রাজধানীর পল্লবীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মোঃ ইমন হোসেন আকাশ হত্যা মামলার ২৪৪ নম্বর আসামী। রূপনগর থানা ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সেচ্ছাসেবকলীগ নেতা ও যুবলীগের প্রচার সম্পাদক শরিফ মাতবর ওরপে পিস্তল শরিফ ডিগবাজি দিয়ে প্রকাশ্যে এখন বিএনপির মিছিল মিটিং করছেন।
জানাগেছে, রূপনগর, পল্লবী ও মিরপুর থানা ছাড়াও বিভিন্ন থানায় ডজন মামলা, জিডি অভিযোগ রয়েছে। যার মধ্যে মিরপুর ১০ নম্বরে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের উপর হামলা ও হত্যা মামলার আসামী।
সুত্র বলছে, রূপনগর শিয়লাবাড়ী ১১/১২ নম্বর রোডের শেষ মাথায় সরকারী জমি দখল করে বস্তি নিয়ন্ত্রণ করে প্রায় তিন’শ ঘর থেকে প্রতিমাসে দশ লক্ষ টাকা ভাড়া খাচ্ছে। বস্তিতে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানির অবৈধ সংযোগ রয়েছে। তার অবৈধ সম্রাজ্য রক্ষা করতে যখন যে দলের সরকার ক্ষমতায় আসে ওই দলের সাইনবোর্ড কিনে। সুত্র: আরও বলছে , রূপনগর থানা বিএনপি অংঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সমাবেশে হত্যা মামলার আসামী যুবলীগ নেতা শরিফ মাদবর তার বাহিনী নিয়ে প্রকাশ্যে যোগ দিবে।
বিভিন্ন সুত্র ও মামলার নথিপত্র ঘেঁটে জানাগেছে, ফ্যাসিস্ট সরকারের কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ১৪ আসনের সাবেক (এমপি) মাঈনুল হোসেন খান নিখিল ও পল্লবী থানা আওয়ামিলীগের সভাপতি ঢাকা ১৬ আসনের সাবেক (এমপি) ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লার সাথে গভির সখ্যতা গড়ে ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে নিজস্ব বাহিনীর মাধ্যমে রূপনগর ও শিয়ালবাড়ী এলাকায় ত্রাসের রাম-রাজত্ব কায়েম করে আসছিলো।
ডিগবাজির কারনে, কোনো মামলায় নাম উঠে বিএনপি নেতা। আবার কোনো কোনো মামলায় সেচ্ছাসেবক লীগ বা যুবলীগ নেতা। পুলিশি ঝামেলা এড়াতে ও ক্ষমতা প্রভাববিস্তার করতে ক্ষমতাসীন দলের ব্যানার তার এক মাত্র হাতিয়ার। শরিফ মাদবরের ভাই মারুফ মাদবর আরও বেপরোয়া।
ফ্যাসিস্ট আমলে, ডিগবাজি শরিফের চোখে যে জমি একবার পছন্দ হয়, সে জমি সরকারি বা বেসরকারি হোক বাহিনীর সদস্যদের সাথে নিয়ে দখল করে বাউন্ডারি দেয়। পরে ক্ষমতাসীন এমপিদের প্রভাব খাটিয়ে তা বেচাকেনা করে। দিনে দিনে এভাবেই গড়েছে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় সম্পদের পাহাড়।
রূপনগর থানা এলাকা ১৪ ও ১৬ আসনের মধ্যে সংযুক্ত হওয়ায় দু’পাশের দুই এমপিকে সব সময়ই খুশি রাখতেন শরিফ মাদবর। যে কারনে সেচ্ছাসেবকলীগ করলেও পরে ৭নং ওয়ার্ডের যুবলীগের প্রচার সম্পাদকের পদ বাগিয়ে নিতে তার কোনো বেগ পেতে হয়নি।
৫ই আগস্ট ফ্যাসিস্ট সরকার পতন হলে পরের দিন ৬ই আগস্ট ডিগবাজি দেওয়া শরিফ মাতবরের এতটুকু ক্ষমতার প্রভাবে ভাটা লাগেনি। এখন আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছে। হত্যা মামলার আসামী হয়েও গাড়ীতে অস্ত্র নিয়ে বাহিনীর বিশস্ত সদস্যদের সাথে করে গভির রাতে মহড়া দেয়।
সুত্র; রূপনগর থানা সেচ্ছাসেবক দলের নেতা শামীম আহমেদ, টুটুল ও যুবদলের শোয়েব খান, ইমরান গংদের ম্যানেজ করে গোপনে বিএনপি নেতা আমিনুল হকের গাড়ী বহরে সফরসঙ্গী হচ্ছে। আমিনুল হকের আশীর্বাদ পেতে চেষ্টা তদবির চালাচ্ছে জোরেসোরে।
শরিফ মাতবরের ঘনিষ্ঠ (আত্মীয়) নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বলেন, বস্তি ছাড়াও ৮নং রোডের জোড়াবাড়ীর বহুতল ভবনে বসবাস করেন। পৌঁনে এক কোটি টাকা মুল্যের গাড়ীতে চলে। সাভারে জমি কিনেছেন, শ্বশুর বাড়ী কেরানীগঞ্জে জমি কিনেছেন। এছাড়াও নামে বেনামে সম্পদের পাহাড়।
গোপন সুত্রে জানাগেছে, রূপনগর থানা পুলিশের এক কর্মকর্তার সাথে সেচ্ছাসেবক দলের টুটুলের সু-সম্পর্ক থাকায় শরিফ কে গ্রেফতার করেনা পুলিশ। পিস্তল শরিফ বাহিনীর সদস্য সহোদর মারুফ মাদবর ছাড়াও কামাল, বাবু, রাসেল, মুরাদ,হান্নান,সজিব,রাকিব বাহিনীর অন্যতম।
এবিষয়ে জানতে চাইলে ৫ই আগষ্ট হত্যা মামলার আসামী যুবলীগ নেতা শরিফ মাতবর বলেন, আমি এখন বিএনপি করি, আওয়ামিলীগের সময় এমপি ইলিয়াস মোল্লাহ ও নিখিলের কথা মত চলতে বাধ্য ছিলাম। না হলে আমাকে ক্রস ফায়ার দিয়ে মেরে ফেলতো। আমি বিএনপি করি, আওয়ামিলীগ আমলে বহু রাজনৈতিক মামলা হয়েছে আমার বিরুদ্ধে। তিনি আরও বলেন, আমার কেস পার্টনার বিএনপি নেতা আমিনুল হক ভাই, যুবদলের মিল্টন ভাই। আমি কিভাবে যুবলীগ করি?
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর উত্তর যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম মিল্টন বলেন, শরিফ মাতবর নামে আমি কাউকে চিনিনা।
রূপনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোকাম্মেল হক বলেন, ৫ই আগস্টের হত্যা মামলার আসামী শরিফ মাদবর কে আমরা খুঁজতেছি, দেখা মাত্রই গ্রেফতার করা হবে।