ঢাকা ০৬:৫১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫, ১৪ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
ফেসবুক পোস্টের জেরে নওগাঁয় কলেজ শিক্ষার্থীকে মারপিটের অভিযোগ তরুন প্রজন্মের চিন্তা চেতনাকে নিয়ে কাজ করতে হবে- আমিনুল হক জয়পুরহাটে ক্ষেতলালে নিখোঁজের ৯ দিন পর আলোচিত কাফির লাশ উদ্ধার সিরাজদিখানে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে ঘরবাড়ি ভাংচুর ও হামলা: আহত-৫ আদমদীঘিতে প্রতারণা করে বোনদের সম্পত্তি লিখে নিল ভাই মিরপুর ইস্টার্ণ হাউজিং ডাইং ফ্যাক্টারিতে অবৈধ গ্যাস সংযোগের মহাউৎসব প্রতারণার মাধ্যমে বিয়ে করে অর্থ হাতিয়ে নেয়ায় গ্রেফতার বিতর্কিত নারী সংস্কার কমিশন বাতিল না করলে কঠোর আন্দোলন- মাওলানা ইমতিয়াজ আলম রাজউককে জনবান্ধব করতে আইন ও বোর্ডের গঠন বদলাতে হবে- সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান সিরাজদিখানে ভ্রাম্যমাণ আদালতে ৭৫ হাজার টাকা জরিমানা
সংস্কার কাজে ভয়াবহ দুর্নীতি:

মাগুরা গণপূর্তের নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদ পারভেজের ‘ভাউচার’ কান্ডে সরকারী টাকা হরিলুট!

মাগুরা গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী চলতি দায়িত্ব মো: নাহিদ পারভেজ রিয়াদের বিরুদ্ধে ভয়াবহ দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়াগেছে। তিনি নানা কৌশলে রাষ্ট্রীয় অর্থ হরিলুট করছেন। ক্ষমতার অপব্যবহার করে আওয়ামী লীগের ঠিকাদারদের বিশেষ সুয়োগ সুবিধা দিচ্ছেন। এমন কি তাদের নিয়ে গণপূর্ত অফিসের ভেতরে পিকনিকও করেছেন। তিনি নিজেও নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্র লীগের নেতা ছিলেন বলে দাবী করছেন একটি মহল।
জুলাই,আগষ্ট বিপ্লব ও ছাত্র জনতার আন্দোলনে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতন হলেও সরকারী দপ্তরগুলোতে তার দোসররা এখনো রয়েগেছে। ছাত্রলীগের রাজনীতি করে দলীয় কোটায় চাকরি ও পদায়ন পাওয়া এসব কর্মকর্তারা এখনো আওয়ামী লীগের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কোটি কোটি টাকার কাজ দিয়ে ফ্যাসিষ্টদের লালন পালন করার চেষ্টা করছেন। এমনি ঘটনা ঘটেছে মাগুরা জেলা গণপূর্ত অফিসে । এই অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ নাহিদ পারভেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েটে) পড়াকালীন সময়ে ছাত্র লীগের সক্রিয় নেতা ছিলেন বলে দাবী করেছেন মাগুরা জেলার ছাত্র,জনতা। তিনি আজ থেকে প্রায় নয় মাস আগে নড়াইল থেকে মাগুরায় বদলী হয়ে আসেন। এসেই আওয়ামী লীগের ঠিকাদারদেরকে নিয়ে একটি সিন্ডিকেট গঠন করেন। এরপর ঐ সব আওয়ামীমনা ঠিকাদার একটার পর একটা উন্নয়ন কাজের ঠিকাদারী তুলে দেন। বিনিময়ে তাদের কাছ থেকে ১০% কমিশন আদায় করেন। সুত্রমতে, মাগুরা জেলায় এখন গণপূর্তের যতো উন্নয়ন ও সংস্কার কাজ হচ্ছে তার সবকটাই করছেন আওয়ামী লীগের ঠিকাদাররা।
তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট দুর্নীতির অভিযোগ থাকলেও বেকলমাত্র রাজরৈতিক তদবীরে বিভাগীয় শাস্তিমুক্ত রয়েছেন। অভিযোগ রয়েছে যে, তিনি ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে সরকারী অফিস ও কর্মকর্তাতের বাসভবন সংস্কারের জস্য ৩ কোটি ৬৫ লাখ টাকা বরাদ্দ পেয়েছেন। কোন প্রকার টেন্ডার আহবান না করেই তিনি তার আওয়ামীমনা ঠিকাদার মাধ্যমে ভাউচারে কাজ করাচ্ছেন। মাগুরা জজ কোর্ট,জেলা প্রশাসকের বাস ভবন ও গণপুর্তের নির্বাহী প্রকৌশলীর বাস ভবনের কাজ চলমান রয়েছে। এসব কাজে ১০ টাকা খরচ করে ৫০ টাকা বিল পরিশোধ করা হচ্ছে। এই সংস্কার কাজের বিল ভাউচারগুলো তদন্তের দাবী জানানো হয়েছে।
অন্যদিকে তিনি পোপালগঞ্জের একজন পলাতক ঠিবাদারের ১৪ কোটি টাকার কাজ নিজের অনুগত ঠিকাদার দ্বারা সাব কন্ট্রাক্টে করাচ্ছেন। এই ঠিকাদারী ফার্মের নাম মা বাবা এন্টারপ্রাইজ বলে জানাগেছে। গোপালগঞ্জের একজন আওয়ামী লীগ নেতা এই ঠিকাদারী ফার্মের মালিক বিধায় তার ঠিকাদারী লাইসেন্স ব্ল্যাকলিষ্ট করেছে হণপূর্ত অধিদপ্তর। তথাপিও সেই লাইসেন্সের অনুকুলে তিনি কাজ চলমান রেখেছেন।
এ ছাড়া মাগুরা গণপূর্তের অধিকাংশ কাজ তিনি আৗযামী লেিগর ঠিকাদারদের প্রদান করেছেন। যেমনঃ জেলা তথ্য অফিস ভবন নির্মাণ কাজ করছেন আওয়ামী লীগ নেতা ও ঠিকাদার মাকুল ও তার ছোট ভাই রাকু। এই কাজে ১২/১৩ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে। হাসপাতালের (৭মতলার) কাজ করছেন সাবেক ছাত্র লীগ নেতা শেখ রেজাউল ইসলাম। এই কাজের মুল্য ৫ কোটি টাকা।
শালিখা ও মহম্মদপুরে মডেল মসজিদ নির্মাণ কাজ করছেন আওয়ামী লীগ নেতা রানা। এই কাজের মুল্য ১৩ কোটি টাকা। গণপূর্ত অফিসের বাউন্ডারি ওয়ালের কাজ করছেন যুব লীগ নেতা কিশোর। মুল্য ৫ লাখ টাকা। এ ছাড়া টেন্ডার ছাড়াই মাগুরা জজ কোর্টের ভেতরে অনেক কাজ করে ভুয়া ভাউচারে মোটা অংকের টাকা ভাগাভাগি করেছেন। জেলা প্রশাসকের বাস ভবনের ভেতরের উন্নয়ন কাজও করছেন আওয়ামী লীগের ঠিকাদার। গত ১৬ বছরে কোন বিএনপি দলীয় ঠিকাদার একটি কাজও পায়নি এই দপ্তর থেকে।

টেন্ডার সিডিউল বিক্রির আগেই কাজ শেষ:

মাগুরা গণপূর্ত বিভাগ টেন্ডারের (দরপত্র) শিডিউল বিক্রির আগেই প্রায় কোটি টাকার কাজ পছন্দের ঠিকাদারের কাছে বণ্টন করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুধু তাই নয়, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান এক বছর আগেই এ কাজ শেষ করেছেন। এপিপির কাজ এলটিএম বাদে দরপত্র আহ্বান করা নিষেধ থাকলেও ওটিএম এর মাধ্যমে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়,২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের ইজিপি (রাজস্ব)আওতায় ১০টি প্রকল্পে মাগুরা গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ নাহিদ পারভেজের স্বাক্ষরে ১০-ফেব্রুয়ারী(ওটিএম) দরপত্র আহ্বান করা হয়।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দরপত্র ১০টির মধ্যে ৪টি ওটিএম,৬টি এলটিএম দরপত্র আহ্বান করা হয়।বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী,২৪-ফেব্রুয়ারী দুপুর ১২:০০ ঘটিকায় টেন্ডার খোলা হয়েছে। প্রত্যেক প্রকল্পের অনুকূলে যে ঠিকাদার চুক্তিমূল্য কম দেবেন তিনি ওই কাজের ঠিকাদার নিয়োগ পাবেন। তবে সর্বমোট কতটি টেন্ডার জমা পড়েছে এ বিষয়ে কোন তথ্য দিতে রাজি নন মোহাম্মদ নাহিদ পারভেজ, নির্বাহী প্রকৌশলী মাগুরা গণপূর্ত বিভাগ, মাগুরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, টেন্ডার আইডি নম্বর-১০৭২৭১৬, কাজের সংক্ষিপ্ত বিবরণ: মাগুরা গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর বাসভবনের আরসিসি রাস্তা নির্মাণ এবং হাঁটার পথ সংস্কার।প্রাক্কলিত মূল্য টাকা-৮.০০ থেকে ৯.০০ লক্ষ। টেন্ডার আইডি নম্বর-১০৭২৭১৫,মাগুরা ডিসি অফিসের বাগানের আনুষঙ্গিক মেরামত ,অফিসের চারপাশে ধাতব হ্যালাইড স্থাপন।প্রধান ফটকে পি-৬ মনিটরের মেরামত।যার প্রাক্কলিত মূল্য টাকা-৪.০০ থেকে ৫.০০ লক্ষ। টেন্ডার আইডি নম্বর-১০৭২৭১৩,মাগুরা সার্কিট হাউসে চারটি সাধারণ কক্ষের সংস্কার ও আধুনিকীকরণ শৌচাগারের টাইলস প্রতিস্থাপন,দরজা প্রতিস্থাপন,যার প্রাক্কলিত মূল্য -৯.০০ থেকে ১৯.০০ লক্ষ টাকা।টেন্ডার আইডি নম্বর-১০৭২৭১১,নির্বাহী প্রকৌশলী গণপূর্ত মাগুরার বাসভবনে নিরাপত্তার উদ্দেশ্যে সীমানা প্রাচীরের উপরে সম্প্রসারণ।প্রাক্কলিত মূল্য -১২.০০ থেকে ১৩.০০ লক্ষ টাকা।ওই নোটিশের কাজসহ নাম না জানা আরো অনেক কাজ এক বছর আগেই শেষ হয়েছে।
মাগুরা গণপূর্ত বিভাগের ঠিকাদার ফরিদ খান বলেন, আমি এখানকার প্রথম শ্রেণির ঠিকাদার অথচ টেন্ডার ক্রয় করে কোন কাজ পাইনা। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার যোগসাজশে কাজ ভাগবাটোয়ারা করে নেয় তাঁরা । নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ঠিকাদার বলেন, বিভিন্ন মাধ্যম থেকে তারা জানতে পারেন গণপূর্ত বিভাগের এমন টেন্ডার স্বৈরাচার শাসনামলে অনেক বার হয়েছে।অথচ ভবনটির নোটিশ বোর্ডে এ বিজ্ঞপ্তি টাঙানো হয়নি। শিডিউল কিনতে গিয়ে জানতে পারি কাজগুলো আগে থেকেই কর্মকর্তার সুবিধামতো ঠিকাদারদের বরাদ্দ দিয়েছে। এটা এক প্রকার অনিয়ম। এতে কাজের গুণগত মান খারাপ হবে।
এ বিষয় মাগুরা গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ নাহিদ পারভেজের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে দুই থেকে তিন মাস সময় লাগে। এতে নাগরিকদের দীর্ঘসময় ভোগান্তিতে পড়তে হয়। এ কারণে নাগরিকের ভোগান্তির কথা মাথায় রেখে টেন্ডারের আগেই কাজ শুরু করেছেন।

আরো জানাগেছে, নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ নাহিদ পারভেজ বিএনপি দলীয় ঠিকাদার ও স্থানীয় সাংবাদিকদের সহ্যই করতে পারেন না। তিনি সব সময় উগ্র মেজাজে থাকেন। সাংবাদিকদের তথ্য দিতেও তালবাহানা করেন। তিনি ভুয়া ভাউচারে গোপনে লক্ষ লক্ষ টাকা তুলে নিয়েছেন এমন কথাও শোনা যাচ্ছে। ফ্যাসিষ্ট আওয়ামী লীগের দোসর এই নির্বাহী প্রকৌশলী নড়াইলে থাকা কালেও সরকারি অর্থ হরিলুট করেছেন মর্মে অভিযোগ আছে। তিনি বর্তমানে আওয়ামী লীগের ঠিকাদারদেরকে ছায়া সাথী করে দেদারছে সরকারি অর্থ হরিলুট করে যাচ্ছেন।
এ সব বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন,আপনি অফিসে এসে সরাসরি কথা বলুন।
মাগুরাবাসী অতিসত্বর ফ্যাসিবাদের দোসর এই নির্বাহী প্রকৌশলীকে মাগুরা থেকে প্রত্যাহারের দাবী তুলেছেন। অন্যথায় তারা রাজপথে আন্দোলন করতে বাধ্য হবেন বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

ফেসবুক পোস্টের জেরে নওগাঁয় কলেজ শিক্ষার্থীকে মারপিটের অভিযোগ

সংস্কার কাজে ভয়াবহ দুর্নীতি:

মাগুরা গণপূর্তের নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদ পারভেজের ‘ভাউচার’ কান্ডে সরকারী টাকা হরিলুট!

আপডেট টাইম : ০৬:১৬:৩৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫

মাগুরা গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী চলতি দায়িত্ব মো: নাহিদ পারভেজ রিয়াদের বিরুদ্ধে ভয়াবহ দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়াগেছে। তিনি নানা কৌশলে রাষ্ট্রীয় অর্থ হরিলুট করছেন। ক্ষমতার অপব্যবহার করে আওয়ামী লীগের ঠিকাদারদের বিশেষ সুয়োগ সুবিধা দিচ্ছেন। এমন কি তাদের নিয়ে গণপূর্ত অফিসের ভেতরে পিকনিকও করেছেন। তিনি নিজেও নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্র লীগের নেতা ছিলেন বলে দাবী করছেন একটি মহল।
জুলাই,আগষ্ট বিপ্লব ও ছাত্র জনতার আন্দোলনে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতন হলেও সরকারী দপ্তরগুলোতে তার দোসররা এখনো রয়েগেছে। ছাত্রলীগের রাজনীতি করে দলীয় কোটায় চাকরি ও পদায়ন পাওয়া এসব কর্মকর্তারা এখনো আওয়ামী লীগের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কোটি কোটি টাকার কাজ দিয়ে ফ্যাসিষ্টদের লালন পালন করার চেষ্টা করছেন। এমনি ঘটনা ঘটেছে মাগুরা জেলা গণপূর্ত অফিসে । এই অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ নাহিদ পারভেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েটে) পড়াকালীন সময়ে ছাত্র লীগের সক্রিয় নেতা ছিলেন বলে দাবী করেছেন মাগুরা জেলার ছাত্র,জনতা। তিনি আজ থেকে প্রায় নয় মাস আগে নড়াইল থেকে মাগুরায় বদলী হয়ে আসেন। এসেই আওয়ামী লীগের ঠিকাদারদেরকে নিয়ে একটি সিন্ডিকেট গঠন করেন। এরপর ঐ সব আওয়ামীমনা ঠিকাদার একটার পর একটা উন্নয়ন কাজের ঠিকাদারী তুলে দেন। বিনিময়ে তাদের কাছ থেকে ১০% কমিশন আদায় করেন। সুত্রমতে, মাগুরা জেলায় এখন গণপূর্তের যতো উন্নয়ন ও সংস্কার কাজ হচ্ছে তার সবকটাই করছেন আওয়ামী লীগের ঠিকাদাররা।
তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট দুর্নীতির অভিযোগ থাকলেও বেকলমাত্র রাজরৈতিক তদবীরে বিভাগীয় শাস্তিমুক্ত রয়েছেন। অভিযোগ রয়েছে যে, তিনি ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে সরকারী অফিস ও কর্মকর্তাতের বাসভবন সংস্কারের জস্য ৩ কোটি ৬৫ লাখ টাকা বরাদ্দ পেয়েছেন। কোন প্রকার টেন্ডার আহবান না করেই তিনি তার আওয়ামীমনা ঠিকাদার মাধ্যমে ভাউচারে কাজ করাচ্ছেন। মাগুরা জজ কোর্ট,জেলা প্রশাসকের বাস ভবন ও গণপুর্তের নির্বাহী প্রকৌশলীর বাস ভবনের কাজ চলমান রয়েছে। এসব কাজে ১০ টাকা খরচ করে ৫০ টাকা বিল পরিশোধ করা হচ্ছে। এই সংস্কার কাজের বিল ভাউচারগুলো তদন্তের দাবী জানানো হয়েছে।
অন্যদিকে তিনি পোপালগঞ্জের একজন পলাতক ঠিবাদারের ১৪ কোটি টাকার কাজ নিজের অনুগত ঠিকাদার দ্বারা সাব কন্ট্রাক্টে করাচ্ছেন। এই ঠিকাদারী ফার্মের নাম মা বাবা এন্টারপ্রাইজ বলে জানাগেছে। গোপালগঞ্জের একজন আওয়ামী লীগ নেতা এই ঠিকাদারী ফার্মের মালিক বিধায় তার ঠিকাদারী লাইসেন্স ব্ল্যাকলিষ্ট করেছে হণপূর্ত অধিদপ্তর। তথাপিও সেই লাইসেন্সের অনুকুলে তিনি কাজ চলমান রেখেছেন।
এ ছাড়া মাগুরা গণপূর্তের অধিকাংশ কাজ তিনি আৗযামী লেিগর ঠিকাদারদের প্রদান করেছেন। যেমনঃ জেলা তথ্য অফিস ভবন নির্মাণ কাজ করছেন আওয়ামী লীগ নেতা ও ঠিকাদার মাকুল ও তার ছোট ভাই রাকু। এই কাজে ১২/১৩ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে। হাসপাতালের (৭মতলার) কাজ করছেন সাবেক ছাত্র লীগ নেতা শেখ রেজাউল ইসলাম। এই কাজের মুল্য ৫ কোটি টাকা।
শালিখা ও মহম্মদপুরে মডেল মসজিদ নির্মাণ কাজ করছেন আওয়ামী লীগ নেতা রানা। এই কাজের মুল্য ১৩ কোটি টাকা। গণপূর্ত অফিসের বাউন্ডারি ওয়ালের কাজ করছেন যুব লীগ নেতা কিশোর। মুল্য ৫ লাখ টাকা। এ ছাড়া টেন্ডার ছাড়াই মাগুরা জজ কোর্টের ভেতরে অনেক কাজ করে ভুয়া ভাউচারে মোটা অংকের টাকা ভাগাভাগি করেছেন। জেলা প্রশাসকের বাস ভবনের ভেতরের উন্নয়ন কাজও করছেন আওয়ামী লীগের ঠিকাদার। গত ১৬ বছরে কোন বিএনপি দলীয় ঠিকাদার একটি কাজও পায়নি এই দপ্তর থেকে।

টেন্ডার সিডিউল বিক্রির আগেই কাজ শেষ:

মাগুরা গণপূর্ত বিভাগ টেন্ডারের (দরপত্র) শিডিউল বিক্রির আগেই প্রায় কোটি টাকার কাজ পছন্দের ঠিকাদারের কাছে বণ্টন করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুধু তাই নয়, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান এক বছর আগেই এ কাজ শেষ করেছেন। এপিপির কাজ এলটিএম বাদে দরপত্র আহ্বান করা নিষেধ থাকলেও ওটিএম এর মাধ্যমে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়,২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের ইজিপি (রাজস্ব)আওতায় ১০টি প্রকল্পে মাগুরা গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ নাহিদ পারভেজের স্বাক্ষরে ১০-ফেব্রুয়ারী(ওটিএম) দরপত্র আহ্বান করা হয়।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দরপত্র ১০টির মধ্যে ৪টি ওটিএম,৬টি এলটিএম দরপত্র আহ্বান করা হয়।বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী,২৪-ফেব্রুয়ারী দুপুর ১২:০০ ঘটিকায় টেন্ডার খোলা হয়েছে। প্রত্যেক প্রকল্পের অনুকূলে যে ঠিকাদার চুক্তিমূল্য কম দেবেন তিনি ওই কাজের ঠিকাদার নিয়োগ পাবেন। তবে সর্বমোট কতটি টেন্ডার জমা পড়েছে এ বিষয়ে কোন তথ্য দিতে রাজি নন মোহাম্মদ নাহিদ পারভেজ, নির্বাহী প্রকৌশলী মাগুরা গণপূর্ত বিভাগ, মাগুরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, টেন্ডার আইডি নম্বর-১০৭২৭১৬, কাজের সংক্ষিপ্ত বিবরণ: মাগুরা গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর বাসভবনের আরসিসি রাস্তা নির্মাণ এবং হাঁটার পথ সংস্কার।প্রাক্কলিত মূল্য টাকা-৮.০০ থেকে ৯.০০ লক্ষ। টেন্ডার আইডি নম্বর-১০৭২৭১৫,মাগুরা ডিসি অফিসের বাগানের আনুষঙ্গিক মেরামত ,অফিসের চারপাশে ধাতব হ্যালাইড স্থাপন।প্রধান ফটকে পি-৬ মনিটরের মেরামত।যার প্রাক্কলিত মূল্য টাকা-৪.০০ থেকে ৫.০০ লক্ষ। টেন্ডার আইডি নম্বর-১০৭২৭১৩,মাগুরা সার্কিট হাউসে চারটি সাধারণ কক্ষের সংস্কার ও আধুনিকীকরণ শৌচাগারের টাইলস প্রতিস্থাপন,দরজা প্রতিস্থাপন,যার প্রাক্কলিত মূল্য -৯.০০ থেকে ১৯.০০ লক্ষ টাকা।টেন্ডার আইডি নম্বর-১০৭২৭১১,নির্বাহী প্রকৌশলী গণপূর্ত মাগুরার বাসভবনে নিরাপত্তার উদ্দেশ্যে সীমানা প্রাচীরের উপরে সম্প্রসারণ।প্রাক্কলিত মূল্য -১২.০০ থেকে ১৩.০০ লক্ষ টাকা।ওই নোটিশের কাজসহ নাম না জানা আরো অনেক কাজ এক বছর আগেই শেষ হয়েছে।
মাগুরা গণপূর্ত বিভাগের ঠিকাদার ফরিদ খান বলেন, আমি এখানকার প্রথম শ্রেণির ঠিকাদার অথচ টেন্ডার ক্রয় করে কোন কাজ পাইনা। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার যোগসাজশে কাজ ভাগবাটোয়ারা করে নেয় তাঁরা । নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ঠিকাদার বলেন, বিভিন্ন মাধ্যম থেকে তারা জানতে পারেন গণপূর্ত বিভাগের এমন টেন্ডার স্বৈরাচার শাসনামলে অনেক বার হয়েছে।অথচ ভবনটির নোটিশ বোর্ডে এ বিজ্ঞপ্তি টাঙানো হয়নি। শিডিউল কিনতে গিয়ে জানতে পারি কাজগুলো আগে থেকেই কর্মকর্তার সুবিধামতো ঠিকাদারদের বরাদ্দ দিয়েছে। এটা এক প্রকার অনিয়ম। এতে কাজের গুণগত মান খারাপ হবে।
এ বিষয় মাগুরা গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ নাহিদ পারভেজের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে দুই থেকে তিন মাস সময় লাগে। এতে নাগরিকদের দীর্ঘসময় ভোগান্তিতে পড়তে হয়। এ কারণে নাগরিকের ভোগান্তির কথা মাথায় রেখে টেন্ডারের আগেই কাজ শুরু করেছেন।

আরো জানাগেছে, নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ নাহিদ পারভেজ বিএনপি দলীয় ঠিকাদার ও স্থানীয় সাংবাদিকদের সহ্যই করতে পারেন না। তিনি সব সময় উগ্র মেজাজে থাকেন। সাংবাদিকদের তথ্য দিতেও তালবাহানা করেন। তিনি ভুয়া ভাউচারে গোপনে লক্ষ লক্ষ টাকা তুলে নিয়েছেন এমন কথাও শোনা যাচ্ছে। ফ্যাসিষ্ট আওয়ামী লীগের দোসর এই নির্বাহী প্রকৌশলী নড়াইলে থাকা কালেও সরকারি অর্থ হরিলুট করেছেন মর্মে অভিযোগ আছে। তিনি বর্তমানে আওয়ামী লীগের ঠিকাদারদেরকে ছায়া সাথী করে দেদারছে সরকারি অর্থ হরিলুট করে যাচ্ছেন।
এ সব বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন,আপনি অফিসে এসে সরাসরি কথা বলুন।
মাগুরাবাসী অতিসত্বর ফ্যাসিবাদের দোসর এই নির্বাহী প্রকৌশলীকে মাগুরা থেকে প্রত্যাহারের দাবী তুলেছেন। অন্যথায় তারা রাজপথে আন্দোলন করতে বাধ্য হবেন বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন