ঢাকা ০২:৫৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পরিবেশ উপদেষ্টার সাথে নরওয়ের স্টেট সেক্রেটারির বৈঠক

আব্দুল্লাহ আল শাফী-
নরওয়ের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন মন্ত্রীর স্টেট সেক্রেটারি স্টাইন রেনাটে হাহেইমের নেতৃত্বে একটি নরওয়েজিয়ান প্রতিনিধিদল আজ বাংলাদেশ সচিবালয়ের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের সাথে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে মিলিত হয়। এতে নরওয়ের দূতাবাসের সিনিয়র উপদেষ্টা গানহিল্ড এরিকসেন, ক্রিস্টিন লুন্ডেন ও রাষ্ট্রদূত আরাল্ড গুলব্রাডসেন উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে জলবায়ু সংকট মোকাবিলা, নবায়নযোগ্য শক্তি, বন সংরক্ষণ ও টেকসই উন্নয়নসহ দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার বিভিন্ন দিক নিয়ে গভীর আলোচনা হয়। বাংলাদেশের উচ্চাভিলাষী নবায়নযোগ্য শক্তি নীতির প্রশংসা করে নরওয়েজিয়ান দল। রিজওয়ানা হাসান জানান, জলবায়ু তহবিলের সুষম বণ্টন, লবণাক্ততা ও বন্যার ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সুপেয় পানি ও অভিযোজন প্রকল্পে মন্ত্রণালয়ের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।

বন ও নদী সংরক্ষণ বিষয়ে রিজওয়ানা হাসান বলেন, বাংলাদেশের নদী ও বনাঞ্চল রক্ষায় আমরা বদ্ধপরিকর। জলবায়ু তহবিল থেকে প্রাপ্ত অর্থের একটি বড় অংশ এখানেই ব্যয় করা হচ্ছে। আমাদের লক্ষ্য, ভূমি পুনরুদ্ধার ও বনায়নের মাধ্যমে প্রকৃতির ভারসাম্য ফিরিয়ে আনা। এছাড়া কৃষকদের জন্য ক্ষুদ্র কোল্ড স্টোরেজ নির্মাণের প্রকল্পের অগ্রগতির বিষয়টি তুলে ধরা হয়।

জাহাজ ভাঙ্গা শিল্পের পরিবেশগত ও মানবাধিকার সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন রিজওয়ানা হাসান। তিনি উল্লেখ করেন, এই শিল্পে শ্রমিকদের নিরাপত্তা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও পরিবেশ দূষণ এখনও উদ্বেগজনক। আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ সংস্কার ছাড়া এটিকে ‘সবুজ’ হিসেবে প্রচার করা যায় না। নরওয়ের প্রতিনিধিরা এ বিষয়ে যৌথ গবেষণা ও নীতিগত সহায়তার আগ্রহ প্রকাশ করেন।

নরওয়ের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য শক্তি ও পরিবেশবান্ধব প্রকল্পে বিনিয়োগের গুরুত্ব তুলে ধরা হয়। রিজওয়ানা হাসান রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও দুর্নীতি কমানোর মাধ্যমে বিনিয়োগের পরিবেশ উন্নয়নের ওপর জোর দেন।

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশের অগ্রাধিকার হলো দুর্বল জনগোষ্ঠীর সুরক্ষা। আমরা নদী ও বন রক্ষায় কাজ করছি, কিন্তু জাহাজ ভাঙ্গা শিল্পের মতো ক্ষেত্রে পরিবেশ ও মানবাধিকারের প্রশ্নে আপস করব না।

স্টাইন রেনাটে হাহেইম বলেন, নরওয়ে বাংলাদেশের জলবায়ু অভিযোজন ও নবায়নযোগ্য শক্তি খাতের অগ্রগতিতে গভীরভাবে সমর্থন জানায়। আমরা টেকসই উন্নয়নে যৌথভাবে কাজ করতে আগ্রহী।

উভয় পক্ষ জলবায়ু সংকট মোকাবিলা, বন সংরক্ষণ ও সবুজ শিল্পের প্রসারে সহযোগিতা বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

পরিবেশ উপদেষ্টার সাথে নরওয়ের স্টেট সেক্রেটারির বৈঠক

আপডেট টাইম : ০২:২১:০২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫

আব্দুল্লাহ আল শাফী-
নরওয়ের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন মন্ত্রীর স্টেট সেক্রেটারি স্টাইন রেনাটে হাহেইমের নেতৃত্বে একটি নরওয়েজিয়ান প্রতিনিধিদল আজ বাংলাদেশ সচিবালয়ের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের সাথে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে মিলিত হয়। এতে নরওয়ের দূতাবাসের সিনিয়র উপদেষ্টা গানহিল্ড এরিকসেন, ক্রিস্টিন লুন্ডেন ও রাষ্ট্রদূত আরাল্ড গুলব্রাডসেন উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে জলবায়ু সংকট মোকাবিলা, নবায়নযোগ্য শক্তি, বন সংরক্ষণ ও টেকসই উন্নয়নসহ দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার বিভিন্ন দিক নিয়ে গভীর আলোচনা হয়। বাংলাদেশের উচ্চাভিলাষী নবায়নযোগ্য শক্তি নীতির প্রশংসা করে নরওয়েজিয়ান দল। রিজওয়ানা হাসান জানান, জলবায়ু তহবিলের সুষম বণ্টন, লবণাক্ততা ও বন্যার ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সুপেয় পানি ও অভিযোজন প্রকল্পে মন্ত্রণালয়ের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।

বন ও নদী সংরক্ষণ বিষয়ে রিজওয়ানা হাসান বলেন, বাংলাদেশের নদী ও বনাঞ্চল রক্ষায় আমরা বদ্ধপরিকর। জলবায়ু তহবিল থেকে প্রাপ্ত অর্থের একটি বড় অংশ এখানেই ব্যয় করা হচ্ছে। আমাদের লক্ষ্য, ভূমি পুনরুদ্ধার ও বনায়নের মাধ্যমে প্রকৃতির ভারসাম্য ফিরিয়ে আনা। এছাড়া কৃষকদের জন্য ক্ষুদ্র কোল্ড স্টোরেজ নির্মাণের প্রকল্পের অগ্রগতির বিষয়টি তুলে ধরা হয়।

জাহাজ ভাঙ্গা শিল্পের পরিবেশগত ও মানবাধিকার সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন রিজওয়ানা হাসান। তিনি উল্লেখ করেন, এই শিল্পে শ্রমিকদের নিরাপত্তা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও পরিবেশ দূষণ এখনও উদ্বেগজনক। আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ সংস্কার ছাড়া এটিকে ‘সবুজ’ হিসেবে প্রচার করা যায় না। নরওয়ের প্রতিনিধিরা এ বিষয়ে যৌথ গবেষণা ও নীতিগত সহায়তার আগ্রহ প্রকাশ করেন।

নরওয়ের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য শক্তি ও পরিবেশবান্ধব প্রকল্পে বিনিয়োগের গুরুত্ব তুলে ধরা হয়। রিজওয়ানা হাসান রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও দুর্নীতি কমানোর মাধ্যমে বিনিয়োগের পরিবেশ উন্নয়নের ওপর জোর দেন।

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশের অগ্রাধিকার হলো দুর্বল জনগোষ্ঠীর সুরক্ষা। আমরা নদী ও বন রক্ষায় কাজ করছি, কিন্তু জাহাজ ভাঙ্গা শিল্পের মতো ক্ষেত্রে পরিবেশ ও মানবাধিকারের প্রশ্নে আপস করব না।

স্টাইন রেনাটে হাহেইম বলেন, নরওয়ে বাংলাদেশের জলবায়ু অভিযোজন ও নবায়নযোগ্য শক্তি খাতের অগ্রগতিতে গভীরভাবে সমর্থন জানায়। আমরা টেকসই উন্নয়নে যৌথভাবে কাজ করতে আগ্রহী।

উভয় পক্ষ জলবায়ু সংকট মোকাবিলা, বন সংরক্ষণ ও সবুজ শিল্পের প্রসারে সহযোগিতা বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।