নাদিম হায়দার (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি-
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে পুলিশের হামলায় অন্তঃসত্ত্বা নারী, শিশু, ও সাংবাদিকসহ কমপক্ষে ৩০ জন আহতের ঘটনা ঘটেছে।
বুধবার সকাল ৯ টা থেকে সকাল সাড়ে ১০ টা পর্যন্ত উপজেলার বালুচর ইউনিয়নের চান্দেরচর গ্রামে পুলিশ নিরীহ মানুষের অতর্কিত হামলা চালায় ও বাড়ি ঘর ভাঙচুর করে।
সিরাজদিখান থানার ওসি মুজাহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে পরিদর্শক (তদন্ত) মোক্তার হোসেন, থানা সেকেন্ড অফিসার উপপরিদর্শক লোকমান হোসেনসহ থানা পুলিশের ২৫/৩০ জনের একটি দল এ ঘটনা ঘটায়।
এসময় নিউজ সংগ্রহ করতে গিয়ে পুলিশের রোষানলে পরে সিরাজদিখান প্রেসক্লাবের সহ সভাপতি ও দৈনিক মানবকন্ঠের সিরাজদিখান প্রতিনিধি সালাহউদ্দিন সালমান (৪২), অন্তঃসত্ত্বা নারী মন্জুরা বেগম (২৬), সেলিনা আক্তার (২৫), গোলেনুর বেগম (৩৫) সহ কমপক্ষে ৩০ জন। এ সময় রাস্তায়, একটি সিএনজি অটোরিকশা পুলিশ ভাঙচর করে এবং চালককে পিটিয়ে আহত করে। তাছাড়া সে সময় বেশ কটি বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে দরজাসহ ভাংচুর করার খবর পাওয়া যায়। আহতরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ চিকিৎসা নিচ্ছে।
আহত ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা নারী জানান, পুলিশ লাঠি দিয়ে পিটিয়ে ও এলোপাথাড়ি লাথি মেরে তাকে আহত করে।
সাংবাদিক সালাহউদ্দিন সালমান জানান, ওসি আমাকে ফোন দেয় যাওয়ার জন্য, আমি নিউজ সংগ্রহের জন্য মাত্র বাড়ি থেকে বের হয়েছি। একটু আগে বাড়তেই দেখি পুলিশের কয়েকটি গাড়ি ২৫/৩০ জনের পুলিশের একটি দল। আমি মোটর সাইকেলযোগে তাদের সামনে যেতেই পরিদর্শক (তদন্ত) মোক্তার, উপ পরিদর্শক লোকমানসহ ৫/৬ জন পুলিশসদস্য আমাকে লাঠি দিয়ে এলোপাথাড়ি বারি দিয়ে হাত পা ফাটিয়ে দেয়, তারা আমাকে চিনে তারপরও আমি পরিচয় দেই। এমন সময় ওসি এসে আমার মোবাইল নিয়ে যায়। একটু পর মোবাইল ফেরত দিয়ে যাওয়ার পর কয়েকজন কনস্টেবল আবার লাঠি দিয়ে পায়ের মধ্যে একধিকবার বারি দেয়। পরে হাসপাতালে আসি।
মন্জুরা বেগম ও গোলেনুর জানান, বাড়ি ঘরের দরজা লাথি দিয়ে দরজা ভেঙ্গে ঘর থেকে বের করে আমাদের ও আসপাশের অন্যান্যদের উপর হামলা চালান। ৭ বছরের শিশুকেও পুলিশ মারধর করে। অথচ দুই পক্ষের মারা এখান থেকে প্রায় ১ কিলোমিটার দুরে মারামারি হয়েছে।
প্রসঙ্গতঃ আজ বুধবার সকাল থেকে উপজেলার বালুচর ইউনিয়নের চান্দের চর গ্রামে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়। সেসময় দুই পক্ষের ৯ জন টেঁটাবিদ্ধসহ ২০ জন আহত হয়, ৪/৫ বাড়িঘর ভাঙচুর হয়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে ফেরার পথে নারী, শিশু ও সাংবাদিকসহ প্রায় ৩০ জনকে পিটিয়ে আহত করে।
সিরাজদিখান থানার ওসি মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, এটা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা, ভুল বুঝাবুঝি, পুলিশ সাংবাদিককে চিনতে পারে নি। তার গলায় কোন পরিচয়পত্র ছিলো না।
আধিপত্য বিস্তার ঘটনায় টেঁটাবিদ্ধসহ কয়েকজন আহত আছে। ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।