রূপনগর ও পল্লবী থানার সেচ্ছাসেবক দলের কমিটি ঘিরে তৃণমূলের মধ্যে উত্তেজনা তুঙ্গে। অভিযোগ উঠেছে, যারা আন্দোলনের মিছিলে রক্ত ঝরিয়েছেন, জেল–জুলুম সহ্য করেছেন, তাদের নাম আলোচনার টেবিলে নেই। অথচ মাদক ব্যবসা, দখলবাজি এবং কোটি টাকার লেনদেনে জড়িয়ে থাকা বিতর্কিত নেতারাই বড় নেতাদের গোপন বৈঠকের মূল আলোচ্য।
স্থানীয়দের অভিযোগ, গত ৫ আগস্টের পর মাত্র এক বছরের মধ্যে কয়েকজন বিতর্কিত নেতা অঢেল অর্থ ও ক্ষমতার জোরে এলাকায় আধিপত্য কায়েম করেছেন। তাদের নিয়েই কমিটির গুঞ্জন সবচেয়ে বেশি। এতে ক্ষোভে ফুঁসছে ত্যাগী কর্মীরা। বিতর্কিতদের ছায়া
রূপনগরের এক স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা তৃণমূলের ত্যাগীদের ক্ষুব্ধ করেছেন।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, তিনি পুলিশের সোর্স হয়েও আওয়ামী ঘনিষ্ঠ মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দিয়েছেন, বস্তি নিয়ন্ত্রণ করেছেন এবং ব্যক্তিগত বাহিনী গড়ে তুলেছেন। বিএনপি–যুবদল–ছাত্রদলের ত্যাগী কর্মীরা তার অত্যাচারে নীরব। তবু মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক দল তাকে বহিষ্কার করেনি।
পল্লবীতে মাদকের সঙ্গে সরাসরি জড়িত থাকার কারণে তাকেসহ তার পরিবার বহুবার জেল খেটেছেন। অথচ তিনি এখন স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা। এই দ্বিচারিতা তৃণমূলে প্রশ্নের ঝড় তুলেছে।
ত্যাগীদের দাবি
রূপনগর থানার এক ত্যাগী নেতা বলেছেন: “আমি সেচ্ছাসেবক দল করি, আমি রূপনগরের লোকাল। আমি কারো মাথায় ‘বারি’ দিয়ে চাপ প্রয়োগ করতে পারবোনা। বস্তি দখল বা পুলিশের সোর্স গিরি করে সাধারণ মানুষ ফাঁসিয়ে টাকা আয় করা আমার দ্বারা সম্ভব নয়। আমি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে ভালোবাসি, বেগম খালেদা জিয়াকে ভালোবাসি, তারেক রহমানকে ভালোবাসি, বিএনপিকে ভালোবাসি। হামলা–মামলা–নির্যাতন সহ্য করেও আওয়ামিলীগের খেতার নিচে যাবোনা। রাজপথে আন্দোলন ও সংগ্রাম করেছি। দল যদি মনে করে রাখবে, আর যদি না করে তবে রাখবে না।”
স্থানীয় নেতারা সতর্ক করেছেন:
“যদি এসব বিতর্কিতদের কমিটিতে জায়গা দেওয়া হয়, তবে ঢাকা–১৬ আসনে বিএনপির ভাবমূর্তি চূর্ণ হবে। জনগণ প্রশ্ন তুলবে—যে দলে অপরাধীরাই পদ পায়, সেই দলে আস্থা রাখবে কিভাবে?”
কমিটি ঘোষণার প্রস্তুতি:
দলীয় সূত্র বলছে, রূপনগর ও পল্লবী থানা কমিটি ২০–২২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ঘোষণা হতে পারে। তৃণমূল স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে—স্বচ্ছ নেতৃত্ব ছাড়া কমিটি জনআস্থার দুর্গ হবে না, বরং ক্ষোভ ও অবিশ্বাসে বিএনপিকে দুর্বল করবে।ত্যাগীরা স্বচ্ছ ও পরিচ্ছন্ন নেতৃত্বের পক্ষে, আর বিতর্কিতরা দৌড়ঝাঁপ চালাচ্ছেন পদে জায়গা পেতে। ফলাফল যতই আসুক, এক কথা পরিষ্কার—ত্যাগীদের মর্যাদা না দিলে কমিটি জনমতের আস্থার দুর্গ নয়, বিএনপির জন্য রাজনৈতিক ঝুঁকি হয়ে উঠবে।