ঢাকা ০৮:০৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০১ জুলাই ২০২৫, ১৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
তরুণদের সম্পৃক্ত করে জলবায়ু অভিযোজন জোরদারের উদ্যোগ রশুনিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে অর্ধবার্ষিক পরীক্ষায় অতিরিক্ত ফি নেয়াকে কেন্দ্র করে অভিভাবকদের ক্ষোভ নওগাঁয় সাংবাদিকদের ঈদ পুনর্মিলনী সভা অনুষ্ঠিত শাহআলী থানায় বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে মামলা না নিতে থানা ঘেরাও নওগাঁয় সাড়ে ৩ কেজি গাঁজাসহ গ্রেফতার- ৩ বাংলাদেশ থেকে স্থলপথে পাট ও পাটজাত পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা ভারতের রূপনগরে বিএনপির বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি: ২০ হাজার নিমগাছ রোপণের উদ্যোগ ঘোষণা আমিনুল হকের দিয়ামনি ই-কমিউনিকেশন এর নতুন অফিস উদ্বোধন মির্জাগঞ্জে ধর্ষণ চেষ্টার মিথ্যা মামলা করায় বাদী কারাগারে মাগুরা জেলা পুলিশের উদ্যোগে হাজীপুর ইউনিয়নে সিসিটি টিভি ক্যামেরা চালু

লাল শাপলা; বাংলাদেশের জলজ ফুলের অপরূপ সৌন্দর্য

শাহ আলম-

লাল শাপলা (বৈজ্ঞানিক নাম: Nymphaea pubescens) বাংলাদেশের অন্যতম সুন্দর ও মনোমুগ্ধকর জলজ ফুল। এটি দেশের বিভিন্ন জলাশয়, বিল ও হাওরে প্রাকৃতিকভাবে জন্মে এবং বর্ষাকালে পানির সঙ্গে ফুলে-ফলে ভরে ওঠে। শাপলা ফুল সাদা, গোলাপি এবং লাল রঙে দেখা যায়, তবে লাল শাপলা তার উজ্জ্বল রঙ ও সৌন্দর্যের কারণে আলাদাভাবে পরিচিত। বর্ষাকালে ও শরৎকালে এই ফুল ফোটে, বিশেষ করে বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বিল-হাওরে এটি একটি মনোমুগ্ধকর দৃশ্য তৈরি করে।

লাল শাপলার বৈশিষ্ট্য- লাল শাপলা মাঝারি আকারের একটি ফুল, যার পাপড়িগুলি উজ্জ্বল লাল বা কখনও কখনও গাঢ় গোলাপি রঙের হয়ে থাকে। পানিতে ভাসমান পাতা ও শিকড় থাকায় এটি সহজেই পানির উপর ভেসে থাকতে পারে। ফুলটির গঠন ও রঙ মানুষের মনকে আকর্ষণ করে এবং অনেক পাখি ও পতঙ্গ এই ফুলের কাছাকাছি আসে।

বাস্তুতন্ত্রে ভূমিকা- লাল শাপলা শুধু সৌন্দর্যই নয়, বাংলাদেশের জলজ পরিবেশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি পানির অক্সিজেন স্তর বজায় রাখতে সহায়ক এবং বিভিন্ন মাছ ও জলজ প্রাণীর আবাসস্থল হিসেবে কাজ করে। একইসাথে, বিল-হাওরের মানুষের জন্য এটি খাদ্য উৎস হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। শাপলা গাছের মূল বা কাণ্ড বিশেষ করে মাটি-জলে উপস্থিত প্রাকৃতিক খাদ্য হিসেবে পরিচিত।

লাল শাপলা সংরক্ষণের চ্যালেঞ্জ- বর্তমানে লাল শাপলার প্রাকৃতিক আবাসস্থল বিভিন্ন পরিবেশগত সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে। বিল ও হাওরের অবৈধ দখল, দূষণ, জলবায়ু পরিবর্তন ও অতিরিক্ত কৃষিজ উৎপাদনের জন্য শাপলার জন্মস্থান ক্রমেই হ্রাস পাচ্ছে। ফলস্বরূপ, লাল শাপলা প্রজাতিটি আজ সংরক্ষণের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।

সংরক্ষণ প্রচেষ্টা- লাল শাপলা সংরক্ষণে স্থানীয় সরকার ও বিভিন্ন সংস্থা কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। বিল-হাওর সংরক্ষণ, অবৈধ দখলমুক্তকরণ, এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে এই জলজ ফুলের অস্তিত্ব রক্ষায় কাজ করা হচ্ছে। পাশাপাশি, গবেষণা ও পর্যটনকে উৎসাহিত করা হচ্ছে যাতে লাল শাপলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য রক্ষায় মানুষ আরও আগ্রহী হয়।

লাল শাপলা বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি আমাদের জলজ জীববৈচিত্র্য ও প্রাকৃতিক পরিবেশের অংশ। এই সৌন্দর্যকে সংরক্ষণ করা এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য রক্ষা করা আমাদের সকলের দায়িত্ব।

ট্যাগস

তরুণদের সম্পৃক্ত করে জলবায়ু অভিযোজন জোরদারের উদ্যোগ

লাল শাপলা; বাংলাদেশের জলজ ফুলের অপরূপ সৌন্দর্য

আপডেট টাইম : ০১:১৪:৪২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪

শাহ আলম-

লাল শাপলা (বৈজ্ঞানিক নাম: Nymphaea pubescens) বাংলাদেশের অন্যতম সুন্দর ও মনোমুগ্ধকর জলজ ফুল। এটি দেশের বিভিন্ন জলাশয়, বিল ও হাওরে প্রাকৃতিকভাবে জন্মে এবং বর্ষাকালে পানির সঙ্গে ফুলে-ফলে ভরে ওঠে। শাপলা ফুল সাদা, গোলাপি এবং লাল রঙে দেখা যায়, তবে লাল শাপলা তার উজ্জ্বল রঙ ও সৌন্দর্যের কারণে আলাদাভাবে পরিচিত। বর্ষাকালে ও শরৎকালে এই ফুল ফোটে, বিশেষ করে বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বিল-হাওরে এটি একটি মনোমুগ্ধকর দৃশ্য তৈরি করে।

লাল শাপলার বৈশিষ্ট্য- লাল শাপলা মাঝারি আকারের একটি ফুল, যার পাপড়িগুলি উজ্জ্বল লাল বা কখনও কখনও গাঢ় গোলাপি রঙের হয়ে থাকে। পানিতে ভাসমান পাতা ও শিকড় থাকায় এটি সহজেই পানির উপর ভেসে থাকতে পারে। ফুলটির গঠন ও রঙ মানুষের মনকে আকর্ষণ করে এবং অনেক পাখি ও পতঙ্গ এই ফুলের কাছাকাছি আসে।

বাস্তুতন্ত্রে ভূমিকা- লাল শাপলা শুধু সৌন্দর্যই নয়, বাংলাদেশের জলজ পরিবেশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি পানির অক্সিজেন স্তর বজায় রাখতে সহায়ক এবং বিভিন্ন মাছ ও জলজ প্রাণীর আবাসস্থল হিসেবে কাজ করে। একইসাথে, বিল-হাওরের মানুষের জন্য এটি খাদ্য উৎস হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। শাপলা গাছের মূল বা কাণ্ড বিশেষ করে মাটি-জলে উপস্থিত প্রাকৃতিক খাদ্য হিসেবে পরিচিত।

লাল শাপলা সংরক্ষণের চ্যালেঞ্জ- বর্তমানে লাল শাপলার প্রাকৃতিক আবাসস্থল বিভিন্ন পরিবেশগত সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে। বিল ও হাওরের অবৈধ দখল, দূষণ, জলবায়ু পরিবর্তন ও অতিরিক্ত কৃষিজ উৎপাদনের জন্য শাপলার জন্মস্থান ক্রমেই হ্রাস পাচ্ছে। ফলস্বরূপ, লাল শাপলা প্রজাতিটি আজ সংরক্ষণের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।

সংরক্ষণ প্রচেষ্টা- লাল শাপলা সংরক্ষণে স্থানীয় সরকার ও বিভিন্ন সংস্থা কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। বিল-হাওর সংরক্ষণ, অবৈধ দখলমুক্তকরণ, এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে এই জলজ ফুলের অস্তিত্ব রক্ষায় কাজ করা হচ্ছে। পাশাপাশি, গবেষণা ও পর্যটনকে উৎসাহিত করা হচ্ছে যাতে লাল শাপলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য রক্ষায় মানুষ আরও আগ্রহী হয়।

লাল শাপলা বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি আমাদের জলজ জীববৈচিত্র্য ও প্রাকৃতিক পরিবেশের অংশ। এই সৌন্দর্যকে সংরক্ষণ করা এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য রক্ষা করা আমাদের সকলের দায়িত্ব।