ঢাকা ০৭:০৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ০১ জুন ২০২৫, ১৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
৫ বছর যাবত ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ ডিভিশনে লুটপাট করছেন গণপূর্তের নিবাহী প্রকৌশলী মাসুদ রানা! মাগুরা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী আবু বকর সিদ্দিক এর লোপাট কাহিনী! মির্জাগঞ্জে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাহাদাৎ বার্ষিকী পালিত মানুষ চায় ডিসেম্বরেই নির্বাচন- আমিনুল হক দিয়ামনি ই-কমিউনিকেশন পদ্মা উদ্যোক্তা ফাউন্ডেশন জয়ী এ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠিত পল্লবীতে নিজ নির্বাচনী এলাকার জলাবদ্ধতায় ক্ষতিগ্রস্ত ৩ হাজার পরিবারের পাশে : আমিনুল হক নওগাঁয় জিয়াউর রহমানের শাহাদাৎ বার্ষিকী পালিত তারুণ্যের সমাবেশে তারেক রহমানের বার্তা- ” ডিসেম্বরেই চাই নির্বাচন “ নওগাঁয় মিডিয়া কাপ প্রীতি ফুটবল ম্যাচে প্রিন্ট মিডিয়া একাদশের দাপুটে জয় রূপনগর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের নতুন ভবনের ভিত্তি প্রস্তুর উদ্বোধন করলেন আমিনুল হক

পছন্দের থানায় যেতে ওসিদের দৌড়ঝাঁপ

নির্বাচন কমিশন (ইসি) বদলির নির্দেশ দেওয়ার পর পছন্দের থানা পেতে অনেক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। তারা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে ধরনা দিচ্ছেন। সুবিধামতো থানা পেতে নানা ‘মানবিক’ কারণ সামনে আনছেন। অনেকেই নিজের সন্তানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, পরিবারের সদস্যদের কারও কারও অসুস্থতার চিত্র তুলে ধরছেন বড় কর্মকর্তাদের কাছে। কেউ কেউ প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাদের কাছেও ছুটছেন তদবির নিয়ে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য মিলেছে।

ছয় মাসের বেশি সময় ধরে একই থানায় ওসির দায়িত্বে রয়েছেন—এমন কর্মকর্তাদের অন্য জেলা বা অন্যত্র বদলির জন্য ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন কমিশনে প্রস্তাব পাঠাতে বলা হয়। পুলিশ সূত্র জানায়, এর পরই ছয় মাসের বেশি সময় ধরে একই স্টেশনে থাকা ওসিদের তালিকা তৈরির কাজ শুরু হয়। সে অনুযায়ী গতকাল রোববার পর্যন্ত সারা দেশে ৬৩৬ থানার মধ্যে ৩২৬ ওসিকে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। তারা ছয় মাস থেকে তারও বেশি সময় ধরে একই থানায় দায়িত্ব পালন করছেন। ওই তালিকায় ঢাকা মহানগর পুলিশে (ডিএমপি) ৩৩ জন ওসি রয়েছেন।

গতকাল রোববার রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রভাবিত হতে পারে ভেবে নির্বাচন কমিশন ওসিদের রদবদলের সিদ্ধান্ত নিতে পারে। তিনি বলেন, ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার মনে করেছেন, যারা দীর্ঘদিন ধরে এক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আছেন, তারা কারও প্রতি প্রভাবিত হতে পারেন। এটা নির্বাচন কমিশনের বিবেচনা। সেজন্যই তারা ওসিদের বদলির কথা বলেছেন।’

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সাধারণত দুই বছরের জন্য ওসিদের থানায় নিয়োগ দেওয়া হয়। পুলিশ সদর দপ্তর থেকে পরিদর্শকদের বদলি করে মেট্রোপলিটন এবং রেঞ্জে পাঠানো হয়। এরপর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার ও রেঞ্জ ডিআইজির আদেশে থানায় ওসিদের পদায়ন হয়। এই ওসি বদলি ও পদায়নে পুলিশ সদর দপ্তরে একটি নীতিমালা রয়েছে, যা প্রায় সময় পালন করা হয় না। বেশিরভাগ থানাতেই নানা তদবিরে ওসি পদায়ন হয়ে থাকে। অনেক ‘প্রভাবশালী ওসি’ নানাভাবে গুরুত্বপূর্ণ থানাগুলোতেও পদায়ন নেন। অনেক এলাকায় এমপি, মন্ত্রীসহ প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতারা তাদের পছন্দের কর্মকর্তাকে ওসি হিসেবে পোস্টিং করে নিয়ে থাকেন। এজন্য একই জেলা বা মেট্রোপলিটনে ঘুরেফিরে পরিচিত মুখ ওসির দায়িত্ব পালন করে থাকেন। একই জেলা বা মেট্রোপলিটনে বছরের পর বছর ধরে একই ওসিদের দেখা যায়। নিয়ম রক্ষায় শুধু জেলার ভেতরই তাদের থানা বদল করা হয়। এ ধরনের কর্মকর্তারা এবার বিপাকে পড়েছেন। তারা নানা জায়গায় দৌড়ঝাঁপ করলেও নির্বাচন কমিশনের অধীনে থাকায় ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা বা রাজনৈতিক নেতাদের কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া পাচ্ছেন না।

কয়েকটি থানার ওসির সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, এ ধরনের ‘গণবদলির’ জন্য তারা প্রস্তুত ছিলেন না। বিভিন্ন নির্বাচনের আগে কেবল পক্ষপাতমূলক আচরণ বা দায়িত্ব পালনে সমোলোচনা ও দায়িত্বে অবহেলার কারণে ওসিসহ পুলিশ কর্মকর্তাদের বদলি করা হয়েছে। এবারই প্রথম সব থানার ওসিকে বদলির নির্দেশনা আসায় তারা অনেকটা বিস্মিত হয়েছেন।

দুই ওসি জানিয়েছেন, তাদের সাধারণত দুই বছরের জন্য একটি থানায় ওসির দায়িত্ব দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী তারা কর্মপরিকল্পনা ঠিক করেন। পাশাপাশি সন্তানদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি করা এবং থানা এলাকায় বাসা ভাড়া নেওয়ার বিষয়টিও থাকে। এখন হঠাৎ করে এমন বদলিতে তাদের ঝামেলায় পড়তে হতে পারে।

পুলিশ সদর দপ্তরের এক কর্মকর্তা কালবেলাকে বলেন, তারা নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনার আলোকে ওসি বদলির প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। তবে একসঙ্গে তিন শতাধিক ওসিকে বদলি ও পদায়ন করা কঠিন কাজ হবে। কারণ, একটি নির্বাচনী আসনে একাধিক থানা রয়েছে। এতে চাইলেই ওসিদের থানা বদল করা সম্ভব হবে না। এক্ষেত্রে হয়তো অনেককে জেলা থেকেই বদলি করতে হবে। সে বিষয়টি যাচাই করা হচ্ছে। এজন্য হয়তো ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন কমিশনে তালিকা পাঠানো সম্ভব নাও হতে পারে। সেক্ষেত্রে সময় আবেদন করা হতে পারে।

ট্যাগস

৫ বছর যাবত ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ ডিভিশনে লুটপাট করছেন গণপূর্তের নিবাহী প্রকৌশলী মাসুদ রানা!

পছন্দের থানায় যেতে ওসিদের দৌড়ঝাঁপ

আপডেট টাইম : ০৪:২০:১০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৩

নির্বাচন কমিশন (ইসি) বদলির নির্দেশ দেওয়ার পর পছন্দের থানা পেতে অনেক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। তারা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে ধরনা দিচ্ছেন। সুবিধামতো থানা পেতে নানা ‘মানবিক’ কারণ সামনে আনছেন। অনেকেই নিজের সন্তানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, পরিবারের সদস্যদের কারও কারও অসুস্থতার চিত্র তুলে ধরছেন বড় কর্মকর্তাদের কাছে। কেউ কেউ প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাদের কাছেও ছুটছেন তদবির নিয়ে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য মিলেছে।

ছয় মাসের বেশি সময় ধরে একই থানায় ওসির দায়িত্বে রয়েছেন—এমন কর্মকর্তাদের অন্য জেলা বা অন্যত্র বদলির জন্য ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন কমিশনে প্রস্তাব পাঠাতে বলা হয়। পুলিশ সূত্র জানায়, এর পরই ছয় মাসের বেশি সময় ধরে একই স্টেশনে থাকা ওসিদের তালিকা তৈরির কাজ শুরু হয়। সে অনুযায়ী গতকাল রোববার পর্যন্ত সারা দেশে ৬৩৬ থানার মধ্যে ৩২৬ ওসিকে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। তারা ছয় মাস থেকে তারও বেশি সময় ধরে একই থানায় দায়িত্ব পালন করছেন। ওই তালিকায় ঢাকা মহানগর পুলিশে (ডিএমপি) ৩৩ জন ওসি রয়েছেন।

গতকাল রোববার রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রভাবিত হতে পারে ভেবে নির্বাচন কমিশন ওসিদের রদবদলের সিদ্ধান্ত নিতে পারে। তিনি বলেন, ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার মনে করেছেন, যারা দীর্ঘদিন ধরে এক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আছেন, তারা কারও প্রতি প্রভাবিত হতে পারেন। এটা নির্বাচন কমিশনের বিবেচনা। সেজন্যই তারা ওসিদের বদলির কথা বলেছেন।’

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সাধারণত দুই বছরের জন্য ওসিদের থানায় নিয়োগ দেওয়া হয়। পুলিশ সদর দপ্তর থেকে পরিদর্শকদের বদলি করে মেট্রোপলিটন এবং রেঞ্জে পাঠানো হয়। এরপর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার ও রেঞ্জ ডিআইজির আদেশে থানায় ওসিদের পদায়ন হয়। এই ওসি বদলি ও পদায়নে পুলিশ সদর দপ্তরে একটি নীতিমালা রয়েছে, যা প্রায় সময় পালন করা হয় না। বেশিরভাগ থানাতেই নানা তদবিরে ওসি পদায়ন হয়ে থাকে। অনেক ‘প্রভাবশালী ওসি’ নানাভাবে গুরুত্বপূর্ণ থানাগুলোতেও পদায়ন নেন। অনেক এলাকায় এমপি, মন্ত্রীসহ প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতারা তাদের পছন্দের কর্মকর্তাকে ওসি হিসেবে পোস্টিং করে নিয়ে থাকেন। এজন্য একই জেলা বা মেট্রোপলিটনে ঘুরেফিরে পরিচিত মুখ ওসির দায়িত্ব পালন করে থাকেন। একই জেলা বা মেট্রোপলিটনে বছরের পর বছর ধরে একই ওসিদের দেখা যায়। নিয়ম রক্ষায় শুধু জেলার ভেতরই তাদের থানা বদল করা হয়। এ ধরনের কর্মকর্তারা এবার বিপাকে পড়েছেন। তারা নানা জায়গায় দৌড়ঝাঁপ করলেও নির্বাচন কমিশনের অধীনে থাকায় ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা বা রাজনৈতিক নেতাদের কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া পাচ্ছেন না।

কয়েকটি থানার ওসির সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, এ ধরনের ‘গণবদলির’ জন্য তারা প্রস্তুত ছিলেন না। বিভিন্ন নির্বাচনের আগে কেবল পক্ষপাতমূলক আচরণ বা দায়িত্ব পালনে সমোলোচনা ও দায়িত্বে অবহেলার কারণে ওসিসহ পুলিশ কর্মকর্তাদের বদলি করা হয়েছে। এবারই প্রথম সব থানার ওসিকে বদলির নির্দেশনা আসায় তারা অনেকটা বিস্মিত হয়েছেন।

দুই ওসি জানিয়েছেন, তাদের সাধারণত দুই বছরের জন্য একটি থানায় ওসির দায়িত্ব দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী তারা কর্মপরিকল্পনা ঠিক করেন। পাশাপাশি সন্তানদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি করা এবং থানা এলাকায় বাসা ভাড়া নেওয়ার বিষয়টিও থাকে। এখন হঠাৎ করে এমন বদলিতে তাদের ঝামেলায় পড়তে হতে পারে।

পুলিশ সদর দপ্তরের এক কর্মকর্তা কালবেলাকে বলেন, তারা নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনার আলোকে ওসি বদলির প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। তবে একসঙ্গে তিন শতাধিক ওসিকে বদলি ও পদায়ন করা কঠিন কাজ হবে। কারণ, একটি নির্বাচনী আসনে একাধিক থানা রয়েছে। এতে চাইলেই ওসিদের থানা বদল করা সম্ভব হবে না। এক্ষেত্রে হয়তো অনেককে জেলা থেকেই বদলি করতে হবে। সে বিষয়টি যাচাই করা হচ্ছে। এজন্য হয়তো ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন কমিশনে তালিকা পাঠানো সম্ভব নাও হতে পারে। সেক্ষেত্রে সময় আবেদন করা হতে পারে।