মোঃ বাবুল হোসেন, পঞ্চগড়-
কোনো কাজ না করেই গত তিন অর্থবছরে দেওয়া বরাদ্দের অর্থ উত্তোলন করা হয়েছে পঞ্চগড় জেলা পরিষদে। যদিও কর্তৃপক্ষের দাবি, অর্থ উত্তোলন করে পরিষদের হিসাব নম্বরে রাখা হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়নে রাজনৈতিক প্রাধান্য, দরপত্র প্রক্রিয়ায় অনিয়ম ও দুর্নীতি, প্রকল্প বাস্তবায়নে জনসম্পৃক্ততা না থাকা, সম্ভাব্যতা যাচাই না করে প্রকল্প প্রণয়নসহ নান অনিয়ম রয়েছে এ পরিষদের। স্থানীয়রা পুনরায় প্রকল্পের স্ক্রীম নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
জানা যায়, ২০২২ সালে জেলা পরিষদের নির্বাচনে এ জেলায় আব্দুল হান্নান শেখ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ২০২১-২০২২ অর্থবছরে ৬ কোটি ২৩ লাখ টাকা বরাদ্দে ৩৯১টি স্ক্রীম, ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে ৪ কোটি ৬০ লাখ ২৫ হাজার টাকা বরাদ্দে ৩৩৩টি স্ক্রীম গ্রহণ করে অর্ধেক দরপত্রের মাধ্যমে অর্ধেক পিআইসি কমিটির নামে বরাদ্দ দিয়ে অনুমোদিত হয়। বিভিন্ন অনিয়মের কারণে গত অক্টোবর মাস পর্যন্ত কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী কাজ হয়েছে পঞ্চাশ শতাংশের কম। এদিকে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের এডিপি সাধারণ বরাদ্দের ছয় কোটি ২৫ লাখ টাকার বিপরীতে ৪১০টি প্রকল্পের স্ক্রীম অনুমোদন হয়েছে চলতি বছরের জুলাই মাসে। কাজ এ পর্যন্ত শুরু করতে পারেনি দপ্তরটি।
বৈষম্যবিরোধী নাগরিক সমাজ কমিটির যুগ্ম আহবায়ক আজহারুল ইসলাম জুয়েল জানান,গত অর্থবছরের এডিপি বরাদ্দের প্রকল্প রাজনৈতিক বিবেচনায় স্ক্রীম নিয়ে অনুমোদন হয়েছে। কিন্তু বাস্তবায়ন শুরু হয়নি। এজন্য এ প্রকল্পের স্ক্রীম বাতিল করে পুনরায় স্ক্রীম গ্রহনের দাবি জানান তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা পরিষদের এক কর্মচারি জানান, আব্দুল হান্নান শেখ চেয়ারম্যান থাকাকালে নিজের নামের স্কুলে বার বার বরাদ্দ নিয়েছেন। জেলা পরিষদের সদস্য আখতারুন নাহার সাকীর নিজস্ব তিনটি প্রতিষ্ঠানে দিয়েছেন ৮ লাখ টাকা বরাদ্দ।
কহরুহাট বাজার বনিক সমিতির সভাপতি আব্দুল মোমিন বলেন, এক লাখ টাকার প্রকল্প দিয়েছে। পঞ্চাশ হাজার টাকা অনেক আগে তুলে কাজ করেছি। তারপর থেকে বার বার গিয়েছি পরিষদে। কিন্তু বাকী টাকা দিবে দিবে করছে, এখনো দিচ্ছে না।
অপসারিত জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান শেখ জানান, প্রকল্পের অর্ধেক টাকা নিয়ে কাজ করার পর বাকী বিল তোলার নিয়ম। হয়ত কাজ করতে পারেনি, টাকা নেয়নি। নামে-বেনামে প্রকল্প দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন- আমি শুধু একটা স্বাক্ষর করি। এর থেকে বেশী কিছু জানি না।