ঢাকা ১১:১৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৬ অগাস্ট ২০২৫, ১ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
দেশব্যাপী প্রতিভা খোঁজে ‘নতুন কুঁড়ি’ ফিরিয়ে আনবে বিএনপি : আমিনুল হক মাগুরার শ্রীপুরে বালু ফেলে জমি দখলের অভিযোগ ! মহম্মদপুর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অসহায়ত্ব প্রকাশ মাগুরায় মাই টিভির সাংবাদিকের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন মির্জাগঞ্জে বেগম খালেদা জিয়ার জন্মদিনে মিলাদ ও দোয়া অনুষ্ঠিত মাগুরা বিএডিসি গোডাউন থেকে ডিলারের নামে অবৈধ সার বিক্রি স্থানীয়দের হাতে ধরা, তদন্তে দুর্নীতি-সিন্ডিকেট টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠায় সমবেদনা, কূটনীতি ও সংহতির সমন্বয়ের আহ্বান কফিল উদ্দিন আহমেদের আল বটর বাহিনী ধর্মকে বিক্রি করছে, বিএনপি বিশৃঙ্খলাকে প্রশ্রয় দেয় না: আমিনুল হক মাদ্রাসা শিক্ষা বৃত্তি বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ সুপারের বিরুদ্ধে শরীয়তপুরে অবৈধ পলিথিন বিরোধী অভিযান, ট্রাকভর্তি পলিথিন জব্দ
৫০ শয্যায় উন্নিত হয়ে ১১ বছরেও চিকিৎসক- সরঞ্জামাদী পায়নি কর্তৃপক্ষ :

মহম্মদপুর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অসহায়ত্ব প্রকাশ

  • মাহামুদুন নবী :
  • আপডেট টাইম : ১১:২৭:২৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ অগাস্ট ২০২৫
  • ৭৭৭ বার পড়া হয়েছে

নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত মাগুরা মহম্মদপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স । চিকিৎসক ও কর্মকর্তা কর্মচারীর সংখ্যা কম এছাড়া ধারন ক্ষমতার চেয়ে রোগীর সংখ্যা ১০ গুনের ও বেশি হওয়ায় চিকিৎসা সেবা দিতে হিমসিম খেতে হচ্ছে উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের চিকিৎসকদের। চাহিদা অনুসারে চিকিৎসা সেবা দিতে না পেরে অসহায়ত্ব প্রকাশ করেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা।
হাসপাতালটি ৩১ সয্যা থেকে ৫০ সয্যায় উন্নিত করা হলেও চিকিৎসক ও সরঞ্জাম না থাকায় চরম ভোগান্তীতে পড়তে হচ্ছে দুর-দুরান্ত থেকে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের। যার ফলে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হতে হচ্ছে রোগীদের। মহম্মদপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স ৫ কোটি টাকা ব্যায়ে ৫১ শয্যায় উন্নিত করা হলেও নতুন চিকিৎসক , সরঞ্জামাদী অদ্যবধি না আসায় জনমনে প্রশ্ন দেখা দিছে কবে চালু হবে এ হাসপাতালটি এবং কবেইবা চিকিৎসসেবা পাবেন মহম্মদপুরবাসী।
স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের চরম গাফিলতির কারনে আজও ঠিকমত চালু হয়নি ৫০ শয্যা হাসপাতালের কার্যক্রম। স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নিত হবার পর যেখানে বাড়তি ১৯ শয্যার জন্য থাকার কথা ১৬ জন চিকিৎসক, ১২ জন অফিস স্টাফ, ৪ জন পরিচ্ছন্নকর্মী, ২০ টা বেড , ৫০ জন রোগীর খাদ্য সরবরাহ থাকার দরকার সেখানে চিৎিসক একজনও নেই, অফিস স্টাফ নেই, পরিচ্ছন্নকর্মী নেই, বেড নেই ও খাদ্য সরবরাহ নেই। এমন প্রতিকুল পরিবেশের কারনে চিকিৎসা সেবা চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে প্রতিনিয়ত । সোমবার সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, ৩১ জন ভর্তি রোগীর ধারন ক্ষমতা থাকলেও বাস্তবে ভর্তি রোগী রয়েছে ১৩৫ জন। খাবার সংকট, বেড সংকট ও চিকিৎসক সংকটের কারনে প্রায়ই রোগীদের অন্য হাসপাতালে পাঠিয়ে দিচ্ছেন চিকিৎসকরা । উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে ৩১ জন রোগীর সেবার জন্য যেখানে ১০ জন চিকিৎসক দরকার সেখানে চিকিৎসক রয়েছেন মাত্র ৬ জন বাকি ৩ জন ডেপুটেশন ও একজন রয়েছেন মাতৃত্বকালীন ছুটিতে । ৩ জন কনসালটেন্ট এর পরিবর্তে রয়েছেন মাত্র ১ জন, ৬ জন পরিচ্ছন্নকর্মীর মধ্যে রয়েছে মাত্র ১ জন পরিচ্ছন্নকর্মী যেটা চাহিদার তুলনায় একেবারেই অপ্রতুল। সার্জারী এবং এ্যানেসথেসিয়া কনসালটেন্ট না থাকায় স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে কোন অপারেশনই হয়না। গর্ভকালীন প্রসূতি মায়েদের সন্তান প্রজননে কোন সমস্যা হলে কোন ভাবেই সিজারের কোন ব্যবস্থায় নেই । যার ফলে রোগীদের পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে অন্য কোন হাসপাতালে বা ক্লিনিকে এর জন্য গরীব মায়েরা প্রসূতি সেবা থেকে বঞ্চিত হতে হচ্ছে প্রতিনিয়তই।
চিকিৎসা সেবা নিতে আসা ফয়সাল হায়দার, গফুর শেখ,আছিয়া, আম্বিয়া বলেন, হাসপাতালে বেড নেই মেঝেতেই চিকিৎসা নিতে হচ্ছে আমাদের।
মহম্মদপুর উপজেলা সদরের বাসিন্দা ও সেবা নিতে আসা সৈয়দা মুনিয়া রহমান বলেন, প্রসূতি সেবা নিতে আসা রোগীদের সামান্য সমস্যা হলেই পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে অন্য হাসপাতালে । হাসপাতালে গর্ভবতী মায়েদের ক্ষেত্রে জরুরী কোন সিজারের ব্যবস্থা নেই বলে রোগীদের পাঠানো হচ্ছে অন্য হাসপাতাল বা ক্লিনিকে যেটা গরীব মায়েদের জন্য চরম কষ্টের ও ভোগান্তীর । সেবার মান ধরে রাখতে আরও চিকিৎসক দরকার বলে তিনি বলেন।
উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের প্রায় তিন লক্ষাধীক মানুষের চিকিৎসা ব্যবস্থা ও স্বাস্থ্য সেবার মান উন্নয়নের লক্ষে ৩১ শয্যার এ হাসপাতালটি ৫০ শয্যায় রুপান্তরিত করা হলেও বাস্তবে কোন উপকারেই আসছেনা রোগীদের।
মহম্মদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কাজী আবু আহসান খবর বাংলাদেশকে বলেন, চিকিৎসক নেই, বেড নেই, পরিচ্ছন্নকর্মী নেই , খাবার নেই এত রোগীদের চিকিৎসা দিব কিভাবে ? কোনমতে জোড়াতালী দিয়েই চালাতে হচ্ছে হাসপাতালটি। আমরা রোগীর চাহিদা অনুসারে চিকিৎসা সেবা দিতে পারছিনা। চিকিৎসক সংকট নিরসন ও আধুনিক যন্ত্রপাতি সংযোজিত হলে তবেই সাধারন মানুষের উন্নত স্বাস্থ্য সেবা দিতে সক্ষম হব ।

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

দেশব্যাপী প্রতিভা খোঁজে ‘নতুন কুঁড়ি’ ফিরিয়ে আনবে বিএনপি : আমিনুল হক

৫০ শয্যায় উন্নিত হয়ে ১১ বছরেও চিকিৎসক- সরঞ্জামাদী পায়নি কর্তৃপক্ষ :

মহম্মদপুর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অসহায়ত্ব প্রকাশ

আপডেট টাইম : ১১:২৭:২৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ অগাস্ট ২০২৫

নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত মাগুরা মহম্মদপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স । চিকিৎসক ও কর্মকর্তা কর্মচারীর সংখ্যা কম এছাড়া ধারন ক্ষমতার চেয়ে রোগীর সংখ্যা ১০ গুনের ও বেশি হওয়ায় চিকিৎসা সেবা দিতে হিমসিম খেতে হচ্ছে উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের চিকিৎসকদের। চাহিদা অনুসারে চিকিৎসা সেবা দিতে না পেরে অসহায়ত্ব প্রকাশ করেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা।
হাসপাতালটি ৩১ সয্যা থেকে ৫০ সয্যায় উন্নিত করা হলেও চিকিৎসক ও সরঞ্জাম না থাকায় চরম ভোগান্তীতে পড়তে হচ্ছে দুর-দুরান্ত থেকে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের। যার ফলে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হতে হচ্ছে রোগীদের। মহম্মদপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স ৫ কোটি টাকা ব্যায়ে ৫১ শয্যায় উন্নিত করা হলেও নতুন চিকিৎসক , সরঞ্জামাদী অদ্যবধি না আসায় জনমনে প্রশ্ন দেখা দিছে কবে চালু হবে এ হাসপাতালটি এবং কবেইবা চিকিৎসসেবা পাবেন মহম্মদপুরবাসী।
স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের চরম গাফিলতির কারনে আজও ঠিকমত চালু হয়নি ৫০ শয্যা হাসপাতালের কার্যক্রম। স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নিত হবার পর যেখানে বাড়তি ১৯ শয্যার জন্য থাকার কথা ১৬ জন চিকিৎসক, ১২ জন অফিস স্টাফ, ৪ জন পরিচ্ছন্নকর্মী, ২০ টা বেড , ৫০ জন রোগীর খাদ্য সরবরাহ থাকার দরকার সেখানে চিৎিসক একজনও নেই, অফিস স্টাফ নেই, পরিচ্ছন্নকর্মী নেই, বেড নেই ও খাদ্য সরবরাহ নেই। এমন প্রতিকুল পরিবেশের কারনে চিকিৎসা সেবা চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে প্রতিনিয়ত । সোমবার সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, ৩১ জন ভর্তি রোগীর ধারন ক্ষমতা থাকলেও বাস্তবে ভর্তি রোগী রয়েছে ১৩৫ জন। খাবার সংকট, বেড সংকট ও চিকিৎসক সংকটের কারনে প্রায়ই রোগীদের অন্য হাসপাতালে পাঠিয়ে দিচ্ছেন চিকিৎসকরা । উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে ৩১ জন রোগীর সেবার জন্য যেখানে ১০ জন চিকিৎসক দরকার সেখানে চিকিৎসক রয়েছেন মাত্র ৬ জন বাকি ৩ জন ডেপুটেশন ও একজন রয়েছেন মাতৃত্বকালীন ছুটিতে । ৩ জন কনসালটেন্ট এর পরিবর্তে রয়েছেন মাত্র ১ জন, ৬ জন পরিচ্ছন্নকর্মীর মধ্যে রয়েছে মাত্র ১ জন পরিচ্ছন্নকর্মী যেটা চাহিদার তুলনায় একেবারেই অপ্রতুল। সার্জারী এবং এ্যানেসথেসিয়া কনসালটেন্ট না থাকায় স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে কোন অপারেশনই হয়না। গর্ভকালীন প্রসূতি মায়েদের সন্তান প্রজননে কোন সমস্যা হলে কোন ভাবেই সিজারের কোন ব্যবস্থায় নেই । যার ফলে রোগীদের পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে অন্য কোন হাসপাতালে বা ক্লিনিকে এর জন্য গরীব মায়েরা প্রসূতি সেবা থেকে বঞ্চিত হতে হচ্ছে প্রতিনিয়তই।
চিকিৎসা সেবা নিতে আসা ফয়সাল হায়দার, গফুর শেখ,আছিয়া, আম্বিয়া বলেন, হাসপাতালে বেড নেই মেঝেতেই চিকিৎসা নিতে হচ্ছে আমাদের।
মহম্মদপুর উপজেলা সদরের বাসিন্দা ও সেবা নিতে আসা সৈয়দা মুনিয়া রহমান বলেন, প্রসূতি সেবা নিতে আসা রোগীদের সামান্য সমস্যা হলেই পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে অন্য হাসপাতালে । হাসপাতালে গর্ভবতী মায়েদের ক্ষেত্রে জরুরী কোন সিজারের ব্যবস্থা নেই বলে রোগীদের পাঠানো হচ্ছে অন্য হাসপাতাল বা ক্লিনিকে যেটা গরীব মায়েদের জন্য চরম কষ্টের ও ভোগান্তীর । সেবার মান ধরে রাখতে আরও চিকিৎসক দরকার বলে তিনি বলেন।
উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের প্রায় তিন লক্ষাধীক মানুষের চিকিৎসা ব্যবস্থা ও স্বাস্থ্য সেবার মান উন্নয়নের লক্ষে ৩১ শয্যার এ হাসপাতালটি ৫০ শয্যায় রুপান্তরিত করা হলেও বাস্তবে কোন উপকারেই আসছেনা রোগীদের।
মহম্মদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কাজী আবু আহসান খবর বাংলাদেশকে বলেন, চিকিৎসক নেই, বেড নেই, পরিচ্ছন্নকর্মী নেই , খাবার নেই এত রোগীদের চিকিৎসা দিব কিভাবে ? কোনমতে জোড়াতালী দিয়েই চালাতে হচ্ছে হাসপাতালটি। আমরা রোগীর চাহিদা অনুসারে চিকিৎসা সেবা দিতে পারছিনা। চিকিৎসক সংকট নিরসন ও আধুনিক যন্ত্রপাতি সংযোজিত হলে তবেই সাধারন মানুষের উন্নত স্বাস্থ্য সেবা দিতে সক্ষম হব ।