রার্থী হতে চাইছেন। আজও বিক্রি হবে দলীয় মনোনয়নপত্র। সূত্র জানিয়েছে, শেষ দিনে ফরম বিক্রি চার হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে। আসনপ্রতি অনেকে প্রার্থী হতে চাইলেও দলীয় অনুসন্ধান ও বিভিন্ন জরিপ রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে।

দলীয় সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগ একেক আসনে বিকল্পসহ তিন জনের নাম প্রাথমিকভাবে চূড়ান্ত করে রেখেছে। নানা ধরনের জরিপ করে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। প্রার্থীদের হাতে ‘নৌকা’ প্রতীক দেয়ার ক্ষেত্রে এসব জরিপের ফলাফলই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে মূল সহায়ক হবে। একাধিক বৈঠকে দলের সভাপতি শেখ হাসিনা বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। কারা নৌকা প্রতীক বরাদ্দ পাবেন তা স্পষ্ট করেছেন। অন্যদিকে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও দলীয় সভাপতির বার্তা পৌঁছে দিয়েছেন আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের কাছে।

২২শে অক্টোবর রাতে সংসদ সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের বৈঠকে শেখ হাসিনা বলেন, জরিপের ভিত্তিতে যোগ্যদের দলীয় মনোনয়ন দেয়া হবে।

বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত ও সার্ভে রিপোর্টের ভিত্তিতে মনোনয়ন দেয়া হবে। যাকে মনোনয়ন দেয়া হবে তার জন্য সবাইকে কাজ করতে হবে। শেখ হাসিনা বলেন, ভোট অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে। এ ভোটে সবাইকে জিতে আসতে হবে। কাউকে জিতিয়ে আনার দায়িত্ব আমি নিতে পারবো না। আমি কারও চেহারা দেখে মনোনয়ন দেবো না। দেখেশুনে জনপ্রিয় ব্যক্তিদের নমিনেশন দেবো। এখানে যারা আছেন সবাই মনোনয়ন নাও পেতে পারেন। যাকে নমিনেশন দেবো, তার জন্য কাজ করতে হবে। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কয়েকজন নেতা মানবজমিনকে বলেন, দেশি-বিদেশি কয়েকটি জরিপ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের বর্তমান সংসদ সদস্যদের কর্মকাণ্ড এবং নির্বাচনী এলাকায় ভূমিকা জরিপ করা হয়েছে। সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেও খোঁজখবর নেয়া হয়েছে। চূড়ান্ত পর্যায়ে সব রিপোর্ট সমন্বয় করে নৌকার মনোনয়ন দেয়া হবে। তারা জানান, বিদেশি একটি শক্তিশালী জরিপ প্রতিষ্ঠান এবং কয়েকটি দেশীয় গবেষণা ও জরিপ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সংসদ সদস্যদের কর্মকাণ্ড এবং নির্বাচনী এলাকায় তাদের ভূমিকা জরিপ করা হয়েছে। পাশাপাশি সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেও তাদের সম্পর্কে খোঁজখবর নেয়া হয়েছে।

দলের নেতারা জানান, এমপিদের মধ্যে অনেকেই ইতিমধ্যে বিতর্কিত হয়ে পড়েছেন। তারা নির্বাচনী এলাকায় জনবিচ্ছিন্ন এবং নেতাকর্মীদের দূরে ঠেলে নিজস্ব বলয় বা পারিবারিক বলয় গড়েছেন। কেউ কেউ দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়েছেন ও জনপ্রিয়তা হারিয়েছেন। অনেকে সংগঠনবিরোধী কর্মকাণ্ড করেছেন এবং বিভিন্ন নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। জরিপ অনুযায়ী এদের অনেকেই আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের টিকিট পাচ্ছেন না। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে দলীয় সভাপতি ইতিমধ্যে ৩০০ আসনের সকল সংসদ সদস্যের তথ্য নিয়েছেন। তথ্য-উপাত্ত নিয়ে তিনি নিজে বিশ্লেষণ তৈরি করে রেখেছেন। অতএব কর্মীবান্ধব, জনপ্রিয় এবং ভোটার পছন্দে এগিয়ে থাকা প্রার্থীদেরই মনোনয়ন দেবেন। আওয়ামী লীগের একজন সাংগঠনিক সম্পাদক মানবজমিনকে বলেন, জাতীয় নির্বাচনে মনোনয়নের ক্ষেত্রে কখনো কম আবার কখনো বেশি আসনে পরিবর্তন হয়েছে। পরিসংখ্যান ঘাঁটলে দেখা যাবে গড়পড়তা প্রতিবারই একশ’র মতো এমপি বাদ পড়েছেন। আর এবার জরিপ রিপোর্টে যাদের সম্পর্কে নেতিবাচক তথ্য আসবে তাদের বেশির ভাগই আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন পাবেন না।  দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য (এমপি) পদের জন্য চার দিন ধরে দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রি করছে আওয়ামী লীগ। নির্বাচনে লড়তে এই ক’দিনে ঢাকা বিভাগ থেকে সবচেয়ে বেশি দলীয় মনোনয়ন ফরম কিনেছেন মনোনয়নপ্রত্যাশীরা।

এদিকে, সিলেট বিভাগের ক্ষেত্রে এ চিত্রটা ঠিক উল্টো। বিক্রির শুরুর দিন থেকে গতকাল এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সিলেট বিভাগ থেকে সবচেয়ে কম ফরম কিনেছেন মনোনয়নপ্রত্যাশীরা। গতকাল বিকালে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের মনোনয়ন ফরম বিক্রির বিভিন্ন বুথ থেকে এ তথ্য জানা গেছে। গত ১৮ই নভেম্বর থেকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রি করছে আওয়ামী লীগ। বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আটটি বিভাগের জন্য ১০টি বুথ চালু করা হয়েছে। গতকাল সোমবার পর্যন্ত ৩০১৯টি মনোনয়ন ফরম বিক্রি করে আওয়ামী লীগ। এবার দলটির মনোনয়ন ফরমের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০ হাজার টাকা। এতে আয় হয়েছে ১৫ কোটি ৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা।

যেভাবে আওয়ামী লীগের জরিপ: আওয়ামী লীগের অন্তত ৮ জন বিভিন্ন পর্যায়ের নেতার সঙ্গে জরিপ নিয়ে কথা হয় । তারা বিভিন্নভাবে জরিপের ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তারা জানান, কয়েকটি ধাপে করা হয় প্রার্থী বাছাইয়ের জরিপ। একাধিক সূত্রের উপর নির্ভর করেই জরিপ চালানো হয়। প্রতি ছয় মাস পর পর চলেছে এই জরিপ। জরিপের অংশ হিসেবে স্থানীয় পর্যায় থেকে তিনটি গোয়েন্দা সংস্থার দেয়া প্রতিবেদনও বিশেষভাবে দেখা হয়। কয়েক নেতা জানান, আওয়ামী লীগের জরিপটা হয় একেবারেই তৃণমূল পর্যায় থেকে। প্রাইমারি স্কুলের টিচার, হাইস্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের দিয়ে জরিপ চালানো হয়। যারা সামাজিক কাজ করেন, তাদের দিয়ে জরিপ চালানো হয়। একেকবার একেকজনের মাধ্যমে। জরিপে কার জনপ্রিয়তা কতোটুকু, সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর কতোটা জনসম্পৃক্ত ছিলেন, অনেকে আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হয়েছে এসব বিষয়ে বিশেষ নজর দেয়া হয়। পাশাপাশি একেকটি সংসদীয় আসনে সংসদ সদস্য হওয়ার দৌড়ে থাকা একাধিক নেতার মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হচ্ছে কিনা, অভ্যন্তরীণ কোন্দলে কেউ জড়াচ্ছে কিনা এসব দিকও দেখা হয়েছে। কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন আগামী ৭ই  জানুয়ারির সংসদ নির্বাচন করতে চায়।