ঢাকা ০৭:৪২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫, ৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
শিগগিরই শুরু হবে তুরাগ নদী দখল ও দূষণমুক্তকরণের কার্যক্রম উন্নয়ন শুধু জেলা সদরেই নয়, সকল উপজেলায় দৃশ্যমান হতে হবে- পার্বত্য উপদেষ্টা জুলাইবিপ্লবী শহিদ হাসানকে দেখতে হাসপাতালে ধর্ম উপদেষ্টা পরিবেশ উপদেষ্টার সাথে নরওয়ের স্টেট সেক্রেটারির বৈঠক আদমদীঘিতে বেড়েছে অপরাধের প্রবণতা, নীরব ভূমিকায় থানা পুলিশ সিংগাইরে কিশোর গ্যাংদের হাতে খুন হলেন স্কুল ছাত্র রাহুল ইসলাম খান মাগুরা আলোকদিয়া তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ১ খুন রাজধানীতে থেমে নেই যুবলীগ নেতা নুর ইসলামের চাঁদাবাজি-ত্রাসের রাজত্ব! রূপগঞ্জে সালমান এফ রহমানের দখলে থাকা সরকারি রাস্তা উদ্ধার শিশু আছিয়া ধর্ষণ-হত্যা: খালাস পেলো ৩

পুরনো মামলার নথি তুলতে যেতে হবেনা দিনাজপুর, মিলবে পঞ্চগড়ে

মোঃ বাবুল হোসেন, পঞ্চগড়-
পঞ্চগড় জেলা ঘোষণার পূর্বে এখানে মুনসেফ আদালত ছিলো। এই আদালতে নিষ্পত্তি হওয়া মামলার নথি জমা পড়তো দিনাজপুরের আদালতের মহাফেজখানায়। জেলা ভাগের পর সব কিছুই পৃথক হলেও নথিগুলো রয়ে যায় সেখানেই। আর এসব নথির প্রয়োজন হলে পঞ্চগড়ের মানুষকে ছুটতে হয় দিনাজপুরে, পোহাতে হয় দুর্ভোগ। তবে এখন থেকে এসব নথি মিলবে পঞ্চগড়েই।

বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সকালে পঞ্চগড় আদালত চত্বরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক গোলাম ফারুক আনুষ্ঠানিকভাবে এ তথ্য জানিয়েছেন। সম্প্রতি পঞ্চগড় মুনসেফ আদালতে বিভিন্ন সময়ে নিষ্পত্তি হওয়া প্রথম শ্রেণির মামলার ১৭৯৭ টি নথি দিনাজপুর আদালতের মহাফেজ খানা থেকে পঞ্চগড়ে আনা হয়েছে বলে জানান তিনি।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- পঞ্চগড় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) বিএম তারিকুল কবির, অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ রেজাউল বারী, নুরুজ্জামান, যুগ্ন জেলা ও দায়রা জজ মার্জিয়া খাতুন, সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাহিদ হাসান, সহকারি জজ মাহমুদা খাতুন, আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আদম সুফি, আদালতের গভর্নমেন্ট প্লিডার (জিপি) আব্দুল বারী, স্পেশাল নারী শিশু ট্রাইব্যালের পিপি জাকির হোসেন, সাবেক পিপি আমিনুর রহমান, অতিরিক্ত জিপি এ্যাড. খয়রুল ইসলাম, অতিরিক্ত পিপি এ্যাড. ইয়াছিনুল হক দুলাল, এ্যাড. আব্দুল্লাহ আল মামুন, এ্যাড. মেহেদী হাসান মিলন প্রমূখ।

জানা গেছে, ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর থেকেই পুরো পঞ্চগড় ছিলো বৃহত্তর দিনাজপুর জেলার অংশ। ১৯৮৪ সালে জেলা ভাগের আগে পর্যন্ত সব কিছুই ছিলো দিনাজপুরের অধীনে। ফলে দেশ ভাগ থেকে জেলা ভাগ পর্যন্ত- এই দীর্ঘ সময়ের আদালত কেন্দ্রিক সব নথি রয়ে যায় দিনাজপুরেই। আর এসব নথির প্রয়োজন হলে বিরম্বনা বাড়ে সেবাগ্রহিতাদের। ছুটতে হয় দিনাজপুরে। এতে যেমন ভোগান্তি পোহাতে হয়, তেমনি হতে হয় হয়রানি। তবে এখন থেকে ভোগান্তি লাঘবের পাশাপাশি সেবাগ্রহিতাদের অর্থ ও সময় বাঁচবে বলছেন সংশ্লিষ্টরা।

পঞ্চগড় জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আদম সুফি বলেন, বিভিন্ন সময় এই নথিগুলোর প্রয়োজন হয়। সাধারণ মানুষ এসব নথি উত্তোলনের জন্য এতদিন দিনাজপুর যেতেন। এতে ব্যাপক হয়রানি হতে হতো। অনেক ক্ষেত্রে অতিরিক্ত টাকাও গুনতে হতো। এখন থেকে ভোগান্তি কমবে। সময় ও অর্থ- দুটাই বাঁচবে। এসব নথি পঞ্চগড়ের মহাফেজ খানায় সংরক্ষিত আছে- বিষয়টি সাধারণ মানুষকে জানাতে হবে।

গভর্নমেন্ট প্লিডার (জিপি) আব্দুল বারী বলেন, ১৯৮৪ সালে জেলা ভাগ হলে পঞ্চগড়ে স্বতন্ত্রভাবে আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়। তাই এতদিন এখানকার মহাফেজ খানায় ১৯৮৪ সালের পরবর্তী সময়কার নিষ্পত্তি হওয়া মামলার নথি সংরক্ষিত ছিলো। এখন দিনাজপুর থেকে আগের নথিগুলো নিয়ে আসায় ১৯৪৮ সাল থেকে বর্তমান সময়ের তথা গত ৭৭ বছরের সব নথিই পাওয়া যাবে।

জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক গোলাম ফারুক বলেন, মামলা পরিচালনার সময় তৎকালীন সময়কার রায় এবং ডিক্রির নকল প্রয়োজন হয়। এজন্য সাধারণ মানুষ আদালতের কাছে সময় চায় এবং দিনাজপুরে গিয়ে নকলের আবেদন করে। কিন্তু বিভিন্ন জটিলতার কারণে দীর্ঘ সময়েও নকল আনতে পারেনা। এতে সাধারণ মানুষ যেমন ভোগান্তি পোহায়, তেমনি মামলা নিরসনে আদালতেরও সময় ক্ষেপন হয়। এই পরিস্থিতিতে আমরা উদ্যোগ নিয়ে নথিগুলো এখানে নিয়ে এসেছি।

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

শিগগিরই শুরু হবে তুরাগ নদী দখল ও দূষণমুক্তকরণের কার্যক্রম

পুরনো মামলার নথি তুলতে যেতে হবেনা দিনাজপুর, মিলবে পঞ্চগড়ে

আপডেট টাইম : ১০:৪০:০২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫

মোঃ বাবুল হোসেন, পঞ্চগড়-
পঞ্চগড় জেলা ঘোষণার পূর্বে এখানে মুনসেফ আদালত ছিলো। এই আদালতে নিষ্পত্তি হওয়া মামলার নথি জমা পড়তো দিনাজপুরের আদালতের মহাফেজখানায়। জেলা ভাগের পর সব কিছুই পৃথক হলেও নথিগুলো রয়ে যায় সেখানেই। আর এসব নথির প্রয়োজন হলে পঞ্চগড়ের মানুষকে ছুটতে হয় দিনাজপুরে, পোহাতে হয় দুর্ভোগ। তবে এখন থেকে এসব নথি মিলবে পঞ্চগড়েই।

বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সকালে পঞ্চগড় আদালত চত্বরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক গোলাম ফারুক আনুষ্ঠানিকভাবে এ তথ্য জানিয়েছেন। সম্প্রতি পঞ্চগড় মুনসেফ আদালতে বিভিন্ন সময়ে নিষ্পত্তি হওয়া প্রথম শ্রেণির মামলার ১৭৯৭ টি নথি দিনাজপুর আদালতের মহাফেজ খানা থেকে পঞ্চগড়ে আনা হয়েছে বলে জানান তিনি।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- পঞ্চগড় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) বিএম তারিকুল কবির, অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ রেজাউল বারী, নুরুজ্জামান, যুগ্ন জেলা ও দায়রা জজ মার্জিয়া খাতুন, সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাহিদ হাসান, সহকারি জজ মাহমুদা খাতুন, আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আদম সুফি, আদালতের গভর্নমেন্ট প্লিডার (জিপি) আব্দুল বারী, স্পেশাল নারী শিশু ট্রাইব্যালের পিপি জাকির হোসেন, সাবেক পিপি আমিনুর রহমান, অতিরিক্ত জিপি এ্যাড. খয়রুল ইসলাম, অতিরিক্ত পিপি এ্যাড. ইয়াছিনুল হক দুলাল, এ্যাড. আব্দুল্লাহ আল মামুন, এ্যাড. মেহেদী হাসান মিলন প্রমূখ।

জানা গেছে, ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর থেকেই পুরো পঞ্চগড় ছিলো বৃহত্তর দিনাজপুর জেলার অংশ। ১৯৮৪ সালে জেলা ভাগের আগে পর্যন্ত সব কিছুই ছিলো দিনাজপুরের অধীনে। ফলে দেশ ভাগ থেকে জেলা ভাগ পর্যন্ত- এই দীর্ঘ সময়ের আদালত কেন্দ্রিক সব নথি রয়ে যায় দিনাজপুরেই। আর এসব নথির প্রয়োজন হলে বিরম্বনা বাড়ে সেবাগ্রহিতাদের। ছুটতে হয় দিনাজপুরে। এতে যেমন ভোগান্তি পোহাতে হয়, তেমনি হতে হয় হয়রানি। তবে এখন থেকে ভোগান্তি লাঘবের পাশাপাশি সেবাগ্রহিতাদের অর্থ ও সময় বাঁচবে বলছেন সংশ্লিষ্টরা।

পঞ্চগড় জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আদম সুফি বলেন, বিভিন্ন সময় এই নথিগুলোর প্রয়োজন হয়। সাধারণ মানুষ এসব নথি উত্তোলনের জন্য এতদিন দিনাজপুর যেতেন। এতে ব্যাপক হয়রানি হতে হতো। অনেক ক্ষেত্রে অতিরিক্ত টাকাও গুনতে হতো। এখন থেকে ভোগান্তি কমবে। সময় ও অর্থ- দুটাই বাঁচবে। এসব নথি পঞ্চগড়ের মহাফেজ খানায় সংরক্ষিত আছে- বিষয়টি সাধারণ মানুষকে জানাতে হবে।

গভর্নমেন্ট প্লিডার (জিপি) আব্দুল বারী বলেন, ১৯৮৪ সালে জেলা ভাগ হলে পঞ্চগড়ে স্বতন্ত্রভাবে আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়। তাই এতদিন এখানকার মহাফেজ খানায় ১৯৮৪ সালের পরবর্তী সময়কার নিষ্পত্তি হওয়া মামলার নথি সংরক্ষিত ছিলো। এখন দিনাজপুর থেকে আগের নথিগুলো নিয়ে আসায় ১৯৪৮ সাল থেকে বর্তমান সময়ের তথা গত ৭৭ বছরের সব নথিই পাওয়া যাবে।

জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক গোলাম ফারুক বলেন, মামলা পরিচালনার সময় তৎকালীন সময়কার রায় এবং ডিক্রির নকল প্রয়োজন হয়। এজন্য সাধারণ মানুষ আদালতের কাছে সময় চায় এবং দিনাজপুরে গিয়ে নকলের আবেদন করে। কিন্তু বিভিন্ন জটিলতার কারণে দীর্ঘ সময়েও নকল আনতে পারেনা। এতে সাধারণ মানুষ যেমন ভোগান্তি পোহায়, তেমনি মামলা নিরসনে আদালতেরও সময় ক্ষেপন হয়। এই পরিস্থিতিতে আমরা উদ্যোগ নিয়ে নথিগুলো এখানে নিয়ে এসেছি।