ঢাকা ০২:২৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২২ মে ২০২৪, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
মাগুরা মহম্মদপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিপুল ভোটে জয়ী এ্যাড: মান্নান নিরেপক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চেয়ে পিএফজি’র সংবাদ সম্মেলন আদমদিঘীতে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে চলছে ভোট গ্রহণ মহানবীকে নিয়ে কটুক্তি মাগুরায় দুটি হিন্দু বাড়িতে অগ্নিসংযোগ জাতীয় পর্যায়ে অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছে কুষ্টিয়া সিরাজুল হক মুসলিম মাধ্যমিক বিদ্যালয় পার্লামেন্টের নারী স্পীকারদের সামিট বৈশ্বিক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে অভিজ্ঞতা বিনিময়ের এক অনবদ্য প্লাটফর্ম– স্পীকার ফায়ার সার্ভিসের সেই দুর্নীতিবাজ উপপরিচালক ওহিদুল আবার অধিদপ্তরে! নওগাঁয় নিউ মডার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ এর কমাশিয়াল সেমিনার অনুষ্ঠিত সিরাজদিখানে চায়না দুয়ারী জাল বন্ধে মৎস্য কর্মকর্তার অভিযান বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত

চৈত্রের শেষে ‘কালবৈশাখীর’ তাণ্ডব, কেড়ে নিল ১০ প্রাণ

চৈত্রের শেষ সময়ে গত কয়েকদিন ধরে দেশের বিভিন্ন জেলায় বইছিল তাপপ্রবাহ। আগামী ১৪ এপ্রিল শুরু হবে বাংলা বর্ষ। নববর্ষকে বরণ করবে বাঙালি। বৈশাখ মাস আসার আগেই আজ রবিবার দেশের দক্ষিণাঞ্চলে তাণ্ডব চালিয়েছে কালবৈশাখী। এতে বিভিন্ন জেলায় এখন পর্যন্ত ১০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্য অনুযায়ী, ঝালকাঠীতে দুই নারীসহ তিনজন, পটুয়াখালীতে দুইজন নিহত হয়েছেন। পিরোজপুর, খুলনা ও সুনামগঞ্জে একজন করে মারা গেছেন। এ ছাড়া ভোলায় দুইজনের মৃত্যুর খবর জানিয়েছে বরিশাল বিভাগীয় অফিস।

এদের মধ্যে ঝালকাঠীতে তিনজন বজ্রপাতে নিহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন হেলেনা বেগম (৪০), মিনারা বেগম (৩৫) ও মাহিয়া আক্তার ঈশানা (১১)। এ ছাড়া পটুয়াখালীর বাউফলে সুফিয়া বেগম (৮৫) নামের এক নারীর ঘরে গাছচাপায় মৃত্যু হয়। একই উপজেলায় রাতুল শিকদার নামের এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। বজ্রপাতের শব্দে হার্ট অ্যাটাক করে হতে পারে বলে জানিয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মারজান।

খুলনা জেলার ডুমুরিয়ায় বজ্রপাতে ওবায়দুল গাজী (৩০) নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন। পিরোজপুরে জেলায় ঘরচাপায় রুবি আক্তার নামের এক গৃহবধূ নিহত হয়েছেন। সুনামগঞ্জে ঝড়ের সময় গাছ পড়ে মো. আক্তর হোসেন নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রতিনিধি।

24365786ছবি : সংগৃহীত

এদিকে ভোলার লালমোহনে কালবৈশাখী ঝড়ে গাছ উপড়ে পড়ে ঘরচাপায় হারিস নামের এক ভিক্ষুক ও বজ্রপাতে বাচ্চু নামে এক কৃষকের মৃত্যু মৃত্যু হয়েছে।

রবিবার (৭ এপ্রিল) সকাল ৯টার পর থেকে খুলনা বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন জেলায় আঘাত হানে ঝড়। এতে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে শত শত বসতঘর। সড়কে গাছ পড়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল অনেকক্ষণ। বিদ্যুৎ খুঁটি ভেঙে অনেক উপজেলা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন আছে।

বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার বাসিন্দা মাহমুদা সোনিয়া। তিনি দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘ভোর থেকেই বিরূপ আবহাওয়া ছিল। সকাল ৯টার দিকে রাতের মতো অন্ধকার হয়ে যায় পুরো এলাকা। এক গজ দূরের কিছুই দেখা যাচ্ছিল না। এরপর থেকে শুরু হয় ঝড়-বৃষ্টি। দিনের বেলায় এমন অন্ধকার আগে কখনও দেখিনি।’

Jhalakathi Jhor News PICছবি : দেশ রূপান্তর

এদিকে ঝড়ে ফসলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বজ্রপাতে বিভিন্ন এলাকার তরমুজ ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। তবে ক্ষতির পরিমাণ এখনও জানাতে পারেনি সংশ্লিষ্টরা।

পিরোজপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান জানিয়েছেন, তার জেলায় যাদের ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের জন্য শুকনো খাবার ও ত্রাণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির পরিবারকে সরকারের তরফ থেকে আর্থিক সহযোগিতা দেওয়া হবে। তবে প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করে পরে জানানো হবে।

বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার মো. শওকত আলী দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমাদের কাছে চারজনের মৃত্যুর খবর পৌঁছেছে। পটুয়াখালী ও ভোলায় ঝড় ও বজ্রপাতে দুইজন করে মারা গেছেন বলে তথ্য এসেছে। বাকি জেলায় খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।’

খুলনা বিভাগীয় কমিশানের সচিব ইসমাল হোসেন দেশ রূপান্তকে বলেন, ‘খুলনা জেলায় একজনের মৃত্যুর খবর আছে। বিভাগীয় তথ্য এখনও আমাদের কাছে এসে পৌঁছেনি। জেলা থেকে হতাহত ও ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করে পাঠালে আমরা পুরো তথ্যটা জানাতে পারব।’

07-04-24-Bhola_Tornado-5ছবি : ফোকাস বাংলা

এদিকে রবিবার (৭ এপ্রিল) নিয়মিত বুলেটিনে অধিদপ্তর জানিয়েছে, ঢাকা, ময়মনসিংহ, সিলেট, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টিও হতে পারে।

সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা দুই থেকে তিন ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে আরও বলা হয়েছে, পাবনা এবং চুয়াডাঙ্গা জেলায় তীব্র তাপপ্রবাহ; বরিশাল, পটুয়াখালী ও রাঙ্গামাটি জেলাসহ রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশ, রংপুর ও ঢাকা বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা কিছু জায়গা হতে প্রশমিত হতে পারে।

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

মাগুরা মহম্মদপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিপুল ভোটে জয়ী এ্যাড: মান্নান

চৈত্রের শেষে ‘কালবৈশাখীর’ তাণ্ডব, কেড়ে নিল ১০ প্রাণ

আপডেট টাইম : ১২:৪০:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ৭ এপ্রিল ২০২৪

চৈত্রের শেষ সময়ে গত কয়েকদিন ধরে দেশের বিভিন্ন জেলায় বইছিল তাপপ্রবাহ। আগামী ১৪ এপ্রিল শুরু হবে বাংলা বর্ষ। নববর্ষকে বরণ করবে বাঙালি। বৈশাখ মাস আসার আগেই আজ রবিবার দেশের দক্ষিণাঞ্চলে তাণ্ডব চালিয়েছে কালবৈশাখী। এতে বিভিন্ন জেলায় এখন পর্যন্ত ১০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্য অনুযায়ী, ঝালকাঠীতে দুই নারীসহ তিনজন, পটুয়াখালীতে দুইজন নিহত হয়েছেন। পিরোজপুর, খুলনা ও সুনামগঞ্জে একজন করে মারা গেছেন। এ ছাড়া ভোলায় দুইজনের মৃত্যুর খবর জানিয়েছে বরিশাল বিভাগীয় অফিস।

এদের মধ্যে ঝালকাঠীতে তিনজন বজ্রপাতে নিহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন হেলেনা বেগম (৪০), মিনারা বেগম (৩৫) ও মাহিয়া আক্তার ঈশানা (১১)। এ ছাড়া পটুয়াখালীর বাউফলে সুফিয়া বেগম (৮৫) নামের এক নারীর ঘরে গাছচাপায় মৃত্যু হয়। একই উপজেলায় রাতুল শিকদার নামের এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। বজ্রপাতের শব্দে হার্ট অ্যাটাক করে হতে পারে বলে জানিয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মারজান।

খুলনা জেলার ডুমুরিয়ায় বজ্রপাতে ওবায়দুল গাজী (৩০) নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন। পিরোজপুরে জেলায় ঘরচাপায় রুবি আক্তার নামের এক গৃহবধূ নিহত হয়েছেন। সুনামগঞ্জে ঝড়ের সময় গাছ পড়ে মো. আক্তর হোসেন নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রতিনিধি।

24365786ছবি : সংগৃহীত

এদিকে ভোলার লালমোহনে কালবৈশাখী ঝড়ে গাছ উপড়ে পড়ে ঘরচাপায় হারিস নামের এক ভিক্ষুক ও বজ্রপাতে বাচ্চু নামে এক কৃষকের মৃত্যু মৃত্যু হয়েছে।

রবিবার (৭ এপ্রিল) সকাল ৯টার পর থেকে খুলনা বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন জেলায় আঘাত হানে ঝড়। এতে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে শত শত বসতঘর। সড়কে গাছ পড়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল অনেকক্ষণ। বিদ্যুৎ খুঁটি ভেঙে অনেক উপজেলা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন আছে।

বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার বাসিন্দা মাহমুদা সোনিয়া। তিনি দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘ভোর থেকেই বিরূপ আবহাওয়া ছিল। সকাল ৯টার দিকে রাতের মতো অন্ধকার হয়ে যায় পুরো এলাকা। এক গজ দূরের কিছুই দেখা যাচ্ছিল না। এরপর থেকে শুরু হয় ঝড়-বৃষ্টি। দিনের বেলায় এমন অন্ধকার আগে কখনও দেখিনি।’

Jhalakathi Jhor News PICছবি : দেশ রূপান্তর

এদিকে ঝড়ে ফসলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বজ্রপাতে বিভিন্ন এলাকার তরমুজ ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। তবে ক্ষতির পরিমাণ এখনও জানাতে পারেনি সংশ্লিষ্টরা।

পিরোজপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান জানিয়েছেন, তার জেলায় যাদের ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের জন্য শুকনো খাবার ও ত্রাণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির পরিবারকে সরকারের তরফ থেকে আর্থিক সহযোগিতা দেওয়া হবে। তবে প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করে পরে জানানো হবে।

বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার মো. শওকত আলী দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমাদের কাছে চারজনের মৃত্যুর খবর পৌঁছেছে। পটুয়াখালী ও ভোলায় ঝড় ও বজ্রপাতে দুইজন করে মারা গেছেন বলে তথ্য এসেছে। বাকি জেলায় খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।’

খুলনা বিভাগীয় কমিশানের সচিব ইসমাল হোসেন দেশ রূপান্তকে বলেন, ‘খুলনা জেলায় একজনের মৃত্যুর খবর আছে। বিভাগীয় তথ্য এখনও আমাদের কাছে এসে পৌঁছেনি। জেলা থেকে হতাহত ও ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করে পাঠালে আমরা পুরো তথ্যটা জানাতে পারব।’

07-04-24-Bhola_Tornado-5ছবি : ফোকাস বাংলা

এদিকে রবিবার (৭ এপ্রিল) নিয়মিত বুলেটিনে অধিদপ্তর জানিয়েছে, ঢাকা, ময়মনসিংহ, সিলেট, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টিও হতে পারে।

সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা দুই থেকে তিন ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে আরও বলা হয়েছে, পাবনা এবং চুয়াডাঙ্গা জেলায় তীব্র তাপপ্রবাহ; বরিশাল, পটুয়াখালী ও রাঙ্গামাটি জেলাসহ রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশ, রংপুর ও ঢাকা বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা কিছু জায়গা হতে প্রশমিত হতে পারে।