বিশেষ প্রতিবেদক :
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) তে অবিশ্বাস্য দাপট প্রদর্শন করে অবৈধ পথে কোটি কোটি টাকা উপার্জন ও সংস্থাটির কর্মচারি নিয়োগ, বদলী, পদন্নোতি বাণিজ্য এবং নিজের মেয়ের জামাই দ্বারা ঠিকাদারী ব্যবসা পরিচালনা, অন্যান্য ঠিকাদারদের কাছ থেকে সিবিএর নামে চাঁদাবাজী, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাংচুর, উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের লাঞ্ছিত করা এবং সর্বশেষ একজন সিনিয়র সাংবাদিককে বিআইডব্লিউটিএ ভবনের মধ্যে পিটিয়ে জখম করাসহ প্রায় এক ডজন গুরুতর অভিযোগে আদালতে মামলা চলমান থাকা সত্বেও বিআইডব্লিউটিএর সিবিএ নেতা আবুল হোসেনকে কানাডা ভ্রমনের অনুমতি দিয়েছেন বিআইডব্লিউটিএ চেয়ারম্যান কমোডর আরিফ হোসেন মোস্তফা।
আবুল হোসেন বিআইডব্লিউটিএর হিসাব বিভাগের একজন অফিস সহকারী। গত ০১/০৯/২০২৩ তারিখে তার নিজের ফেসবুক ভেরিফাইড পেজে দেওয়া একটি স্ট্যাটাস থেকে জানা গেছে, কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মহোদয়, পরিচালক (প্রশাসন ও মানবসম্পদ) সহ চারজন কর্মকর্তা কর্তৃক ৩০/৮/২০২৩ ইং তারিখে ইস্যুকৃত নোট শিট স্বাক্ষর পত্র অনুযায়ী আবুল হোসেনের নিজ ইচ্ছা অনুযায়ী কানাডা ভ্রমণের জন্য ২৫/১২/২০২২ইং হতে ৬০ দিনের ছুঁটি মঞ্জুর করা হয়েছে।
উক্ত নোট সিটে উল্লেখ করা হয় যে, ২৫/১২/২০২২ইং তারিখে আবুল হোসেন তার মেয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগদান করার লক্ষ্যে সস্ত্রীক কানাডা ভ্রমণের অনুমতি চেয়েছেন। অথচ ছুঁটির অনুমোদন দেওয়া হলো ৩০/০৮/২০২৩ইং তারিখে। এই বিষয়টি শুভংকরের ফাঁকির ন্যায় স্পষ্ট।
আবুল হোসেনের বিরুদ্ধে একাধিক ফৌজদারি মামলা চলমান রয়েছে। বিশ্বস্থ সূত্র থেকে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, ঢাকা সিএমএম আদালতে মামলা নং ১৫১৬/২০২১ এর আপিল নং ৮৮৪/২০২৩, নারায়ণগঞ্জ আদালতে পি আর মামলা নং ৩১/২০২২, ঢাকা মাননীয় তৃতীয় শ্রম আদালতে মামলা নং ০১/২০২৩, ফৌজদারী মামলাগুলো বিচারাধীন রয়েছে।
সরকারি নিয়ম অনুযায়ী আবুল হোসেনের দেশত্যাগে সকল আদালতের অনুমতির বাধ্যবাধকতা রয়েছে। অথচ বিজ্ঞ আদালত থেকে কোন প্রকার অনুমতি না নিয়েই আবুল হোসেনের কানাডা ভ্রমনের অনুমতি প্রদানে বিআইডব্লিউটিএর পরিচালক (প্রশাসন) ওয়াকিল নওয়াজ প্রভাব বিস্তার করেছেন বলে বিআইডব্লিউটিএর একাধিক কর্মকর্তা ও কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে নিশ্চিত করেছেন।
তারা এটাও বলেছেন যে, বিদেশ ভ্রমনের নামে আসলে আবুল হোসেন চলমান মামলাসমূহে সাজা হওয়ার আশংকায় দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পাঁয়তারা করছেন। আর এই কাজে তাকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করছেন বিআইডব্লিউটিএর একাধিক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা।
এমন পরিস্থিতিতে বিআইডব্লিউটিএর সিবিএ নেতা ও ৩য় শ্রেণীর কর্মচারী আবুল হোসেনের কানাডা ভ্রমনের নামে ছুঁটির কার্যক্রম বন্ধ ও ছুঁটি বাতিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমোডর আরিফ হোসেন মোস্তফা বরাবর লিখিত আবেদন করা হয়েছে।
এই লিখিত আবেদনের কপি আমাদের হাতে আসার পর বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমোডর আরিফ হোসেন মোস্তফাকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। পরে বিআইডব্লিউটিএর পরিচালক (প্রশাসন) ওয়াকিল নওয়াজের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু ফোন বন্ধ থাকায় এই বিষয়ে তার বক্তব্যও পাওয়া যায়নি।