গোলাম সরওয়ার পিন্টু:
১৯৭১সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্নত্যাগের স্বীকৃতি হিসেবে ‘স্বাধীনতা পদকে’ভূষিত হওয়া বাংলাদেশ পুলিশের সততায়, বীরত্বপূর্ন কাজে, দক্ষতায়, কর্তব্যনিষ্ঠায় অবদান অনেক।
সত্যিকারের দায়িত্বশীল ও নিষ্ঠাবান পুলিশ আইন মেনে যেমন পেশাগত দায়িত্ব পালন করেন তেমনি তাদের অনেক সততার, নৈতিকতার, মানবিকতার গল্প আমাদের অজানা।
আমরা সিনেমাতে দেখে থাকি কোন এলাকার আইনশৃঙ্খলার অবনতি হলে সেই এলাকায় একজন সৎ, নির্ভিক, দক্ষ, সাহসী ও মানবিক পুলিশ অফিসার পাঠানো হয়। যিনি অন্যায়ের সঙ্গে আপোসহীন থাকার কারণে ওই এলাকার মানুষের কাছে জনপ্রিয় পুলিশ হিসেবে বিশেষ পরিচিতি পান।
সিনেমার মতো হুবহু না হলেও বাস্তবে বাংলাদেশ পুলিশে এ ধরনের অনেক কর্মকর্তাকে দেখা যায়। যারা খুব কম সংবাদের শিরোনাম হন।
যাদের কাছে সরকারি চাকরি মানে ক্ষমতার দাপট নয়, যাদের কাছে সরকারি চাকরি মানেই কর্তৃত্বের বড়াই নয়।
তাদের কাছে সরকারি চাকরি মানে পেশাগত দায়িত্ব পালন।
তেমনি একজন সততা ও ন্যায় নিষ্ঠায় সম্মান স্বরূপ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার থেকে পুলিশ সুপার (এসপি) পদে পদোন্নতি পেলেন মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়া উপজেলার
গুয়াগাছিয়া গ্রামের সভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের সন্তান
আশ্রাফুজ্জামান তার পিতার নাম জনাব বাচ্চু মিয়া। জানা যায়,আশ্রাফুজ্জামান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৃতিত্বের সাথে বিএসএস( অনার্স) ও এমএসএস সম্পন্ন করেন এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স ইন পুলিশ সায়েন্স (এমপিএস ) ডিগ্রি অর্জন করেন।
এর আগে তিনি ঢাকার সরকারি বিজ্ঞান কলেজ থেকে কৃতিত্বের সাথে উচ্চমাধ্যমিক এবং বাউশিয়া এম এ আজহার উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পাশ করেন।
শিক্ষাজীবনের প্রতিটি পর্যায়ে তিনি মেধাবৃত্তি সহ কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখেন।
২৮তম বিসিএস এ ২০১০ সালে সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি ) হিসাবে চাকরিতে যোগদান করেন। চাকুরি জীবনে তিনি শরিয়তপুর জেলা, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যটালিয়ন (RAB ) ও পুলিশের ইমিগ্রেশন শাখা সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইউনিটে সততা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন l বর্তমানে তিনি স্পেশাল ব্রাঞ্চে (এসবি) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। আশ্রাফুজ্জামান ২০২৩ সালে পুলিশ বাহিনীতে ধারাবাহিক সেবামূলক ভালো কাজের স্বীকৃতি হিসেবে প্রেসিডেন্ট পুলিশ মেডেল ‘পিপিএম-সেবা’ পদকেও ভূষিত হন।
এক সাক্ষাৎকারে আশ্রাফুজ্জামান জানান, “নিজের উপর অর্পিত দায়ীত্ব যথাযথ পেশাদারিত্ব ও নিষ্ঠার সাথে পালনের চেষ্টা করি lসেবার মানসে নিজের কাজ সুষ্ঠভাবে সম্পাদনই আমার নিকট ইবাদতের মতোl “
তাছাড়া বিভিন্ন ধরনের সামাজিক কার্যক্রমে অংশগ্রহন, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ, মাদক, জঙ্গিবাদ বন্ধে জন সচেতনতা গড়ে তুলতে প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করেন। ঘুষ দেয়া বা নেয়া বর্তমান সমাজে যেন এক অনিবার্য পরিণতির নাম। সেখানে তিনি বিনা ঘুষেই সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। পুলিশের চাকুরি নিয়েছেন কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে আশ্রাফুজ্জামান বলেন, পুলিশে যোগদান করেছি মানুষের নিরাপত্তা ও সেবা করার মানসিকতা নিয়ে। কেননা পুলিশের চাকরিতে মানুষকে সাহায্য- সহযোগীতা ও সেবা করার সুযোগ বেশি থাকে।
নি:স্বার্থভাবে যেনো মানুষের সেবা করা যায়, তিনি এই দোয়া কামনা করেন।