ঢাকা ০৮:৫৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
পঞ্চগড়ে চিকিৎসকের উপর হামলা: প্রতিবাদে মানববন্ধন মীমাংসিত সম্পত্তি দাম বেড়ে যাওয়ায় পূর্ণরায় দখলের পাঁয়তারা কালিহাতীতে সবজি চাষে বেকারদের কর্মসংস্থানের সুযোগ: প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধন আদমদীঘিতে হত্যার হুমকি দিয়ে কিশোরীকে একাধিক বার ধর্ষণ: অতঃপর গ্রেপ্তার কালিয়াকৈরে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন টাস্কফোর্স কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত অবৈধ ম্যাজিক জাল উদ্ধারে গিয়ে গ্রামপুলিশ আহত আদমদীঘিতে উপজেলা ও জেলা বিএনপির উদ্যোগে বিশাল কর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠিত গাজীপুরে আড়ম্বরপূর্ণভাবে কালবেলার প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন দুর্নীতি ও লুটপাটের পরেও অর্থনীতি টিকে আছে পোশাক শিল্পের উপর- উপদেষ্টা আসিফ অনলাইনে সরব: অডিও কলে সমন্বয়ককে ধমকালেন সাবেক এমপি নাঈমুজ্জামান

আবু সাঈদের ধারণা ছিলো পুলিশ আমাকে গুলি করবে না

রংপুর প্রতিনিধি :
রংপুরে কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ (২৩) ছিলেন পরিবারের সবার ছোট। ছয় ভাই ও তিন বোনের মধ্যে আবু সাঈদের শিক্ষাজীবন ছিল সবচেয়ে উজ্জ্বল।
সাঈদের এক ভাই উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেছেন, অন্যরা পড়েছেন প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যন্ত। তাই পুরো পরিবারের স্বপ্ন ছিল আবু সাঈদকে ঘিরে। ছয় ভাই ও তিন বোনের মধ্যে আবু সাঈদ ছিল সবচেয়ে মেধাবী। তাই পরিবারের সবার উপার্জন দিয়ে তাকে এতদূর পর্যন্ত পড়ালেখা চালিয়ে নিয়ে এসেছেন তার পরিবার।
কোটা আন্দোলনে আবু সাঈদ পুলিশের সামনে বুক পেতে দেয়, তবু পুলিশ তার উপর নির্দয় গুলি চালায়। কিন্তু সাঈদের ধারণা ছিলো পুলিশ আমার উপর গুলি চালাবে না।

জানা গেছে, সাঈদ খালাশপীর দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে গোল্ডেন জিপিএ ৫ পেয়ে এসএসসি পাশ করেন। রংপুর সরকারি কলেজ থেকে একই ফলাফল নিয়ে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগে ভর্তি হন সাঈদ।

সিটি কলেজ এলাকায় সংঘর্ষে নিহত যুবকের পরিচয় মিলেছেসিটি কলেজ এলাকায় সংঘর্ষে নিহত যুবকের পরিচয় মিলেছে
আজ আদরের ছোট ভাইকে হারিয়ে হতভম্ব বড় ভাই রমজান। তিনি বলেন, ‘আমার বাবা মকবুল হোসেন শারীরিক অসুস্থতায় শয্যাশায়ী। পরিবারের সবার উপার্জন দিয়ে তাকে এতদূর পর্যন্ত পড়ালেখা চালিয়ে নিয়ে এসেছি। একদিন সে অনেক বড় হবে, সমাজে প্রতিষ্ঠিত হবে সে আশা ছিল।’

নিহতের ছোট বোন সুমির আর্তনাদে আকাশ বাতাশ ভারী হয়েছে। তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, হামার ভাইকে ওরা মেরে ফেলল ক্যান? হামার ভাই বেঁচে থাকলে হামার স্বপ্ন পূরণ হতো।
কোটা আন্দোলনে সংঘর্ষ: নিহত বেড়ে ৬কোটা আন্দোলনে সংঘর্ষ: নিহত বেড়ে ৬
সাঈদের মা মনোয়ারা নির্বাক হয়ে ফ্যালফ্যাল করে সবার দিয়ে তাকিয়ে আছেন। মাঝে মাঝে বাবা বাবা বলে ডাকছেন তিনি।
তার বাবা মকবুল হোসেনের কণ্ঠে কোনো কথা নেই । তিনিও সবার মুখের দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন।
আবু সাঈদ কোটা আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন। আন্দোলনে বেরোবি ক্যাম্পাসের সমন্বয়কদের একজন ছিলেন তিনি। তার শরীর গুলিবিদ্ধ এবং দেহে ছররা গুলির অসংখ্য চিহ্ন রয়েছে।

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

পঞ্চগড়ে চিকিৎসকের উপর হামলা: প্রতিবাদে মানববন্ধন

আবু সাঈদের ধারণা ছিলো পুলিশ আমাকে গুলি করবে না

আপডেট টাইম : ০৫:১২:৫২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ জুলাই ২০২৪

রংপুর প্রতিনিধি :
রংপুরে কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ (২৩) ছিলেন পরিবারের সবার ছোট। ছয় ভাই ও তিন বোনের মধ্যে আবু সাঈদের শিক্ষাজীবন ছিল সবচেয়ে উজ্জ্বল।
সাঈদের এক ভাই উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেছেন, অন্যরা পড়েছেন প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যন্ত। তাই পুরো পরিবারের স্বপ্ন ছিল আবু সাঈদকে ঘিরে। ছয় ভাই ও তিন বোনের মধ্যে আবু সাঈদ ছিল সবচেয়ে মেধাবী। তাই পরিবারের সবার উপার্জন দিয়ে তাকে এতদূর পর্যন্ত পড়ালেখা চালিয়ে নিয়ে এসেছেন তার পরিবার।
কোটা আন্দোলনে আবু সাঈদ পুলিশের সামনে বুক পেতে দেয়, তবু পুলিশ তার উপর নির্দয় গুলি চালায়। কিন্তু সাঈদের ধারণা ছিলো পুলিশ আমার উপর গুলি চালাবে না।

জানা গেছে, সাঈদ খালাশপীর দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে গোল্ডেন জিপিএ ৫ পেয়ে এসএসসি পাশ করেন। রংপুর সরকারি কলেজ থেকে একই ফলাফল নিয়ে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগে ভর্তি হন সাঈদ।

সিটি কলেজ এলাকায় সংঘর্ষে নিহত যুবকের পরিচয় মিলেছেসিটি কলেজ এলাকায় সংঘর্ষে নিহত যুবকের পরিচয় মিলেছে
আজ আদরের ছোট ভাইকে হারিয়ে হতভম্ব বড় ভাই রমজান। তিনি বলেন, ‘আমার বাবা মকবুল হোসেন শারীরিক অসুস্থতায় শয্যাশায়ী। পরিবারের সবার উপার্জন দিয়ে তাকে এতদূর পর্যন্ত পড়ালেখা চালিয়ে নিয়ে এসেছি। একদিন সে অনেক বড় হবে, সমাজে প্রতিষ্ঠিত হবে সে আশা ছিল।’

নিহতের ছোট বোন সুমির আর্তনাদে আকাশ বাতাশ ভারী হয়েছে। তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, হামার ভাইকে ওরা মেরে ফেলল ক্যান? হামার ভাই বেঁচে থাকলে হামার স্বপ্ন পূরণ হতো।
কোটা আন্দোলনে সংঘর্ষ: নিহত বেড়ে ৬কোটা আন্দোলনে সংঘর্ষ: নিহত বেড়ে ৬
সাঈদের মা মনোয়ারা নির্বাক হয়ে ফ্যালফ্যাল করে সবার দিয়ে তাকিয়ে আছেন। মাঝে মাঝে বাবা বাবা বলে ডাকছেন তিনি।
তার বাবা মকবুল হোসেনের কণ্ঠে কোনো কথা নেই । তিনিও সবার মুখের দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন।
আবু সাঈদ কোটা আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন। আন্দোলনে বেরোবি ক্যাম্পাসের সমন্বয়কদের একজন ছিলেন তিনি। তার শরীর গুলিবিদ্ধ এবং দেহে ছররা গুলির অসংখ্য চিহ্ন রয়েছে।