মাহামুদুন নবী (স্টাফ রিপোর্টার):—
মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলায় মধুমতি নদীর ভাঙন একমাত্র দু:খ। নদীর ভাঙনের কারনে সর্বশান্ত করেছে উপজেলার হাজার হাজার মানুষকে। প্রতিবছরই এ নদী ভয়াবহ আকার ধারন করে। গত কয়েক বছরে তীব্র ভাঙনে নদীগর্ভে বিলিন হয়েছে শত শত মানুষের কাচা-আধাপাকা বাড়িঘর, সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং ফসলি জমি। এ বছরেও মধুমতি নদীর ভয়াবহ ভাঙন শুরু হয়ে। নদীতে বিলিন হয়ে গেছে মানুষের বাড়িঘর, গাছপালা। আবার অনেকে বসতঘর ভেঙে সরিয়ে নিতে দেখা গেছে। এছাড়া ভাঙনের অপেক্ষায় রয়েছে মহম্মদপুর থানা, গোরস্থান, মসজিদ ও শশ্মানঘাট, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
উপজেলার মানচিত্র থেকে ক্রমাগত হারিয়ে যাচ্ছে নদী পাড়ের প্রায় ১৫ গ্রাম । নদীর ভাঙনের তীব্রতা এতটায় বেশি থাকে যে নদী পাড়ের মানুষ অনেক সময় ঘরবাড়ি অপসারণের সুযোগটুকুও পায় না।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মধুমতি নদীর ভাঙনে সবকিছু নদী গর্ভে বিলীন হয়ে মানবেতরব জীবন-যাপন করছেন অনেক পরিবার । নদীতে অস্বাভাবিক ভাবে পানি বৃদ্ধির কারনে ভাঙন ভয়াবহ আকার ধারণ করায় নদী তীরবর্তী বসবাসকারী মানুষের মধ্যে বিরাজ করছে চরম আতংক এবং দিশেহারা হয়ে পড়েছে। উপজেলার ধুপুড়িয়া বেরেশনগ, মাধবপুর, রায়পুর, বাহিরচর, হরিনাডাঙ্গা, দাতিয়াদাহ, কোমরপুর, পাল্লা, হরেকৃষ্ণপুর, চরপাচুড়িয়া, রায়পাশা, গোপালনগর, কাশিপুর, ভোলানাথপুর, রুইজানি, চরঝামসহ আরো কয়েকটি গ্রামের নদী তীরবর্তী গ্রাম রয়েছে। এসব এলাকার ভাঙন কবলিত পরিবারগুলো এখন দিন কাটছে চরম আতংকে। এসব গ্রামের মসজিদ, মন্দির, ঈদগাহসহ হাজার হাজার একর ফসলি জমি, বাড়িঘর প্রতি বছরই ভাঙনের কবলে পড়ে।
সরেজমিন, উপজেলার ধুপুড়িয়া গ্রামে মধুমতির ভাঙনের কারনে ঘরবাড়ি হারানো অসহায় নারী-পুরুষের আহাজারি। এসময় কেউ কেউ ভাঙ্গনের সাথে পাল্লা দিয়ে তাদের ঘর-বাড়ি, গাছ-পালা সরিয়ে নিতে দেখা গেছে। গত কয়েকদিনে মধুমতি নদীর ভয়াবহ ভাঙনে ধুপুড়িয়া, চরপাচুড়িয়া, রুইজানি, ভোলানাপুর, কাশিপুর গ্রামের কয়েকটি পরিবার ভাঙনের কবলে পড়ে সর্বোচ্চ হারিয়েছে। তারা আশ্রয় নিয়েছে অন্যের জায়গায়।
অনেকে জানান, ভাঙনের তীব্রতা পানি বাড়বে। কেউ তাদের খোঁজ-খবর না নেওয়ায় ভাঙন কবলিত মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার সৃষ্টি হয়েছে।
ধুপুড়িয়া গ্রামের আনোয়ার, আহম্মদ মোল্যা, রহিমা, মিটুলসহ আরো অনেকে জানান, জীবনে কয়েকবার মধুমতি নদীর ভাঙনের কবে পড়েছি। কয়েকটি বাড়ি বানিয়েছি আজ আমি নিজ:স্ব হয়ে গেছি। বিটার জায়গা জমি ছাড়া আর একটুও নেই। এটুকু যদি নদীতে চলে যায় রাস্তায় বসত করা ছাড়া আর কোন পথ খোলা নেই। তিনি অভিযোগ করে বলেন থানার সামনে নদীতে বøক বসানো আছে, বাকি অংশে বøক না বসালে আমাদের বাড়িসহ থানা ভেঙে যাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। নদী ভাঙন রোধে জরুরীভাবে ভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ঠ কতৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
ধুপুড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা উপস্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি মো: সুজন শিকদার বলেন, মধুমতি নদীপাড়ের মানুষ আতস্কে মধ্যে জীবনযাপন করছে। ভাঙন রোধ করতে জরুরীভিত্তিতে জিওব্যাগ ফেলার ব্যবস্থা করতে হবে। বিষয়টি উর্ধ্বতন মহলকে অবহিত করেছি।
মহম্মদপুর উপজেলা নির্বাহী মো: মিজানুর রহমান বলেন, মধুমতি নদীর ভাঙনের খবর পেয়েছি, ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবো।