ঢাকা ০২:০৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
মুন্সীগঞ্জে কৃষকদের ন্যায্য মূল্যে বীজ আলু ও সার প্রাপ্তি নিশ্চিতকরনের লক্ষে অবহিতকরণ সভা পঞ্চগড়ে যৌথবাহিনীর অভিযানে মাদকসহ মা-ছেলে আটক ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অবসরপ্রাপ্তদের নিয়োগ করা হবে- স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা কে এই শরীফ জহির? এলডিসি দেশগুলোর জন্য ২০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বরাদ্দে ইইউ-এর সমর্থন চাইল বাংলাদেশ কক্সবাজার সফরকালে যৌথ বাহিনীর নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শনে সালাউদ্দিন চৌধুরী ডিসেম্বরে ভারতের সাথে এফওসি বৈঠক, এজেন্ডা এখনো চূড়ান্ত নয় গাজীপুরে ঝুকিপূর্ণ রেলক্রসিংয়ে ফুটওভার ব্রীজের দাবীতে মানববন্ধন গাজীপুরে ২১০ পিস ইয়াবা ও সাড়ে ১১ লাখ টাকাসহ মাদক কারবারি গ্রেপ্তার প্রকল্পের টাকা হরিলুটের অভিযোগ ইউএনও এবং পিআইও’র বিরুদ্ধে

তদন্ত চেয়ে মহাপরিচালককে চিঠি: নৌ-পরিবহন অধিদপ্তরের দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ!

বিশেষ প্রতিবেদক :

নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধিনস্থ নৌ-পরিবহন অধিদপ্তরের নৌযান ড্রাইভার ও মাষ্টার পরীক্ষার অনিয়ম,দুর্নীতি,প্রশ্নপত্র ফাঁস , প্যাকেজ পাশ, কোচিং বাণিজ্য কিছুতেই বন্ধ করা যাচ্ছে না। দালালদের পাশাপাশি অধিদপ্তরের বড় বড় কর্মকর্তারাই জড়িয়ে পড়ছেন এই অনৈতিক কর্মকান্ডে। তারা কেবলমাত্র এই পরীক্ষা খাত থেকেই প্রতিবছর শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। কথিত আছে শস্যে যতি ভুত থাকে তবে আর ভুত তাড়াবে কে? ঠিক একই অবস্থা চলছে এই অধিদপ্তরে।
অভিযোগ পাওয়াগেছে যে, নৌ-পরিবহন অধিদপ্তরের ৪/৫ জন কর্মকর্তা অনিয়ম-দুর্নীতি করে কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। তারা ঢাকাসহ দেশের নানা স্থানে গড়েছেন সম্পদের পাহাড়। একজন প্রথম শ্রেণির ড্রাইভার ও মাষ্টার প্যাকেজ চুক্তিতে পাশ করাতে তারা মাথাপিছু ১ লক্ষ টাকা আদায় করছেন । এভাবে সেকেন্ড ক্লাস এবং থার্ড ক্লাসে নিচ্ছেন ৭০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা। প্যাকেজ চুক্তিতে প্রতিটি পরীক্ষায় ৭০/৮০ জন পাশ করিয়ে তারা ৪০/৫০ লাখ টাকা উপার্জন করছেন।
এ বিষয়ে গত দশ বছর ধরে জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় সংবাদ প্রতিবেদন ছাপা হলেও সেগুলো আমলে নেয়নি নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়। ফলে সেটি এখন অনেকটা ওপেন সিক্রেট হয়ে পড়েছে। এখন ড্রাইভারশীপ ও মাষ্টারশীপ পরীক্ষা মানেই টাকা যার পাশ তার। আর এই বাণিজ্যকে নিরাপদ করতে গড়ে তোলা হয়েছে শক্তিদশালী একটি সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেটের সাথে কতিপয় রাজনৈতিক নেতাদেরও দহরম মহরম সম্পর্ক রয়েছে।
সম্প্রতি এ ধরনের একটি লিখিত অভিযোগ নৌ-পরিবহন অধিদপ্তরে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে। মহাপরিচালক বরাবরে প্রেরিত উক্ত অভিযোগের বর্ণনায় জানাগেছে, নৌ-পরিবহন অধিদপ্তরের চীফ নটিক্যাল অফিসার ও মাষ্টারশীপ পরীক্ষার প্রধান পরীক্ষক ক্যাপ্টেন মো: গিয়াস উদ্দিন আহম্মদ তার অধিনস্থ সহকারী পরিচালক ( প্রশাসন) মো: শাহাদত হোসেন সরকার , সহকারী মো: নজরুল ইসলাম, বহিরাগত দালাল সাগর ,মুন্না ও তুষারের সমন্বয়ে একটি সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন। এই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে প্রশ্নপত্র ফাঁস করে প্রার্থীদের পাশ করিয়ে প্রতি পরীক্ষার দিন ৪০/৫০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। পরীক্ষার্থীদের আবাসিক হোটেলে রেখে সুরক্ষিত পরিবেশে কোচিং করাবার জন্য মতিঝিল এলাকায় একটি আবাসিক হোটেলও তারা ক্রয় করেছেন। এই হোটেলের নাম হোটেল আল রাব্বী। হোটেলটির মালিক অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) শাহাদাত হোসেন বলে শোনা যাচ্ছে।
অভিযোগের বর্ণনামতে, গত ১০ জুলাই প্রথম শ্রেণীর মাষ্টারশীপ পরীক্ষায় সহকারী পরিচালক শাহাদাতের ৭ জন- যার রোল নং ১৫২,১৫৩,১৫৬,১৬০,১৭০,১৭২,১৮৫ , সহকারী নজরুলের ৩ জন- যার রোল নং ১৪৯,১৫৫,১৭৯, দালাল সাগরের ১ জন- যার রোল নং ১৮৫,দালাল মুন্নার ১ জন- যার রোল নং ১৭৪ চুক্তির ভিত্তিতে লিখিত ও মৌখিক পাশ করানো হয়েছে। এসব প্রার্থীর কাছ থেকে মাথাপিছু ১ লাখ টাকা নিয়েছেন ক্যাপ্টেন মো: গিয়াস উদ্দিন।
বিষয়টি তদন্ত করে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে আবেদন জানিয়েছে অভিযোগকারী সঞ্জয় কুমার বিশ^াস।
অভিযোগের সত্যতা জানার জন্য কথা বললে নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তাকে প্রশ্ন করলে তিনি লিখিত অভিযোগটি পেয়েছেন বলে স্বীকার করেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত কর্মকর্তা চীফ নটিক্যাল অফিসার ক্যাপ্টেন মো: গিয়াস উদ্দিন বলেন, এই লিখিত অভিযোগের বিষয়ে তিনি কিছূ জানেন না। অপরদিকে সহকারী পরিচালক( প্রশাসন) মো: শাহাদাত হোসেন ফোন কলই রিসিভ করেন নি।

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

মুন্সীগঞ্জে কৃষকদের ন্যায্য মূল্যে বীজ আলু ও সার প্রাপ্তি নিশ্চিতকরনের লক্ষে অবহিতকরণ সভা

তদন্ত চেয়ে মহাপরিচালককে চিঠি: নৌ-পরিবহন অধিদপ্তরের দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ!

আপডেট টাইম : ০৭:২২:২৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৪ অগাস্ট ২০২৩

বিশেষ প্রতিবেদক :

নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধিনস্থ নৌ-পরিবহন অধিদপ্তরের নৌযান ড্রাইভার ও মাষ্টার পরীক্ষার অনিয়ম,দুর্নীতি,প্রশ্নপত্র ফাঁস , প্যাকেজ পাশ, কোচিং বাণিজ্য কিছুতেই বন্ধ করা যাচ্ছে না। দালালদের পাশাপাশি অধিদপ্তরের বড় বড় কর্মকর্তারাই জড়িয়ে পড়ছেন এই অনৈতিক কর্মকান্ডে। তারা কেবলমাত্র এই পরীক্ষা খাত থেকেই প্রতিবছর শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। কথিত আছে শস্যে যতি ভুত থাকে তবে আর ভুত তাড়াবে কে? ঠিক একই অবস্থা চলছে এই অধিদপ্তরে।
অভিযোগ পাওয়াগেছে যে, নৌ-পরিবহন অধিদপ্তরের ৪/৫ জন কর্মকর্তা অনিয়ম-দুর্নীতি করে কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। তারা ঢাকাসহ দেশের নানা স্থানে গড়েছেন সম্পদের পাহাড়। একজন প্রথম শ্রেণির ড্রাইভার ও মাষ্টার প্যাকেজ চুক্তিতে পাশ করাতে তারা মাথাপিছু ১ লক্ষ টাকা আদায় করছেন । এভাবে সেকেন্ড ক্লাস এবং থার্ড ক্লাসে নিচ্ছেন ৭০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা। প্যাকেজ চুক্তিতে প্রতিটি পরীক্ষায় ৭০/৮০ জন পাশ করিয়ে তারা ৪০/৫০ লাখ টাকা উপার্জন করছেন।
এ বিষয়ে গত দশ বছর ধরে জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় সংবাদ প্রতিবেদন ছাপা হলেও সেগুলো আমলে নেয়নি নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়। ফলে সেটি এখন অনেকটা ওপেন সিক্রেট হয়ে পড়েছে। এখন ড্রাইভারশীপ ও মাষ্টারশীপ পরীক্ষা মানেই টাকা যার পাশ তার। আর এই বাণিজ্যকে নিরাপদ করতে গড়ে তোলা হয়েছে শক্তিদশালী একটি সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেটের সাথে কতিপয় রাজনৈতিক নেতাদেরও দহরম মহরম সম্পর্ক রয়েছে।
সম্প্রতি এ ধরনের একটি লিখিত অভিযোগ নৌ-পরিবহন অধিদপ্তরে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে। মহাপরিচালক বরাবরে প্রেরিত উক্ত অভিযোগের বর্ণনায় জানাগেছে, নৌ-পরিবহন অধিদপ্তরের চীফ নটিক্যাল অফিসার ও মাষ্টারশীপ পরীক্ষার প্রধান পরীক্ষক ক্যাপ্টেন মো: গিয়াস উদ্দিন আহম্মদ তার অধিনস্থ সহকারী পরিচালক ( প্রশাসন) মো: শাহাদত হোসেন সরকার , সহকারী মো: নজরুল ইসলাম, বহিরাগত দালাল সাগর ,মুন্না ও তুষারের সমন্বয়ে একটি সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন। এই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে প্রশ্নপত্র ফাঁস করে প্রার্থীদের পাশ করিয়ে প্রতি পরীক্ষার দিন ৪০/৫০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। পরীক্ষার্থীদের আবাসিক হোটেলে রেখে সুরক্ষিত পরিবেশে কোচিং করাবার জন্য মতিঝিল এলাকায় একটি আবাসিক হোটেলও তারা ক্রয় করেছেন। এই হোটেলের নাম হোটেল আল রাব্বী। হোটেলটির মালিক অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) শাহাদাত হোসেন বলে শোনা যাচ্ছে।
অভিযোগের বর্ণনামতে, গত ১০ জুলাই প্রথম শ্রেণীর মাষ্টারশীপ পরীক্ষায় সহকারী পরিচালক শাহাদাতের ৭ জন- যার রোল নং ১৫২,১৫৩,১৫৬,১৬০,১৭০,১৭২,১৮৫ , সহকারী নজরুলের ৩ জন- যার রোল নং ১৪৯,১৫৫,১৭৯, দালাল সাগরের ১ জন- যার রোল নং ১৮৫,দালাল মুন্নার ১ জন- যার রোল নং ১৭৪ চুক্তির ভিত্তিতে লিখিত ও মৌখিক পাশ করানো হয়েছে। এসব প্রার্থীর কাছ থেকে মাথাপিছু ১ লাখ টাকা নিয়েছেন ক্যাপ্টেন মো: গিয়াস উদ্দিন।
বিষয়টি তদন্ত করে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে আবেদন জানিয়েছে অভিযোগকারী সঞ্জয় কুমার বিশ^াস।
অভিযোগের সত্যতা জানার জন্য কথা বললে নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তাকে প্রশ্ন করলে তিনি লিখিত অভিযোগটি পেয়েছেন বলে স্বীকার করেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত কর্মকর্তা চীফ নটিক্যাল অফিসার ক্যাপ্টেন মো: গিয়াস উদ্দিন বলেন, এই লিখিত অভিযোগের বিষয়ে তিনি কিছূ জানেন না। অপরদিকে সহকারী পরিচালক( প্রশাসন) মো: শাহাদাত হোসেন ফোন কলই রিসিভ করেন নি।