টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার নারান্দিয়া গ্রামে বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী এক তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে এলাকায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দার ঝড় উঠেছে। বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) ভুক্তভোগীর বাবা বাদী হয়ে কালিহাতী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগে জানা যায়, ভুক্তভোগী উর্মি মোদক (১৮), ওই গ্রামের ঝড়ু মোদকের মেয়ে। জন্মগতভাবে বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী উর্মি ইঙ্গিতের মাধ্যমে এবং পরে কাগজে লিখে পরিবারের কাছে ঘটনার বিস্তারিত জানান। তার ভাষ্যমতে, একই গ্রামের ইসমাইল (পিতা: আব্দুল হামিদ), যিনি নারান্দিয়া পশ্চিমপাড়ার বাসিন্দা ও স্থানীয় ২নং ওয়ার্ড যুবদলের সাধারণ সম্পাদক, এ নৃশংস ঘটনার জন্য দায়ী।
ভুক্তভোগীর মা লতা রানী মোদক বলেন,ভাদ্র মাসে আমার মেয়ে বারবার পেট ব্যথার কথা ইঙ্গিতে বোঝাচ্ছিল। ডাক্তার দেখানোর পর জানা যায়, সে ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা। মা হয়ে এত বড় লজ্জা আর দুঃখ আমি বইতে পারছি না। ইসমাইলই আমার মেয়ের সর্বনাশ করেছে। আমি তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
বাবা ঝড়ু মোদক বলেন, আমার চার মেয়ে, এর মধ্যে দুইজনই বাক-শ্রবণ প্রতিবন্ধী। ছোট মেয়ে উর্মি এসএসসি পাস করেছে, তার পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন ছিল। এখন তার জীবন অন্ধকারে ডুবে গেছে। আমরা ন্যায়বিচার চাই।
ভুক্তভোগীর আত্মীয় সুমন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,
“আমার বোন প্রতিবন্ধী জেনেও এভাবে তার জীবন ধ্বংস করা হয়েছে। এটা শুধু অপরাধ নয়, মানবতার বিরুদ্ধে জঘন্য কাজ। এর বিচার চাই।
নারান্দিয়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আমজাদ হোসেন বলেন,
এটি একটি অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক ঘটনা। প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ প্রয়োজন।
জাতীয় হিন্দু মহাজোটের নেতা সাংবাদিক গৌরাঙ্গ বিশ্বাস বলেন,আমরা তীব্র নিন্দা জানাই। অপরাধীকে দ্রুত আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। প্রয়োজনে আমরা মানববন্ধন করবো।
উপজেলা পূজা উদযাপন ফ্রন্টের আহ্বায়ক প্রদীপ ব্যানার্জী নীরু ও সদস্য সচিব প্রবাল ভট্টাচার্য মানিক বলেন,এটি জঘন্য অপরাধ। দোষীকে ধর্ষক হিসেবে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক।
কালিহাতী থানার ওসি (তদন্ত) শরিফুল ইসলাম জানান,অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
অভিযুক্ত ইসমাইল মুঠোফোনে অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ওই মেয়ের বাড়ি আর আমাদের বাড়ি পাশাপাশি। এটা মেয়ের মায়ের সাজানো ষড়যন্ত্র। আগেও এরকম ঘটনা সাজানো হয়েছিল।
এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয়রা দোষীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন। বর্তমানে অভিযুক্ত পলাতক রয়েছে।