রাস্তার মাঝে উঁচু ডিভাইডার। সেখানে ডিভাইডারের সঙ্গে হেলান দিয়ে রাখা হয়েছে কাঠের মই। সেই মই দিয়ে ডিভাইডার পার হচ্ছে মানুষ। এতে জনপ্রতি গুনতে হচ্ছে টাকা। মইয়ের পাশেই দাঁড়িয়ে থাকা যুবক নিচ্ছেন এই টাকা।
রবিবার (১৭ মার্চ) দুপুর থেকেই এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভাইরাল ওই ভিডিওতে দেখা গেছে, মইয়ের পাশেই এসে থামছে দূলপাল্লার বাস। বাস থেকে নেমে যাত্রীরা টাকা দিয়ে ওই ডিভাইডার পার হচ্ছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ অংশের ঘটনা এটি। মইয়ে ডিভাইডার পার হতে জনপ্রতি পাঁচ টাকা দিতে হয়।
ভিডিও দেখার পর সেখানে অভিযানও চালায় পুলিশ। তবে সে সময় ওই যুবককে পাওয়া যায়নি ঘটনাস্থলে। সেখান থেকে মইটি জব্দ করে নিয়ে আসা হয়। সন্ধ্যার পর অভিযান চালিয়ে ওই যুবককে আটক করে হাইওয়ে পুলিশ।
১০ তলা ভবন ৬০ হাজারে বিক্রি১০ তলা ভবন ৬০ হাজারে বিক্রি
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কাঁচপুর হাইওয়ে শিমরাইল ক্যাম্পের ইনচার্জ এ কে এম শরফুদ্দিন। তিনি দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সন্ধ্যার পর রসুলপুর এলাকা থেকে ওই যুবককে আটক করা হয়েছে। তার নাম রবিউল (২৬)। আগামীকাল তার বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ বিষয়ে সড়ক ও জনপদ কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তারা সেখানে কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে দেবেন। এ ছাড়া যেসব বাস পরিবহন ওই স্থানে যাত্রী নামাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।’
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে দূরপাল্লার যানবাহনগুলো সরাসরি যেন ঢাকায় যেতে পারে সেজন্য চার লেনের ঢাকামুখী সড়কের সিদ্ধিরগঞ্জের কাঁচপুর ব্রিজ থেকে কুয়েতপ্লাজা এলাকা পর্যন্ত উঁচু ডিভাইডার দিয়ে দুই লেনে বিভক্ত করে দেওয়া হয়। সেইসঙ্গে আঞ্চলিক যানবাহন চলাচলের জন্য আরও দুই লেন রাখা হয়। এতদিন দূরপাল্লার লেন থেকে আঞ্চলিক লেনে যাত্রীদের চলাচলের জন্য সওজ কার্যালয়ের সামনে একটি গেট খোলা রাখা ছিল। ওইখানে দূরপাল্লার যানবাহনগুলো শিমরাইল মোড়ের যাত্রীদের নামিয়ে দিত। গত দুই মাস ধরে তা বন্ধ করে রেখেছে সহজ কর্তৃপক্ষ। কিন্তু দূরপাল্লার যানবাহনগুলো এখনও ওই স্থানেই যাত্রী নামিয়ে দিচ্ছে।
এদিকে বন্ধ করার ফলে গত দুইমাস ধরেই যাত্রীরা এভাবে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছেন। এই সুযোগে কয়েকজন অসাধু পরিবহন শ্রমিক ডিভাইডারের দুই পাশে মই টানিয়ে টাকার বিনিময়ে যাত্রীদের ডিভাইডার পার করে দিচ্ছেন।
নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী শাহানা ফেরদৌস বলেন, ‘এর আগেও একাধিকবার এভাবে মই বসিয়ে যাত্রী পারাপার করা হয়েছিল। পরে আমরা আনসার দিয়ে মইগুলো জব্দ করি। বিষয়টি নিয়ে আমরা হাইওয়ে পুলিশের সঙ্গে একাধিকবার কথা বলেছি। আমরা ও পুলিশের সহায়তায় পরিবহনগুলোকে সার্ভিস লেন দিয়ে চলাচলে বাধ্য করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’