বিশেষ প্রতিনিধি :
বহু কাঙ্ক্ষিত পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী সমাবেশে যোগ দিতে আজ শনিবার ভোর থেকে লাখো মানুষের ঢল নেমেছে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার কাঁঠালবাড়ি ঘাটে। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা আগেই সমাবেশস্থলে হাজির হন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে মাওয়া পয়েন্টে উদ্বোধনী ফলক উন্মোচনের মাধ্যমে পদ্মা সেতুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। নিজস্ব অর্থায়নে তৈরি পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর দুপুর ১২টায় তিনি আওয়ামী লীগের জনসমাবেশে যোগ দেন।
এই সমাবেশ শুরু হয় ৯টা ১৫ মিনিটে। এতে স্বাগত বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক। আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ সমাবেশ পরিচালনা করেন।
পদ্মার তীরে কাঁঠালবাড়ির ঘাটের সমাবেশস্থলে উপস্থিত হতে আজ ভোর থেকে দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার অসংখ্য মানুষ সমবেত হন। তাদের পরনে ছিল ঐতিহ্যবাহী পাঞ্জাবি, শাড়ি ও টি-শার্ট। তাদের পোশাকে ছিল পদ্মা সেতু উদ্বোধনের শুভেচ্ছা বার্তা। এ ছাড়া তারা টুপি, হ্যাটসহ রং বেরঙের ফিতা পরে নিজেদের আনন্দ প্রকাশ করেন। তারা বিভিন্ন রঙের ব্যানার ফেস্টুনও বহন করেন।
শরিয়তপুরের জাজিরা উপজেলার জয়নগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য আবদুল হালিম তালুকদার বলেন, ‘আমরা আজকের সমাবেশে যোগ দিতে গত রাতেই শিবচরের জমাদ্দার স্ট্যান্ডে এসে হাজির হই। জয়নগর ইউনিয়নের প্রায় তিন হাজার নেতাকর্মী সমাবেশে যোগ দিতে আসে।’
বাগেরহাটের মোল্লারহাট উপজেলার লাভলু শেখ জানান, তারা গত রাত সাড়ে ১০টায় রওনা দেন। আজ ভোর ৬টায় সমাবেশস্থলে এসে পৌঁছান। তাদের উপজেলা থেকে প্রায় ৩০ হাজার লোক এসেছে।
ছোট-বড় নানা ধরনের নৌকা দিয়ে সমাবেশস্থল সাজানো হয়। ১০টি স্প্যান ও ১১টি পিলারের ওপর অস্থায়ীভাবে নির্মিত একটি প্রতীকী পদ্মা সেতুর সামনে মঞ্চ স্থাপন করা হয়। অস্থায়ী এই সেতু ২০০ ফুট দীর্ঘ এবং আট ফুট চওড়া। যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। সমাবেশ প্রাঙ্গণে ছয়টি ওয়াচ টাওয়ার স্থাপন এবং ১৫০টি সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়। নিরাপত্তা রক্ষায় কাজ করছে সোবাহিনী, র্যাবের কয়েকটি ইউনিট, পুলিশ ও এএসএফের সদস্যরা।
পুলিশের আইজি ড. বেনজির আহমেদ বলেন, ‘যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সভাস্থলের প্রতিটি প্রবেশ মোড়ে চেক পয়েন্ট বসিয়ে পূর্ণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণের জন্যে আধুনিক ওয়াচ টাওয়ার স্থাপন করা হয়েছে।’
সমাবেশে আসা নারী-পুরুষের সুবিধার্থে ৫০০ অস্থায়ী টয়লেট বসানো হয়েছে। এর মধ্যে ২২টি টয়লেট ভিআইপিদের জন্যে। বিশুদ্ধ খাবার পানি, ২০ শয্যার একটি এবং ১০ শয্যার দুটি মোবাইল হাসপাতাল ও মেডিকেল সেন্টারও নিশ্চিত করা হয়। এ ছাড়া অ্যাম্বুলেন্স সুবিধাও রাখা হয়।