অর্ন্তবর্তী সরকারের দায়িত্ব নেয়ার পর প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে প্রথমবারের মতো জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলন যোগ দিচ্ছেন অর্থনীতিবিদ প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত এই ব্যক্তিত্বকে নতুন পরিচয়ে বৈশ্বিক প্লাটফর্মে পেয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে দেখা গেছে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রনায়ক ও প্রধানমন্ত্রীদের। সম্মেলনে যোগ দেয়ার প্রথম দিনেই তিনি পেয়েছেন তাদের উষ্ণ অভ্যর্থনা।
কপ-২৯ জলবায়ু সম্মেলনে যোগ দিতে এরই মধ্যে আজারবাইজানের বাকুতে পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছাত্র-জনতার গণ অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পর এটি ড. ইউনূসের দ্বিতীয় বিদেশ সফর। তার প্রথম সফর ছিল নিউইয়র্কে জাতিসংঘের ৭৯ তম সাধারণ অধিবেশন।
জলবায়ু সম্মেলন উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টা ১১-১৪ নভেম্বর আজারবাইজানে সরকারি সফরে থাকবেন। আজ আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন ড. ইউনূস। সকালে সম্মেলনস্থলে পৌঁছালে বিভিন্ন দেশের শীর্ষস্থানীয়রাসহ বিভিন্ন কর্মকর্তা ড. ইউনূসকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান। শুভেচ্ছা জানান বিভিন্ন দেশের প্রধান ও প্রতিনিধিরা। এর মধ্যে অনেকের সাথে অনানুষ্ঠানিক আলোচনাও হয়েছে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার।
মঙ্গলবার সকালে জলবায়ু সম্মেলনে (কপ ২৯) আসার পর ড. ইউনূসকে শুভেচ্ছা জানানো এবং সৌজন্য আলাপ হওয়াদের মধ্যে রয়েছে- সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান, মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জু, লিচেনস্টাইনের প্রধানমন্ত্রী ড্যানিয়েল রিশ, ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগে, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা প্রেসিডেন্ট ডেনিস বেক্রিভিট প্রমুখ।
এদিকে আজারবাইজানের স্থানীয় সময় ১২টার দিকে ড. ইউনূসের বক্তব্য রাখার কথা রয়েছে। বক্তব্যে তিনি জলবায়ুর প্রভাবে এই অঞ্চলের ক্ষতি তুলে ধরার পাশাপাশি ড. ইউনূসের আলোচিত ‘থ্রি-জিরো তত্ত্ব’ও তুলে ধরতে পারেন।
বাংলাদেশ জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম, এবং সে কারণে বাকুতে বাংলাদেশ তার দাবি-দাওয়া তুলে ধরবে। পাশাপাশি, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোর পক্ষে কথা বলবে।
সম্মেলনে বাংলাদেশের অবস্থানকে গুরুত্ব দেওয়া হবে, এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশ যে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে, বিশেষ করে পূর্বাঞ্চলে বন্যার কারণে ক্ষয়ক্ষতি তুলে ধরা হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষয়ক্ষতি তহবিল ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ ফান্ড’, প্যারিস চুক্তির তহবিল, এবং জলবায়ু উদ্বাস্তুদের বিষয়েও আলোচনা হতে পারে। এছাড়া, বাংলাদেশ উন্নত দেশগুলো থেকে সবুজ প্রযুক্তিতে সহায়তা চাইতে পারে।