ঢাকা ০৬:২৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১০ অগাস্ট ২০২৫, ২৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
সিরাজদিখানে ক্রয়কৃত জমি দখলকৃত বলে অপপ্রচার সিরাজদিখানে চাঁদা না পেয়ে হামলা ও সংঘর্ষের অভিযোগ ‘তরুণ প্রজন্মের প্রথম ভোট ধানের শীষের পক্ষে হোক’ এই স্লোগানে- ঢাকা-১২ আসনে বিএনপির গণমিছিল ও লিফলেট বিতরণ শিক্ষায় বৈষম্য দূর, খেলাধুলা বাধ্যতামূলক- আমিনুল হক বনভূমি কাভারেজ ২০ শতাংশে উন্নীতের লক্ষ্যে ব্যাপক কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে-পরিবেশ উপদেষ্টা ফরিদপুর চিনিকলে কর্মকর্তাদের চাকুরিকালীন ইনহাউজ প্রশিক্ষণ শুরু সাংবাদিক তুহিন হত্যার প্রতিবাদে বরগুনায় মানববন্ধন দালালের মাধ্যমে ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা, তেঁতুলিয়ায় ১১ নারী আটক এবার গ্রাহকের টাকা আত্মসাৎ করে উধাও সোনার বাংলা সেভিংস এন্ড ক্রেডিট সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে নির্মম ভাবে হত্যার ঘটনায়, আমরা একজন সাহসী সাংবাদিককে হারানোর বেদনায় গভীর শোকাহত

এবার গ্রাহকের টাকা আত্মসাৎ করে উধাও সোনার বাংলা সেভিংস এন্ড ক্রেডিট

নাদিম আহমেদ অনিক,নিজস্ব প্রতিনিধি-
গত ২০২৪-২৫ সালে নওগাঁয় গ্রাহকের টাকা আত্মসাৎ করে পালিয়েছে সজাগ, দোয়েল, বন্ধু মিতালি, সমতা সহ বেশ কিছু সমিতি। এবার নানান প্রলোভনে প্রতিষ্ঠানের কর্মীসহ ১৯১ জন গ্রাহকের টাকা আত্মসাৎ করে নওগাঁ থেকে গা ঢাকা দিয়েছে ‘সোনার বাংলা সেভিংস এন্ড ক্রেডিট কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিঃ নামে এক সমিতি প্রতিষ্ঠান, যার রেজি- ১৭৭৩।
নওগাঁ জেলা শহরের চকদেব ডাক্টার পাড়ায় অবস্থিত এ প্রতিষ্ঠানে সঞ্চয়, ডিপিএস সহ ইআইপি হিসাবে লাখ লাখ টাকা রেখে দিশেহারা হয়ে ঘুড়ছেন এর সদস্যরা। এদিকে লাপাত্তা প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক মোঃ ফয়সাল হোসেন সরদার।

সরেজমিনে অনুসন্ধানে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক মোঃ ফয়সাল হোসেন এর বেশ কিছু পরিচয় উঠে আছে। তার ব্যবহৃত ভিসিটিং কার্ড দেখা যায়। যে কার্ড গুলোতে সংবাদকর্মী, আইপি টিভি ‘নতুন স্বপ্ন টেলিভিশন এর চেয়ারম্যান, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা আসক ফাউন্ডেশন এর অতিরিক্ত পরিচালক, ফয়সাল ডিজিটাল সিকিউরিটি সার্ভিস লিঃ এর চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ রিপোর্টার্স ক্লাব (ঢাকা) এর কেন্দ্রীয় সহ-প্রচার সম্পাদক সহ বেশ কিছু পরিচয় লক্ষ করা যায়।

গ্রাহকরা নিজেদের টাকা ফেরত পেতে ভির করতে দেখা যায় প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয়ে
বেশ কিছু সদস্যবৃন্দ একত্রিত হয়ে প্রতিবেদকের নিকট তাদের টাকা আত্মসাৎ এর সংক্ষিপ্ত বিবরণ তুলে ধরেন।

প্রতিষ্ঠানের সদস্য ভুক্তভোগী আব্দুল বারী বলেন, আমি এখানে ই-আই-পি হিসাবে গত ১৮ মে ২০২৩ সালে ৩,০০,০০০/- (তিন লক্ষ টাকা মাত্র) এবং গত ২৩ নভেম্বর ২০২৩ ইং সালে ৫০,০০০/- (পঞ্চাশ হাজার টাকা মাত্র) সব মিলিয়ে ৩,৫০,০০০/ (তিন লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা) জমা রাখি। যার হিসাব নং- ১১৩।
এ টাকা টুকুই আমার শেষ সম্বল। সমিতির মালিক পালিয়ে গেছে, প্রতিষ্ঠান ও বন্ধ। আজ আমি দিশেহারা। কি করবো বুঝতে পারছিনা। আমি বিচার চাই,, ফেরত চাই আমার টাকা।

ভুক্তভোগী জালাল উদ্দীন বলেন, আমি এখানে সাত লাখ চল্লিশ হাজার টাকা রেখেছি। ভেবেছি বৃদ্ধ বয়সে এ টাকা দিয়ে চলতে পারবো। কিন্তু এভাবে বিপদগ্রস্থ্য হবো ভাবতে পারিনী। আমি শুধু আমার টাকা ফেরত চাই। সরকারের কাছে অনুরোধ এর বিচার করুন। আমার মতো অসহায় মানুষগুলোর জন্য আইনগত ব্যবস্থা নিন।

ভুক্তভোগী মোঃ ইসমাইল হোসেন ও মোছাঃ সেলিনা আক্তার এর পাশাপাশি মোঃ খোকন বলেন, আমি ১ লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা রেখে বিপাকে পরেছি। অনেক কষ্টে টাকা জমিয়ে সোনার বাংলা সেভিংস এন্ড ক্রেডিট কো-অপারেটিভ এর মালিককে বিশ্বাস করে লাভের আশায় তুলে দিয়েছি, যার যাবতীয় প্রমান আছে। আমি আমার টাকা ফেরত চাই। পুলিশ-প্রশাসনের কাছে এর বিচার চাই।

প্রষ্ঠানটির মাঠকর্মী রিনা পারভীন জানান, আমাকে স্যার বলেছিলো তিনি একটি ব্যাংকের শাখা এখানে নিয়ে আসবেন। এর প্রলোভনে তিনি তিনি নিজেই গ্রান্টার হয়ে আমাকে দিয়ে ব্র্যাক ও সেবা নামে দুটি সমিতি থেকে মোট ৪ লাখ টাকা তুলে নিয়েছেন। যার কিস্তুি দিতে হচ্ছে আমাকে। আমাদের সহ মোট ১৯১ জন গ্রাহককে বিপদে ফেলে আমার সহ সব গ্রাহকের টাকা নিয়ে স্যার পালিয়ে গেছেন। আমি এখন দিশেহারা।

এদিকে সোনার বাংলা সেভিংস এন্ড ক্রেডিট কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিঃ এর অ্যাকাউন্ট অফিসার মোছাঃ আঁখি আক্তার এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি নিজেই ভুক্তভোগী। এ প্রতিষ্ঠানের পরিচালক মোঃ ফয়সাল হোসেন সরদার এর দেখানো লোভ ও কারসাজিতে আমি নিজেই ২৫ লাখ টাকা দিয়ে রয়েছি মহাবিপদে। স্যারের সাথে কোন যোগাযোগ নেই। তিনি গত ১৮ জুলাই রাত ২ টার পরে শেষ ফোন দিয়ে বললেন আমি ৬ মাসের জন্য দেশের বাহিরে যাচ্ছি। এর পর থেকে তার সাথে আর কোন যোগাযোগ নেই।
সদস্যরা আমার কাছে আসছে তাদের টাকা ফেরত নিতে কিন্তু আমার কাছে তাদের নানান প্রশ্নের উত্তরের কোন ভাষা নেই।

প্রতিবেদকের প্রশ্ন পর্বে তিনি আরও জানান, সব মিলিয়ে হয়তে ৬০,০০,০০০/- (ষাট লাখ টাকা মাত্র) এর মতো আত্মসাৎ করে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক মোঃ ফয়সাল হোসেন সরদার গা ঢাকা দিয়েছেন।

নওগাঁ জেলা সমবায় কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ্-হিল- আবিদ বলেন, আজ (শনিবার) যেহেতু অফিস বন্ধ সেক্ষেত্রে অফিসে না গিয়ে এ বিষয়ে কিছু বলতে পারছিনা। আগামিকাল অফিসে গিয়ে কাগজপত্র দেখে আমাদের প্রদক্ষেপ এর পাশাপাশি বিস্তারিত বলতে পারবো

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

সিরাজদিখানে ক্রয়কৃত জমি দখলকৃত বলে অপপ্রচার

এবার গ্রাহকের টাকা আত্মসাৎ করে উধাও সোনার বাংলা সেভিংস এন্ড ক্রেডিট

আপডেট টাইম : ০৯:২৪:১৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৯ অগাস্ট ২০২৫

নাদিম আহমেদ অনিক,নিজস্ব প্রতিনিধি-
গত ২০২৪-২৫ সালে নওগাঁয় গ্রাহকের টাকা আত্মসাৎ করে পালিয়েছে সজাগ, দোয়েল, বন্ধু মিতালি, সমতা সহ বেশ কিছু সমিতি। এবার নানান প্রলোভনে প্রতিষ্ঠানের কর্মীসহ ১৯১ জন গ্রাহকের টাকা আত্মসাৎ করে নওগাঁ থেকে গা ঢাকা দিয়েছে ‘সোনার বাংলা সেভিংস এন্ড ক্রেডিট কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিঃ নামে এক সমিতি প্রতিষ্ঠান, যার রেজি- ১৭৭৩।
নওগাঁ জেলা শহরের চকদেব ডাক্টার পাড়ায় অবস্থিত এ প্রতিষ্ঠানে সঞ্চয়, ডিপিএস সহ ইআইপি হিসাবে লাখ লাখ টাকা রেখে দিশেহারা হয়ে ঘুড়ছেন এর সদস্যরা। এদিকে লাপাত্তা প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক মোঃ ফয়সাল হোসেন সরদার।

সরেজমিনে অনুসন্ধানে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক মোঃ ফয়সাল হোসেন এর বেশ কিছু পরিচয় উঠে আছে। তার ব্যবহৃত ভিসিটিং কার্ড দেখা যায়। যে কার্ড গুলোতে সংবাদকর্মী, আইপি টিভি ‘নতুন স্বপ্ন টেলিভিশন এর চেয়ারম্যান, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা আসক ফাউন্ডেশন এর অতিরিক্ত পরিচালক, ফয়সাল ডিজিটাল সিকিউরিটি সার্ভিস লিঃ এর চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ রিপোর্টার্স ক্লাব (ঢাকা) এর কেন্দ্রীয় সহ-প্রচার সম্পাদক সহ বেশ কিছু পরিচয় লক্ষ করা যায়।

গ্রাহকরা নিজেদের টাকা ফেরত পেতে ভির করতে দেখা যায় প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয়ে
বেশ কিছু সদস্যবৃন্দ একত্রিত হয়ে প্রতিবেদকের নিকট তাদের টাকা আত্মসাৎ এর সংক্ষিপ্ত বিবরণ তুলে ধরেন।

প্রতিষ্ঠানের সদস্য ভুক্তভোগী আব্দুল বারী বলেন, আমি এখানে ই-আই-পি হিসাবে গত ১৮ মে ২০২৩ সালে ৩,০০,০০০/- (তিন লক্ষ টাকা মাত্র) এবং গত ২৩ নভেম্বর ২০২৩ ইং সালে ৫০,০০০/- (পঞ্চাশ হাজার টাকা মাত্র) সব মিলিয়ে ৩,৫০,০০০/ (তিন লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা) জমা রাখি। যার হিসাব নং- ১১৩।
এ টাকা টুকুই আমার শেষ সম্বল। সমিতির মালিক পালিয়ে গেছে, প্রতিষ্ঠান ও বন্ধ। আজ আমি দিশেহারা। কি করবো বুঝতে পারছিনা। আমি বিচার চাই,, ফেরত চাই আমার টাকা।

ভুক্তভোগী জালাল উদ্দীন বলেন, আমি এখানে সাত লাখ চল্লিশ হাজার টাকা রেখেছি। ভেবেছি বৃদ্ধ বয়সে এ টাকা দিয়ে চলতে পারবো। কিন্তু এভাবে বিপদগ্রস্থ্য হবো ভাবতে পারিনী। আমি শুধু আমার টাকা ফেরত চাই। সরকারের কাছে অনুরোধ এর বিচার করুন। আমার মতো অসহায় মানুষগুলোর জন্য আইনগত ব্যবস্থা নিন।

ভুক্তভোগী মোঃ ইসমাইল হোসেন ও মোছাঃ সেলিনা আক্তার এর পাশাপাশি মোঃ খোকন বলেন, আমি ১ লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা রেখে বিপাকে পরেছি। অনেক কষ্টে টাকা জমিয়ে সোনার বাংলা সেভিংস এন্ড ক্রেডিট কো-অপারেটিভ এর মালিককে বিশ্বাস করে লাভের আশায় তুলে দিয়েছি, যার যাবতীয় প্রমান আছে। আমি আমার টাকা ফেরত চাই। পুলিশ-প্রশাসনের কাছে এর বিচার চাই।

প্রষ্ঠানটির মাঠকর্মী রিনা পারভীন জানান, আমাকে স্যার বলেছিলো তিনি একটি ব্যাংকের শাখা এখানে নিয়ে আসবেন। এর প্রলোভনে তিনি তিনি নিজেই গ্রান্টার হয়ে আমাকে দিয়ে ব্র্যাক ও সেবা নামে দুটি সমিতি থেকে মোট ৪ লাখ টাকা তুলে নিয়েছেন। যার কিস্তুি দিতে হচ্ছে আমাকে। আমাদের সহ মোট ১৯১ জন গ্রাহককে বিপদে ফেলে আমার সহ সব গ্রাহকের টাকা নিয়ে স্যার পালিয়ে গেছেন। আমি এখন দিশেহারা।

এদিকে সোনার বাংলা সেভিংস এন্ড ক্রেডিট কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিঃ এর অ্যাকাউন্ট অফিসার মোছাঃ আঁখি আক্তার এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি নিজেই ভুক্তভোগী। এ প্রতিষ্ঠানের পরিচালক মোঃ ফয়সাল হোসেন সরদার এর দেখানো লোভ ও কারসাজিতে আমি নিজেই ২৫ লাখ টাকা দিয়ে রয়েছি মহাবিপদে। স্যারের সাথে কোন যোগাযোগ নেই। তিনি গত ১৮ জুলাই রাত ২ টার পরে শেষ ফোন দিয়ে বললেন আমি ৬ মাসের জন্য দেশের বাহিরে যাচ্ছি। এর পর থেকে তার সাথে আর কোন যোগাযোগ নেই।
সদস্যরা আমার কাছে আসছে তাদের টাকা ফেরত নিতে কিন্তু আমার কাছে তাদের নানান প্রশ্নের উত্তরের কোন ভাষা নেই।

প্রতিবেদকের প্রশ্ন পর্বে তিনি আরও জানান, সব মিলিয়ে হয়তে ৬০,০০,০০০/- (ষাট লাখ টাকা মাত্র) এর মতো আত্মসাৎ করে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক মোঃ ফয়সাল হোসেন সরদার গা ঢাকা দিয়েছেন।

নওগাঁ জেলা সমবায় কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ্-হিল- আবিদ বলেন, আজ (শনিবার) যেহেতু অফিস বন্ধ সেক্ষেত্রে অফিসে না গিয়ে এ বিষয়ে কিছু বলতে পারছিনা। আগামিকাল অফিসে গিয়ে কাগজপত্র দেখে আমাদের প্রদক্ষেপ এর পাশাপাশি বিস্তারিত বলতে পারবো