আব্দুল্লাহ আল শাফী-
বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ৭ (সাত) সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.)।
সোমবার সকালে রাজধানীর পিলখানায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)-এর সীমান্ত সম্মেলন কেন্দ্রে বিজিবি দিবস ২০২৪ উপলক্ষ্যে আয়োজিত বিজিবি পদক প্রদান অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এসব কথা বলেন তিনি।
উপদেষ্টা বলেন, পিলখানায় ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি সংঘটিত বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়েছে। গতকাল (রবিবার) রাতে কমিশন গঠন সংক্রান্ত ফাইলে প্রধান উপদেষ্টা স্বাক্ষর তথা অনুমোদন করেছেন।
এসময় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, বিজিবি’র সাবেক মহাপরিচালক এ এল এম ফজলুর রহমানকে সভাপতি করে এই কমিশন গঠন করা হয়েছে। কমিশনের অন্য সদস্যরা হলেন, সামরিক বাহিনীর দুইজন, সিভিল সার্ভিসের একজন ও পুলিশের একজন কর্মকর্তা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন করে শিক্ষক।
এসময় বিজিবি’কে সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ ২২৯ বছরের ঐতিহ্যবাহী সীমান্তরক্ষী বাহিনী। তিনি বলেন, সীমান্ত রক্ষাসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা প্রদান, বিভিন্ন দুর্ঘটনা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও জরুরি পরিস্থিতি মোকাবেলাসহ দেশগঠনমূলক বিভিন্ন কাজে বিজিবি’র ভূমিকা ও পেশাদারিত্ব প্রশংসার দাবিদার। বাংলাদেশের মানুষের আস্থার প্রতীক হয়ে ‘সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী’ হিসেবে এ বাহিনীকে তাঁদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব সুচারুরূপে পালন করতে হবে।
লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজিবি’র (সাবেক বিডিআর) সাহসী ও গৌরবময় ভূমিকা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। এ বাহিনীর প্রায় ১২ হাজার বাঙালি সদস্য মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। তাঁদের মধ্যে ২ জন বীরশ্রেষ্ঠ, ৮ জন বীর উত্তম, ৩২ জন বীর বিক্রম এবং ৭৭ জন বীর প্রতীকসহ সর্বমোট ৮১৭ জন সদস্য মহান মুক্তিযুদ্ধে শহিদ হন। তিনি এসময় মহান মুক্তিযুদ্ধে তাঁদের গভীর আত্মত্যাগের কথা অত্যন্ত শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।
উপদেষ্টা আরো বলেন, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বীরত্ব ও ঐতিহ্যের গৌরবমন্ডিত এক সুশৃঙ্খল বাহিনী। তিনি বলেন, দেশমাতৃকার সেবায় নিয়োজিত বিজিবি সদস্যদের সবচেয়ে বড় হাতিয়ার তাদের দেশপ্রেম, সততা এবং অটুট মনোবল। সীমান্তের প্রতিটি ইঞ্চি রক্ষা ও চোরাচালান বন্ধ করতে বিজিবি সদস্যদের হতে হবে দৃঢ় ও নির্ভীক। একইভাবে অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি মোকাবেলায় হতে হবে দায়িত্বশীল ও জনবান্ধব। তিনি আরো বলেন, উন্নত সুশৃঙ্খল বাহিনীর সফলতা নির্ভর করে সত্যবাদিতা ও প্রতিটি স্তরে ‘চেইন অব কমান্ড’ প্রতিষ্ঠার উপর। উপদেষ্টা এসময় ‘চেইন অব কমান্ড’ সুদৃঢ়ভাবে অনুসরণ করে সততার সঙ্গে বিজিবি সদস্যদের দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মোঃ খোদা বখস চৌধুরী ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব (রুটিন দায়িত্ব) ড. নাসিম আহমেদ।