এস কে সুমন, কুষ্টিয়া প্রতিনিধি-
“মর্যাদাপূর্ণ বার্ধক্য বিশ্বব্যাপী প্রবীণ পরিচর্যা ও সহায়তা ব্যবস্থা শক্তিশালীকরণ” দিবস উপলক্ষে গত মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টায় কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসন, কুষ্টিয়া এবং জেলা সমাজসেবা কার্যালয়, কুষ্টিয়ার আয়োজনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জনাব মোছাঃ শারমিন আখতার জেলা প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত), কুষ্টিয়া। জনাব শারমিন আক্তার বলেন আপনি দেখবেন সাংসদ থেকে শুরু করে চায়ের দোকান সবখানেই প্রবীণদের আনাগোনা রয়েছে। প্রবীণরা বেশ প্রগতিশীল, চিন্তাবিদ ও ন্যায় নিষ্ঠাবান। তাই নবীনদের যদি কিছু করতেই হয় তবে প্রবীণদের অবস্থান ছেড়ে দিতে হবে। আজকের নবীন আগামীকালের প্রবীণ। সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হচ্ছে। বিশ্বব্যাপী প্রবীণ পরিচর্যা ও সহায়তা ব্যবস্থা শক্তিশালীকরণ’। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ১৯৯০ সালের ১৪ ডিসেম্বর প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ১ অক্টোবর আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস পালনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। যুগান্তকারী এ সিদ্ধান্তের আলোকে সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও ১৯৯১ সাল থেকে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। দিবসটি উদযাপন উপলক্ষ্যে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়াধীন সমাজসেবা অধিদপ্তর নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন।
পারভেজ মাজমাদার সাংগঠনিক সম্পাদক বাংলাদেশ প্রবীণ হিতোষী সংঘ কুষ্টিয়া জেলা শাখা। তিনি স্বাগত বক্তব্যে কুষ্টিয়ার প্রবীনদের নানা দিক তুলে ধরেন বর্তমান সমাজে সবচেয়ে অবহেলার শিকার এখন অসহায় প্রবীণরাই, কিন্তু ক্রমবর্ধমান বার্ধক্যের অসহায়ত্ব মোকাবিলা করার মতো দরকারি প্রস্তুতি আমাদের নেই। অরক্ষিত এই প্রবীণদের সেবা দেয়ার জন্য যে নতুন-নতুন ব্যবস্থা প্রয়োজন, তা গড়ে উঠছে না। অসহায় প্রবীণদের কল্যাণের বিষয়ে এখনই আমাদের উদ্যোগী হওয়া জরুরি। কেননা বার্ধক্য হচ্ছে প্রতিটি মানুষের অবধারিত সমস্যা। আজকের নবীনই আগামী দিনের প্রবীণ। তাই শ্রদ্ধার সঙ্গে প্রবীণদের দেখভাল করতে হবে। আর এখন থেকেই নিজেদের স্বস্তিময় বার্ধক্যের প্রস্তুতি নিতে হবে।
মোঃ আব্দুল লতিফ শেখ উপ-পরিচালক কুষ্টিয়া সমাজসেবা কার্যালয় কুষ্টিয়া। তিনি তার বক্তব্যে বলেন দয়া-দাক্ষিণ্য বা করুণার দৃষ্টিতে নয়, মানবাধিকারের ভিত্তিতে এবং প্রাপ্য মর্যাদার যুক্তিতে প্রবীণদের চাওয়া-পাওয়ার সমাধান করা প্রয়োজন। এর জন্য দরকার গণসচেতনতা, আর এই গণসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রবীণদের অবহেলা, অযত্ন, দুর্ব্যবহার, নির্যাতনের ঘটনা এবং সবার করণীয় বিষয়গুলো সব শিক্ষা পাঠ্যসূচিতে এবং গণমাধ্যম কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করতে পারলে প্রবীণদের প্রতি কিছুটা হলেও সম্মান প্রদর্শন করা হবে।
মোঃ নজরুল ইসলাম সভাপতি বাংলাদেশ প্রবীণ হিতোষী সংঘ কুষ্টিয়া জেলা শাখা।
তিনি তার বক্তব্যে উপস্থাপন করেন যে প্রবীণ যৌবনে তার মেধা, মনন ও দক্ষতা দিয়ে সমাজের অনেক উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন, জীবনের সব সুখ বিসর্জন দিয়ে সন্তানদের মানুষ করেছেন, মানবকল্যাণে অবদান রেখেছেন, বৃদ্ধ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেই মানুষটি অযত্ন -অবহেলার আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হয়। আপাতদৃষ্টিতে সমাজের বা সরকারের ন্যূনতম দায়িত্ব তাদের ওপর বর্তায় না। শিশুদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ ও সুন্দর জীবন গড়ার জন্য বাবা-মা ও সরকারের যেমন দায়িত্ব আছে, অনুরূপভাবে প্রবীণদের জন্য সমাজ ও সরকারের দায়িত্ব নেয়া উচিত। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন মোঃ মুকুল হোসেন কোষাধক্ষ্য বাংলাদেশ প্রবীণ হিতোষী সংঘ কুষ্টিয়া জেলা শাখা। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ প্রবীণ হিতোষী সংঘ কুষ্টিয়া জেলা শাখার কার্যনির্বাহী সদস্যবৃন্দ ও অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।