ঢাকা ০৭:৫৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫, ৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
শিগগিরই শুরু হবে তুরাগ নদী দখল ও দূষণমুক্তকরণের কার্যক্রম উন্নয়ন শুধু জেলা সদরেই নয়, সকল উপজেলায় দৃশ্যমান হতে হবে- পার্বত্য উপদেষ্টা জুলাইবিপ্লবী শহিদ হাসানকে দেখতে হাসপাতালে ধর্ম উপদেষ্টা পরিবেশ উপদেষ্টার সাথে নরওয়ের স্টেট সেক্রেটারির বৈঠক আদমদীঘিতে বেড়েছে অপরাধের প্রবণতা, নীরব ভূমিকায় থানা পুলিশ সিংগাইরে কিশোর গ্যাংদের হাতে খুন হলেন স্কুল ছাত্র রাহুল ইসলাম খান মাগুরা আলোকদিয়া তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ১ খুন রাজধানীতে থেমে নেই যুবলীগ নেতা নুর ইসলামের চাঁদাবাজি-ত্রাসের রাজত্ব! রূপগঞ্জে সালমান এফ রহমানের দখলে থাকা সরকারি রাস্তা উদ্ধার শিশু আছিয়া ধর্ষণ-হত্যা: খালাস পেলো ৩

ব্রি জাতীয়তাবাদী শ্রমিক-কর্মচারি-কর্মকর্তা ঐক্য পরিষদের সংবাদ সম্মেলন

রেজাউল মোল্লা,গাজীপুর-

আওয়ামীলীগ সরকারের অনুসারিদের বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) থেকে অপসারণসহ ৮ দফা দাবি জানিয়েছে ব্রি জাতীয়তাবাদী শ্রমিক-কর্মচারি-কর্মকর্তা ঐক্য পরিষদের নেতারা। সোমবার দুপুরে ব্রি সংলগ্ন গাজীপুর জেলা শহরের একটি অফিসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তারা এ দাবি জানান।
লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের আহবায়ক মোঃ তোফাজ্জল হোসেন ভূইয়া বলেন, বিগত ১৫ বছরে চাকরিচ্যুত ২৮জন কর্মকর্তা-কর্মচারিকে আত্মীকরণ, বিগত ১৫ বছরে বৈষম্যের শিকার বিজ্ঞানী কর্মকর্তা-কর্মচারিদের ভূতাপেক্ষা পদোন্নতি প্রদান, ব্রি’র ৯জন শ্রমিকের বিগত ১৫ বছরের বকেয়া বেতন-ভাতাদি প্রদান, ব্রি’র ১৬জন কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের সাড়ে ৮ বছরের বকেয়া বেতন-ভাতাদি প্রদান, শ্রমিকদের ন্যায্য অতিরিক্ত কাজের ভাতা প্রদান ও বিগত ১৫ বছরের দুর্নীতি ও অপশাসনের তদন্তপূর্বক দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণসহ ৮দফা দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে ব্রি জাতীয়তাবাদী শ্রমিক-কর্মচারি-কর্মকর্তা ঐক্য পরিষদের যুগ্ন-আহবায়ক সৈয়দ রমজান আলী, আলফাজ উদ্দিন, বিএনপি নেতা আহম আলী রুশদী, মহানগর যুবদলের সদস্য সচিব মাহমুদ হাসান রাজু, মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি এমারত হোসেনসহ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
তিনি বলেন, গত ২০০৯ সালে পতিত আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে ড. শাহজাহান কবীরের (সদ্য বিদায়ী মহাপরিচালক) নেতৃত্বে দলীয় ও আঞ্চলিক বিবেচনায় একটি সিন্ডিকেট গঠিত হয়। ওরা ব্রি’র বিজ্ঞানী, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিকদের উপর দলবাজ আওয়ামী সন্ত্রাসীর ঝাঁপিয়ে পড়ে। শারীরিক নির্যাতনসহ দাপ্তরিক সকল প্রকার নিপিড়ন শুরু করা হয়, যা ৫ আগষ্ট পর্যন্ত অব্যাহত ছিল এবং ড. শাহজাহান কবীরের অনুসারী আওয়ামীলীগের লোকজন এখনও ঐ সব অপকর্মের ধারাবাহিকতা চালিয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে গণবদলী, চাকুরিচ্যুতি, জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে পদোন্নতি বঞ্চিত করণ। ৯ জন নিয়মিত শ্রমিকসহ প্রায় ৫৫ জন শ্রমিককে চাকুরিচ্যুত করা হয়। ব্রি বোর্ড অব ম্যানেজমেন্ট কর্তৃক অনুমোদিত বদলী নীতিমালা লঙ্ঘন করে প্রায় ৫০ জনকে তৎক্ষণিক বদলি করা হয়। ৩০ জন বিজ্ঞানী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে সরাসরি পদোন্নতি বঞ্চিত করা হয়। প্রায় ২০০ এর উর্ধ্ব পদে অর্থের বিনিময়ে নিয়োগ যোগ্যতা জালিয়াতি, প্রশ্নপত্র ফাঁস, কোটা জালিয়াতি, এমনকি নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ না করা সত্ত্বেও নিয়োগ দেয়া হয়েছে। বিগত দিনের অবৈধ নিয়োগের বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত নেয়া দূরের কথা বরং তাদেরকে নিশ্চিয়তা নিয়ে আশ্বস্ত করেছে সকল কিছুর রক্ষা কবছ দিতে তারাই যাথেই। ওই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে শারীরিকভাবে নির্যাতিত হয়ে প্রায় অর্ধশত কর্মজীবি অফিসে প্রতিকার চেয়ে আবেদন করে। কিন্তু কোন প্রতিকার পাওয়া যায়নি।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, নিয়োগের পাশাপশি টেন্ডার, প্রকল্প ও বিদেশ ভ্রমনে ব্যাপক দুর্নীতির প্রমাণ রয়েছে। বিগত ১৫ বছরে ড. শাহজাহান কবীর একজন এসএসও থেকে মহাপরিচালক পদে পদায়িত হয় শুধু দলবাজী সন্ত্রাস ও অর্থের বিনিময়ে। তার কারণে ব্রি’র মোর অনেক বিজ্ঞানী পদোন্নতি বঞ্চিত হয়ে নিম্নে পদ থেকেই অবসরে যেতে হয়েছে। ব্রি’র বিশিষ্ট বিজ্ঞানী যার হাতে অঞ্চল ভিত্তিক বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ধান জাত উদ্ভাবিত হয়েছে। সেই বিজ্ঞানী ড. হেলাল উদ্দিন আহমেদ যিনি ড. শাহজাহান করীরের চেয়ে প্রায় ১০ বছরের জ্যেষ্ঠ হওয়া সত্ত্বেও ড. শাহজাহান কবীরের অধীন প্রায় ৫ বছর চাকুরি করে অবসর গ্রহণ করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, বিগত ১৫ বছরে ব্রি’র কর্মজীবীদের বঞ্চনা ও নিপীড়ণের বাস্তবচিত্র এতই ভয়াবহ যে, আয়না ঘর ছাড়া এখানে সব কিছুই ব্যবহার করা হয়েছে। ১৫ বছর বেতন-ভাতাদি ছাড়াও অনেককে থাকতে হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে তাহমিনা নামে এক কর্মচারি বলেন, তিনিসহ ৮৯জন কর্মকর্তা একটি প্রকল্পে ছিলেন সেখান থেকে ৮৮ জনের চাকরি হয়। সকল নিয়মকানানুন ও বিধি মানা হলেও তাকে চাকরিতে যোগ দিতে দেওয়া হয়নি। অপর কর্মচারি ওমর ফারুক বলেন, তাকে চাকরিতে আত্মীকরণের জন্য উচ্চ আদালত, মন্ত্রনালয় কথা বলা হলেও তার চাকরি আত্মীকরণ করা হয়নি।

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

শিগগিরই শুরু হবে তুরাগ নদী দখল ও দূষণমুক্তকরণের কার্যক্রম

ব্রি জাতীয়তাবাদী শ্রমিক-কর্মচারি-কর্মকর্তা ঐক্য পরিষদের সংবাদ সম্মেলন

আপডেট টাইম : ১২:০৬:২২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

রেজাউল মোল্লা,গাজীপুর-

আওয়ামীলীগ সরকারের অনুসারিদের বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) থেকে অপসারণসহ ৮ দফা দাবি জানিয়েছে ব্রি জাতীয়তাবাদী শ্রমিক-কর্মচারি-কর্মকর্তা ঐক্য পরিষদের নেতারা। সোমবার দুপুরে ব্রি সংলগ্ন গাজীপুর জেলা শহরের একটি অফিসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তারা এ দাবি জানান।
লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের আহবায়ক মোঃ তোফাজ্জল হোসেন ভূইয়া বলেন, বিগত ১৫ বছরে চাকরিচ্যুত ২৮জন কর্মকর্তা-কর্মচারিকে আত্মীকরণ, বিগত ১৫ বছরে বৈষম্যের শিকার বিজ্ঞানী কর্মকর্তা-কর্মচারিদের ভূতাপেক্ষা পদোন্নতি প্রদান, ব্রি’র ৯জন শ্রমিকের বিগত ১৫ বছরের বকেয়া বেতন-ভাতাদি প্রদান, ব্রি’র ১৬জন কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের সাড়ে ৮ বছরের বকেয়া বেতন-ভাতাদি প্রদান, শ্রমিকদের ন্যায্য অতিরিক্ত কাজের ভাতা প্রদান ও বিগত ১৫ বছরের দুর্নীতি ও অপশাসনের তদন্তপূর্বক দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণসহ ৮দফা দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে ব্রি জাতীয়তাবাদী শ্রমিক-কর্মচারি-কর্মকর্তা ঐক্য পরিষদের যুগ্ন-আহবায়ক সৈয়দ রমজান আলী, আলফাজ উদ্দিন, বিএনপি নেতা আহম আলী রুশদী, মহানগর যুবদলের সদস্য সচিব মাহমুদ হাসান রাজু, মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি এমারত হোসেনসহ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
তিনি বলেন, গত ২০০৯ সালে পতিত আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে ড. শাহজাহান কবীরের (সদ্য বিদায়ী মহাপরিচালক) নেতৃত্বে দলীয় ও আঞ্চলিক বিবেচনায় একটি সিন্ডিকেট গঠিত হয়। ওরা ব্রি’র বিজ্ঞানী, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিকদের উপর দলবাজ আওয়ামী সন্ত্রাসীর ঝাঁপিয়ে পড়ে। শারীরিক নির্যাতনসহ দাপ্তরিক সকল প্রকার নিপিড়ন শুরু করা হয়, যা ৫ আগষ্ট পর্যন্ত অব্যাহত ছিল এবং ড. শাহজাহান কবীরের অনুসারী আওয়ামীলীগের লোকজন এখনও ঐ সব অপকর্মের ধারাবাহিকতা চালিয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে গণবদলী, চাকুরিচ্যুতি, জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে পদোন্নতি বঞ্চিত করণ। ৯ জন নিয়মিত শ্রমিকসহ প্রায় ৫৫ জন শ্রমিককে চাকুরিচ্যুত করা হয়। ব্রি বোর্ড অব ম্যানেজমেন্ট কর্তৃক অনুমোদিত বদলী নীতিমালা লঙ্ঘন করে প্রায় ৫০ জনকে তৎক্ষণিক বদলি করা হয়। ৩০ জন বিজ্ঞানী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে সরাসরি পদোন্নতি বঞ্চিত করা হয়। প্রায় ২০০ এর উর্ধ্ব পদে অর্থের বিনিময়ে নিয়োগ যোগ্যতা জালিয়াতি, প্রশ্নপত্র ফাঁস, কোটা জালিয়াতি, এমনকি নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ না করা সত্ত্বেও নিয়োগ দেয়া হয়েছে। বিগত দিনের অবৈধ নিয়োগের বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত নেয়া দূরের কথা বরং তাদেরকে নিশ্চিয়তা নিয়ে আশ্বস্ত করেছে সকল কিছুর রক্ষা কবছ দিতে তারাই যাথেই। ওই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে শারীরিকভাবে নির্যাতিত হয়ে প্রায় অর্ধশত কর্মজীবি অফিসে প্রতিকার চেয়ে আবেদন করে। কিন্তু কোন প্রতিকার পাওয়া যায়নি।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, নিয়োগের পাশাপশি টেন্ডার, প্রকল্প ও বিদেশ ভ্রমনে ব্যাপক দুর্নীতির প্রমাণ রয়েছে। বিগত ১৫ বছরে ড. শাহজাহান কবীর একজন এসএসও থেকে মহাপরিচালক পদে পদায়িত হয় শুধু দলবাজী সন্ত্রাস ও অর্থের বিনিময়ে। তার কারণে ব্রি’র মোর অনেক বিজ্ঞানী পদোন্নতি বঞ্চিত হয়ে নিম্নে পদ থেকেই অবসরে যেতে হয়েছে। ব্রি’র বিশিষ্ট বিজ্ঞানী যার হাতে অঞ্চল ভিত্তিক বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ধান জাত উদ্ভাবিত হয়েছে। সেই বিজ্ঞানী ড. হেলাল উদ্দিন আহমেদ যিনি ড. শাহজাহান করীরের চেয়ে প্রায় ১০ বছরের জ্যেষ্ঠ হওয়া সত্ত্বেও ড. শাহজাহান কবীরের অধীন প্রায় ৫ বছর চাকুরি করে অবসর গ্রহণ করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, বিগত ১৫ বছরে ব্রি’র কর্মজীবীদের বঞ্চনা ও নিপীড়ণের বাস্তবচিত্র এতই ভয়াবহ যে, আয়না ঘর ছাড়া এখানে সব কিছুই ব্যবহার করা হয়েছে। ১৫ বছর বেতন-ভাতাদি ছাড়াও অনেককে থাকতে হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে তাহমিনা নামে এক কর্মচারি বলেন, তিনিসহ ৮৯জন কর্মকর্তা একটি প্রকল্পে ছিলেন সেখান থেকে ৮৮ জনের চাকরি হয়। সকল নিয়মকানানুন ও বিধি মানা হলেও তাকে চাকরিতে যোগ দিতে দেওয়া হয়নি। অপর কর্মচারি ওমর ফারুক বলেন, তাকে চাকরিতে আত্মীকরণের জন্য উচ্চ আদালত, মন্ত্রনালয় কথা বলা হলেও তার চাকরি আত্মীকরণ করা হয়নি।