মোঃ বাবুল হোসেন, পঞ্চগড়-
পঞ্চগড়ের আইন অঙ্গনের গর্বিত মুখ অ্যাডভোকেট মাহমুদুর রহমান দোলন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), ঢাকা-এর পাবলিক প্রসিকিউটর (পি.পি) হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ এই দায়িত্ব পালনের মধ্য দিয়ে তিনি শুধু নিজেকে নয়, গোটা পঞ্চগড় জেলাকেই এনে দিয়েছেন গৌরবের আলোকচ্ছটা।
সম্প্রতি আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই আইনজীবী মহল, নাগরিক সমাজ ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক অঙ্গনের মানুষজনের মাঝে আনন্দ ও অভিনন্দনের জোয়ার বইছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়েছে গর্বের আবেগ, শুভেচ্ছা বার্তায় ভরে গেছে টাইমলাইন।
দুদকের মতো সংবেদনশীল প্রতিষ্ঠানে পাবলিক প্রসিকিউটরের দায়িত্ব পাওয়া যে কতটা মর্যাদার বিষয়, তা বলাই বাহুল্য। দুর্নীতির বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে পরিচালিত মামলাগুলোতে আইনি লড়াইয়ের নেতৃত্ব দেবেন অ্যাডভোকেট দোলন। দীর্ঘদিন আইন পেশায় সততা, নিষ্ঠা ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ করে তিনি নিজেকে প্রমাণ করেছেন একজন দক্ষ ও দূরদর্শী আইনজীবী হিসেবে।
দায়িত্ব গ্রহণের পর অনুভূতি জানতে চাইলে অ্যাডভোকেট মাহমুদুর রহমান দোলন বলেন,
“সততা, ন্যায়বিচার ও দেশসেবার ব্রত নিয়েই আমি এই দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। দেশের সবচেয়ে আলোচিত ও গুরুত্বপূর্ণ মামলাগুলোর আইনি প্রতিনিধিত্ব করতে পারা যেমন দায়িত্বের, তেমনি এটি একটি বিরল সুযোগও। দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতির আলোকে আমি পেশাদারিত্বের সর্বোচ্চ মান বজায় রেখে কাজ করে যেতে চাই।”
নিজের জন্মভূমি পঞ্চগড় প্রসঙ্গে তিনি বলেন,
“আমি পঞ্চগড়ের সন্তান, এটা আমার অহংকার। এই মাটির প্রতিই আমার ঋণ। আমার সব শেকড় এই জেলায়, এখানকার শিক্ষাই আমাকে আজকের জায়গায় পৌঁছাতে সাহায্য করেছে। দেশের মানুষের জন্য কাজ করার সুযোগ আমার জীবনের অন্যতম বড় অর্জন।”
অ্যাডভোকেট দোলনের এই সাফল্যের পেছনে যে পারিবারিক শিক্ষার ভূমিকা অনস্বীকার্য, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তাঁর বাবা মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান একজন বর্ষীয়ান শিক্ষক এবং মিরগড় মইনুদ্দিন দিমুখি উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক। ছেলের এমন অর্জনে আবেগ ধরে রাখতে পারেননি তিনি।
তিনি বলেন, “একজন শিক্ষক হিসেবে আমি চাইতাম আমার সন্তান ন্যায় ও সততার পথে চলুক। সেই স্বপ্নই আজ বাস্তবে রূপ নিয়েছে। রাষ্ট্রের এমন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে তাকে দেখতে পাওয়া আমার জীবনের সবচেয়ে গর্বের মুহূর্ত। দেশের জন্য কাজ করতে পারা—এটাই একজন বাবা হিসেবে আমার সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।”
অ্যাডভোকেট দোলনের এই নিয়োগকে কেন্দ্র করে পঞ্চগড় জেলা আইনজীবী সমিতি, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দনের ঢল নেমেছে।
সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছে, এই নিয়োগ শুধু একজন ব্যক্তির দায়িত্বভার গ্রহণ নয়, বরং এটি দেশের দুর্নীতি দমন প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠার পথে একটি সাহসী ও সময়োপযোগী পদক্ষেপ।