ঢাকা ০৩:৫৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৪ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
আদমদীঘিতে বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে যুবদলের বৃক্ষরোপন পেশাজীবী পরিষদ পাবনা পৌরসভার উদ্যোগে রাসূল (সা:) প্রদর্শিত পানাহার পদ্ধতি শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত পাবনায় রনির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা চেয়ে মানববন্ধন পলাশে পবিত্র ঈদ-এ মিলাদুন্নবী (সা.)’র জশনে জুলুস সিরাজদিখানে ঈদে মিলাদুন্নবী ও জসনে জুলুস পালিত শরীয়তপুরে ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ অনুষ্ঠিত পটুয়াখালীর নদীতে পাওয়া রেজাউল বয়াতির লাশের রহস্য উদঘাটন বাউফলে সেই মাদ্রাসার তালা ভাঙ্গার ভিডিও ভাইরাল, তদন্ত সম্পন্ন, দ্রুত ব্যবস্থা তারেক রহমানের ৩১ দফা রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কার কর্মসূচি জনমনে আশা জাগিয়েছে : কফিলউদ্দিন আহমেদ ভোলায় মনপুরা আলোচিত গণধর্ষণ মামলায় ৩ আসামি গ্রেফতার

টিকেট নিয়ে সেনা সদস্য-টিটিই’র বাকবিতন্ডা; ট্রেনের ভিতরে ভাংচুর সেনা সদস্য সহ আহত-৫

 

এমামুল,আদমদীঘি প্রতিনিধি-

টিকেট নিয়ে সেনাবাহিনীর সদস্য ও রেলওয়ের টিটিই’র মধ্যে বাকবিতন্ডার এক পর্যাযে মারপিটের ঘটনা ঘটেছে। এতে টিটিই, গার্ড ও এক সেনা সদস্যসহ পাঁচ জন আহত হয়েছে বলে জানা যায়। এছাড়া এই ঘটনায় ট্রেনের কর্তব্যরত গার্ড রুমের দরজা, জানালা ভাংচুর করার অভিযোগ উঠেছে সেনা বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে। আর ঘটনার পর প্রায় ১ ঘন্টা ৫০ মিনিট বিলম্বে ট্রেনটি সান্তাহার জংশন স্টেশন থেকে ছেড়ে যায়। আর এতেই দূর্ভোগে পড়ে প্রায় দুই হাজার যাত্রী। অনেক যাত্রীকে ক্ষোভ প্রকাশ করতেও দেখা যায়। আবার প্রায় দুই শত যাত্রীকে দেখা যায় তারা ট্রেন ছাড়ার জন্য বিক্ষোভ করতে করতে স্টেশন মাস্টারের রুমের দিকে এগিয়ে যায়।

বৃহস্পতিবার (২মে) বিকাল ৫ টার দিকে বগুড়ার সান্তাহার রেলওয়ে জংশন স্টেশনে পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ট্রেনে এঘটনা ঘটে।

রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, পঞ্চগড় থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী পঞ্চগড় এক্সপ্রেস আন্তঃনগর ট্রেন বৃহস্পতিবার বিকাল পৌনে ৪টায় ফুলবাড়ি স্টেশনে পৌঁছে। এ সময় ওই ট্রেনের শিতাতপ নিয়ন্ত্রিত (এসি) ‘গ’ বগিতে থাকা সেনা সদস্য আল আমিন সৈয়দপুর সেনানিবাস থেকে ছুটিতে নিজ বাড়িতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে ট্রেনে উঠে। ট্রেনে আরও ১০-১২ জন সেনা সদস্য ছিল। ট্রেনের দায়িত্বরত টিটিই রাসেল হোসেন সেনা সদস্যর কাছে টিকিট চাইলে সেনা সদস্য টিকেট দেখাতে ব্যর্থ হয়। এরপর টিটিই’র চাহিদামতো টিকেট বাবদ ৭ শত টাকা দিয়ে দেয় সেনা সদস্য। টাকার বিনিময়ে টিকেট চাইলে টিকিট দিতে অস্বীকৃতি জানান। আর এতেই সেখানে এক পর্যায়ে ওই টিটিইর সাথে তাদের বাকবিতন্ডা বাঁধে। ওই ট্রেনের অ্যাটেনডেন্ট আব্দুল মালেক, গার্ড আব্দুস সাত্তার বিষয়টি সমাধানের জন্য এগিয়ে আসেন।

এরপর ট্রেনটি সান্তাহার স্টেশনে পৌঁছলে ওই ট্রেনের বিভিন্ন বগিতে যাত্রা করা ১০-১২ সেনা সদস্য একত্রিত হয়ে ওই ট্রেনের গার্ড, টিটিই ও অ্যাটেনডেন্টসহ ৪-৫ জনকে কিল, ঘুষি ও চেয়ার দিয়ে মারপিট করে আহত করেন। পাশাপাশি ট্রেনের দরজা, জানালা ভাংচুর করেন।

এঘটনায় এক সেনা সদস্যও আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
খবর পেয়ে রেলওয়ে থানা পুলিশ, আদমদীঘি থানা পুলিশ ও রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী তাদের উদ্ধার করে। চিকিৎসার জন্য আহত টিটি ও গার্ডকে নওগাঁ সদর হাসপাতালে পাঠিয়ে দায় ও বেশ কিছু সেনা সদস্যকে পুলিশি হেফাজতে রাখা হয়েছে বলে জানা যায়।

এ বিষয় নিয়ে পুলিশ বা সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে কোন বক্তব্য দেওয়া হয়নি। তবে একাধিক সূত্রে জানা যায়, বগুড়া সহকারী পুলিশ সুপার, রেলওয়ে পুলিশ সুপার ও সেনাবাহিনীর উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ ঘটনাস্থলে আসার পর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।।

প্রত্যক্ষদর্শী এক ট্রেন যাত্রী বলেন, টিটিই জানতোনা সে সেনাবাহিনীর সদস্য। টিকেট না থাকায় তার কাছে টিকেট চায় কর্তব্যরত টিটিই। তখন সে সেনাবাহিনীর পরিচয় দিয়ে বলে আমার কাছে টিকেট নেই। টিটিই তার কাছে সাত শত টাকা চাইলে টিকেটের মূল্য বাবদ সেনাবাহিনীর ওই সদস্য টিটিকে টাকা দিয়ে দেয়। এরপর টিকেট চাইলে টিকেট দিতে গড়ি মসি করে টিটিই। মূলত টিকেট না দেওয়ায় শুরু হয় বাগবিতণ্ডা। তিনি একটু ক্ষোভ নিয়েই বললেন, প্রায় সকল ট্রেনেই কিছু দূর্নীতিবাজ টিটিই থাকে।

মোরশেদ নামের অপর এক যাত্রী ক্ষোভ নিয়ে বলেন, সরকারি লোকদের গন্ডগোলের কারণে ভোগান্তিতে পড়েছি আমাদের মতো প্রায় দুই হাজার সাধারণ যাত্রীরা। এই ঘটনার পর প্রায় এক থেকে দেড় ঘন্টা ট্রেন দাঁড়িয়ে আছে সান্তাহার স্টেশনে। কখন যে এর সমাধান হবে কিছুই বলতে পারছি না। তবে এর দ্রুত সমাধান চাই আমরা।

উল্লেখ্য, নিউ লেখা পর্যন্ত সান্তাহার রেলওয়ে থানায় সেনাবাহিনীর ও পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত আছেন।

 

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

আদমদীঘিতে বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে যুবদলের বৃক্ষরোপন

টিকেট নিয়ে সেনা সদস্য-টিটিই’র বাকবিতন্ডা; ট্রেনের ভিতরে ভাংচুর সেনা সদস্য সহ আহত-৫

আপডেট টাইম : ০৪:৫০:০৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ মে ২০২৪

 

এমামুল,আদমদীঘি প্রতিনিধি-

টিকেট নিয়ে সেনাবাহিনীর সদস্য ও রেলওয়ের টিটিই’র মধ্যে বাকবিতন্ডার এক পর্যাযে মারপিটের ঘটনা ঘটেছে। এতে টিটিই, গার্ড ও এক সেনা সদস্যসহ পাঁচ জন আহত হয়েছে বলে জানা যায়। এছাড়া এই ঘটনায় ট্রেনের কর্তব্যরত গার্ড রুমের দরজা, জানালা ভাংচুর করার অভিযোগ উঠেছে সেনা বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে। আর ঘটনার পর প্রায় ১ ঘন্টা ৫০ মিনিট বিলম্বে ট্রেনটি সান্তাহার জংশন স্টেশন থেকে ছেড়ে যায়। আর এতেই দূর্ভোগে পড়ে প্রায় দুই হাজার যাত্রী। অনেক যাত্রীকে ক্ষোভ প্রকাশ করতেও দেখা যায়। আবার প্রায় দুই শত যাত্রীকে দেখা যায় তারা ট্রেন ছাড়ার জন্য বিক্ষোভ করতে করতে স্টেশন মাস্টারের রুমের দিকে এগিয়ে যায়।

বৃহস্পতিবার (২মে) বিকাল ৫ টার দিকে বগুড়ার সান্তাহার রেলওয়ে জংশন স্টেশনে পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ট্রেনে এঘটনা ঘটে।

রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, পঞ্চগড় থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী পঞ্চগড় এক্সপ্রেস আন্তঃনগর ট্রেন বৃহস্পতিবার বিকাল পৌনে ৪টায় ফুলবাড়ি স্টেশনে পৌঁছে। এ সময় ওই ট্রেনের শিতাতপ নিয়ন্ত্রিত (এসি) ‘গ’ বগিতে থাকা সেনা সদস্য আল আমিন সৈয়দপুর সেনানিবাস থেকে ছুটিতে নিজ বাড়িতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে ট্রেনে উঠে। ট্রেনে আরও ১০-১২ জন সেনা সদস্য ছিল। ট্রেনের দায়িত্বরত টিটিই রাসেল হোসেন সেনা সদস্যর কাছে টিকিট চাইলে সেনা সদস্য টিকেট দেখাতে ব্যর্থ হয়। এরপর টিটিই’র চাহিদামতো টিকেট বাবদ ৭ শত টাকা দিয়ে দেয় সেনা সদস্য। টাকার বিনিময়ে টিকেট চাইলে টিকিট দিতে অস্বীকৃতি জানান। আর এতেই সেখানে এক পর্যায়ে ওই টিটিইর সাথে তাদের বাকবিতন্ডা বাঁধে। ওই ট্রেনের অ্যাটেনডেন্ট আব্দুল মালেক, গার্ড আব্দুস সাত্তার বিষয়টি সমাধানের জন্য এগিয়ে আসেন।

এরপর ট্রেনটি সান্তাহার স্টেশনে পৌঁছলে ওই ট্রেনের বিভিন্ন বগিতে যাত্রা করা ১০-১২ সেনা সদস্য একত্রিত হয়ে ওই ট্রেনের গার্ড, টিটিই ও অ্যাটেনডেন্টসহ ৪-৫ জনকে কিল, ঘুষি ও চেয়ার দিয়ে মারপিট করে আহত করেন। পাশাপাশি ট্রেনের দরজা, জানালা ভাংচুর করেন।

এঘটনায় এক সেনা সদস্যও আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
খবর পেয়ে রেলওয়ে থানা পুলিশ, আদমদীঘি থানা পুলিশ ও রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী তাদের উদ্ধার করে। চিকিৎসার জন্য আহত টিটি ও গার্ডকে নওগাঁ সদর হাসপাতালে পাঠিয়ে দায় ও বেশ কিছু সেনা সদস্যকে পুলিশি হেফাজতে রাখা হয়েছে বলে জানা যায়।

এ বিষয় নিয়ে পুলিশ বা সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে কোন বক্তব্য দেওয়া হয়নি। তবে একাধিক সূত্রে জানা যায়, বগুড়া সহকারী পুলিশ সুপার, রেলওয়ে পুলিশ সুপার ও সেনাবাহিনীর উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ ঘটনাস্থলে আসার পর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।।

প্রত্যক্ষদর্শী এক ট্রেন যাত্রী বলেন, টিটিই জানতোনা সে সেনাবাহিনীর সদস্য। টিকেট না থাকায় তার কাছে টিকেট চায় কর্তব্যরত টিটিই। তখন সে সেনাবাহিনীর পরিচয় দিয়ে বলে আমার কাছে টিকেট নেই। টিটিই তার কাছে সাত শত টাকা চাইলে টিকেটের মূল্য বাবদ সেনাবাহিনীর ওই সদস্য টিটিকে টাকা দিয়ে দেয়। এরপর টিকেট চাইলে টিকেট দিতে গড়ি মসি করে টিটিই। মূলত টিকেট না দেওয়ায় শুরু হয় বাগবিতণ্ডা। তিনি একটু ক্ষোভ নিয়েই বললেন, প্রায় সকল ট্রেনেই কিছু দূর্নীতিবাজ টিটিই থাকে।

মোরশেদ নামের অপর এক যাত্রী ক্ষোভ নিয়ে বলেন, সরকারি লোকদের গন্ডগোলের কারণে ভোগান্তিতে পড়েছি আমাদের মতো প্রায় দুই হাজার সাধারণ যাত্রীরা। এই ঘটনার পর প্রায় এক থেকে দেড় ঘন্টা ট্রেন দাঁড়িয়ে আছে সান্তাহার স্টেশনে। কখন যে এর সমাধান হবে কিছুই বলতে পারছি না। তবে এর দ্রুত সমাধান চাই আমরা।

উল্লেখ্য, নিউ লেখা পর্যন্ত সান্তাহার রেলওয়ে থানায় সেনাবাহিনীর ও পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত আছেন।