ঢাকা ০৬:২৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
রূপনগর–পল্লবী থানা কমিটি: ত্যাগীদের বঞ্চনা, বিতর্কিতদের দাপট জুলাই হত্যা মামলার আসামিকে প্রত্যায়ন দিলেন জামায়াতের আমির মাগুরা মহম্মদপুরে শিক্ষক আ. হান্নানের বিরুদ্ধে শিশু যৌন নিপীড়নের অভিযোগে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন নারী সাংবাদিকতার এক আলোকবর্তিকা শেখ হাসিনাকে কোনো দেশ গ্রহণ করেননি ভারত করেছে : আলতাফ হোসেন চৌধুরী গণপূর্তের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল হালিমের পাহাড় সমান দুর্নীতির তদন্ত হচ্ছে না কেন? সিরাজদিখানে রাতের অধারে সরকারি গাছ কাটার অভিযোগ বরগুনায় বিভিন্ন দাবিতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত ‘মব-সন্ত্রাস’ বন্ধসহ চার দাবিতে গাইবান্ধায় সিপিবির বিক্ষোভ গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে সেতু আছে, সড়ক নেই — চরম দুর্ভোগে এলাকাবাসী

টাঙ্গাইলে যমুনা নদীর বালুর ঘাটে আধিপত্যের সংঘর্ষ: গাড়িতে অগ্নিসংযোগ

শাহ আলম, টাঙ্গাইল প্রতিনিধি-
টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার গোহালিয়াবাড়ী ইউনিয়নের লুহুরিয়া বালুর ঘাটে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে তালুকদার পরিবারের দুই ভাইয়ের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে একাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন এবং একটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। সংঘর্ষে গুরুতর আহত বাবুল তালুকদারকে সংকটাপন্ন অবস্থায় টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

সংঘর্ষের পেছনের কারণ: গত একুশে সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় কালিহাতী উপজেলার গোহালিয়াবাড়ী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা হজরত আলী তালুকদার এবং তার ভাই আলম তালুকদারের সমর্থকদের মধ্যে আধিপত্য নিয়ে উত্তেজনা চরমে পৌঁছায়। দীর্ঘদিন ধরে এই দুই ভাইয়ের মধ্যে লুহুরিয়া বালুর ঘাটের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিরোধ চলছিল।

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, বালুর ঘাটে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে তাদের মধ্যে বেশ কয়েকবার ছোটখাটো সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। তবে একুশে সেপ্টেম্বরের সংঘর্ষ ছিল সবচেয়ে বড় সহিংস। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা হজরত আলী তালুকদারের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়, যা পুরোপুরি পুড়ে যায়।

আধিপত্যের লড়াই ও অবৈধ বালু ব্যবসা: লুহুরিয়া বালুর ঘাটটি দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে অবৈধভাবে পরিচালিত হয়ে আসছে। তালুকদার পরিবারের সদস্যরা সরকারের অনুমতি ছাড়াই অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও বিক্রি করে প্রচুর অর্থ উপার্জন করে আসছেন। সরকারি ইজারা ছাড়া বালু উত্তোলনের এই ব্যবসা স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সহযোগিতায় নির্বিঘ্নে পরিচালিত হচ্ছিল।

সরকার বদলের সঙ্গে সঙ্গে তালুকদার পরিবারের ভেতরে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব বেড়ে যায়। তালুকদার পরিবারের বড় ভাই হজরত আলী দীর্ঘদিন ধরে বালুর ঘাটের নিয়ন্ত্রণে ছিলেন। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে ছোট ভাই আলম তালুকদার তার সমর্থন বাড়াতে শুরু করেন। এর ফলে দুই ভাইয়ের মধ্যে বিরোধ তীব্র আকার ধারণ করে, যা শেষ পর্যন্ত সহিংস সংঘর্ষে রূপ নেয়।
দুই তালুকদারের সাথে ফোনে যোগাযোগ করলে কৌশল করে কেটে দেয়।
হযরত তালুকদার বলেন, আমি দুরে আছি বিস্তারিত ফোনে বলা যাবে না বলে ফোনটি কেটে দেয়।
আলম তালুকদার বলেন আমি গাড়ী আছি নেমে আমি ফোন বেক করবো।

ঘটনাস্থলে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ:

সংঘর্ষের খবর পেয়ে কালিহাতী থানার পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশ লুহুরিয়া বালুর সহ সকল ঘাট গুলো বন্ধ করে দিয়েছে এবং তদন্ত শুরু করেছে।

কালিহাতী থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল কালাম ভূঁইয়া বলেন, “বালুর ঘাট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষ থেকে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়নি, তবে অবৈধ বালু উত্তোলনের বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

স্থানীয়দের উদ্বেগ: স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বালুর ঘাট নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। প্রভাবশালী ব্যক্তিদের এই ক্ষমতার লড়াই সাধারণ মানুষের জন্যও উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রশাসনের হস্তক্ষেপের পরও অনেকেই শঙ্কিত যে, এ ধরনের সংঘর্ষ আবারও ঘটতে পারে, যদি স্থায়ী কোনো সমাধান না আসে।

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

রূপনগর–পল্লবী থানা কমিটি: ত্যাগীদের বঞ্চনা, বিতর্কিতদের দাপট

টাঙ্গাইলে যমুনা নদীর বালুর ঘাটে আধিপত্যের সংঘর্ষ: গাড়িতে অগ্নিসংযোগ

আপডেট টাইম : ০৩:৩৪:০৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

শাহ আলম, টাঙ্গাইল প্রতিনিধি-
টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার গোহালিয়াবাড়ী ইউনিয়নের লুহুরিয়া বালুর ঘাটে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে তালুকদার পরিবারের দুই ভাইয়ের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে একাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন এবং একটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। সংঘর্ষে গুরুতর আহত বাবুল তালুকদারকে সংকটাপন্ন অবস্থায় টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

সংঘর্ষের পেছনের কারণ: গত একুশে সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় কালিহাতী উপজেলার গোহালিয়াবাড়ী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা হজরত আলী তালুকদার এবং তার ভাই আলম তালুকদারের সমর্থকদের মধ্যে আধিপত্য নিয়ে উত্তেজনা চরমে পৌঁছায়। দীর্ঘদিন ধরে এই দুই ভাইয়ের মধ্যে লুহুরিয়া বালুর ঘাটের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিরোধ চলছিল।

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, বালুর ঘাটে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে তাদের মধ্যে বেশ কয়েকবার ছোটখাটো সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। তবে একুশে সেপ্টেম্বরের সংঘর্ষ ছিল সবচেয়ে বড় সহিংস। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা হজরত আলী তালুকদারের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়, যা পুরোপুরি পুড়ে যায়।

আধিপত্যের লড়াই ও অবৈধ বালু ব্যবসা: লুহুরিয়া বালুর ঘাটটি দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে অবৈধভাবে পরিচালিত হয়ে আসছে। তালুকদার পরিবারের সদস্যরা সরকারের অনুমতি ছাড়াই অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও বিক্রি করে প্রচুর অর্থ উপার্জন করে আসছেন। সরকারি ইজারা ছাড়া বালু উত্তোলনের এই ব্যবসা স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সহযোগিতায় নির্বিঘ্নে পরিচালিত হচ্ছিল।

সরকার বদলের সঙ্গে সঙ্গে তালুকদার পরিবারের ভেতরে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব বেড়ে যায়। তালুকদার পরিবারের বড় ভাই হজরত আলী দীর্ঘদিন ধরে বালুর ঘাটের নিয়ন্ত্রণে ছিলেন। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে ছোট ভাই আলম তালুকদার তার সমর্থন বাড়াতে শুরু করেন। এর ফলে দুই ভাইয়ের মধ্যে বিরোধ তীব্র আকার ধারণ করে, যা শেষ পর্যন্ত সহিংস সংঘর্ষে রূপ নেয়।
দুই তালুকদারের সাথে ফোনে যোগাযোগ করলে কৌশল করে কেটে দেয়।
হযরত তালুকদার বলেন, আমি দুরে আছি বিস্তারিত ফোনে বলা যাবে না বলে ফোনটি কেটে দেয়।
আলম তালুকদার বলেন আমি গাড়ী আছি নেমে আমি ফোন বেক করবো।

ঘটনাস্থলে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ:

সংঘর্ষের খবর পেয়ে কালিহাতী থানার পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশ লুহুরিয়া বালুর সহ সকল ঘাট গুলো বন্ধ করে দিয়েছে এবং তদন্ত শুরু করেছে।

কালিহাতী থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল কালাম ভূঁইয়া বলেন, “বালুর ঘাট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষ থেকে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়নি, তবে অবৈধ বালু উত্তোলনের বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

স্থানীয়দের উদ্বেগ: স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বালুর ঘাট নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। প্রভাবশালী ব্যক্তিদের এই ক্ষমতার লড়াই সাধারণ মানুষের জন্যও উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রশাসনের হস্তক্ষেপের পরও অনেকেই শঙ্কিত যে, এ ধরনের সংঘর্ষ আবারও ঘটতে পারে, যদি স্থায়ী কোনো সমাধান না আসে।