ফ্যাসিবাদ ও নব্য ফ্যাসিবাদ উভয়ই পরিত্যাজ্য, ১৯ আগষ্ট ২০২৪ বেলা ১.১০ মিঃ, (২) লুটপাট, হিংসা, ধ্বংসযজ্ঞ বন্ধ করে বন্যার্ত্যদের সাহায্য করুন। বন্যায় দল অনুযায়ী প্রাণহানি হচ্ছেনা। সবাই মরছে, ২২ আগষ্ট ২০২৪, বেলা ১.০৯ মিঃ, (৩) ধৈর্য, কেবল ধৈর্যই কিছুটা শান্তি রক্ষা করতে পারে। ২ ঘণ্টারও বেশী সময় বসে আছি ভোগরা বাস ষ্ট্যান্ডে, গণতান্ত্রিক পরিবেশে! ৩০ আগষ্ট ২০২৪, বেলা ১.০৮ মিঃ।
উপরের ৩টি ফেইসবুক পোষ্টদাতা মোহাম্মদ রাশেদুর রহমান (রাশেদ)। যিনি বিসিকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক পদ মর্যাদার একজন সরকারী কর্মকর্তা। তিনি সম্প্রতি নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ বুয়েট শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ১০ দিন বয়সী ড. ইউনুসের সরকারকে নব্য ফ্যাসিবাদী হিসেবে চিহ্নিত করেছেন, ১৪ দিন বয়সী সরকারকে লুটপাট, হিংসা, ধ্বংসযজ্ঞ বন্ধ করে বন্যার্ত্যদের সাহায্য করুন মর্মে উল্লেখ করে ফেসবুকে পোষ্ট দিয়ে সরকারকে লুটপাটকারী, হিংসুক এবং ধ্বংসযজ্ঞকারী হিসাবে চিহ্নিত করেছেন এবং ২০ দিন বয়সী সরকারের কাজে চরম উষ্মা প্রকাশ করেছেন গণতান্ত্রিক পরিবেশ লিখে আশ্চর্যবোধক চিহ্নটি দিয়ে। যার স্ক্রীনশট পত্রিকা কর্তৃপক্ষের হাতে রয়েছে।
রাষ্ট্রের একজন নাগরিক হিসেবে যে কেউ সরকারের সমালোচনা করার অধিকার রক্ষা করেন। রাশেদুর রহমান এর আগ্রাসী এবং দুঃসাহসিক মনোভাব এ সীমারেখাটি অতিক্রম করেছে। দশ দিনে ড. ইউনুসের সরকার ফ্যাসিবাদী আচরণ করেছে এমন নজির কেউ দেখাতে পারবেনা, বন্যা কবলিত অঞ্চলে চৌদ্দদিন বয়সী সরকার প্রয়োজনীয় সব কিছু করেছে দল মতের উর্ধে উঠে, যা বিশ্ববাসী দেখেছে। আর দেশের প্রতিটি অঞ্চলে যানজট নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা দেশবাসী ভালভাবেই অবগত আছেন। গণতান্ত্রিক পরিবেশ লিখে আশ্চর্যবোধক চিহ্নটি দিয়ে কি বুঝাতে চেয়েছেন তা অনুধাবনে কারো অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। তার দেয়া প্রতিটি পোষ্ট আক্রমণাত্মক এবং অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার বিরোধী।
এ বিষয় নিয়ে “সরকারী কর্মকর্তার ফেইসবুক পোষ্টে তোলপাড়” শিরোনামে ৩ অক্টোবর ২০২৪ এবং “অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধাচারণ করে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট শাস্তি পেলেও বিসিকের রাশেদ অধরা” শিরোনামে ২০ অক্টোবর ২০২৪ তারিখে পত্রিকায় সচিত্র প্রকাশিত হয়েছে এবং আবেদনের মাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের পেপার কাটিং বিসিক কর্তৃপক্ষ বরাবর দাখিল করা হয়।
সরকারের বিরুদ্ধাচারণ করে পোষ্ট দেয়ার কারণে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে কিনা খোঁজ নেয়ার জন্য পর পর তিনদিন টেলিফোনে বিসিকের সাবেক পরিচালক (প্রশাসন) শ্যমলী নবীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।
নির্ভরযোগ্য সূত্রের বরাতে জানা গেছে, স্বৈরাচারী হাসিনার দোসর এবং স্বৈরাচারী মনোভাবাপন্ন বিসিকের সাবেক পরিচালক (প্রশাসন) শ্যামলী নবী তার আওয়ামী দোসর রাশেদকে শাস্তির হাত থেকে রক্ষা করার জন্য নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে রাশেদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ তদন্তের জন্য কমিটি গঠনের অনুমোদন গ্রহণ করেন বিসিক চেয়ারম্যানের নিকট হতে। প্রশাসনিক বিশেষজ্ঞদের মতে যা দেশের প্রচলিত বিধান এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার সাথে সাংঘর্ষিক। কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারীর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উত্থাপিত হওয়ার সাথে সাথে তাকে তার বর্তমান কর্মস্থল হতে অন্যত্র বদলী করে পরবর্তী ধাপে বা পর্যায়ে প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করার সরকারী নির্দেশনা আছে। যাতে করে যার বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে তিনি যেন তদন্ত কাজে বা গৃহীতব্য প্রশাসনিক ব্যবস্থায় প্রভাব বিস্তার করতে না পারেন। এমনও গুঞ্জন উঠেছিল যে, পরিচালক (প্রশাসন) রাশেদের নিয়োজিত এজেন্টের মাধ্যমে মোটা অংকের আর্থিক লেনদেনের বিনিময়ে তাকে শাস্তির হাত হতে রক্ষার কৌশল অবলম্বন করেছেন। যার ফলে ঘটনাটির বয়স প্রায় ৬ মাস অতিবাহিত হলেও রাষ্ট্রদ্রোহী অপরাধ করেও শাস্তি মুক্ত রয়েছেন বিসিকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মোহাম্মদ রাশেদুর রহমান (রাশেদ)।
সরকার বিরোধী পোষ্ট দেয়ার কারণে লালমনিরহাটের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাপসী তাবাসসুম এর ক্ষেত্রে যে ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে একই ধরনের ব্যবস্থা তাৎক্ষনিকভাবে নেয়া প্রয়োজন ছিল বলে মন্তব্য করেছেন অনেক সরকারী কর্মকর্তা ও সুশীল সমাজ। ব্যবস্থা না নিলে স্বৈরাচারের দোসররা উজ্জীবিত হয়ে এ ধরনের কাজ চালাতে থাকবে, যা সরকারের স্থিতিশীলতা নষ্ট করে অরাজক পরিস্থিতির তৈরী করবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিসিক এর পরিচালক (প্রশাসন) কাজী মাহবুবুর রহমান বলেন, আমি কিছুদিন আগে যোগদান করেছি। এ বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। খোঁজ খবর নিয়ে আপনাকে জানাবো।
বিসিকের দেশপ্রেমিক কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের দাবী:
জুলাই আগষ্ট বিপ্লবে প্রায় ২ হাজার ছাত্র জনতার জীবনের বিনিময়ে অর্জিত অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধাচারণকারী সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মোহাম্মদ রাশেদুর রহমান (রাশেদ) সহকারী মহাব্যবস্থাপক বিসিক, তার ফেসবুক পোষ্টের বক্তব্য অনুযায়ী একজন রাষ্ট্রদ্রোহী অপরাধের অপরাধী হিসাবে আইনত গন্য এবং কঠোর শাস্তির অধিকারী। তাকে রাষ্ট্রদ্রোহিতার দায়ে সরকারী চাকুরী থেকে বহিষ্কার বা চাকুরীচ্যুত করা সরকারের নৈতিক দায়িত্ব। এ বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, শিল্প মন্ত্রণালয় এবং বিসিক চেয়ারম্যনের দ্রুত পদক্ষেপ কামনা করেছেন বিসিক এর দেশ প্রেমিক কর্মকর্তা ও কর্মচারিবৃন্দ। অন্যথায় তারা মহামান্য হাইকোর্টের দ্বারস্থ হবেন বলে জানিয়েছেন।