আদমদিঘী (বগুড়া) প্রতিনিধি-
বগুড়ার আদমদিঘীতে বিভিন্ন স্পটে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে যেন চলছে জুয়া-মাদকের মহাৎসব। জুয়া খেলায় আসক্ত হয়ে প্রতিনিয়ত পারিবারিক অশান্তিসহ সামাজিক সমস্যা বাড়ছে। এ বিষয়ে যেন নিরব ভূমিকাই রয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় রাত হলেই বসছে লাখ লাখ টাকার জুয়া খেলার আসর। তিন-তাস, কাটা-কাটিসহ নানা নামে চলছে জুয়া। উপজেলার বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় অফিস, বাসা-বাড়িতে চলছে এসব জুয়ার আসর। এতে ভুক্তভোগীরা সর্বস্বান্ত হলেও জুয়ার নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে আয়োজক চক্র।
স্থানীয় সুএে জানা যায়, ছাতিয়ান গ্রাম ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডস্থ দুর্গাপুর রশীদের মোড় এলাকার পাশ্বে একটি জুয়ার আসর বসাচ্ছে দুজন ব্যক্তি। সেখানে সন্ধ্যার পরে থেকে গভীর রাত পর্যন্ত লাখ লাখ টাকার জুয়া খেলার আসর বসে।ইউনিয়নের বাইরে থেকেও গাড়ি পাঠিয়ে খেলোয়াড় সংগ্রহ করার পরই টাকার ব্যাগ নিয়ে দাঁড়ায় বোর্ডের সামনে। সেখানে শেষ রাত পর্যন্ত চলে লাখ লাখ টাকার জুয়া খেলা। এসকল জুয়ার আসরে অবাধে চলে মাদক সরবরাহ। এমনকি বড় বড় জুয়ারিদের মনরঞ্জনে দেয়া হয় মনোরঞ্জনের ব্যবস্থা।
মদ্যবিত্ত খেলোয়াড়দের মনরঞ্জনের জন্য ছাতিয়ান গ্রাম ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের ইশবপুর গ্রাম থেকে চোয়ানি এবং গাজা নিয়ে আসা হয় যাতে করে অধিক সময় খেলা চালানো যায় এবং খেলোয়াররা বিরক্ত না হয়।
কোন কোন সূত্রের দাবী- জুয়া খেলায় জোশ আনতে সরবরাহ করা হয় দেশীয় মদ। সেই সাথে কাটুন কাটুন বেনসন সিগারেট বিলিয়ে দিয়ে সুখটানে ধোয়া উড়ার সাথে সাথে বোর্ডে পিন গাথার টার্গেট নিয়ে এই ভাগ্যের খেলা শুরু হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে খেলোয়াড়রা নিঃস্ব হলেও গড ফাদাররা বানিয়েছে গাড়ি-বাড়ি। তা না হলেও অন্তত ভালো আছে আর্থিক স্বচ্ছলতায়।
খবর বাংলাদেশের অনুসন্ধানে জানা যায়– আদমদিঘী উপজেলার ছাতিয়ান গ্রাম ইউনিয়নের দুর্গাপুর এবং অন্তাহার গ্রামে বসছে এ জুয়ার আসর। এ জুয়ার আসরে মূলত তিন-তাস ও কাটাকাটি খেলাটাই বেশি জনপ্রিয় বলে জানা যায়। জুয়াড় আসর বসানোর পর সড়কের দুই মাথায় ক্যাডাররূপী যুবকদের পাহারার দায়িত্ব দেয়া হয়। এমনকি দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেন তারা। স্থানীয় কয়েকজনকে ম্যানেজ করে জুয়ার আসর বসায় বলে যানা যায় অনুসন্ধানে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী প্রভাবশালীদের মদদে বিভিন্ন এজেন্টের মাধ্যমে জুয়াড়িদের কাছ থেকে আয়োজকরা টাকা আদায় করে। আর এর বিনিময়ে জুয়া খেলার জন্য বিকাশ, নগদে টাকা ধার, বন্ধক, মোবাইল, ঘড়ি, স্বর্ণ, মাদকসহ নানা সুযোগ-সুবিধা দিয়ে থাকে আয়োজকরা। এতে করে সর্বস্বান্ত হচ্ছে আসক্তরা আর লাভবান হচ্ছে আয়োজকরা।
জানা যায়, জুয়ার বোর্ডে ২০ হাজার টাকার পণ্য ২ হাজার টাকায় পাওয়া যায়। আয়োজকরা ম্যানেজ পন্থা অবলম্বন করে দিনের পর দিন চালাচ্ছে এসব অপকর্ম। আয়োজকদের নির্ধারিত মোটরসাইকেলে বগুড়া জেলার এবং নওগাঁ জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে জুয়ারিদের এসব স্পটে আসা যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয় বলেও জানা যায়।
কৌশলে জুয়া খেলায় অংশ নেওয়া একাধিক ব্যক্তির সাথে কথা বলে জানা যায়, দিনে-রাতে জুয়া খেলা হয়। বিভিন্ন জেলার জুয়ারী ও মাদক সেবীরা নিয়মিত অংশগ্রহণ করছে। বিষয়টি পুলিশ ও স্থানীয় এলাকাবাসীসহ সবাই জানে।এলাকায় তেমন কেউ নেই যে প্রতিবাদ করবে। যদি কেউ সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে প্রতিবাদ করতে চায় সে ব্যক্তি এলাকায় থাকতে পারবে না বলে হুমকি দেয় জুয়ারীরা।
এ বিষয়ে আদমদিঘী থানার অফিসার ইনচার্জ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সে কাজকরি। জুয়ার বিষয়ে ওসি বলেন সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় আমরা অ্যাটাক করতে গেলে নওগাঁ সীমানায় চলে যায় এবং নওগাঁ সদর থানা থেকে অ্যাটাক করতে আসলে আমাদের সীমানায় চলে আসে একারণে আমরা যৌথ অভিযান পরিচালনা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং আশা করছি আমরা এটা নির্মূল করতে সক্ষম হবো।